![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই শহরে কিছু কিছু শব্দ কলম নয় হ্রদয় থেকে নেমে আসে, একা। এই শহরে বিনয় ঝুলে থাকে মরা গাছের ডালের মতো, একা।
আষাঢ়ের মেঘে ঢাকা দিনের সকালে মেঘলা ইলেকট্রিক কফি মেকার থেকে এক মগ কফি নিয়ে বারান্দায় এলো। ঘরের কোনায় রাখা সিডি প্লেয়ারে তখন বাজছে সাহানা বাজপাইয়ের রবীন্দ্র সঙ্গীত। সাহানার কণ্ঠে বাজছে “এতো দিন যে বসেছিলেম পথ চেয়ে আর কাল গুনে, দেখা পেলেম ফাল্গুনে..."
মেঘলা আরাম চেয়ারে বসে, মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখলো আজ শুক্রবার।
সে ভাবছে। নিশ্চয়ই আকাশ আজ দেরী করে ঘুম থেকে উঠবে। তারপর বাজার সদাই, স্নান করে নামাজ পড়তে যাবে। কিন্তু সে গতকাল কেন পূর্ণেন্দু পত্রী’র ভুমিকা কাট/পেস্ট করলো? যাই হোক, আগে গতরাতের পূর্ণেন্দু পত্রী’র “কথোপকথন” বইটা পড়ে দেখি কি আছে সেখানে!
তারপর মেঘলা নেট-এ খোঁজ করে বইটা পেয়ে গেলো, আর পড়তে লাগলো একটার পর একটা কবিতা,
কথোপকথন - ১
--পূর্ণেন্দু পত্রী
- কি করছো?
- ছবি আকঁছি।
- ওটা তো একটা বিন্দু।
- তুমি ছুঁয়ে দিলেই বৃত্ত হবে। কেন্দ্র হবে তুমি। আর আমি হবো বৃত্তাবর্ত।
- কিন্তু আমি যে বৃত্তে আবদ্ধ হতে চাই না। আমি চাই অসীমের অধিকার।
- একটু অপেক্ষা করো। . . . এবার দেখো।
- ওটা কি? ওটা তো মেঘ।
- তুমি ছুঁয়ে দিলেই আকাশ হবে। তুমি হবে নি:সীম দিগন্ত। আর আমি হবো দিগন্তরেখা।
- কিন্তু সে তো অন্ধকার হলেই মিলিয়ে যাবে। আমি চিরন্তন হতে চাই।
- আচ্ছা, এবার দেখো।
- একি! এ তো জল।
- তুমি ছুঁয়ে দিলেই সাগর হবে। তিনভাগ জলের তুমি হবে জলকন্যা। আর আমি হবো জলাধার।
- আমার যে খন্ডিতে বিশ্বাস নেই। আমার দাবী সমগ্রের।
- একটু অপেক্ষা করো। এবার চোখ খোল।
- ওটা কি আঁকলে? ওটা তো একটা হৃদয়।
- হ্যাঁ, এটা হৃদয়। যেখানে তুমি আছো অসীম মমতায়, চিরন্তন ভালোবাসায়। এবার বলো আর কি চাই তোমার?
- সারাজীবন শুধু ওখানেই থাকতে চাই।
(আপনারা যারা বইটা পড়েন নি এই সুযোগে পরে নিন...)
প্রথম কবিতা পড়েই, মেঘলা যা বুঝার বুঝে গেলো।
বুঝে গেলো সারাদিন অফিসের ব্যাস্ততা, কাজের চাপ, বাড়ী ফিরতে ট্র্যাফিক, বাজার-সদাই, টিভি দেখে দেশ নিয়ে হাহাকার...এতোকিছুর মাঝেও মানুষের নিজের কিছু কথা থাকে যা পরিবারের কাউকে বলা যায় না আত্মসম্মানের কারনে। বন্ধুদের বলা যায় না, সস্তা হয়ে যাওয়ার ভয়ে। অফিসে বলা যায় না কেউ সুযোগ নিবে বলে। এমন কিছু জমানো কথা; আকাশ হয়তো বলবে আমাকে!
কিন্ত আমার কি তেমন কোন কথা জমে আছে গত বিশ বছর যাবত? আমার তো সব আছে, তাহলে কি নেই। মানুষ কি জানে, মানুষের কি থাকলে কি থাকেনা? মেঘলা ভাবতে ভাবতে এক সময় সিদ্ধান্ত নিল, না সে আকাশ কে ফেইসবুক ফ্রেন্ড বানাবে না, তার রিকোয়েস্ট সে ক্যান্সেল করে দেবে।
আবার ভাবলো, কি আসে যার যদি আকাশ তার বন্ধু হয়? কতো মানুষই তো এখন তার বন্ধু, তাতে কার কি ভাবার আছে? তবুও আবেগ সামলাতে পারাটা একটা খেলার মতো, একবার একজন জয়ী হলে অন্যজন পরাজিত হতে হয়, দু’জনে জয়ী হলেই সর্বনাশ।
ধুত... কি ভাবছি আবোল তাবোল। আমি কেন এতো চিন্তা করছি। আকাশ চাকরী করে, আমিও চাকরী করি, আমাদের সময় কোথায়? সময় নষ্ট করার?
যাই হোক, বন্ধুগন জাতীয় সংসদে যেমন হ্যা জয় যুক্ত হয়, তেমনি মেঘলার মনের মেঘলা আকাশে হ্যাঁ জয়যুক্ত হল। সে মোবাইলের মাধ্যমে নেটে লগইন করে ফেইসবুকে নিজের পেইজে গিয়ে আকাশের ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টটা একসেপ্ট করে নিল।
তারপর শুধুই অপেক্ষা...।
রাত ৯ টায় মেঘলাকে ফেইস বুক মেসেঞ্জারে পেয়ে গেলো আকাশ। তারপর মেসেঞ্জারে দু’জনের কথা শুরু হল, চলুন বন্ধুগণ আমরাও এগিয়ে যাই, কান পেতে শুনি, কি কথা তাহার সনে।
আকাশঃ এই আমাদের ক্লাসে কি স্বপ্ন নামে কেউ ছিল?
মেঘনাঃ কি যে বল, স্বপ্ন কখনও মানুষের নাম হয়?
আকাশঃ তোমার ফ্রেন্ড লিস্টে দেখলাম?
মেঘনাঃ ও এইবার বুঝছি, তা কি হয়েছে বল না?
আকাশঃ তুমি যেদিন ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছিলে? তারপর দিন দেখি ঐ স্বপ্ন নামের মেয়েটার একটা ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট, হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
মেঘনাঃ ও এই কথা, ডুবে ডুবে জল খাওয়া হচ্ছে!?
আকাশঃ আরে আমি তো আকাশ, জল পাবো কোথায়? যদি পাই, তাহলে পাবো মেঘ। রাগ করলে নাতো?
মেঘনাঃ রাগ করবো কেন? সেদিন কি আর আছে? চাইলেই রাগ করা যায়?
আকাশঃ তুমি তো বললে না, স্বপ্ন মেয়েটা কে?
মেঘনাঃ কেন বলবো, ক্লাসে তোমার এতো শুভানুধ্যায়ী ছিল, তুমি নিজেই বের করো?
আকাশঃ এই শোন, আমি সত্যি বলছি চিনতে পারি নাই, বল না?
মেঘনাঃ ও আমাদের ক্লাসের সেই ব্যাক-বেঞ্চার মেয়েটি যার নাম ছিল সিমিন, পড়া পারতোনা আর রোজ রোজ মার খেত। পড়া না পাড়ার জন্য ওর কোন ভাল বন্ধুও ছিল না। তা তুমি তো ওর এখন একটা ভাল বন্ধু হতে পারো, পারো না? ও এখন দুই বাচ্চার মা, কোন রিস্ক নাই, হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
আকাশঃ হ্যাঁ এখন চিনেছি, ঠিক বলেছ পড়া পারতোনা। কিন্তু তোমার হেঁয়ালি স্বভাব তো এখনও যাইনি দেখছি? একদম মাইর দিবো বলে দিলাম, মাইরের উপর ওষুধ নাই।
মেঘনাঃ ছি! এই নারী স্বাধীনতার যুগে তুমি বউ পেটানো দলের লোক? কাকে পিটিয়েছ শুনি? অভদ্র কোথাকার, হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
আকাশঃ এই, তুমি কি আঞ্জন দত্ত (ভারত) আর নিমা রহমান (বাংলাদেশ) এর “গানে গানে ভালবাসা” এ্যালবামটা শুনেছিলে?
মেঘনাঃ না শুনি নাই, মুখস্ত করে ফেলছি। সব কয়টা গান আর চিটি আমার মুখস্ত, শুনবা? না থাক, অনেক রাত হয়ে গেল। শুভ রাত্রি...
আকাশঃ চলো দু’জনেই সেই এ্যালবামের গানগুলি শুনতে শুনতে ঘুমাতে যাই। শুভ রাত্রি...
মেঘনাঃ আমার টাইম নাই, শুভ রাত্রি। কাল অফিসে ভীষণ কাজের চাপ আছে, শুভ রাত্রি...
...মেঘলার মেসেনজার সুইচড অফফ...
বন্ধুগণ, মন খারাপ করবেন না। মনটকে প্রশান্ত করুন, একনো গল্পের অনেক পথ বাকী...। জেনে রাখুন, মেঘলা "না" বললেও সে “গানে গানে ভালবাসা” এ্যালবামটাই শুনতে শুনতেই ঘুমানোর চেষ্টা করছে...।
অন্যদিকে যে ভদ্রলোক প্রস্তাব দিয়েছিল মানে আকাশ সাহেব সেও সেই এ্যালবামেরই চিঠিগুলো শুনছে।
তা আপনাদের জন্য আমি কি আর করতে পারি বলুন? গান শোনাতে কিংবা চিঠিতো পড়ে দিতে পারবো না!? তাহলে একটা কাজ করি কিছু চিঠি কাট পেস্ট করে দিয়ে আপনাদের পড়ার ব্যবস্থা করি, কি বলেন? (আপনারা পড়ুন এদিকে আমি আজকের লেখা শেষ করে ঘুমাতে যাই, হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ)
এ্যালবাম “গানে গানে ভালবাসা”
আঞ্জন দত্ত (অর্ণব চ্যাটার্জি)
নিমা রহমান (আসমা চৌধুরী জয়ীটা)
চিঠিঃ 1.
Dear Asam Chowdhury Joyeeta,
I had taken a bet with the other boy’s in the class, that you are not as hot headed as you look like, So I said I will show them by eating Tiffin form your box. If you don’t I will lose rupees ten, please just one time only, I will let you copy from my mathematics homework also.
Arnob Chatergee
চিঠিঃ 2.
Arnob Chatergee
you big fat fool, don’t ever put anymore letter’s in my bag, don’t ever touch my bag, or i will report to principal and break your hand. I don’t want your home work, I don’t copy from others, and I don’t eat other people’s eto (বাংলাঃ এঁটো মানে বাসি খাবার), go to hell.
চিঠিঃ 3.
Dear Asam Chowdhury Joyeeta,
What does happend? why you crying? please tell, I don’t like you to cry. please tell,
Arnob Chatergee
চিঠিঃ 4.
Arnob Chatergee
I don’t care what others things about me, I don’t come to school for others, I come for myself. anyway my dadi (grandmother) has died. I loved her very much.
Joyeeta
চিঠিঃ 5.
Dear Asam Chowdhury Joyeeta,
I am very sorry to hear of the passing away of your dadi (grandmother). I know how much you exactly feeling inside your heart only to see someone dyeing in front of your eyes only, na (বাংলাঃ না). But everybody has to die someday na (বাংলাঃ না). So try and look at the better side of the life. Good luck.
Arnob Chatergee
চিঠিঃ 6.
Arnob Chatergee
Thanks for your letter. anyway my dadi (grandmother) did not die in front of my eyes. She had gone to dhaka to visit my fupu (Aunt), Abba have to go over and do all the funeral work there, and one more thing, you are very bad in spellings বাংলায় লিখ না কেন, বাবা?
Joyeeta
(বিঃ দ্রঃ যাদের এ্যালবামের বাকিটা শোনার ইচ্ছা আছে, তারা doridro.net থেকে নামিয়ে শুনে নিবেন। কি চলবে গল্পটা?...)
©somewhere in net ltd.