![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানববৃক্ষ
রাস্তার পাশে যে বৃক্ষটি দাঁড়িয়ে আছে-অবারিত ছায়া মেলে।
নির্বাক যে বৃক্ষটি শুধু অনুভব করে যায়।
এই বৃক্ষ একদিন মানুষ ছিলো।
আমার পচে যাওয়া মাংসধূলোতে জেগে ওঠা বৃক্ষের মাঝে আমি আশ্রয় নিয়েছি।
জীবনে বেঁচে থাকতে আমি কিছুই হতে পারিনি। না প্রেমিক, না বিপ্লবী।
ভালোবাসার অবহেলায় আমার হৃদয়মথিত কান্না বুকের ভিতরে জমাট হয়েছে।
সে কান্না কুয়াশা শিশির হয়ে কোনো ঘাসের ওপরে আশ্রয় পায়নি।
মৃতভয়ে সঙ্গীন আমি কোনোদিন পারিনি বিপ্লবী হতে।
বজ্রপাতের অগ্নুস্ফুলিঙ্গ দেখে যে উঠোনে নামতে ভয় পায়
সে বিপ্লবী হয়ে বারুদের সামনে যাবে কেমন করে?
আমার সমস্ত দ্রোহ তাই মৃত নদীর মতো আমার বুকের ভিতর মারা গেছে।
আমি কবিও হতে চেয়েছিলাম।
সারারাত জেগে আকাশের তারার সাথে মিতালী করে -যে কবিতাটি লিখেছিলাম-
তা সম্পাদকের ময়লা রাখার ঝুলিতে আশ্রিত হয়েছে।
কোনো কবির সামনে দাঁড়িয়ে দুলাইন আবৃতি করা দূরের কথা।
কোনো কবির ছায়াও আমি স্পর্শ করতে পারিনি।
স্বার্থপরতায় এতো বেশী মগ্ন ছিলাম -মৃত্যবদি আমি কারো পাশে দাঁড়াইনি
না পাওয়ার বেদনায় ক্রোধান্বিত আমি উঠোনের পাখীগুলোকে
লাঠি দিয়ে তাড়া করে- আমি পাখীর ও শত্রু হয়েছি না জানি কতবার।
দুষ্টু ছেলের গুলতির গুলিতে কাঁচ ভেঙ্গে গেলে চীৎকার করে
অশ্রাব্য গালি দিয়ে দাওয়া করেছি।
আর এখন দেখুন-
প্রেমিক-প্রেমিকা হাতে হাত রেখে বসে আছে
আমার শিকড়ের ওপর। ভালো লাগে।
বিপ্লবী ছেলেটি দ্রোহের পোস্টার
আমার বুকে পেরেক টুকে সেঁটে দিলো- বিশ্বাস করেন আমি কষ্ট পাইনি।
কিছুদিন আগে এককবি আমার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে
আমার পল্লবিত স্নিগ্ধ ছায়ার প্রশংসা করেছিলেন।
আমি আনন্দে শিহরতি হয়ে বাতাসের সাথে দুলেছিলাম।
যেপাখীগুলো আমি ওঠোন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম-
তাদের উত্তরসূরীরা আজ ঝাঁকে ঝাঁকে আমার ডালে এসে বসে।
এক কাঠ ঠোকরা পাখি ঠুকরে ঠুকরে আমার বুকের ভিতর বাসা বেঁধেছে।
দুষ্টু ছেলেরা গুলতির গুলিতে আমার ফলগুলোকে নিশানা বানায়।
আমার গাছের ডাল ভেঙ্গে নিয়ে গেছে কত শীতার্ত মানুষ।
আমি পুড়ে কয়লা অঙ্গার হয়ে তাদের উত্তাপ দিয়েছি।
এভাবেই আমিও জীবিত গাছ দিনে দিনে বুড়ো হবো।
হয়তোবা পচে গিয়ে আবার কোনো বৃক্ষ হয়ে জেগে ওঠবো।
অথবা কোনো কাঠকুড়ানির চুলোর ছাই হবো।
জীবিত মানুষ থাকতে আমার যে দুঃখ ছিলো-
মরে গিয়ে পচামাংসের ধুলোতে জেগে ওঠা বৃক্ষ হয়ে
সেই সব দুঃখ আজ আমার মুছে গেছে।
এখন আমি কোনো বিখ্যাত কবির প্রশংসার পল্লবিত পত্র হতে পারি।
শীতার্ত মানুষের উত্তাপের অঙ্গার হতে পারি।
ফল হয়ে কোনো পাখীর আহার হতে পারি।
প্রখর রোদের তেজোদীপ্ত দিনে কোনো প্রেমিক-প্রেমিকার আশ্রয়ের ছায়া হতে পারি।
অথবা আবার মরে গিয়ে কোনো কাঠ কুড়ানির চুলোর পুড়ে যাওয়া ছাইও হতে পারি।
যারা আমাকে অবহেলায় তাড়িয়ে দিয়েছিলো-তারাও আমার কাছে আসে।
আমি যাদের তাড়িয়ে দিয়েছিলাম ওরাও আমার কাছে আসে।
আমাদের মতো অর্বাচিনরা জীবিত থেকে কিছুই করতে পারেনা।
কিন্তু মরে গিয়ে বৃক্ষ হতে পারলে এই অর্বাচিনরাই কত কিছু হতে পারে।
তাই দুঃখ, হতাশাগ্রস্থ হওয়ার কিছুই নেই আমার।
এই নিষ্ফল দেহ তাই মরে গিয়ে ধূলো হোক।
সেই ধূলোর ওপর কোনো বৃক্ষ বেঁচে থাকুক।
-আরিফ মাহমুদ
আটলান্টা
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৯
খেয়া ঘাট বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ রইলো
২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৮
কল্লোল পথিক বলেছেন: বাহ!বেশ হয়েছে।
চমৎকার কবিতা।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২০
খেয়া ঘাট বলেছেন: বিনম্র ধন্যবাদ রইলো।
৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪১
উল্টা দূরবীন বলেছেন: চমৎকার কবিতা।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৫
খেয়া ঘাট বলেছেন: আমার বিনম্র ধন্যবাদ রইলো।
৪| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭
কালের সময় বলেছেন: অনেক ভালো লেখছেন কাব্য । মুগ্ধ হলাম পড়ে ।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৩
খেয়া ঘাট বলেছেন: এখানে অনেকগুলো বানান ভুল আছে। সংশোধন করে নিতে হবে। আপনাকে ধন্যবাদ কবিতাটি পড়ার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪০
অগ্নি সারথি বলেছেন: চমৎকার ভাই।