নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

শান্তি, ভালোবাসার ঐক্যতান

০২ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০২

মহাকাশ অভিযাত্রী হিসাবে মহাশূণ্য থেকে একবার পৃথিবীর দিকে দৃষ্টিপাত করুন। অবাক বিস্ময়ে দেখবেন- একটাই বিশ্ব, একটাই ধরিত্রী, একটাই হিউম্যানিটি আর একটা ক্ষুদ্র নীল ঘূর্ণবলয়ের ভিতর সাত বিলিয়ন মানুষের বাস। এই অতি ক্ষুদ্র বিন্দুর মাঝেই আমাদের চলমান শ্বাসপ্রশ্বাস, আশা, ভালোবাসা, যুদ্ধ, সংঘাত, লোভ, ব্যর্থতা, হাহাকার। শুভ্র মানুষের হৃদয়ের মথিত ভালোবাসায় বুদ্ধিমান মানুষের এই সুন্দর পৃথিবী হতে পারতো -জলপ্রপাতের মতো, বৃক্ষের মতো, নীল আকাশের মতো, পাখির নম্র পালকের মতো, শিশিরের মতো, শ্রাবণের মেঘেদের মতো, জোছনা, ফুল, প্রজাপতি মতো, পানকৌড়ির ডানার মতো, চাঁদের জোছনার নরম আলোর মতো। কিন্তু এই পৃথিবীর কী দুর্দশা, কী অদ্ভূত ভয়াল কাণ্ড। এক বিলিয়ন মানুষের তৃষ্না নিবারণের জন্য নেই কোনো পানি। কোনো বৃক্ষ, কোনো পশু,কোনো মৎস্য, কোনো পতঙ্গ, এমনকি একটা ছোট পিঁপড়াও অভুক্ত থাকেনা। অথচ, ২৫ মিলিয়ন মানব শিশু প্রতিরাতে নিদারুণ ক্ষুধা নিয়ে ঘুমোতে গিয়ে ক্ষুধার কষ্টে আরেকটি সূর্যোদয়ের প্রতীক্ষায় থাকে। মাত্র আটভাগ মানুষের কাছেই পৃথিবীর বিলিয়ন মানুষের সম্পদ কুক্ষিগত । সাতজন কর্পোরেট বসদের সম্পদের পরিমাণ ১৬৪ দেশের সম্পদের সমান। হায়! সভ্যতা। পৃথিবী নামক গ্রহের কী অভিশাপ! প্রতিটি মুহুর্তে মানুষের হাতে মানুষ বিরামহীন খুন হচ্ছে। ধান, গম, ভুট্টার বীজের চেয়েও বেশি বারুদ,গোলা, মারণাস্ত্র অস্ত্রকারখানায় উৎপন্ন হচ্ছে। আমেরিকা মাদার অব অল বম্ব নিক্ষেপ করে নিজের কর্তৃত্ব শেষ হতে না হতেই রাশিয়া ১০০ টন ওজনের ফাদার অব অল বম্বের প্রদর্শনী করে হুঙকার প্রকাশ করছে। পাশাপাশি কার্বন ইমিশান,ফসিশ ফুয়েলে প্রতিটি মুহুর্তে নষ্ট হচ্ছে পৃথিবীর ভারসাম্য। মানুষ নিজের ঘরে এয়ারকন্ডিশান লাগিয়ে মনে করে-বাহ বেশ এইতো আছি। কিন্তু পৃথিবী নামক এই গ্রহেরও যে একটা নিজস্ব শীতাতপ নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা রয়েছে-তা বেমালুম ভুলে গেছি। কোনো কারণ ছাড়াই ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, কাশ্মির, কোরিয়া, প্যালেস্টাইন, বর্মা, সোমালিয়া, সুদান, লিবিয়া, মিশর, ইউক্রেন সহ পুরো পৃথিবী জুড়ে প্রতি মুহুর্তে কোনো না কোনো শিশু মারা যাচ্ছে। বিশ্ব মানবতা আজ পৃথিবীর কিছু লোভী রাষ্ট্রনায়ক, সমরবাজ, অর্থনৈতিক দানবের কাছে পুরোপুরি জিম্মি ।

জাতিসংঘের পরবর্তী শান্তি সম্মেলন একটা স্পেশশিপে হোক। সেখানে আমন্ত্রিত হোক-লোভি কর্পোরেট দাসরা , অস্ত্রকারখানার সিইওরা, বিখ্যাত নাস্তিক, আস্তিক পণ্ডিতরা, বিভিন্ন ধর্মের গুরুরা, পারমাণবিক ক্ষমতার অধিকারী সব রাষ্ট্রনায়করা, পৃথিবীর সব যুদ্ধবাজরা, গডফাদার মাফিয়ারা। আমেরিকার ট্রাম্প কোরিয়ার কিমের পাশে বসুক, ভেটিকানের পোপ বসুক , কাবা শরীফের ইমামের পাশে। নাস্তিক স্কলার বসুক আস্তিক মাওলানার পাশে । যুদ্ধবাজ সিইও, সিরিয়ার শিশুর পাশে। এবার অরবিটে ঘূর্ণায়মান স্পেস থেকে এই নীল ডট বিন্দুর দিকে একবার সবাই চেয়ে দেখুন। ট্রিলিয়ন , ট্রিলিয়ন স্পেশে এই একটি মাত্র ক্ষুদ্র বিন্দুতেই আছে শুধু বুদ্ধিমান মানুষ। - না, এখানে কোনো সীমা নেই, কোনো বাউন্ডারী নেই। সব মানুষ এক, সব সীমানা এক। মাটির সাথে মাটি, পানির সাথে পানি মিশে গেছে। তবে, মানুষ কেন মানুষের সাথে মিশে যেতে পারেনা। আরব , ইসরাইলের মাঝে কেন ভালোবাসা হতে পারেনা। কালো সাদাদের, নাস্তিক আস্তিকদের , মুসলমানরা জিউদের হৃদয়ে কেন জায়গা করে নিতে পারেনা। কোরআন, বেদ, বাইবেল, বিজ্ঞান সবতো একই লাইব্রেরিতে পাশাপাশি থাকে। কোনো বিরোধ করেনা। তবে, মানুষে মানুষে কেন এতো হানাহানি। কেন এইসব যুদ্ধবিগ্রহ। আউটার স্পেসে অন্য গ্রহের সন্ধানে মানুষ মগ্ন হয়ে আছে, কিন্তু এদিকে নিজের গ্রহটাই আজ বিপন্ন। নাসার প্রধান সায়েন্টিস্ট এলেন স্টফনের "বিলিয়ন ডলার খরচ করে হলেও বাইরে প্রাণের স্পন্দন শুনতে চাই"। একথা শুনে-বর্তমান দুনিয়ার সেরা দার্শনিক হার্ভাডের অধ্যাপক মাইকেল সেণ্ডাল বলেন- কিন্তু প্রতি রাতে এই পৃথিবীতে ১ বিলিয়ন অভুক্ত শিশুর কান্নার আওয়াজ শুণতে পান না। তেল, সাম্রজ্য, দাম্ভিকতা, শ্রেষ্টত্ব, অহমিকার উন্মাদনাময় যুদ্ধের গোলা বারুদে একটি পাখির পালকও কেন আগুনে পুড়বে, একটি শিশুও কেন পৃথিবীতে মারা যাবে? পারমানবিক চুল্লির ওপর তপ্ত হচ্ছে পুরো দুনিয়া। ৭ বিলিয়ন মানুষের জীবন সাতজন মানুষের ফিঙ্গার টিপের ওপর আজ জিম্মী। নিজের দেহটাই যেখান চিরস্থায়ী না, সেখানে কীসের জন্য এতো আকাঙ্ক্ষা, কীসের এতো লোভ। বিশ্বাসের চর্চা হোক, মুক্ত চর্চা হোক, ধর্মের চর্চা হোক। কিন্তু সবার আগে পৃথিবীর মানুষগুলো, এই পৃথিবীর সব শিশুগুলো এই সবুজ পৃথিবীতে সবুজের সন্তান হয়ে শুভ্রভাবে শান্তিতে বেঁচে থাকুক।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন:


নাসার প্রধান সায়েন্টিস্ট এলেন স্টফনের "বিলিয়ন ডলার খরচ করে হলেও বাইরে প্রাণের স্পন্দন শুনতে চাই"।

দার্শনিক হার্ভাডের অধ্যাপক মাইকেল সেণ্ডাল বলেন- ''কিন্তু প্রতি রাতে এই পৃথিবীতে ১ বিলিয়ন অভুক্ত শিশুর কান্নার আওয়াজ শুণতে পান না।''

..............................
বিজ্ঞানীদের মাঝেও বিভেদ!!! উনাদেরও ঐ স্পেস শিপে পাঠানো হোক।

২| ০২ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৩

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক সুন্দর একটা পোষ্ট। ভালো লাগলো পড়তে পেরে।

আমার অাফসোস করা ছাড়া আর মনে হয় কিছুই করার নেই!!!!

৩| ০৭ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:৫৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: বিলিয়ন ডলার খরচ করে যদি পৃথিবীর বাইরে প্রাণের স্পন্দন পাওয়া যায়, সেটা ট্রিলিয়ন ডলারের আবিষ্কার হবে জনাব। আপনার কথামত তো তাইলে চান্দে যাওয়াও ভুল হইছে। সবকিছুরই দরকার আছে জনাব। পৃথিবীর বাইরে যদি প্রাণের স্পন্দন পাওয়া যায়, তার মানে হলো সেখানে একটা জীবন ধারনের উপযোগী পরিবেশ আছে। সেই পৃথিবীতে আমরা অসাধারণ কিছু করেও ফেলতে পারি, মানুষের জন্যেই। কী মনে করেন আপনি এত লোড ধরিত্রী কতদিন সইবে? কত প্রেসার দিবেন মারে? আপনার টাকা দিয়ে আপনি দান খয়রাত করেন, বিলাস ব্যসন করেন, আবার জ্ঞানার্জনের জন্যে খরচও করেন। করেন কি না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.