নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তি দাবী করছি।

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০১



এই নিরাপরাধ অবুঝ শিশু আনিসের পায়ে এভাবে শেকল পরিয়ে তিনদিন ধরে বন্দি করে রাখার জন্য-যে সব দানবেরা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তি দাবী করছি।ঘটনাটি সবার নজরে আনা দরকার। আর কাউকে যেন রাজন, রাকিবের মতো করুণভাবে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে না হয়।

এই নিষ্পাপ শিশুর অসহায় অশ্রু টলমল ছবিটি দেখেই মন ভারী হয়ে ওঠে। তিনদিন ধরে হতভাগা ছেলেটি লোহার শিকলে বন্দী ছিলো।
তিনদিন বন্দী থাকার পর- অন্য একজন ছাত্র তার অভিভাবককে জানালে- পুলিশ এসে ছেলেটিকে উদ্ধার করে। না হলে -আরেকটি "রাজন" ট্রাজেডি গঠতো। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনা জেলার ভাঙ্গুরা উপজেলায়। ( আজকের ডেইলি স্টারের খবর)
মাত্র সাত বছর বয়সের আনিস তিনদিন ধরে এভাবে পায়ে শেকল পড়ে , খালি, স্যাঁতসেতে একটা মেঝের ওপর রাত দিন কাটালো।
না, আনিস কোনো কিছু চুরি করেনি, মালিককে না বলে অন্য কোথাও কাজেও যায়নি। ওর শুধু অপরাধ- আনিস ঠিকমতো পড়তে চায়না।
এই অপরাধেই ওর পায়ে পড়িয়ে দেয়া হলো লোহার জিন্জির। শিশুর পায়ে শেকল পড়িয়ে শিক্ষা দেয়া-এগুলো কেমনতরো দানব!!

বন্য হাতির পায়ে খুব ছোটকালে শেকল পড়ানো হয়। এই হাতি অনেক বড় হওয়ার পরও সবসময় মনে করে ওর পায়ে শেকল পড়ানো। তাই সে আর ছুটতে পারেনা। ওর যে স্বাধীনভাবে চলাফেরার একটা ক্ষমতা আছে, তা সে বেমালুম ভুলে যায়। এই ছোট শিশু আনিসের মনেও এই শেকলের ভয় ঢুকিয়ে দেয়া হলো।এখন, এই ছোট, অবোধ আনিসের চোখে বইয়ের প্রতিটি অক্ষরইতো লোহার জিণ্জির মনে হবে। সারা জীবন ওকে এই ভয় তাড়িয়ে বেড়াবে। প্রতিটি মানুষকেই ওর দানব মনে হবে।
তারপরও আনিসের ভাগ্য ভালো-আনিস মৃত্যুর অতি কাছ থেকে ফিরে এসেছে।

আমি আনিসকে দেখছি, আর রাজনের ছবিটি বারবার চোখের সামনে ভাসছে। আমি দেখতে পাচ্ছি রাজনের মায়ের কান্না আর বাপের আহাজারি। রাজন হত্যার অন্যতম আসামী কামরুল উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে। ওর ফাঁসী হবে। কিন্তু কামরুলের ফাঁসির আদেশ শুনে ওর মায়ের মুর্ছা যাওয়ার ছবিটিও আমাকে ব্যতীত করছে।কামরুলের মায়ের দুঃখ হচ্ছে-উনি এ কেমন সন্তান পেটে ধারণ করলেন !!আবার দশমাস গর্ভে রাখা প্রিয় সন্তানের ফাঁসী হবে নিজের চোখের সামনে একজন মা হয়তো তা কোনোদিনও কল্পনা করেননি। ঠিক যেমন-রাজনের মাও ভাবেননি তার কচি সন্তানকে কোনো বর্বর, অমানুষ এভাবে জীবন্ত পিটিয়ে মেরে ফেলবে।

রাজনের প্রসঙ্গটির অবতারণা করার বিশেষ একটি কারণ আছে। রাজন মারা যাওয়ার পর জনগণ যেভাবে সচেতন হয়ে ওর বিচারের দাবীতে সোচ্চার হলো- মিছিল, মিটিং , মানব বন্ধন, ফেসবুকিং , পোস্টারিং করলো-তার এক ভাগও যদি জীবিত রাজনের জন্য করতো- তবে রাজনকে অকালে পৃথিবী থেকে এতো করুন ভাবে বিদায় নিতে হতোনা। কামরুলের মাকে ছেলের ফাঁসি হবে-সেই দিনক্ষনের প্রহর গুণতে হতোনা। এক রাজনের মা সন্তান হারিয়ে পাগলিনী- আরেক কামরুলের মা- ছেলের ফাঁসীর অপেক্ষায় দিশেহারা। একটু সচেতন হলেই -এই সব ঘটনাগুলো এড়ানো যেতো।

রাজনকে যখন পিটানো হচ্ছে- তখন আশেপাশের একটি মানুষও কেন এগিয়ে আসলোনা? কেন একজন মানুষও জীবিত রাজনকে উদ্ধার করলোনা? কেন -পুলিশ স্টেশানে একটা ফোনও কেউ করলো না?

একজন চোরকে যখন পিটানো হয়- তখন সবাই মিলে চোরকে পিটাতে থাকে। যেন এটা একটা উৎসব। রাজনকে যখন মারা হচ্ছে-তখনও নিশ্চয়ই আশেপাশের সবাই এটাকে তামাশা মনে করে উপভোগ করেছে। আর ভাবছে- দেখিনা, চলতে থাকুক তামাশা।
এই তামাশা বাদ দিয়ে নিজেদের মধ্যে সচেতনতা জাগাতে না পারলে- রাজনরা এভাবেই মারা যাবে, আনিসরা পায়ে শেকল পড়ে এভাবেই দিনের পর দিন বসে থাকবে।

আমাদের একটু বিবেকবোধ, একটু সুচিন্তা, একটু সচেতনাতাই পারে এরকম অনেক রাজনকে বাঁচাতে, এরকম অনেক আনিসের পা থেকে শেকল খুলতে। আর মৃত্যুর পর হাজারো মিছিল, মিটিং, মানববন্ধন কোনো কিছুই রাজনকে তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে আনতে পারবেনা।

আনিসের পায়ে যিনি এভাবে শেকল পরিয়ে তিনদিন ধরে এই অসহায় শিশুটিকে বন্দি করে রেখেছেন, উনার যেমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি, ঠিক তেমনি যিনি সচেতনভাবে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে পুলিশ স্টেশানে ফোন করেছেন। যার ফলে আজ বেঁচে গেছে আনিস। সেই সচেতন নাগরিককেও সাধুবাদ জানাচ্ছি।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৩

আহলান বলেছেন: দুঃখ জনক ..কষ্টদায়ক

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৮

সুমন কর বলেছেন: এসব কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়.... X((

৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

নীলপরি বলেছেন: ইশস । ভয়ংকর ।

৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: অমানবিক কাজ।

৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ঐ মাদ্রাসার নাম ঠিকানাও উল্লেখ করা উচিৎ ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.