নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূলকাজ।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫৬

রেপড, চাইল্ড সেক্স ট্রাফিকিং এগুলো হিডেন ক্রাইম। তাই একেবারে সঠিক সংখ্যা জানা যায়না। শুধু রিপোর্টেড রেপড কেইস আর চাইল্ড সেক্স ভিকটিমের সংখ্যা মাত্র ১ বছরে ৩৬০০। পুলিশ কর্তৃক খুন ২০১৭ সালে ৩০, ২০১৮ সালে ৫১। না, এটা বাংলাদেশের কোনো চিত্র নয়। আমেরিকার ৫০ টি রাজ্যের মাত্র একটি রাজ্য জর্জিয়ার চিত্র। কী ভয়াবহ ঘটনা তাইনা? শুধু তাই নয়। প্রায় ১২ লক্ষ সরকারী এমপ্লয়ীর চাকুরি নাই গত ১৪ দিন যাবত। ১ টাকা বেতনও কেউ পায়নি। কবে কাজে ফিরবে তাও কেউ এ মুহুর্তে জানেনা।

কিন্তু আরো বিস্ময়কর ঘটনা হলো- এব্যাপারে কাজে, কর্মে, অফিসে, রেস্টুরেন্টে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। এর কারণ কি?
শত শত টিভি চ্যানেল আছে। বিনোদন চ্যানেলগুলোতে ২৪ ঘন্টা বিনোদনই চলছে, স্পোর্টস চ্যানেল ২৪ ঘন্টা স্পোর্টস নিয়ে ব্যস্ত আছে। শুধুমাত্র নিউজ চ্যানেলগুলোতেই এ ব্যাপারে কিছু হাউকাউ হয়।

আমি সরাসরি দেশ নিয়ে বেশ সচেতন এরকম একজনকে ডাইরেক্ট প্রশ্নটি জিগ্গাসা করলাম- তোমরা হাউকাউ করো না কেন? ঘটনা কি?

বললো- "চীৎকার, চেঁচামেচি যে একেবার হয়না তেমন নয়। বিভিন্ন সময় মার্চ হয়, প্রটেস্ট হয়। তবে গড়পরতা মানুষ সব কিছুই বাদ দিয়ে সব বিষয়ে শুধু হাউকাউ করেনা। একজন সাধারণ সাংবাদিকও প্রেসিডেন্টকে সরাসরি প্রশ্ন করে একেবারে নাজেহাল করতে পারে। কেউ চাইলে প্রেসিডেন্টের মুখ নিয়ে টয়লেটের কমোডও বানাতে পারে। এ বছর ক্রিসমাসে বহুল বিক্রিত জিনিসটি হলো ট্রাম্পের চেহারা নিয়ে বানানো "টয়লেট বৌলের ব্রাশ"। আমি নিজেও একখানা কিনেছি। আমার বউ রিপাবিলিকান সাপোর্টার। এটা তার ক্রিসমাসের গিফট। আর গুগলে 'ইডিয়ট' লেখে সার্চ করলে যে চেহারাটি আসে তা হলো আমাদের প্রেসিডেন্ট। হাউকাউ না হলেও ব্যাপক বাক স্বাধীনতা আছে "। -

এসব ছাড়া, একজন সাধারণ নাগরিক মনে প্রাণে বিশ্বাস করে- সে সঠিক বিচার পাবে। আর বিচার পাওয়ার জন্য তাকে ডেমোক্রেটও হতে হবেনা, রিপাবলিকানও না। 'নাগরিক" এটাই তার আসল পরিচয়। যে ভোট দিতে চায় সে তার ভোট দানের অধিকার থেকে বন্চিত হয়না। সরকার নাগরিকের ভোটাধিকার সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। সেই জন্য যে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়-জনগণ জানে- সে তার কাজ ঠিকঠাক করবে। তাই, রাস্তা বানানোর জন্য যেমন কাউকে আন্দোলনে নামতে হয়না, তেমনি ভিআইপি কেউ রাস্তা দিয়ে গেলেও কাউকে থামতে হয়না। রোগীর ডাক্তারকে খুঁজতে হয়না, বরং রোগির কোনো রিপোর্ট খারাপ আসলে ডাক্তারই মরিয়া হয়ে রোগিকে খুঁজে।

মনে পড়ে-সিলেটের কীন ব্রীজের ওপর হাঁটছি। এই ব্রিজের ওপর মোটামুটি একটা জনস্রোত লেগেই থাকে। গলায় খুউব কফ জমা হয়েছে। এখন, করবো কি? হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে ব্রীজের ওপর থেকে কফ নীচে ফেলে নদীর দিকে চেয়ে রইলাম। দেখি মাথার ওপর দশ-বারোজন লোক অলরেডি জমা হয়ে গেছে। নিচে কি এমন অবাক ঘটনা ঘটছে-সেটা বুঝতে চায়। এ জাতীয় কৌতুহল এ দেশে নাই বললেই চলে। প্রায় সচরাচর এখানে গাড়ী দূর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু একজন মানুষও দাঁড়িয়ে ভীড় করেনা। সবাই জানে, সময়ের আগেই পুলিশ, এ্যম্বুলেন্স, ফায়ার গাড়ি চলে আসবে। ওদের কাজ ওরাই করবে। কেউ কারো ওপর চড়াও হয়না।

কোনো অফিসে, কাজে, কর্মে কেউ এক্ট্রা খাতির পায়না। স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অথবা সরকারি প্রতিষ্ঠানে গুণ্ডাগিরি নাই বললেই চলে। ' স্যার, স্যার, শব্দটি একেবারে বিরল। কেউ যখন কাউকে চিনেনা -তখন স্যার বলে। যেমনঃ হ্যালো মিঃ একটু সরে দাঁড়াবেন, অথবা হ্যালো স্যার একটু আগে বাড়েন। অনেক সময় ফাজলামো করে টাট্টা চলে- কদাচিৎ কেউ কাউকে স্যার বলে। রাস্তার মুচি অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কেউ কাউকে তেল মারেনা। বরং মুচি আর ভিসি একই টেবিলে বসে আড্ডা মারে।

একজন ধর্ষিতা জানে সে বিচার পাবেই। যে ধর্ষক তার একটাই পরিচয় সে ধর্ষক। কে রিপালবিকান, আর কে ডেমোক্রেট এভাবে ধর্ষককে ট্যাগ করা হয়না। আমাদের দেশে একজন ধর্ষকের নানা পরিচয় । কখনো লীগ, কখনো বিএনপি, কখনো জামাত। এই পরিচয় দিয়ে ধর্ষককে সামনে আনা হয় অথবা ধর্ষককে উদ্ধার করা হয়। আর ধর্ষিতার কোনো পরিচয় নাই। বেঁচে থাকলে সারাজীবন সে ধর্ষিতা আর মারা গেলে লাশ।

রাষ্ট্রের একটা জবাবদিহিতা থাকে- রাষ্ট্র চাইলে এর বাইরে যেতে পারেনা। ১০০ সীটের সিনেটে ৫৩ আর ৪৭ নিয়ে ক্ষমতার একটা ভারসাম্য আছে, এবং এইরকম ভারসাম্য সব সময় বিরাজ করে। যেখানে ক্ষমতার জোয়ারে কেউ ভাসেনা অথবা ক্ষমতাবিহীন হয়েও কেউ ভাটায় আটকে থাকেনা। মোদ্দাকথা, রাষ্ট্র আর নাগরিকের মাঝে একটা চমৎকার আণ্ডারস্ট্যান্ডিং আছে। একজন নাগরিক খুব ভালোভাবে বিশ্বাস করে -রাষ্ট্র কোনো অবস্থাতেই তাকে ঠকাবেনা । রাষ্ট্রের উপর নাগরিকের এই বিশ্বাস আছে বলেই- এতো কিছু ঘটলেও সাধারণ জনগণ হাউকাউ করেনা। রাষ্ট্রের উপর নাগরিকের এই বিশ্বাস তৈরী করাই একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূলকাজ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মা-বাবা ও মেজো চাচী ওমরাহ্ হজ্ব করতে যাচ্ছেন। সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেনো তাদের হজ্ব কবুল করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.