নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

"স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক দলিল হওয়া কতিপয় আগুন মানুষ

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৪:৩৪



মনে পড়ে ইসরাইলি সেনার মিলিটারি ক্রাকডাউনের সময় মাত্র চৌদ্দ বছরের স্কুল পড়ুয়া ইহুদি কিশোর ছেলেটির কথা- "দ্য আননোন রেভেল"। যে মাথায় ফিলিস্তিনের পতাকা বেঁধে মুখে চীৎকার করে বলেছিলো- ইতিহাসের এই নিষ্ঠুরতম বর্বরতায় তোমরা আমাকে শামিল করোনা। আমি তোমাদের আর কেউ নই। ইসরাইলের হৃদপিন্ডে গড়ে ওঠা কয়েকজন বিপ্লবী ইহুদি যুবকের সংগঠন "নেতুরেই কার্টা" যারা ইহুদি রাষ্ট্রের অস্তিত্বই বিশ্বাস করেনা। নিজের জন্মভূমিতে ইসরাইলি পুলিশের হেডকোয়ার্টার 'হামাথেহ হিআর্থজি''র সামনে দাঁড়িয়ে যারা ইসরাইলি পতাকা পোড়ায় । বুড়ো বিপ্লবী ৯০ বছর বয়সের নোয়াম চমস্কি যিনি একবিংশ শতাব্দীর সমস্ত তাত্তিক বুদ্ধিজীবীর গুরু- ইহুদি হয়েও তিনি ফিলিস্তিন মুক্তির জন্য অবিরাম বাক আর কলম সংগ্রাম জারি রাখেন।

মনে পড়ে- এইতো কিছুদিন আগে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় ঢাকার রাজপথে পুলিশবাহিনীর সামনে একাই দাঁড়িয়ে থাকা সেই কিশোর ছাত্রটির কথা। ঠিক যেমন ১৯৮৯ সালের জুনে চায়নার পিপলস লিবারেশন আর্মির ৫৩ টি ট্যাংকের সামনে একাই দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক বিপ্লবী । "ট্যাংক ম্যান" নামেই যিনি গোটা বিশ্বে পরিচিত। যে ছবিটি পৃথিবীর বিভিন্ন যাদুঘরের দেয়ালে মুক্তিকামী বিপ্লবী মানুষের পোস্টার হিসাবে সাঁটানো আছে। দুই জায়গায়, দুই সময়ের , দুই ছবির কী অদ্ভুত মিল!!

মনে পড়ে, ইউ এস আর্মির চৌকষ অফিসার Lt. Ehren Watada'র কথা। ফল্স এভিডেন্সের ওপর ভিত্তি করে সাজানো ইরাক যুদ্ধে যেতে যিনি অস্বীকার করেছিলেন। ইউ এস চীফ অফ আর্মির যুদ্ধে অংশ গ্রহণের নোটিশে থুথু দিয়ে বলেছিলেন- যুদ্ধ যদি করতেই হয়-তবে সেটা হবে আম্রিকার বিরুদ্ধে-যারা মিথ্যা যুদ্ধ সাজায়, ইরাকের বিরুদ্ধে নয়।

মনে পড়ে সিভিল রাইটস মুভমেন্টের সেই মহিয়ষী নারী রোজা পার্কের কথা। ১৯৪৩ সাল। কালো মানুষের একসাথে গাড়ি চড়া দূরের কথা। সাদা মানুষের সাথে চলাফেরাটাই যখন নিষিদ্ধ ছিলো। তখন গাড়ি ভর্তি সাদা মানুষের বাসে নিজের সীটে বসে বলেছিলেন- জীবন যাবে, কিন্তু নিজের আসন ছেড়ে দিবোনা।

মনে পড়ে ৭৬ বছর বয়সের ভিয়েতনামের Thich Quang Duc এর কথা। সায়গন ইন্টারসেকশানে দাঁড়িয়ে নাগরিক অধিকার আদায়ের জন্য যিনি নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে ছিলেন। ছিলেন একজন সাধারণ স্কুল শিক্ষক । হয়ে গেলেন পুরো ভিয়েতনামের এক মহান 'আগুন বিপ্লবী'।

ইতিহাসের বিভিন্ন গতিপথে স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এই মানুষগুলো কখনো ট্যাংক ম্যান হিসাবে, কখনো আগুন বিপ্লবী হিসাবে, কখনো আননোন রিভেল হিসাবে, কখনো সিভিল রাইটস মুভমেন্টের জননী হিসাবে বারবার হাজির হয়ে ঐতিহাসিক দলিল হয়েছেন।

আজ স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার জন্য নির্বাচিত এমপি'র কি একজনও নেই। যিনি কোনো ট্যাংকের সামনে দাঁড়াবেন না, নিজের শরীরে আগুণ লাগাবেন না,
কোনো পরাক্রমশালী দেশের চীফ অফ আর্মির নোটিশ থুথু ভরে উপেক্ষা করবেন না।

শুধু একটি বার সাহস করে এটুকুই বলবেন- "বিজয় চেয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু ঠিক এমন বিজয়তো চাইনি"।

স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এক ঐতিহাসিক দলিল হওয়ার সুযোগ এসেছে। এই সুযোগটাকে কি কেউ কাজে লাগাবেন না?

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:১০

বিষন্ন পথিক বলেছেন: আপনি শুরু করেন

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
মনে হয়না কেউ কাজে লাগাবে।

দারুণ পোস্ট। ধন্যবাদ।

৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৬

জিমলীয়া বলেছেন: কেউ নেই,আমরা সবাই বালুর গর্তে মাথা লুকাইছি।ধিক্কার জানাই নিজেকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.