নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার জন্ম টাঙ্গাইলের হামজানি গ্রামে। শৈশব, কৈশোরে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে ছিলাম; বাবার সরকারী চাকুরীর জন্যে। কলেজ ছিল টাঙ্গাইল জেলায়। তারপর পড়াশুনা ঢাবি\'র ফিন্যান্স বিভাগ। গত নয় বছর যাবত প্রাইভেট ব্যাংকে কর্মজীবন চলছে। www.facebook.com/khokonz

খোরশেদ খোকন

এই শহরে কিছু কিছু শব্দ কলম নয় হ্রদয় থেকে নেমে আসে, একা। এই শহরে বিনয় ঝুলে থাকে মরা গাছের ডালের মতো, একা।

খোরশেদ খোকন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মকথা-২: একটি ব্যর্থ দিনের, কাকতালীয় ঘটনা…

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৮

২০০৬ সালের মার্চ মাস, রাজশাহী বরেন্দ্র অঞ্চলের চরম গরমের দিন। আমি ন্যাশনাল ব্যাংকের রাজশাহী শাখায় কাজ করি, সাহেব বাজার এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে হাজী ভবনে (৫ তলা বাড়ির ৪ তলায়) ব্যাচেলর থাকি। বারান্দায় দাঁড়ালে রাজশাহী কলেজের সবুজ মাঠ, শাহ মখদুম মাজারের মিনার, পদ্মার বুকে সীমাহীন জলরাশি আর বহুদুরে নদীর বুকে সাদা চর দেখা যায়।

সেই সময় শিখা (তখন প্রেমিকা, এখন স্ত্রী) থাকতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামসুন নাহার হলে। কোন এক ছুটিতে শিখা ঢাকা থেকে পার্বতীপুর যাবে, তাই সে বিকেল ৫.০০ টার (ঢাকা-পার্বতীপুর) বাসের টিকিট কেটে ছিল। শিখার সাথে আমার ফোনে কথা হয়েছিল যে, সে পার্বতীপুর রওনা হবার আগেই আমি ঢাকা পৌছাবো। আমাদের দেখা হবে চারুকলায়।

আমি যথারীতি অফিস শেষ করতে চাইলাম সন্ধ্যায় কিন্তু আফিস শেষ হল গভীর রাতে। রাজশাহী-ঢাকা রুটের বাসের টিকিট কিনতে অনেক রাত পর্যন্ত চেষ্টা করলাম। অবশেষে রাতের কোন টিকিট না পেয়ে, দিনের-বাসের একটা টিকিট কিনে ঘুম ঘুম চোখে বাসায় ফিরলাম।

তারপর, যথারীতি দিনের বেলা গ্রিন-লাইন বাসে রওনা হলাম রাজশাহী থেকে ঢাকার দিকে। আমার পথ আর ফুরায় না...। এদিকে শিখার সাথে দেখা করার জন্য একটা দিন হাতে ছিল কিন্তু সেই দিনটা শেষ হতে বাকি থাকলো মাত্র কয়েক ঘণ্টা...।

ঢাকা থেকে শিখা বার-বার ফোন দিচ্ছিল, আমি কখন ঢাকা পৌছাবো, আমি বার-বার বলছিলাম, আমি আসছি...। অবশেষে ৫.০০ টায় শিখা ঢাকা থেকে পার্বতীপুর রওনা হলো।

এদিকে ৫.০০ টায় আমাদের বাস আশুলিয়ার কাছা-কাছি আসলো। আমি শিখা কে বললাম, তোমার বাসের নাম বলো, সে বলল। তারপর বললাম, এবার বল বাসের কোন পাশে কোন সিটে বসেছ। সে বলল, সে ঢাকা-পার্বতীপুর বাসের মাঝা মাঝি ডান-দিকের জানালার-পাশের একটা সিটে বসেছে। এদিকে, আমি রাজশাহী-ঢাকা বাসের মাঝা মাঝি ডান-দিকের জানালার-পাশেরই একটা সিটেই বসেছি, মানে আমি শিখার একদম বিপরীত দিকের সিটেই আছি।

এবার বার-বার ফোন চলল, আমি কোথায়, আমি বললাম, তুমি কোথায়? তারপর আমাদের বাস, মানে শিখার ঢাকা-পার্বতীপুর বাস আর আমার রাজশাহী-ঢাকা বাস সাভারে এসে পৌছালো এবং একটা ১০ মিনিট ব্যাপী জ্যামে পড়ল। এক সময় আমাদের দুইটা বাস পাশাপাশি দাঁড়াল। আমার পাশের বাসের জানালায় আমি শিখাকে দেখলাম, শিখা আমাকে দেখলো। আমি আর শিখা প্রথমে ফোনে, তারপর ইশারায়, সবশেষে পাশাপাশি বসে কথা বললাম। কি অসম্ভব একটা সম্ভাবনা!!!

বাসের এক যাত্রী আমাকে বলল, কি ব্যাপার? আমি বললাম, ওই মেয়েটা আমার প্রেমিকা...।
সে তো অবাক, তাকে বোঝাতে পারলাম না আজকের ব্যাপারটা একটা কাকতালীয় ঘটনা।

আজ দীর্ঘ ৮ বছর যাবত, যে ব্যক্তি আমাদের এই ঘটনা শুনে, সেই বলে তোমরা দু’জন (আমি আর শিখা) এতো সুন্দর গল্প বানাতে পারো যে, বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে কিন্তু কেন জানি পারি না। আমরা শুধু হাসি...

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: মনটা ভালো হয়ে গেলো। এই ধরনের সত্যি ভালবাসার গল্প মানুষকে অনুপ্রানিত করে।
আপনাদের জন্য রইল অনেক শুভকামনা। :)

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৮

খোরশেদ খোকন বলেছেন: আপনার অনুভূতি আমাকে অনুপ্রাণিত করছে।শুভেচ্ছা...

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩১

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: গল্পতো এখন সত্যি হয়েছে --- শুভকামনা রইল

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৬

খোরশেদ খোকন বলেছেন: হ্যাঁ, গল্পটা সত্যি হয়েছে কিন্তু দেখুন কি ভাগ্য আমাদের!
আমি থাকি নারায়গঞ্জ আর সে থাকে চাঁদপুর!!
আমি ব্যাংকে আর সে সরকারী কলেজে...
শুক্র শনি দুই দিন একসাথে থাকি... হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ...
ধন্যবাদ

৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: সুন্দর । শুভ কামনা ।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৯

খোরশেদ খোকন বলেছেন: আপনার ভাললাগা মন্তব্য পেয়ে, নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি, শুভেচ্ছা...ভাল থাকবেন...

৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৩৪

সকাল হাসান বলেছেন: চমৎকার! শুভকামনা রইলো! :)

৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:০০

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: মনটা ভালো হয়ে গেলো। এই ধরনের সত্যি ভালবাসার গল্প মানুষকে অনুপ্রানিত করে।
আপনাদের জন্য রইল অনেক শুভকামনা।


সহমত!!!!

৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:১৯

ভিটামিন সি বলেছেন: এটা কিভাবে কাউয়াতালীয় ব্যাপার হলো বোঝতে পারলাম না। ফোন দিয়ে দিয়ে কাছে নিয়ে এসেছেন, তারপর দেখা কথা বলা। এমন যদি হতো ফোন নেই, কথা নেই। বাস জ্যামে পড়ল; উফ অসহ্য গরম বলে বাসের জানলায় দিকে মুখ রেখে ফিরলেন। তারপরই ওমা একি! তুমি এই বাসে আমি তো তোমার সাথেই দেখা করতেই যাচ্ছি। একটু দাঁড়াও একটা পাগলামি করি। আমিও তোমার বাসে চলে আসছি। আরে বোকা সিট খালি নেই তো কি হয়েছে। তোমাকে ভালোবেসে যদি আমি তোমাদের বাসার গেট ধরে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকতে পারি তাহলে সামান্য কয়েকটা ঘন্টা তোমার পাশে দাঁড়িয়ে যেতে পারবো না? আমার ভালোবাসাকে এমন মনে করলা? ঠিকাছে, আমি তোমার বাসেই আসছি। আমি তোমার জন্য সেই সুদুর রাজশাহী থেকে চলে আসছি, আর সেখানে দাঁড়িয়ে যাওয়া তো নস্যি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.