![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই শহরে কিছু কিছু শব্দ কলম নয় হ্রদয় থেকে নেমে আসে, একা। এই শহরে বিনয় ঝুলে থাকে মরা গাছের ডালের মতো, একা।
আসুন গল্পটা শুরু করার আগে একটু ভুমিকা করে নেই। গত কয়দিন যাবত আমার মাথার ভেতর একটা শূন্যতা বোধ কাজ করছে। আর সে শূন্যতা বোধের বিষয়টা হল, এই শহুরের জীবনযাপন নিয়ে ব্যাস্ত মানুষগুলো একান্ত নিজের কথাগুলো কি আসলেই একে অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারছে? পরিবেশ পরিস্থিতির চাপে কেউ কি মিথ্যে বলছে না? অথবা অভিনয় করছে না? যাই হোক, এই গল্পের মধ্যে দিয়েই আমরা সেটা আবিষ্কার করবো, চলুন এগিয়ে যাই।
এই গল্পের মেয়েটির নাম মেঘলা, সে অসম্ভব মেধাবী, সাহসী আর আত্মবিশ্বাসী। সে একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরী করে। আর ছেলেটির নাম আকাশ, সে মাঝারী মানের মেধাবী, ভাবুক আর কিছুটা আত্মভোলা স্বভাবের। সেও চাকরী করে।
যাই হোক, ওদের দু’নের একটাই মিল আর সেটা হল, ওরা দু’জন জীবনের একটা সময় একটি স্কুলে পাশাপাশি বেঞ্চে বসে পড়াশুনা করেছে মাত্র দুইটা বছর। মজার বিষয় হলো, সেই ৮ম/৯ম শ্রেণীর ক্লাসে পড়তে স্কুলের কেউ কোনদিন তাদের দু’জনকে কথা বলতে দেখেনি!
ওরা দুজন কথা বলেছিল কিনা তা তারাই ভুলে গেছে!? যাই হোক, আজ ২০ বছর পর তাদের কথা হবে। কি শুনতে ইচ্ছে করছে? তাহলে ভূমিকাটা এইবার শেষ করেই দেই, কি বলেন?
মেয়েটি একদিন আবিষ্কার করে, তার বান্ধবীর স্বামীর ফেইসবুক লিস্টে একটি পরিচিত মুখ, ছেলেটা আকাশ। বান্ধবী’র কোন একটা সামাজিক অনুষ্ঠানের ছবির ট্যাগের কারনে বান্ধবী, সাথে বান্ধবী’র স্বামী আর স্বামীর বন্ধু আকাশ পাশাপাশি এসে যায়। যাই হোক, মেঘলা খুব ভাল ভাবে দুদিন ভাবে তারপর সে সিদ্ধান্ত নেয় ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর। সাহস করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় তারপর অপেক্ষা করে। দেখা যায় দু’দিন পর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট ক্যান্সেল দেখাচ্ছে। ভীষণ মন খারাপ হয়ে যায় তার। তার নিজের ফেইসবুক লিস্টে ২০০+ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আছে, আর সে কিনা পাত্তা পেলো না!?
যাই হোক, তার মাস খানেক পর আবার একটা ছবির ট্যাগ পেলো মেঘলা। এবার সে কমেন্ট করে বসলো আকাশের ছবিতে। কি চেনা যায়?
আকাশঃ কমেন্ট করলো “চেনা যায়...!?”। তারপর সে একটা ইনবক্স করল মেথলাকে, “তুমি মেঘলা তাই না, আমাকে মনে আছে?
মেঘলা মেসেনজারে লাইভ ছিল, সে বলল, তুমিই তো আমাকে মনে রাখনি! এখন খুব চেনার ভান করছ?
আকাশঃ এই বুঝতে পারছি না কিন্তু!?
মেঘলাঃ আমি তোমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম, তুমি রিকোয়েস্ট ক্যান্সেল করছ ;(
আকাশঃ ও মনে পড়ছে, প্লিজ মন খারাপ করো না, এই নাও আমিই তোমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিলাম, কি একসেপ্ট করো?
মেঘলাঃ এই, এখন অনেক রাত! এখন ঘুমাতে যাও। কাল অফিস আছে না!?
আকাশঃ আচ্ছা ঘুমাতে যাচ্ছি, তার আগে তোমাকে একটা লেখা পড়তে বলছি, লেখাটা কাট পেস্ট দিলাম, পরে জানিয়ো কিন্তু!
মেঘলাঃ আমি কাট পেস্ট পড়ি না। আর তোমার সাথে আমার কথা নাই। আড়ি।
(তারপর মেসেনজারের মেঘলা ডিসকানেক্ট....)
এবার আপনারাই ভাবুন, মেঘলা কি আকাশের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করবে? নাকি করবে না?
আর ইছে হলে আকাশের কাট/পেস্ট পড়তে থাকুনঃ
''একদা কলকাতা নামের এই শহরে শুভঙ্কর নামে ৪৫ বছর বয়সী এক সদ্যজাত যুবক ভালবেসে ফেলেছিল নন্দিনী নামের এক বিদ্যুৎ-শিখাকে। গেরিলা-যুদ্ধের মতো তাদের গোপন ভালবাসাবাসির নিত্যসঙ্গী ছিলাম আমি। আর নিজের খাতায় রোজ টুকে রাখতুম তাদের আবীর-মাখানো কথোপকথনগুলো। সেই শুভঙ্করের বয়স এখন ৫০। সেই নন্দিনী হয়তো এখন বন্দিনী নিদারুন-সুখের কোন সোনার পালঙ্কে। ওদের মাঝখানে নদী আর খেয়া দুটোই গেছে হারিয়ে। একবার ভেবেছিলুম ঝড়ের অন্ধকারে উড়িয়ে দিই টুকরো এইসব কাগজ। পরে মনে হলো, যারা ভালবাসে, ভালবেসে জ্বলে, জ্বলে পৃথিবীর দিগন্তকে রাঙিয়ে দেয় ভিন্ন এক গোধূলি-আলোয়, তাদের সকলেরই অনেক আপন-কথা গোপন-কথা রয়ে গেছে এর ভিতরে। এমনকি আমার মৃত্যুর পরেও যাদের রক্তে শুরু হবে তুমুল শ্রাবণের চাষ-বাস, তাদের মুখগুলোও ভেসে উঠলো চোখে। অগত্যা ছিন্ন-ভিন্ন ঐ সব কাগজগুলোকে হেলাফেলায় মরতে দিতে পারলাম না আর। (কবিতার বইয়ের নামঃ “কথোপকথন”, ভূমিকা লিখেছেনঃ পূর্ণেন্দু পত্রী, সেপ্টেম্বর ১৯৮১)''
(বিঃদ্রঃ আপনারা চাইলে, এই গল্প এগিয়ে যাবে, দেখা যাক কত জন চায়!? হা হা হা)
©somewhere in net ltd.