নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার জন্ম টাঙ্গাইলের হামজানি গ্রামে। শৈশব, কৈশোরে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে ছিলাম; বাবার সরকারী চাকুরীর জন্যে। কলেজ ছিল টাঙ্গাইল জেলায়। তারপর পড়াশুনা ঢাবি\'র ফিন্যান্স বিভাগ। গত নয় বছর যাবত প্রাইভেট ব্যাংকে কর্মজীবন চলছে। www.facebook.com/khokonz

খোরশেদ খোকন

এই শহরে কিছু কিছু শব্দ কলম নয় হ্রদয় থেকে নেমে আসে, একা। এই শহরে বিনয় ঝুলে থাকে মরা গাছের ডালের মতো, একা।

খোরশেদ খোকন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ মেঘলা আকাশ (পর্ব-৩)

৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:২৭

আপনারা যারা গল্পটার গত দুইটি পর্ব পড়েছেন। তারা কি গল্পের মুল সুরটা ধরতে পারছেন? যাই হোক, সুরটা খুঁজতে থাকলে, এগিয়ে যাওয়াটা স্বস্তির হবে।

দেখুন গল্পের যেই অংশে “ফেইসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট মেঘলা রিসিভ করেছে, সেখান থেকেই মেঘলা আর আকাশ একে অন্যের জন্য মনে মনে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই ভাবে না; অপেক্ষা করে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। সারাদিন তারা ব্যস্ত অফিসে আর দৈনন্দিন কাজকর্মে... কিন্তু মনের কোণে কোথায় যেন একটা অপেক্ষা আছে।

এই অপেক্ষারত থাকা আর না বলা কথা বলতে চাওয়ার আকুতি নিয়েই গল্পটা এগিয়ে যাবে। মজার ব্যাপারটা দেখুন, রাতের ফেইসবুক মেসেঞ্জারের যে টুং আওয়াজটার জন্য তারা অপেক্ষা করে, সেটা কত মুল্যবান। ভেবে দেখুন গত ২০ বছরে তারা কোনোদিন একে অন্যকে দেখেনি।

গল্পে তারা বলে না অপেক্ষার কথা; কিন্তু বিশ্বাস করে, পৃথিবী তাদেরকে যে ক্লেদাক্ত জীবন উপহার দিয়েছে তা থেকে তারা মুক্তি পাবে, মুক্তি পাবে শুধু কথা বলে বলে।

ভেবে দেখবেন, অপেক্ষার প্রহর শেষে; কথার তৃপ্তিই জীবনের অর্থহীনতা ভুলে থাকা অথবা জীবনকে অর্থময় করে তোলার জন্য মানুষকে তার দৈনন্দিন কাজগুলোর বাইরে কিভাবে নিয়ে আসে।

তাহলে, এবার গল্পের দিকে ফেরা যাক। আজকেও গল্পটা শুরু হবে সকাল দিয়ে। ধরে নেই গল্পের দিনটিও আজকের মতোই বুধবার।
সকাল ৯টায় মেঘলা রওয়া হয়েছে বনানী’র অফিসে যাওয়ার জন্য, এখন ৯.৩০টা বাজে। রামপুরা-হাতিরঝিল মোড়ে ভীষণ ভীর, নিশ্চয়ই সরকারী কোন ভিআইপি এই পথ ধরে যাচ্ছে। যাক, রাজনীতি আমাদের বিষয় না। মেঘলা মোবাইলে নেট অন করলো, সে জানে আকাশকে রাত ৯.০০ টার আগে পাওয়া যাবেনা। তারপরও সে ভাবলো, একটা মেসেজ ওকে পাঠিয়ে রাখা যেতে পারে। সে লিখলঃ
মেঘলাঃ জানো, আজ সকালটা ভীষণ সুন্দর। তুমি কখন ঘুম থেকে উঠেছ? আমার একটা কবিতা মনেপড়ে গেলো, আগেই বলে রাখি তোমাকে কিন্তু মনেপড়ে নি। যদি কবিতা ভাল লাগে তাই তোমার মতো আমিও একটা কপি/পেস্ট দিচ্ছি। হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ

মেঘলাঃ “চিল্কায় সকাল - বুদ্ধদেব বসু
কী ভালো আমার লাগলো আজ এই সকালবেলায়
কেমন করে বলি?
কী নির্মল নীল এই আকাশ, কী অসহ্য সুন্দর,
যেন গুণীর কণ্ঠের অবাধ উন্মুক্ত তান
দিগন্ত থেকে দিগন্তে;
কী ভালো আমার লাগলো এই আকাশের দিকে তাকিয়ে;
চারদিক সবুজ পাহাড়ে আঁকাবাঁকা, কুয়াশায় ধোঁয়াটে,
মাঝখানে চিল্কা উঠছে ঝিলকিয়ে।
তুমি কাছে এলে, একটু বসলে, তারপর গেলে ওদিকে,
স্টেশনে গাড়ি এসে দাড়িয়েঁছে, তা-ই দেখতে।
গাড়ি চ’লে গেল! -কী ভালো তোমাকে বাসি,
কেমন করে বলি?
আকাশে সূর্যের বন্যা, তাকানো যায়না।
গরুগুলো একমনে ঘাস ছিঁড়ছে, কী শান্ত!
-তুমি কি কখনো ভেবেছিলে এই হ্রদের ধারে এসে আমরা পাবো
যা এতদিন পাইনি?
রূপোলি জল শুয়ে-শুয়ে স্বপ্ন দেখছে; সমস্ত আকাশ
নীলের স্রোতে ঝরে পড়ছে তার বুকের উপর
সূর্যের চুম্বনে। -এখানে জ্ব’লে উঠবে অপরূপ ইন্দ্রধণু
তোমার আর আমার রক্তের সমুদ্রকে ঘিরে
কখনো কি ভেবেছিলে?
কাল চিল্কায় নৌকোয় যেতে-যেতে আমরা দেখেছিলাম
দুটো প্রজাপতি কতদূর থেকে উড়ে আসছে
জলের উপর দিয়ে। - কী দুঃসাহস! তুমি হেসেছিলে আর আমার
কী ভালো লেগেছিল।
তোমার সেই উজ্জ্বল অপরূপ মুখ। দ্যাখো, দ্যাখো,
কেমন নীল এই আকাশ-আর তোমার চোখে
কাঁপছে কত আকাশ, কত মৃত্যু, কত নতুন জন্ম
কেমন করে বলি।”
----------------
মেঘলাঃ এই, তুমি না একসময় মেয়েদের ইমপ্রেস করার জন্য কবিতা লিখতে? লেখনা এখন? ৯.০০ টায় কথা হবে কিন্তু।
মেঘলার ফোন সুইচড অফফ......।
বন্ধুগণ, সারাদিন অপেক্ষা শেষে মেঘলা আর আকাশ এখন ফ্রি মানে ঘড়িতে রাত ৯.০০টা বাজে, আপনারা ফ্রি তো, চলুন আমরাও কানপেতে কিংবা আড়িপেতে শুনি তারা কি বলছে।
মেঘলাঃ এই তুমি তো খুব পড়াশুনা কর,
আকাশঃ কি করে বুঝলে?
মেঘলাঃ তোমার ফেইসবুক টাইম লাইন দেখলেই সেটা বোঝা যায়। তুমি তো ব্যাপক আয়োজন না করে কিছুই করনা দেখছি?
আকাশঃ তা সে রকম কিছু না। তবে যা পড়ছি তার একটা লিস্ট বানানোর জন্য ফেইস বুকে শেয়ার করি। দেখ আমার মুভি দেখার আপডেটও কিন্তু টাইম লাইনে আছে। হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
আকাশঃ এই মিলি নামে আমাদের ক্লাসে একটা মেয়ে ছিল না, শ্যামলা গাঁয়ের রঙ। মনে আছে তোমাদের তিনজনের একটা গ্রুপ ছিল, যার এক সদস্যা সেই মিলি?
মেঘলাঃ কি ব্যাপার?
আকাশঃ এই তোমার কি মিলির সাথে এখনও যোগাযোগ আছে?
মেঘলাঃ সন্দেহের ইঙ্গিত পাচ্ছি!?
আকাশঃ না তোমরা তো ভাল বন্ধু ছিলে, ভাবলাম এখনও আছে কিনা?
মেঘলাঃ জানি তো, মিলি তো তখন তোমার কঠিন শুভানুধ্যায়ী ছিল। সেই জন্যই তোমাকে দেখলেই আমাকে বলতো, “দেখছিস, ছেলেটা কত স্মার্ট”।
আকাশঃ আমি তো ঐ স্কুল ছেড়ে অন্য পড়ায় চলে আসি। তোমরা দু’জন তো এক সাথেই পড়েছিলে? তাই না?
মেঘলাঃ হ্যাঁ, কিন্তু এখন কোন যোগাযোগ নেই। খোঁজ লাগাবো নাকি? হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
আকাশঃ না থাক লাগবে না।
মেঘলাঃ এই তুমি নাকি, মিলিকে প্রেমপত্র দিয়েছিলে? আমরা বান্ধবীরা সবাই জানতাম। হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
আকাশঃ তাই নাকি? হ্যাঁ একদিন বিকেলে ওদের বাসায় গিয়েছিলাম আর এই নিয়ে একটা ঘটনাও আছে। কিন্তু বিশ্বাস কর তুমি যেমনটা ভাবছ ঘটনা কিন্তু তেমন না। শুনবে?
মেঘলাঃ আমার জেলাসি লাগছে, তাই শুনব না।
আকাশঃ আরে ভাই, এখন তো মিলি নেই। জেলাসি আসছে কিভাবে? প্লিজ... আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ তো আমাকে দেয়া উচিৎ। নাকি?
মেঘলাঃ আচ্ছা ঠিক আছে, গল্পটা বল।
আকাশঃ শোন, তোমার তো মনে থাকার কথা। আমাদের বাড়ীর সামনের রাস্তা দিয়ে তুমি মিলি, শিলা সকালে স্কুলে যেতে। তারপর আবার বিকেলে আমার বাড়ীর সামনে দিয়েই তোমরা বাড়ী ফিয়ে যেতে।
মেঘলাঃ হ্যা, তাতে কি? রাস্তা থাকলে যাবো না?
আকাশঃ তোমার মনে আছে, আমরা একই পাড়ার তিন বন্ধু তোমাদের পেছনে হেঁটে হেঁটে স্কুলে যেতাম? সজীব, রাজীব আর আমি।
মেঘলাঃ মনে আছে, তারপর কি হয়েছে বল।
আকাশঃ তো আমাদের মধ্যে রাজীব কে মনে আছে তো?
মেঘলাঃ হ্যা
আকাশঃ রাজীবের সাথে ওর খুলনায় থাকে এমন এক মেয়ে কাজিনের সাথে চিঠিপত্র লেখালেখির সম্পর্ক ছিল।
মেঘলাঃ হ্যা, আমিও শুনেছিলাম। তারপর...
আকাশঃ তো, আমরা তিন বন্ধু মিলে একত্রে রাজীবের লাভার রিনার পাঠানো চিঠিগুলো পড়তাম।
মেঘলাঃ হ্যা, বুঝলাম। ইয়ার দোস্ত কাকে বলে, লাভারের প্রাইভেসি বলতে কিছুই ছিলনা, আফসোস। তারপর...
আকাশঃ তো আমাদের বন্ধু, রাজীবের একটা ইচ্ছা হয়েছিল আমাদের তিনজনের ছেলেদের গ্রুপ থেকে তোমাদের তিন জনের মেয়েদের গ্রুপে একটা বেনামি চিঠি দিয়ে তোমাদের মন পরীক্ষা করার।
মেঘলাঃ তাই নাকি? মনে মনে এতো বড় একটা চক্রান্ত করেছিলা!?
আকাশঃ তো তোমাদের মধ্যে মিলিকে সিলেক্ট করে সজীব, আর বাকী আমরা দু’জন শুধু গল্পটা এগিয়ে নিয়ে যাই।
মেঘলাঃ ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে...
আকাশঃ তো একদিন বিকেলে আমরা তিনজন এলাকার মেইন রাস্তা থেকে ৫/৬টা ম্যাগাজিন পত্রিকা, ষ্টেশনারী দোকান থেকে খাম আর চিঠির প্যাড কিনি। তারপর রাতে সজীবের বাড়ী গিয়ে ম্যাগাজিন থেকে পত্র-মিতালি আর চিঠি-পত্র কলামগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ি।
মেঘলাঃ কেন রিনার চিঠিগুলো তো ছিল?
আকাশঃ হ্যাঁ ছিল, তবুও আমরা ম্যাগাজিন পত্রিকার চিঠিগুলোর দরকারি অংশ আন্ডারলাইন করে ফেললাম। তারপর নতুন কেনা চিঠির প্যাডে লেখার কাজ শুরু হল।
মেঘলাঃ কে লিখেছিল? তুমি?
আকাশঃ তুমি তো জানো, আমার হাতের লেখা ভাল ছিল। তাই সজীব আর রাজীব আমাকেই জোর করলো লেখার জন্য। বন্ধু বান্ধবের কথা ফেলতে পারলাম না!?
মেঘলাঃ তুমি লিখলে তাইনা?
আকাশঃ হ্যাঁ, লিখলাম। মনে আছে তিন পেজের একটা চিঠি লিখেছিলাম। এবার এলো তোমাদের গ্রুপে চিঠি পাঠানোর কাজ।
মেঘলাঃ ... এই দেখছো, বাইরে কেমন বৃষ্টি হচ্ছে... রাতের বৃষ্টি কতো রোমান্টিক তাই না... এই আমার কিন্তু ভিজতে ইচ্ছা করছে...
আকাশঃ কি গল্প থামিয়ে দিবো?
মেঘলাঃ না ঠিক আছে, বলো...
আকাশঃ তো, সজীব বলে চিঠিটা তোমাদের গ্রুপে পাঠানো ঠিক হবে না।
মেঘলাঃ কেন?
আকাশঃ তার ধারণা ছিল, স্কুলে জানাজানি হলে মাইর খাওয়ার চান্স আছে?
মেঘলাঃ তখন কি করলে?
আকাশঃ আমি সজীব কে বললাম, তাহলে চিঠি বাদ দেই;
মেঘলাঃ তারপর...
আকাশঃ যেহেতু রাজীবের খুলনার রিনা’র সাথে প্রেম ছিল, তাই সজীবের মিলির প্রতি আগ্রহ কাজ করলো...
মেঘলাঃ আমার আর শিলার কথা কেউ ভাবলে না?
আকাশঃ তুমি তো তখন পিচ্চি মেয়ে, রাগি একটা মেয়ে...
মেঘলাঃ আর শিলা...
আকাশঃ শিলার কথা অন্যদিন বলবো, আজ মিলির গল্পটা শেষ করি...
মেঘলাঃ ঠিক আছে বলো, শুনছি...সরি পড়ছি... হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
আকাশঃ আমাদের তিন জনের মধ্যে আমার হাতের লেখা ভাল ছিল সেটা আগেই বলেছি... আর কাট পেস্ট আমি ভালই পারি..., তাই সজীব অনুরোধ করল। বন্ধু তুমি আমার জন্য একটা চিঠি লিখে দাও মিলির জন্য...
মেঘলাঃ তারপর
আকাশঃ আমি বন্ধুত্বের জন্য তাই করলাম উৎসাহ সহকারে...পত্রমিতালি থেকে ৪/৫ টা চিঠি থেকে কাট পেস্ট করে লেখা হল, এখন চিঠি পাঠানোর কাজ...
মেঘলাঃ তাই নাকি?
আকাশঃ কিভাবে যেন স্মার্টনেস (ব্যাটাগিরি) দেখাতে গিয়ে আমিই বললাম, এটা কোন ব্যাপার হলো... আমি হলে কালই মিলির বাসায় গিয়ে নিজ হাতে দিয়ে আসতাম...
মেঘলাঃ তারপর...
আকাশঃ ওরা আমাকে বিপদে ফেলে দিলো, আমরা তিনজন সেই রাতের পরদিন বিকেলে মিলিদের বাসার রাস্তায় গেলাম
মেঘলাঃ তারপর
আকাশঃ তারপর কি আর করা, অতি সাহস দেখাতে গিয়ে আমিই বন্ধুর জন্য কুরবানি দিলাম, মান-ইজ্জত, হা হা হা
মেঘলাঃ তারপর
আকাশঃ সেদিন দরজা খোলার পর মিলির মা আমার সামনে এলো, বলল তুমি কে? আমি আমার নাম, বললাম। বললাম আমি মিলির ক্লাসমেট, আমি ওর সাথে একটু কথা বলতে চাই?
মেঘলাঃ তারপর
আকাশঃ মিলি আমার সামনে এসে বলল, তুমি? আমি বললাম, তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে, স্কুলে বলতে পারবো না। তোমার বান্ধবীরা জানলে সমস্যা আছে।
…তো, সমস্যা প্রকট হবার মতো আবস্থা, মিলির মা বললেন, আমার বাবা কি করে? বাসা কোথায়? আমি তখন পারিবারিক কথা চালিয়ে গেলাম…, হা হা হা
মেঘলাঃ তারপর
আকাশঃ তো শেষ কথা হল, আমি মিলির মাকে বললাম, খালাম্মা আমি পানি খাবো, সে পানি আনতে গেলো, এই সুযোগে আমি বললাম, মিলি আমি তোমাকে একটা চিঠি দিতে চাই যেটা আমার বন্ধু সজীব লিখেছে...
মেঘলাঃ চিঠি দিয়েছিলে...?
আকাশঃ সেই চিঠি মিলি পেয়েছিল, আর সবাইকে বলেছিল আমি লিখেছি... আমি লিখেছি কিন্তু সজীবের হয়ে লিখছি... সেটা বুঝাতে পারলাম না...এদিকে জানাজানি হয়ে গেল... আমার নাম ছিল না বলে রক্ষা পেয়েছিলাম... হা হা হা
মেঘলাঃ তুমি চিঠি তে সজীবের নাম লিখনি?
আকাশঃ শোন, তুমি তাহলে পত্রমিতালি ব্যাপারটা জানোনা, সেখানে ছদ্মনাম থাকে, যে লেখে আর যাকে লেখা হয়, তাদের কারো নামই স্পষ্ট থাকে না ...। রহস্য.........তাই না।
মেঘলাঃ তুমি স্কুল থেকে চলে যাওয়ার পর, মিলির একটা ছেলের সাথে প্রেম হয়েছিল। ভয়ানক প্রেম হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
আকাশঃ দেখ, আমার মিলিকে নিয়ে আগ্রহ ছিল না, যা করেছি সজীবের জন্য করেছি। আমার কাছে আরো ক্লাসের সিক্রেট আছে! হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
মেঘলাঃ প্লিজ বল না।
আকাশঃ শোন আমি স্কুল থেকে অন্য স্কুলে চলে আসি আর অন্যপাড়ায় ছিলাম। মিলি কার সাথে কি করেছে সেটা আমি জানতে পারি নাই, কেননা সজীবের সাথে ওর হয় নাই, তাই বিষয়টা আমরা ভুলে যেতে চেয়েছি। অন্যদিকে তুমি জেনে আশ্চর্য হবে, কোন দিন মিলির সাথে আমার দেখাও হয়নি...
মেঘলাঃ এখন গল্প বললে, এখনই আবার আফসোস করছ
আকাশঃ আফসোস করছি না, এমনি বললাম। আরকি... হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
মেঘলাঃ এই তোমার না, ম্যাগাজিন কিনে পড়ার খুব শখ ছিল সেই সময়। স্কুলের ব্যাগে কি কি সব জিনিস পত্র রাখতে। তোমাকে ক্রিকেট খেলায় কোনদিন বলিং কিংবা ব্যাটিং করতে দেখিনি। সবাই তোমাকে দিয়ে ফিল্ডিং করিয়ে নিয়েছে, তাই না? হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
আকাশঃ হঠাৎ ম্যাগাজিন পত্রিকায় কথা আসলো কেন? তেমন কিছু মনে পড়ছে নাকি?
মেঘলাঃ আচ্ছা সেই সময়, যায়যায়দিন একটা ম্যাগাজিন পত্রিকা ছিল মনে আছে? সেখানে একটা কলাম লিখতেন শফিক রেহমান সাহেব কি যেন নাম, হ্যাঁ মনে পড়ছে “দিনের পর দিন” পড়েছিলে?
আকাশঃ কেন বলতো, আমি এখনও ধরতে পারছি না?
মেঘলাঃ সেই “দিনের পর দিন” কলামটিতে মইন, মিলা আর কার্ল নামের তিনটি চরিত্র ছিল। যতদূর মনেপড়ে, চরিত্র তিনটি নিয়ে ধারাবাহিক লেখা “যায়যায়দিন” নামে প্রথমে প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক সচিত্র সন্ধানী’র এপ্রিল ১৯৮০ সংখ্যায়। তারপর অক্টোবর ১৯৮৪ থেকে একই চরিত্র ভিত্তিক লেখাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় “দিনের পর দিন” নামে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন পত্রিকায়। আমি স্কুলে পড়তে আমার চাচা মামাদের সেই কলাম পড়তে দেখছি। তারপর একদিন সাহস করে পড়েছিলাম। তুমি পড়েছিলে?
আকাশঃ হ্যাঁ, মনে পড়েছে। আমি পড়েছিলাম। তবে অতো পুরানো লেখাগুলো পড়িনি। ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে দিকে যা পেয়েছিলাম তাই পড়েছি। কিন্তু কেন বলতো? কোন বিশেষ কিছু ছিল সেখানে? এখন তো আমার জানা মতে, সেই যায়যায়দিনও নেই আর শফিক রেহমান সাহেব সেই “মইন-মিলা-কার্ল” নিয়ে নতুন কিছু লেখেন না।
মেঘলাঃ মনে আছে, মইন মিলা কে অথবা মিলা মইনকে হঠাৎ করেই ফোন দিতো। তখন তো মোবাইলে যুগ ছিল না, ইন্টারনেট, ফেইসবুক, মেসেঞ্জার ছিল না। তবু তাদের একে অন্যের প্রতি আগ্রহের বিষয়টা ভেবে দেখছ একবার?
আকাশঃ হ্যাঁ, মনে পড়েছে। সেখানে মিলার মেয়ের নাম থাকে টিয়া আর ছেলে নাম রানা, তাইনা? আর মিলার স্বামীর নাম ছিল আকরাম, সে ব্যবসা করতো।
মেঘলাঃ মনে আছে, মইন মিলার বাসায় যেতো, মিলার স্বামীর সাথে আড্ডা দিতো আর টিয়া-রানা মইনকে পছন্দ করতো। আর মইনের বন্ধু কার্ল ছিল আমেরিকান।
আকাশঃ হ্যাঁ, মনে পড়েছে। মইন মিলাকে ফোন করে দেখতো মিলা স্বামী দুই ছেলে মেয়ের সংসার নিয়ে ব্যাস্ত। তারপর কুশল বিনিময় হবার পর চলে আসতো দেশের সামাজিক পরিবর্তন, মানুষের চিন্তা ভাবনা আর অর্থনীতির খবর। তারপর আসতো কলামের মুল বিষয় মানে এরশাদ সরকারে রাজনৈতিক উত্থান পতন। সব শেষে একটি প্রাপ্ত বয়স্কদের উপযোগী কৌতুক। হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
মেঘলাঃ শোন আমার আগ্রহে বিষয় রাজনীতি অর্থনীতি কোন দিনই ছিল না। আমি বিশ্ব বিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য পড়েছি।
আকাশঃ হ্যা তোমার ফেইস বুক টাইম লাইনে আমি দেখছি তুমি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী। তবে বাংলা হলে আরও ভাল লাগতো, হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
মেঘলাঃ কেন বলতো?
আকাশঃ বাংলা সাহিত্যের মেয়েদের প্রেমে পড়তে ইচ্ছা করে আর ইংরেজি সাহিত্যের মেয়েদের মাস্টার মাস্টার লাগে, হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
মেঘলাঃ এই আমি ঘুমাতে যাব। আর শোন সেখানে মইন কিন্তু বিয়ে করেছিল, যে বিয়েটা শেষ পর্যন্ত টিকে নাই। যাও আজকে আমি তোমাকে একটা কাট পেস্ট দেই। পড়ে দেখো মইন মিলার কথা ;(
মেঘলার মেসেনজার সুইচড অফফ...
ভাবছেন প্রথমে ছিল ফেইসবুক ইস্যু তারপর চলে এসেছে পূর্ণেন্দু পত্রী’র কবিতা। কবিতা শেষ না হতেই এসে গেছে আঞ্জন দত্তের গান। এবার ম্যাগাজিন পত্রিকার কলামে চলে গেছে গল্পের বিষয়। কথা দিচ্ছি গল্পটা এখনও মেঘলা আর আকাশের ফেইসবুক কেন্দ্রিক মেসেঞ্জারেই সীমাবদ্ধ আছে। সামনে তারা একে অন্যের ছবি ফেইসবুকে দেখতে দেখতে আগ্রহ বাড়িয়ে ফেলবে, তারপর পরিচিত হতে চাইবে নতুন করে, কি সে সবের কথা আপনারা কি ভাবছেন না?
আপাতত আপনারা চাইলে মেঘলার পাঠানো যায়যায়দিন ম্যাগাজিনের “দিনের পর দিন কলাম” এর তিনটা চরিত্র পড়ে দেখতে পারেন। এদিকে আমি গল্পের পরের পর্বটা ভাবি, কি বলেন?

(একটা পর্ব)
-------------
তুমি কোত্থেকে আবার উদয় হলে?
মিলা অবাক।
এতোদিন পর ফোন করলাম। ভাবলাম তুমি হকচকিয়ে যাবে। খুশি হবে। কল-কলিয়ে উঠবে। কিন্তু তা নয়। উল্টো জেরা করছো।মইন ক্ষুব্ধ।
বাঃ রে। খুশি হবো না কেন? সত্যিই খুশি হয়েছি। খুব খুশি হয়েছি। কিন্তু তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি। বলা নেই কওয়া নেই কখন যেন চলে গেলে। কোথায়? কতোদূরে? তারপর হঠাৎ এতোদিন পর ফোনে তোমার গলা শুনছি। ভীষণ অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।মিলা হাসতে হাসতেই বললো।
সত্যি বলছো খুশি হয়েছো?
হ্যা। সত্যি। সত্যি। সত্যি। তিন সত্যি। হলো তো? এবার বলো তো কবে এসেছো? কোথায় ছিলে? কি করলে এতোদিন - দাড়াও।দাড়াও। এতো প্রশ্ন এক সঙ্গে করলে মনে রাখতে পারবো না। আমাকে একটি একটি করে প্রশ্ন করো।
করলাম তো। বলো কবে এসেছো?
দিন সাতেক হয়।
আর এতোদিনে তুমি ফোন করছো? মিলা মুষড়ে পড়লো।
আমি এসেই ফোন করেছিলাম। দু-তিন দিন পরে টের পেলাম তোমাদের নাম্বার বদলে গেছে। তারপর নতুন নাম্বার জোগাড় করলাম অনেক কষ্টে।
কষ্ট কেন? আকরামের অফিসে ফোন করলেই বাড়ির নাম্বারটা পেয়ে যেতে। ওর অফিসের নাম্বারটা বদলায়নি।
তা পারতাম। কিন্তু তাহলে হয়তো তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে পারতাম না। কেননা আকরাম হয়তো পরমুহূর্তেই ফোন করে তোমাকে জানাতো যে আমি ঢাকায় ফিরেছি।
বেশ। বুঝলাম। তারপরও এতোদিন দেরি করলে কেন?
বাঃ ফোন নাম্বার পেলেই হবে নাকি?
এতোদিন পর কথা বলতে যাচ্ছি। তারপর যদি ফোন করেই তোমার স্বামীর গলা শুনতে পেতাম তাহলে কেমন লাগতো? মামুলি কুশলবার্তা বিনিময় করে ফোন ছেড়ে দিতে হতো না কি? সুতরাং আমি বিশেষ সময় খুজছিলাম যখন ফোন করলে তুমিই রিসিভার ধরবে এবং তোমারই সঙ্গে আলাপ করাবো আর সেই সময়টাও যে কখন সেটা বুঝে উঠতে উঠতে আরো কয়দিন চলে গেল।
কেন?
এরশাদ সরকারের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ফলে।
তার মানে?
মানে কার অফিস যে কবে কখন খোলা সেটা জানা এবং মনে রাখা বেশ কঠিন। সরকারি অফিস দেখছি এখন বৃহস্পতিবার হাফ আর শুক্রবার পুরো বন্ধ। বহু বেসরকারি অফিস দেখছি শুক্রবারে হাফ আর শনিবারে পুরো ছুটি। দোকানপাটগুলো একেক এলাকায় একেক সময়ে বন্ধ সুতরাং এর মধ্যে তোমার স্বামীর অফিস কখন খোলা এবং কখন তুমি শপিংয়ে না গিয়ে বাড়িতে থাকবে সেটা অনুমান করতে করতেই চলে গেল আরো কয়টা দিন।
তোমার জন্য দুঃখ বোধ করছি। সত্যিই ঢাকায় ছুটির দিনের হিসাব পাওয়া প্রায় অসম্ভব। শুধু একটা কথা বলা চলে যে, বুধবারে ঢাকায় সবকিছু খোলা থাকে পুরোদিন।
হয়তো তাই - যদি ছুটিছাটা বা হরতাল না থাকে। থাক সে কথা। আসল কথা হলো আমার লাক ভালো নিশ্চয়ই। প্রথম ফোনেই আজ তোমায় পেয়ে গেলাম।
লাক ভালো বলতেই হবে। নইলে কোনো রাগ ঝাল না দেখিয়ে তোমার সঙ্গে কথা বলছি কি করে? মিলা একটু হাসলো। তুমি এতো মিষ্টি যে, আমার ওপর কখনোই পারমানেন্টলি রাগ করা তোমার পক্ষে সম্ভব নয়।
সেটা জানো বলেই তোমার মর্জিমাফিক যা খুশি তাই ব্যবহার করে পার পেয়ে যাও তুমি। আমি নিরুপায়।
সত্যি? মইন কোমলভাবে প্রশ্ন করলো।
সত্যি। তোমার প্রতি আমার এই দুর্বলতা একটা স্থায়ী ব্যথা। একে নিয়েই আমাকে বেচে থাকতে হবে। এটাই সত্যি। তাই আমি নিরুপায়। মিলা আস্তে আস্তে কথাগুলো বললো।
মিলা। আমি তোমাকে কখনো দুঃখ দিতে চাইনি। জ্ঞানত নয়। এটা নিশ্চয়ই তুমি বিশ্বাস করো।
করি। জানি তুমি যে দুঃখ দাও সেটা না জেনেই দাও। তাইতো তোমাকে আমি কখনো পাল্টা আঘাত দিতে পারি না। আচ্ছা। একটা কথার সত্যি উত্তর দেবে?
দেবো। বলো কি জানতে চাও?
এই যে এতোদিন বিদেশে ছিলে তখন কখনো কি আমার কথা মনে পড়েছে। যেমন ধরো কোনো বান্ধবীর সঙ্গে কখনো কোনো সন্ধ্যায় কোনো কাফেতে যখন খাচ্ছিলে? অথবা কোনো বন্ধুর সঙ্গে কোনো রাতে যখন ডৃংক করছিলে? অথবা কোনো বিজনেস পার্টির সঙ্গে কোনোদিন যখন ব্যবসার কথা বলছিলে?
মিলা। আমি যেখানেই থাকি, যতো দূরে থাকি - তুমি আমার চিন্তাধারায় মিশে থাকো। এটা সত্যি। আমি কবি হলে কবিতা লিখে সেটা বোঝানোর চেষ্টা করতাম। অথবা শিল্পী হলে ছবি একে। অথবা গায়ক হলে গান গেয়ে। কিন্তু তার কোনোটাই আমি নই।সুতরাং তোমার প্রতি আমার অনুভূতি প্রকাশের ক্ষমতা খুবই সীমিত।
অর্থাৎ তোমার কথা শুনেই আমাকে বিশ্বাস করতে হবে। মিলার স্বরে কি ঈষৎ ব্যঙ্গ প্রচ্ছন্ন?
হ্যা। বিশ্বাসই তো প্রেমের ভিত্তি। তাই নয় কি?
হতে পারে। কিন্তু এসব কথা বাদ দাও। তুমি তো জানো আমি কোনোদিনই তোমার প্রেমে পড়িনি। তুমি আমার প্রেমিক নও। তাহলে আমি কি তোমার? বয়ফ্রেন্ড?
এই বয়সে আবার বয়ফ্রেন্ড ট্রেন্ড কি?
তাহলে?
বলেছি তো। তুমি একটা অনুভূতি। একটা ব্যথা। আমি চাই বা না চাই সেই একটা ব্যথা। আমি চাই বা না চাই সেই সত্যি। এর বেশি নয়। এর কমও নয়। হলো তো? এবার বলো কেমন ছিলে এতোদিন?
ভালো। কিন্তু একলা। তুমি কেমন ছিলে?
ভালো এবং সপরিবারে। আমার ছেলে-মেয়েদের কথা একবারও জিজ্ঞেস করোনি এতোক্ষণ?
বাঃ। সময় দিলে কই? টিয়া কেমন? রানা কেমন?
দুজনাই ভালো আছে। বড় হয়ে গেছে বেশ। তুমি চলে যাবার পর টিয়া অনেকবার তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছিল। এখন অবশ্য তোমাকে বোধহয় ভুলেই গেছে।
দেখা যাবে সেটা। আর তোমার স্বামী? ভালো আছে। বলতে পারো খুব ভালো আছে।
তার মানে?
ওর সব পাকিস্তানি কনটাকটরা এখন ক্ষমতার চারপাশে। সুতরাং ও বড় বড় ডিল করছে।
মানে গত দুবছরে আকরাম প্রচুর পয়সা করেছে। মইন হেসে বললো।
প্রচুর কি না জানি না। ওতো আর আমাকে ওর ব্যাংকের হিসাবপত্র দেখায় না। তবে হ্যা একটা নতুন গাড়িতে চড়ছি। রিকন্ডিশন্ড গাড়ির যুগ শেষ হয়েছে আমাদের। একটা নতুন টয়োটার যুগ শুরু হয়েছে। আর সংসার চালানোর জন্য আমাকে আগের চাইতে অনেক বেশি টাকা দিচ্ছে। তবে তার আরেকটা কারণও আছে। জিনিসপত্রের দাম এই দুই বছরে বেশ বেড়েছে। দোকানে গেলেই বুঝবে।
শুনেছি।
তোমার রান্নাবান্না করার লোকজন সব আছে তো? নাকি হোটেলেই খাচ্ছো?
না। জনকে রেখেই গিয়েছিলাম। সুতরাং ও দিকটার কোনো চিন্তা নেই। আবার সেই চিরপরিচিত ডিশগুলো চলে আসছে টেবিলে।
একদিন এসো। খেয়ে যেয়ো। মুখটা বদল করা উচিত হবে।
নিশ্চয়ই।
আকরামকে ফোন করে অফিশিয়ালি জানিয়ে দিও যে, তুমি এসেছো। সে-ই তোমাকে ডাকবে।
আমি জানি। হি ইজ এ ফাইন পার্সন।
হ্যা। মিলা আর কিছু বললো না।
বৃহস্পতিবারে পূজা।
শুক্রবারে ছুটি।
শনিবারে মহররম।
লম্বা তিনদিনের উইকএন্ড পেয়ে কার্ল আগে থেকেই প্ল্যান করেছিল মইনের ঢাকায় ফেরাটাকে সেলিব্রেট করার।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সে ছোটখাটো একটা পার্টি ছকেছিল তার বনানীর বাড়িতে।
মইন যখন রূপালি রঙের বাক্সে বনেদি হুইস্কি শিভাস রিগালের বোতলটা নিয়ে কার্লের বাড়িতে হাজির হলো তখন কার্ল ড্রয়িংরুম সাজানো নিয়ে ব্যস্ত ছিল।
ওয়েলকাম মইন। তুমি সবার আগেই এসে গেছো। সহাস্যে কার্ল তাকে অভ্যর্থনা জানালো।
তাই তো দেখছি। তুমি ছবিগুলো নিয়ে কি করছো?
একটু রি-অ্যারেঞ্জ করছি। সালভাদর ডালির পৃন্টগুলোকে সামনের দিকে আনছি। আর পিকাসোর পৃন্টগুলো ওই কোণার দিকে রাখছি।
হঠাৎ ওদের স্থান পরিবর্তন করছো কেন? কি দোষ করেছে ডালি আর পিকাসো? মইন সোফায় এলিয়ে বসলো।
বিয়ার খাবে? নাকি তোমার হুইস্কি?
না। আশ্বিনের এই গরম সন্ধ্যায় আগে বিয়ার দিয়েই স্টার্ট করা যাক।
সালভাদর ডালিকে সামনে আনছি কেন? কিচেনের ফৃজ থেকে দুই ক্যান কার্ল কিচেনের ফৃজ থেকে দুই ক্যান টুবর্গ বিয়ার নিয়ে এলো। দেখ মইন, সালভাদর ডালি এখন একটা নিউজ। পিকাসো তো আগেই মারা গেছেন। ডালিও এখন বোধহয় মারা যাবেন।…

(বিঃদ্রঃ যায়যায়দিন ম্যাগাজিনের মইন-মিলা-কার্ল নিয়ে কলামের বাকিটা আপনাদের নেটে খুঁজে পড়ে নিতে হবে...। কেননা গল্পের প্রয়োজনে এর বেশি কপি/পেস্ট থাকা সমীচীন মনে হচ্ছে না)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.