![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নদী তীরে একটি কাঠের টুকরোর ওপর বসে আছে চারটি বুদ্ধিজীবী ব্যাঙ ও একটা বয়ষ্ক কাছিম। সান্ধ্য ভ্রমণে আসার আগে ব্যাঙ তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এসেছে-আজ কোনোভাবেই কেউ কারো সাথে কুতর্কে জড়াবে না। সেই স্ট্যাটাসে লাইক পড়েছে মাত্র একখানা, লাভ পড়েছে দুটি আর হা হা পড়েছে অসংখ্য।
এমন সময় তুমুল বৃষ্টির স্রোতে কাঠের টুকরোটি নদীতে চলতে শুরু করলে ব্যাঙরা খুবই আমোদিত হল।
কিছুক্ষণ পরে প্রথম ব্যাঙটি বলল, এ এক অত্যাশ্চর্য জীবন্ত কাঠের টুকরো। এর আগে কোন কাঠের টুকরোকে এরকম চলতে দেখিনি।
দ্বিতীয় ব্যাঙটি বললো - যা মনে চাইলো-তাই বলে দিলা। সারারাত জেগে টকশো দেখলে বেরেনকে টেরেন করবা কীভাবে। আসলে, আমরা কুমিরের লেজের ওপরে বসে আছি। এবার, বাকিটুকু নিজের বিবেক খাটিয়ে বুঝে নাও হে মূর্খ ব্যাঙ। কেন এই কাঠের টুকরো নড়ছে।
তৃতীয় বুদ্ধিজীবী ব্যাঙটি বললো। রাখো তোমার কথা। কাঠের টুকরা নড়ছে না। আসলে আমাদের চিন্তা নড়াচড়া করছে। কারণ চিন্তা ছাড়া কোন কিছুই নড়াচড়া করে না। আর চিন্তা নড়াচড়া করার ফলে দুনিয়ার সব কিছুকেই মনে হয় নড়ছে। জগতের সবকিছু যার যার জায়গায় স্থির। আমাদের কুয়োকে কখনো নড়তে দেখেছো। আর, এই তুমি এভাবে গা ঘেঁষে বসছো কেন, চরিত্রহীন ?
চতুর্থ ব্যাঙটি বললো- বলোতো- নৌকা কি দিয়ে বানানো হয়? সবাই বললো-কাঠ দিয়ে। এই তো সবাই লাইনে আসছো। সুতরাং এই কাঠটি হলো আসলে নৌকা। এই কাঠের টুকরো, পানি, নৌকা এবং আমাদের মন এদের সবগুলোই গতিশীল। কেউ স্থির না।
তুমুল তর্কে আড্ডা হয়ে গেছে একটা কুতর্কের দোকান। ব্যাঙরা বুঝতেই পারছেনা- তাদের তর্ক নিরাপদ জায়গা থেকে তাদের এক অজানা বিপদজনক জায়গার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তারা কাছিমটির দিকে তাকালো। যে এতক্ষণ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে তাদের কথাবার্তা শুনছিল। তার মতামত জানতে চাওয়ায় সে বললো, “ আসলে তোমাদের কেউ পুরোপুরি সঠিক না। তোমাদের কুতর্ক আগে বন্ধ করো । না হয় স্রোতে তলিয়ে যাবে। সবাই আমার পীটের ওপর ওঠো। আমি তোমাদের কিনারায় পৌঁছে দেই।
কাছিম তার কথা শেষ করতে পারেনি। তার মত কোনো ব্যাঙের পক্ষে না যাওয়ায় চারটি ব্যাঙই মারাত্মক রাগান্বিত হল। তাদের কেউই মেনে নিতে পারছিলো না যে তার মতটি পূর্ণাঙ্গ সত্য নয় এবং বাকিরা সবাই পুরোপুরি মিথ্যা।
তারপরে এক অদ্ভূত ঘটনা ঘটল। চারটি ব্যাঙ একত্রিত হয়ে কাছিমকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দিয়ে উল্লাস করে বলতে লাগলো। সবজান্তা কাছিম-এবার তুই মর। পানিতে ডুবেই মর।
কাছিম সাঁতার কাটতে কাটতে ভাবলো- কুপ মানে হলো কুয়া আর মন্ডুক মানে হলো ব্যাঙ-সেজন্য এদের বলে কূপমন্ডুক। এই কূপমণ্ডুকদের ভুল ভাঙ্গানোটাই আসলে ভুল হয়েছে। সবাই তার নিজস্ব চিন্তা দিয়ে মনের ভিতর একটা আয়না তৈরি করে। আর সে আয়নায় সে নিজের মতো করে দুনিয়া দেখে।
তোমরা আমাকে ফেলে দিয়েছো ভালো কথা। কিন্তু নিজেদের কুতর্কে এভাবে ভেসে যেয়োনা। জগৎ কুয়ো নয়। এ জগৎ অনেক বড়।
২| ০১ লা মে, ২০১৯ রাত ৯:১০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আমাদের মিডিয়া, সুশিল সমাজ, বুদ্ধিজিবি আর আমজনতার একই হাল যেন!!!!
কূপমন্ডুকতায় একজন ডুবে বাকী পুরো জাতিকে ডুবাতে মরিয়া চেষ্টায় রত!
মুক্তির পথ সন্ধানে কারোই ইচ্ছে নেই।
৩| ০১ লা মে, ২০১৯ রাত ১০:০০
রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর।
৪| ০২ রা মে, ২০১৯ রাত ১২:১৪
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: দুই নম্বর মন্তব্যের সাথে একমত।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মে, ২০১৯ রাত ৮:২০
ভুয়া মফিজ বলেছেন: কাছিম আর ব্যাঙসকল........সবগুলাই গাধা-গোত্রীয়। এদের বোঝা উচিত ছিল....এরা কেউই পানিতে ডুবে মরবে না!