নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময় কি শুধুই মহাকাশে হারিয়ে যাওয়া সাদামেঘ

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৩



জীবনের সেলিব্রেশন মুহুর্তে, মুহুর্তের সেলিব্রেশন সময়ে আর সময়ের দিন, তারিখ থাকে ক্যালেণ্ডারে। সময়ের শুরুও নেই, শেষও নেই । সময় বদলায়ও না। শুধু ক্যালেণ্ডারটাই বদলায়। হাসি, কান্না , আনন্দ, বেদনা সবই মুহুর্ত। কেউ একটানা কাঁদতেও পারেনা আবার কেউ একটানা হাসতেও পারেনা। থামতে হয়। জিরাতে হয়। মানুষের সব অনুভূতি এমনকি প্রার্থণাও সময়ের সাথে সম্পর্কিত। নামাজের সময়, পূজোর সময়, কাজের সময়, খাওয়ার সময়, অফিসের সময়, সেলিব্রেশনের সময়। সময় টিক.টিক.টিক, বয়েই যাচ্ছে। ঘড়ির কাটাগুলো দেখা যায়। কিন্তু সময় দেখা যায়না। ঘড়ি তৈরি করেছে মানুষ, কিন্তু সময় বানালো কে ? সময় নেই এমন কোনো জায়গাও নেই। সময় সব জায়গায় বিরাজমান। যে সময় নিয়েই সব কিছু। জন্ম থেকে মৃত্যু একটা সময়ের ব্রাকেট। কিন্তু এই জীবনে আসলে 'সময়'টা কি? পুরো জীবনটাই ডমিনেটেড বাই টাইম। সময়ের ভিতরেই নিমজ্জমান জীবনে নো ক্লু একচ্যুয়িলি হুয়াট টাইম ইজ? একে ধরাও যায়না, ছোঁয়া ও যায়না, দেখাও যায়না, এর জন্ম কবে, মৃত্যু কবে তা জানা যায়না, এর যৌগ কি তাও জানার কোনোও উপায় নেই। তারপরও সময় বিশ্বাস করেনা এমন কোনো বোকাও কেউ নেই।

এখন কটা বাজে। দেশ, স্থান ভেদে একেক জায়গায় একেক সময়। লণ্ডনে, বাংলাদেশে, ভারতে, পাকিস্তানে, গুয়েতেমালা, কানাডায়, আম্রিকায় একেক জায়গায় একেক সময়। এই লেখাটি এখন যিনি পড়ছেন। কারো কাছে বিকেল পাঁচটা, কারো কাছে ভোর পাঁচটা। কোথাও ২০১৮, কোথাও ২০১৯। পুরো সালটাই বদলে গেছে। একজনের সময়ের সাথে আরেকজনের সময়ের কোনো মিল নেই । নানা রকমের জবাব। কারো সাথে কারো মিল না থাকা সত্তেও অথচ সবাই সঠিক। এই অনৈক্যটাই ঐক্য। আমরা সবাই সেইম মোমেন্টে বাট ডিফারেন্ট টাইম জোনে আছি।

এখন কোন সাল ? খৃষ্ট ক্যালেন্ডার ২০১৮, হিন্দু ক্যালেণ্ডার ২০৭৪, মুসলিম ক্যালেণ্ডার ১৪৪০ , বাংলা ১৪২৫, পারসিদের জন্য ১৫৮৮, জৈনদের জন্য ২৫৪৪
একই মুমুন্টে থেকেও আমরা শুধু ঘন্টা নয়, মাস নয়, বছর নয় ডিফারেন্ট ইরা বা যুগের মাঝে আছি।

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী সেলিব্রেটেড দিন কোনো জন্মদিন, এনিবার্সারি, ইন্ডিপেন্ডেটেনটস , ভিক্টোরি দিবস নয়। সবচেয়ে সেলিব্রেটেড দিনটি হলো-নিউ ইয়ার্স ডে। ওয়েস্টার্ণ ইউরোপিয়ানরা নতুন বছর সুচনা করে - জানুয়ারিতে, চায়নীজ, ভিয়েতনাম, কোরিয়ানরা ফেব্রুয়ারিতে, তিব্বত, ইরানরা মার্চে, শ্রিলংকা, বার্মা,থাইল্যান্ড- এপ্রিলে, আদি রোমান আম্পায়ার বর্তমান ইটালিয়ানরা মে'তে, নাইজেরিয়ানরা করে জুন , জুলাই এ , অনেক পার্সিয়ানরা করে অগাস্টে , জুইস আর ইথিওপিয়ানরা সেপ্টেম্বরে, হিন্দুরা অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বরে। বছরের প্রতি মাসেই কোনো না কোনো সেলিব্রেশন আছে।

নতুন বছরের সেলিব্রেশনও একেক দেশে একেক রকম। ভারতীয়রা দেওয়ালি পালন করে আলো জ্বালিয়ে। স্কটল্যাণ্ডের অধিবাসীরা করে বিশাল বড় ফায়ার বল আকাশে নিক্ষেপ করে। পানামা , ইকুয়েডররা করে শত্রুর কুশপত্তলিকা দাহ করে। মানে, সকলেরই কেউ না কেউ শত্রু আছে। অতীত রোমান কাস্টম অনুযায়ী ইতালীরা এখনো বাড়ির পুরানো জিনিসপত্র বাইরে ছূড়ে দিয়ে তাদের নতুন বছরের সুচনা করে। পুরাতন সব চলে যাক, নতুন শুভদিন জীবনে আসুক-এই বাসনা। আবার হাঙ্গেরীয়ানরা বাড়ির কোনো কিছুই সেদিন বাইরে নিয়ে যায়না। তাদের ধারণা-ঘর থেকে কিছু বের হওয়া মানেই পেনিল্যাস হয়ে যাওয়া। স্পেনীশদের সেলিব্রেশন সবচেয়ে চমৎকার। ওরা রাত বারোটা বাজার ঠিক ১২ সেকেণ্ড আগে ১২ টি আঙ্গুর নিয়ে বসে। প্রতি মাসের জন্য একটি করে আঙ্গুর। যে আঙ্গুরটি মিষ্টি সেই মাসটি ভালো হবে, যেটি টক সেই মাসটি খারাপ যাবে। ডেনমার্কের অধিবাসীরা চেয়ারের ওপরে ওঠে জাম্প দেয়। যে যত দূরে জাম্প দিতে পারবে তার তত বেশী আয় হবে। পোলিশরা পুরানো ক্রোকারীজ বাইরে ছুঁড়ে মারে। যে ক্রোকারিজ যত বেশি ভাঙ্গবে তার তত বেশী বন্ধু জুটবে। আয়ারল্যান্ডে নতুন বছরে কারো ঘরে লাল চুলের মহিলার আগমন মানেই দুঃসংবাদ। আর কালো চুল হলো সুসংবাদ । গ্রীসদের জন্য নতুন বছরে সৌভাগ্যের প্রতীক হলো পেঁয়াজ। প্রেমিক-প্রেমিকারা অথবা দমপতিরা ভোরে পেঁয়াজ দিয়ে আলতো করে মাথায় টুকে একজন আরেকজনের ঘুম ভাঙ্গায়। আর্জেন্টিনা আর কলম্বিয়ানরা খালি স্যুটকেস নিয়ে রাস্তার রাস্তায় হাঁটে। যে যত বেশী সেদিন খালি স্যুটকেস নিয়ে রাস্তায় হাঁটবে তার তত বেশি ভ্রমনের সম্ভাবনা বাড়বে। নতুন বছরের সবচেয়ে অদ্ভুত বিশ্বাস হলো মেক্সিকো , ল্যাটিন আমেরিকানদের। পরনের আণ্ডার গার্মেন্ট- যদি লাল হয় তবে তা -গুডলাক, হলুদ হলো জুটবে ভালো বন্ধু, সবুজ আণ্ডার গার্মেন্ট মানেই সুস্বাস্থ্য, আর যদি নানা রংএর মিশ্রণ হয় তবে তার কিছুই জুটবেনা। আর পৃথিবীর সবচেয়ে ভাবগম্ভীর উদযাপন হলো-বালিতে। সম্পূর্ণরুপে নীরবতা। একেবারে কমপ্লিটলি সাইলেন্স। ওদের মতে নতুন বছর সেলিব্রশনের জন্য নয় , নতুন বছর রিফ্লেক্টের নিজেকে অনুধাবনের।

নতুন বছর নিয়ে সবচেয়ে সরস কথাটি বলেছেন- প্রিয় লেখক শিবরাম চক্রবর্তী। " বছর নিয়ে যতই লাফালাফি করনা কেন- কোনো বছরই এক বছরের বেশী টেকেনা।" বছর না টিকুক, কিন্তু সবার জীবনে নিরন্তর আনন্দ টিকে থাকুক এবং সাথে নতুন আনন্দ যোগ হোক এই শুভকামনায় ২০১৯।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৮

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:




কোন বছর কিন্তু ১৮ মাস হয় না ;) B-) ;)

নতুন বছরের শুভেচ্ছা ।






কোন বছর কিন্তু ১৮ মাস হয় না ;) B-) ;)

নতুন বছরের শুভেচ্ছা ।

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৬

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: নববর্ষের শুভেচ্ছা সবার জন্য!

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: সময়কে আমরা আটকে রেখেছি কেবল ২৪টা ঘণ্টা আর ঘড়ির মধ্যেই। সময়ের ব্যপ্তি এত ক্ষুদ্র নয় নিশ্চয়ই। কেবলমাত্র সেকেন্ড , বছর দিয়ে সময়কে আটকে রাখা যাবে না।

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: শুভ নববর্ষ, প্রিয় আরিফ ভাই!

৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৪:২৫

অন্তরন্তর বলেছেন: হ্যাপি নিউ ইয়ার খেয়াঘাট ভাই। অনেক দিন পর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.