নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন পঙ্গু বৃটিশ সৈন্যর উপলব্ধি- সব মুসলমানই সন্ত্রাসী না

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:০৪




ইরাকে বোমার আঘাতে পা হারিয়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাওয়া ক্রিস হার্বাটের ফেসবুকে পোস্ট করা লিখা-যেটি এ পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশী শেয়ার হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস, সিএনএন সহ অন্যান্য মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। নীচে বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য উনার পোস্টটির বাংলা অনুবাদ-

কিছু মানুষের আচরণে আজ আমি সত্যিই হতাশাগ্রস্ত এবং দুঃখ ভারাক্রান্ত যখন ওরা প্রত্যাশা করে বোমার আঘাতে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার পরও কেন আমি মুসলমানদের প্রবলভাবে ঘৃণা করছিনা! কথা সত্য। একজন মুসলমানের বোমার আঘাতে আমি ছিটকে পড়ি। সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাই। কিন্তু ঠিক একি সময়ে আমার পাশে আরেকজন মুসলিম সৈন্যও বোমার আঘাতে তার হাতটি হারায়। যার পরণে বৃটিশ সেনাবাহিনীর পোষাক ছিলো।

এরপর পরই- যুদ্ধক্ষেত্র থেকে একটি চিকিৎসক দল হেলিকপ্টারে করে আমাকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায়। সেলোক গুলো মুসলমান ছিলো।
একজন শল্য চিকিৎসক খুব দ্রুত অস্ত্রোপাচার করে আমাকে এই পৃথিবীতে আবার বাঁচিয়ে তোলেন। সেই মহামানব চিকিৎসকও একজন মুসলমান ছিলেন।
একজন সেবিকা বিরামহীন ভাবে সেবা দিয়ে আমাকে সুস্থ করে তোলে। সেই সেবিকাও একজন মুসলমান ছিলেন।
একজন হেল্থকেয়ার কর্মকর্তা জীবনদাত্রী হয়ে প্রতিনিয়ত নিবিঢ় পরিচর্যা করে আমাকে হাঁটার উপযোগী করে তোলেন। সেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও একজন মুসলমান ছিলেন।
লণ্ডনে ফিরে যখন আমি আমার পিতার সাথে প্রথম দিন ঘর থেকে বের হই।- তখন একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার বিনে পয়সায় তাঁর গাড়ীতে করে আমাকে আর আমার বাবাকে পাবে পৌঁছে দেয়। সেদিনের সেই ট্যাক্সি ড্রাইভারটিও একজন মুসলমান ছিলো।
পান্থশালায় একজন ডাক্তার এসে আমার পিতাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন- কিভাবে আমাকে দরকারী ঔষধগুলো প্রতিদিন সেবন করাতে হবে। কি করলে আমি দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবো। সেই শুভাকাঙ্খী ডাক্তার ভদ্রলোকটিও একজন মুসলমান ছিলেন।

-অন্যদিকে-
এই দেশেরই একজন সাদা লোক আমার প্রিয়তমার মুখে থু থু ছিটিয়ে দেয়। কারণ এতো মানুষ থাকতে সে একজন অবলা , পঙ্গুকে কেন ভালোবাসার মানুষ হিসাবে বেছে নিলো। এই ছিলো তার অপরাধ।
এই সাদা লোকগুলিরই একজন - লাত্থি দিয়ে আমার হুইলচেয়ারটি ফেলে দেয় যেন সে তাড়াতাড়ি লিফটে ওঠতে পারে।এই সাদা লোকগুলোই - আমার পিতাকে চীৎকার করে অকথ্য গালিগালাজ করে যখন উনি ডিসবলদের জন্য সংরক্ষিত জায়গায় গাড়ি পার্ক করতে চেয়েছিলেন- চাকরি থেকে আমার ফিরে আসার দিন।

কিন্তু, আমি সহাস্যে বলতে চাই - এসবের জন্য কোনো সাদা মানুষকে আমি বিন্দু পরিমাণ ঘৃণা করিনা। তাদের অনেকেইতো আমাকে সাহস দিয়েছেন, প্রেরণা দিয়েছেন। আমি জানি- কাকে আমার ভালোবাসতে হবে। কাকে আমার অপছন্দ করতে হবে। কাকে সমাদর করত হবে , কাকে করতে হবেনা।

কিছু মানুষ নামের কুলাঙ্গারদের অবিবেচক কর্মকাণ্ডের জন্য কেন আমাকে একই সম্প্রদায়ভূক্ত পৃথিবীর সব মানুষকে ঘৃণা করতে হবে? সেটা আমি বুঝতে পারিনা। বুঝতে চাইও না। আর অপদার্থের মতো যদি আপনারা শুধু গুটিকয়েক জনের অপরাধে সবাইকে মেরে, খুন করে, ঘ্বণা করে বাঁচতে চান- তবে এটা একান্তই আপনাদের ব্যাপার। তোমাদের সেই বিকল চিন্তাভাবনা কেন আমার ওপর চাপাতে চাও। কেন সব মানুষকে ঘৃণা করতে আমার ওপর তোমরা মূর্খের মতো অযথা জোরাজুরি করো।

তোমার মনে করেছিলো- যেহেতু এক মুসলমানের বোমার আঘাতে আমার পা উড়ে গেছে সেজন্য আমি সব মুসলমানদে ঘৃণা করবো-। আমাকে উদাহরণ হিসাবে সবজায়গায় ব্যবহার করবে। তাহলে তোমার বোকার স্বর্গে আছো। একজনের অপরাধে সবাইকে ঘ্বণা করাতো তালিবানদের মতো । ঠিক তেমনি কেকেকে 'র মানুষ খুণ করা আর ওয়েস্টবরো ব্যপ্টিস্ট চার্চে আক্রমণের জন্য পৃথিবীর সব খৃষ্টানকে ঘৃণা করা যায়না।

এ সাধারণ ,সহজ ,সরল ব্যাপারটা কেন বুঝতে পারোনা??দয়া করে সমস্ত ঘৃণা হৃদয় থেকে মুছে ফেলে জীবনটা উপভোগ করো, পরিবারকে ভালোবাসো আর মন দিয়ে নিজের যে কাজ করা দরকার সে কাজটুকু করো।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:১৫

কালনী নদী বলেছেন: আমরা ইসলাম বুজি কম বাড়াবাড়ি করি বেশি যা আমাদের ধর্মকেই নোঙরা করছে।আমরাই ইসলামকে সন্ত্রাসের ধর্মে পরিনত করছি । আমাদের উচিৎ আত্তোসংসোধন । ইসলামের পরিপুর্ন শিক্ষা। ভালোবাসা ও উদারতা ।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:১৯

খেয়া ঘাট বলেছেন: সুন্দর মন্তব্য।

২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০০

কল্লোল পথিক বলেছেন: শতভাগ সহমত তার সাথে।
এক জনের অপরাধে অন্যেরা দোষী হবে কেন
আমাদের বড় পরিচয় আমরা মানুষ।
হোক সে খ্রিস্টান অথবা মুসলিম।
ইউরোপীয়ান অথবা এশিয়ান।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯

মোঃ-আনারুল ইসলাম বলেছেন: সুন্দর বিষয়

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৪| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৪

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: যেহেতু এক মুসলমানের বোমার আঘাতে আমার পা উড়ে গেছে সেজন্য আমি সব মুসলমানদে ঘৃণা করবো-। আসলে বোধহয় বেশীর ভাগ পশ্চিমারাই এটা মনে করে।। কিন্তু রাজনীতি আর মিডিয়া তা হতে দিচ্ছে না।।
বাহুল্যভাবে আরেকটি কথা বলি,তাদের নেতারা এই কুৎসিত আর নোংরা খেলা খেলছে নিজ নিজ দেশেরই স্বার্থে।। এর প্রয়োজনে মাঝে মাঝে "ক্ষুদ্র স্বার্থ"ও বিসর্জন দিচ্ছে।। পার্থক্য শুধু তৃতীয় বিশ্বে।। এখানে খেলাটা হয় শুধুই নিজেদের ক্ষমতায় আনতে বা টিকিয়ে রাখতে।।
বিরক্ত করলাম না তো??

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: এখানে খেলাটা হয় শুধুই নিজেদের ক্ষমতায় আনতে বা টিকিয়ে রাখতে।।
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

৫| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৫

প্রামানিক বলেছেন: এক জনের অপরাধের জন্য সমগ্র জাতিকে দোষী করা ঠিক না সবাই সেই অপরাধে অপরাধী নয়।

৬| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৫

রাবার বলেছেন: সহমত

৭| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কিছু মানুষ নামের কুলাঙ্গারদের অবিবেচক কর্মকাণ্ডের জন্য কেন আমাকে একই সম্প্রদায়ভূক্ত পৃথিবীর সব মানুষকে ঘৃণা করতে হবে? সেটা আমি বুঝতে পারিনা। বুঝতে চাইও না। আর অপদার্থের মতো যদি আপনারা শুধু গুটিকয়েক জনের অপরাধে সবাইকে মেরে, খুন করে, ঘ্বণা করে বাঁচতে চান- তবে এটা একান্তই আপনাদের ব্যাপার

একজনের অপরাধে সবাইকে ঘ্বণা করাতো তালিবানদের মতো । ঠিক তেমনি কেকেকে 'র মানুষ খুণ করা আর ওয়েস্টবরো ব্যপ্টিস্ট চার্চে আক্রমণের জন্য পৃথিবীর সব খৃষ্টানকে ঘৃণা করা যায়না।

এ সাধারণ ,সহজ ,সরল ব্যাপারটা কেন বুঝতে পারোনা??দয়া করে সমস্ত ঘৃণা হৃদয় থেকে মুছে ফেলে জীবনটা উপভোগ করো, পরিবারকে ভালোবাসো আর মন দিয়ে নিজের যে কাজ করা দরকার সে কাজটুকু করো।

দারুন বলেছেন তিনি।

এটাই সত্য।

বাকী যা গচ্ছে তা নংরা রাজনীতি। আম বিশ্ব মানুষ তার মতোই ভাবে! সাম্রাজ্যবাদী আর স্বার্থবাদী নোংরা কিছূ মানুষ ছাড়া!

৮| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: এরকম মানুষই পারে পৃথিবীর অন্ধত্ব দূর করতে। তার জন্যে শ্রদ্ধা এবং শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.