![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই শহরে কিছু কিছু শব্দ কলম নয় হ্রদয় থেকে নেমে আসে, একা। এই শহরে বিনয় ঝুলে থাকে মরা গাছের ডালের মতো, একা।
২৩ জুন ২০০৪ আমাদের এমবিএ পরীক্ষা শেষ হয়েছিল, তারপর Internship করার উদ্দেশ্যে United Capital Ltd এ (তৃতীয় চাকরী!?) গিয়ে ৩০শে জুন ২০০৪ থেকে ১০ আগস্ট ২০০৪ প্রায় আড়াই মাস চাকরী করেছিলাম, যেটা Internship কিংবা চাকরী কোনটাই হয় নাই!?
যাই হোক, তারপর জনতা ব্যাংকে ১০ আগস্ট ২০০৪ থেকে Internship শুরু করার পর দুই মাসের শেষেই ১৪ অক্টোবর ২০০৪ ইং Intech Online Ltd এ চাকরী (চতুর্থ চাকরী!?) শুরু করেছিলাম। আবার তিন মাসের মাথায় ২৭ শে ডিসেম্বর ২০০৪ সেখান থেকেও রিজাইন করেছিলাম।
ইতিমধ্যে আমি Internship শেষ করে, থিসিসের কাজ করছিলাম। এদিকে ২২ শে সেপ্টেম্বর ২০০৪ জিকিউ বলপেনের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদনও করেছিলাম, যার লিখিত পরীক্ষা হয়েছিল ১৯ মার্চ ২০০৫।
পরীক্ষা দিতে গিয়ে আশিক (ইভান) ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল। তারপর ১৩ এপ্রিল ২০০৫ তারিখে ভাইভা দিতে গিয়ে পরিচয় হয়েছিল প্রবীর (টিটু) দা’র সাথে। অবশেষে আশিক (ইভান) ভাই, প্রবীর (টিটু) দা আর আমাকে Appointment Letter দেয়া হয়েছিল ১১ মে ২০০৫। আমরা তিনজন ১৪ মে ২০০৫ যোগদান করেছিলাম।
জিকিউ বলপেনের যোগদান ১৪ মে ২০০৫ হিসাব ধরলে আমার বেকারত্বের বয়স হয়েছিল, সারে ৪ মাস।
প্রবীর দা আগে বায়রা ইনস্যুরেন্সে কাজ করতো আর আশিক ভাই নন্দনে কাজ করতো। দু’জনেই আমার এক ব্যাচের সিনিয়র ছিল। প্রবীর দা একাউন্টিং আর আশিক ভাই ফিন্যান্স বিভাগে পড়াশুনা করেছেন।
আমার এমবিএ’র রেজাল্ট প্রকাশ হয়েছিল ৫ জুন ২০০৫ তার মানে ২৩ জুন ২০০৪ পরীক্ষা হিসাব করলে এক বছর শুধু রেজাল্ট দিতেই লেগেছিলো!?
আমার রেজাল্ট শুনে প্রবীর দা আমাকে মিষ্টি খাইয়েছিল, এখনও আমার মগবাজার মোড়ে কাটানো সেই দিনটির কথা মনে আছে...।
জিকিউ বলপেনে আমাদের তিন জনের কাজ বলতে তেমন কিছু ছিল না, আমরা গল্প-গুজব করতাম।
বার বার ঘুম আসতো তাই বাথরুমে গিয়ে চোখে পানি দিয়ে আসতাম আর নেটে নিউজ পড়তাম, তখন তো ফেইসবুক ছিল না!?
কাজ কিছুটা আশিক ভাই করতো। প্রবীর দা বিসিএস করে ফেলল টেবিলে ফাইলের উপর গাইড বই পড়তে পড়তে!?
সেই মগবাজার রেলক্রসিং অফিসে আমাদের দুপুরে খাবার ব্যাবস্থা অফিস করেছিল। আমাদের এমডি/চেয়ারম্যান ছিলেন মাগুরা-২ আসনের তখনকার রানিং এমপি, যার জিকিউ গ্রুপে প্রায় ১৩/১৪টা কোম্পানি ছিল। প্রাইম ব্যাংক, প্রাইম ইনস্যুরেন্স, প্রাইম ফিন্যান্সে তার ডিরেক্টারশিপ ছিল। একটা ইংলিশ পত্রিকাও (News Today ) ছিল।
আমরা সেখানে কাজ বলতে একটা বিদ্যুৎ জেনারেশনের প্রোজেক্ট করার টেন্ডার ড্রপ করেছিলাম জিকিউ গ্রুপের হয়ে।
প্রবীর দা সাড়ে ৫ মাসের মাথায় বিসিএস করে ৩০ অক্টোবর ২০০৫ আমার কাছে আমারই ফাইল বুঝিয়ে দিয়ে রিজাইন করে চলে গেল...!?
যেই অফিসে বিকেলে আমাদের একটা বাটিতে মুড়ি আর পিয়াজু খেতে দেয়া হতো তাই আমরা জিকিউ অফিসকে দুষ্টামি করে বলতাম “বাটি অফিস”।
প্রবীর দা চলে যাওয়াতে আমাদের তিন জনের মধ্যে দুই জন হয়ে গেলাম। তারপর আশিক ভাই ট্রাস্ট ব্যাংকে চান্স পেল, আর সে ০৪ জানুয়ারি ২০০৬ আমার কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেল।
আমি প্রবীর দা আর আশিক ভাইয়ের দায়িত্ব একা সামলানোর কাজ পেলাম!?
এদিকে আমাদের ম্যানেজার ছিল এনামুল হাকিম স্যার, সেও চাকরী ছেড়ে চলে গেল।
একদিকে এমডি/চেয়ারম্যান স্যারের কাজ অন্যদিকে ১। সিনিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাকসুদ স্যার, ২। ফার্স্ট সিনিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু হাসান খান স্যার ৩। ফিন্যাসের জিএম আজিজ স্যার আমাকেই কাজে/অকাজে ডাকতে শুরু করলেন!!!
কাজহীন অফিসে আমি পরে গেলাম কাজের সমুদ্রে।
মনে মনে ভাবলাম, আমার যে কবে দিন আসবে? অফিসের সবাই বলাবলি করতো, ভাই আপনার সঙ্গী দুজন তো চলে গেলো আপনার কি খবর? মানুষের কথা যে কত কষ্টের তা বুঝলাম সেখানে অফিস করে!
সেই অফিসের সুলতান ভাই, জাকির ভাই, ইমারত ভাই, মৌ ভাই, মাহবুব ভাই, বদর ভাই, কত মানুষ মিলে আমরা থাকতাম।
মৌ ভাই ছিল এমডি/চেয়ারম্যান স্যারের ভাতিজা কিন্তু কি অসাধারণ ছিল তার মানবিক গুণ, আজও মনেপড়ে!
এখনও মগবাজার গিয়ে মৌ ভাইকে ফোন দিলে আর এমডি/চেয়ারম্যান স্যার যদি অফিসে থাকে তাহলে চমৎকার আড্ডা হয়ে যায় আমাদের।
যাই হোক, জিকিউ গ্রুপের সাইজ বড় হলেও মানুষ চিনতো বলপেন দিয়ে। যার সাথেই পরিচিত হতাম সেই বলতো, ভাই ঢাবি’তে ফিন্যান্স পড়েছেন আর কলমের ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন!? একথা শুনে আমার খুব খারাপ লাগতো।
অবশেষে আমারও দিন আসলো, আশিক ভাই চলে যাবার দের মাসের মাথায় আমি ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০০৬ জিকিউ বলপেন ছেড়ে দিলাম, আর ২০ শে ফেব্রুয়ারী ২০০৬ ন্যাশনাল ব্যাংকে যোগদান করলাম।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চাকরিটা আমার ষষ্ঠ চাকরী। (সেটার গল্প হবে সামনে কোনদিন।)
এখন আশিক ভাই (Asique Zaman) ট্রাষ্ট ব্যাংক ছেড়ে শাহজালাল ব্যাংকে আছে। প্রবীর দা (Probir Kumar Chanda) বিসিএস ছেড়ে প্রাইম ব্যাংক তারপর এখন ব্যাংক এশিয়াতে আছে। আমি ন্যাশনাল ব্যাংক ছেড়ে ইউসিবিএল ব্যাংকে আছি। এখনও আমাদের মধ্যে সেই বন্ধুত্ব আছে। আমরা সুযোগ পেলেই একে অন্যকে ফোন দেই। আমাদের সমস্যা/সুবিধা আলোচনা করি। একজন অন্যজনকে ফোনে চিনতে না পারলে বলি, "ভাই বাটির কথা ভুইল্যা গেলেন..."। হা হা হা...
০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৪৩
খোরশেদ খোকন বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনার ভাল লাগায়, আমারও ভাল লাগছে। শুভেচ্ছা
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২৭
প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার চাকরী জীবনের কাহিনী। ধন্যবাদ