নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিস্ময়কর বাংলাদেশ

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:১০


কান্ট্রি অব দ্য ওয়ার্ল্ড - বিস্ময়কর বাংলাদেশ।

৭১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিলো ৭ কোটি। আর চালের উৎপাদন ছিলো মাত্র ১০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। বাড়ছে মানুষ, বাড়ছে ঘরবাড়ি, বাড়ছে রাস্তাঘাট। ফলে, প্রতিদিনই কমছে আবাদি জমির পরিমাণ। অথচ এক বিস্ময়কর ব্যাপার - চালের উৎপাদন এখন ৩৩ মিলিয়ন মেট্রিকটন। পুরো বিশ্বে বাংলাদেশ চতুর্থ চাল উৎপাদনকারি দেশ।

শুধু চাল নয়। চালের সাথে কৃষকরা অদ্ভুতভাবে ফলন বাড়িয়েছে ডাল, গম, আঁখ সহ নানারকমের ফল ইত্যাদির। এদেশের কৃষকরা হলেন একেকটি সূর্য। ভোরের সূর্য যেমন পৃথিবীর কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ধীরে ধীরে আপন গতিতে উদিত হয়। চাইলেও কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনা। ঠিক তেমনি- নানা রকমের দূর্নীতি, লুটপাটের মাঝেও একেকজন কৃষক একেকটি সূর্য হয়ে বাংলার আকাশে উদিত হয়েছেন বলেই-দুবেলা পেট ভরে খেয়ে সতেরকোটি মানুষ বেঁচে আছে। জিডিপি'র ১৪.১০ শতাংশ অবদান এই কৃষকদের। লাল স্যালুট আপনাদের।

কৃষক যদি এদেশের সূর্যসন্তান হয়ে থাকেন। তবে নক্ষত্র হলেন আমাদের জেলেরা। ২০১৮ সালে ৬৯ হাজার মেট্রিকটন মাছ রপ্তানী করে দেশ আয় করেছে চার হাজার পাঁচশত কোটি টাকা। পুরো বিশ্বে ৩য় । সালাম জেলে ভাইয়েরা লাল সেলাম।

চাল আর মাছের পর নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে-আমাদের গার্মেন্টেসের বোনেরা। ৩০.৬১ বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশ বর্তমানে পুরো বিশ্বে ২য়। উন্নত বিশ্বের পশ এলাকার অভিজাত মলে দামী ব্রান্ডের কাপড়ে এখন অহরহ দেখা মিলে' মেড ইন বাংলাদেশ' ট্যাগ। আনন্দের আতিশায্যে চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।

তারপর আসে প্রবাসী শ্রমিক। স্বাধীনতার পর রেমিটেন্স যেখানে ছিলো মাত্র ২৩.৭ মিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালে তা পৌঁছে গেছে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে । যার ফলে ফরেন রিজার্ভের পরিমাণ এখন ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । এর জোরেই তৈরি হচ্ছে পদ্মা সেতু। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে মাসের পর মাস রেমিটেন্সের যোগান দিয়ে এই সব শ্রমিক ভাইদের স্বপ্ন থাকে কবে তারা নিজ দেশে ফিরবে। আর লুটেরাদের স্বপ্ন থাকে কবে দেশের সব টাকা লুট করে নিয়ে গিয়ে বিদেশে অট্টালিকা বানাবে।

এই কৃষি, এই মৎস্য, এই গার্মেন্টস আর বৈদেশিক রেমিটেন্সের বিস্ময়কর সাফল্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন পৃথিবীতে ৪২ তম। ১৯৭০ সালে পার ক্যাপিটা যেখানে ছিলো মাত্র ১৩৫ ডলার এখন তা ১৭৫১ ডলার। পাশাপাশি বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। ৭২ সালে গড় আয়ু ছিলো মাত্র ৪০ বছর। আর এখন গড় আয়ু হলো ৭২ বছর।

কৃষকরা যেখানে ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিং-এ চতুর্থ, জেলেরা যেখানে ৩য়, গার্মেন্টস শিল্প যেখানে পুরো বিশ্বে ২য়। সেখানে, এবারও যথারীতি ডাব্বা মেরেছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। ১০০,২০০,৫০০ দূরের কথা ১ হাজারের ভিতরেও নেই। কোটি A প্লাশের হাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে যেভাবে প্রতি বছর বছর ধাক্কা মারছে-সেইহারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাংকিং এর মানও প্রতি বছর বছর কমছে।

তবে, চমক দেখিয়েছে আবারও দূর্নীতিতে, যথারীতি নাম্বার দুই। দূর্নীতিতে দেশ যদি চ্যাম্পিয়ন হয়, তবে বায়ূদূষণে রানার্সআপ ঢাকা শহর ৩য় দূষিত নগরীর গৌরব অর্জন করেছে। একটি দেশের প্রবেশপথ হলো সে দেশের এয়ারপোর্ট। যেটি মর্যাদা পেয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে পুঁথিগন্ধময় এয়ারপোর্ট হিসাবে। বড় বড় আমলারা বিদেশে গিয়ে টাকা দিয়ে মাল কেনেন, কিন্তু রুচি দিয়ে কি পরিচ্ছন্নতা কিনে নিয়ে আনতে পারেন না?

সর্বরোগের মহৌঔষধ বিক্রেতা এই দেশের স্বাস্থ্য সেবার বেহাল দশা। healthcare access and quality ইনডেক্সে বাংলাদেশ বিশ্বে ১৩৫ তম। আর পানি আর হাওয়া দিয়ে গাড়ি চালানোয় পটু আমরা বিশ্ব উদ্ভাবনী দেশের র‌্যাংকিঙ-এ ১৭৮ তম অবস্থানে।

কোনো কোনো খেলায় দেখবেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হওয়ার পরও কয়েকজন প্লেয়ারের একেবারে বাজে পারফর্মন্সের জন্য পুরো টিমটা চ্যাম্পিয়ন হতে গিয়েও বারবার খেলায় হেরে যায়। কারণ কালেকটিভ গুডের অভাব। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিউট্রশনাল সাপোর্ট আর এ্যনবায়োরেনমেন্টাল প্রটেকশানে চরম ব্যর্থতায় আমাদেরও হয়েছে সেই গতি। কৃষক, জেলে, গার্মেন্টসের মজুর, প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়েরা বিশ্বের সাথে তুমুল প্রতিযোগিতার উন্নয়নের খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেও দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, শিক্ষার অধগতি, রাজনৈতিক দৌরাত্ন্যের গোলিয়াথদের জন্য জন্য প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ বিজয়ের চূড়ান্ত লক্ষে পৌঁছাতে পারছেনা।
কিন্তু ইতিহাস বলে গোলিয়াথরা শেষপর্যন্ত হেরে যায়। বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় লাভ করবেই।
বিজয়ের এই দিনে ভোরের চির দীপ্তিমান লাল সূর্যের আশা নিয়ে সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। বিজয়ী বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৩৫

রাফা বলেছেন: গোলিয়াথদের পরাজিত করেই আমরা আমাদের সোনার বাংলা গড়বো,ইনশা-আল্লাহ্ ।আনন্দ বেদনার বিজয় দিবসের উষালগ্নে আপনাকেও বিজয়ের শুভেচ্ছা ।

ধন্যবাদ,খে.ঘাট।অতি অল্প কথায় সুন্দর করে গুছিয়ে লেখায়।ব্যার্থতার কারনটা যখন উপলব্দী করা যায় সেখান থেকেই শুরু হয় সংশোধনের কাজটা।কাজেই সফলতা আমাদের ধরা দেবেই।

জয় বাংলা,
জয় বঙ্গবন্ধু।

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৩৬

চাঙ্কু বলেছেন: বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!

৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৫৬

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: এই কৃষি, এই মৎস্য, এই গার্মেন্টস আর বৈদেশিক রেমিটেন্সের বিস্ময়কর সাফল্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি
.................................................................................................................................................
যে কোন জাতি র অর্থনীতি র প্রধান চালিকা শক্তি, তার নিজস্ব উৎপাদন
যা আমাদের আছে, প্রয়োজন শুধু সঠিক যোগান ও বাস্তবায়ন ।

৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:২০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমাদের দেশের সব আছে। খালি সৎ নেতা নেই। তা না হলে, এই দেশের কোন কারণই নেই গরীব থাকার...

৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৩১

ইসমত বলেছেন: বেশ গুছানো লেখা, আশাবাদী লেখা। আমরা আশাবাদী জাতি।

৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৫০

নজসু বলেছেন:
দেশের তরে যুদ্ধ করে দিল যারা প্রাণ
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে গাই তাদেরই গান।

৭| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০৯

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: তথ্যগুলো আমাদের প্রাণে অনুপ্রেরণা যোগায়। শুধু যদি আমাদের রাজনীতিকরা আর একটু সৎ হতেন তাহলে তো কোন কথাই ছিল না।

৮| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ছবি এবং লেখা দুটাই খুব ভালো হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.