![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই শহরে কিছু কিছু শব্দ কলম নয় হ্রদয় থেকে নেমে আসে, একা। এই শহরে বিনয় ঝুলে থাকে মরা গাছের ডালের মতো, একা।
আমার মতো যারা মফসল শহরে ছেলেবেলা কাটিয়েছেন তাদের কাছে জন্মদিন কোন বিষয়ই না। কার জন্মদিন কবে এলো, আর কারটা চলে গেলো, কেউ তার কোনও খোঁজই রাখে না। কৈশোরের সেই দিনগুলিতে জন্মদিন বিষয়টা ছিল গল্প, কবিতা, গান আর বিটিভি নামক চ্যানেলের নাটকের মতো...। কলেজে এসে জন্মদিন বিষয়টা জায়গা করে নিয়েছিলো, O. Henry এর লেখা "The Gift of the Magi" গল্পের উপহার নিয়ে দুঃখবোধ হয়ে নীরবে বুকের বামপাশে।
যাই হোক, আমাদের গল্পের ছেলেটির নাম সোহান সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ে কিন্তু গত কয়দিন যাবত সে বাংলা বিভাগে ক্লাস করছে। একটি মেয়ের সাথে দেখা হবার সম্ভাবনাটা তার মাথায় কাজ করছে। হ্যা এই গল্পের মেয়েটির নাম সিমিন আর সে বাংলা বিভাগে পড়ে।
একদিন রেজিস্টার বিল্ডিং এর পরিবহন পুলে সোহানের সাথে কাকতালীয়ভাবে কথা হয় সিমিনের সাথে। সিমিন বৃষ্টির-মুখোর এক বিকেলবেলা একা একা পরিবহন পুলের ছাউনিতে দাড়িয়ে ছিল। বৃষ্টিতে কাক-ভেজা হয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে সোহান এসে দাঁড়ালো ছাউনিতে তারপর রুমাল দিয়ে মাথা মুছতে লাগল।
এমন সময় সিমিন তার কাছে গিয়ে বলল, আপনি আমাকে বলতে পারেন মিরপুর রোডের চৈতালি কিংবা বৈশাখী বাসটা কখন এখান থেকে ছেড়ে যায়?
সোহান আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো, মেয়েটি তার উদ্দেশ্যেই কথা বলছে।
সোহান বলল, কেন আপনার বাসা মিরপুর হলে এতোদিনে তো রুটিন আপনার মুখস্ত হয়ে যাওয়া উচিৎ?
সিমিন বলল, দেখুন আমি থাকি শান্তিনগর, আজ মা সারাদিন বড়খালার বাসা মিরপুরে থাকবেন তাই মিরপুর যাওয়া দরকার। আপনি আমাকে রুটিনটা জানলে বলুন। প্লীজ
সোহান বলল, দেখুন, আমি থাকি যাত্রাবাড়ী। তবে আমার কাছে বাসের রুটিন আছে, দেখি বৃষ্টিতে এখনও ঠিক আছে কিনা।
সিমিন বলল, প্লীজ একটু খুঁজে দেখুন।
সোহান শার্ট আর প্যান্টের পকেটে খোঁজা-খুঁজি করলো, না পাওয়া গেলো না।
সিমিন বলল, পাচ্ছেন না, তাই না?
সোহান বলল, না, পাচ্ছি না। কোথায় যে রেখেছিলাম, আমার মানিব্যাগের পকেটেই ছিল... এখন পাচ্ছি না!
এমন সময় পরিবহন পুলের এক বাসের হেল্পারকে পাওয়া গেলো, সেই হেল্পার কাছে আসার পরে সোহান তাকে বলল, বাস কখন ছেড়ে যাবে? হেল্পার জানালো, ভাই আপনি জানেন না, গতকাল এক বাসের ড্রাইভারের সাথে রেজিস্টার বিল্ডিং এর এক কর্মচারীর ঝগড়া হয়েছে এই কারণে আজ বাস স্ট্রাইক।
এবার সোহান আর সিমিন দুজনেই বুঝতে পারলো, এই কারনেই আজ বিকেলে পরিবহন পুরের যাত্রী ছাউনিতে কেউ নেই।
দশ-পনের মিনিট পরেই বৃষ্টি থেমে গেলো, তারপর তারা হাটতে লাগল শাহবাগের দিকে। সোহান আর সিমিন শাহবাগ যেতে যে ১৫ মিনিট লাগল, তাতেই তাদের পরিচয় আর মাঝে মাঝে কলা ভবনে দেখা।
সোহান গল্প পড়তে আর শুনতে ভালবাসে তাই বাংলা বিভাগে ফ্রি ক্লাস করতে যায়। আর উপরি হিসেবে দেখা হয়ে যায় সিমিনের সাথে। যাই হোক, আজ সিমিনের জন্মদিন। সোহান সকাল থেকেই বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছে কিভাবে কি করা যায়? দুপুরে লাঞ্চের সময় সিমিনের সাথে দেখা হল সোহানের কলা ভবনের দুতলায়।
সোহান বলল, শুভ জন্মদিন।
সিমিন বলল, ধন্যবাদ; তুমি এখানে...
সোহান বলল, যদি বলি তোমার কোন আপত্তি না থাকলে তোমার জন্য একটা উপহার আর দুপুরের লাঞ্চ একত্রে করার পরিকল্পনা করেছি, তুমি কি এই দুঃসাহস কে পাত্তা দেবে?
সিমিন বলল, হ্যা পাত্তা দেবো; কারন এই পরিকল্পনা আমার জানামতে কেউ করেনি...
সোহান বলল, তাহলে চলো শাহবাগ-আজিজ মার্কেট যাওয়া যাক...
সিমিন বলল, হ্যা চলো...
একটা রিক্সায় তাদের ভ্রমণ শুরু হল, এটাই ওদের এক রিক্সায় প্রথম ভ্রমণ...। শাহবাগের আজিজ মার্কেটে গিয়ে সোহান বলল, বইটা কি তোমার পছন্দে কিনবো নাকি আমার...
সিমিন বলল, দেখো, বইটা তুমি আমার পছন্দে কিনো, আর তোমার নিজের দুই/চারটা লাইন বইয়ে লিখে দাও, আর খাবার হবে তোমার পছন্দ মতো...ঠিক আছে...
সোহান বলল, ঠিক আছে...
তারপর সিমিন পছন্দ করলো, A Garden Beyond Paradise: Poems of Rumi আর সেই বইয়ের দ্বিতীয় পেইজে সোহান লিখে দিখলো,
“একে একে ঝড়ে যায়
পাতা ঝরা দিন
নীল আকাশে থেকে যায়
শুধু স্মৃতির ঋণ”
তারপর রেস্তরায় মুখোমুখি বসে, সোহানের সাথে সিমিনের সেদিন অনেক কথাই হয়েছিল, দুপুর গড়িয়ে মায়াবী বিকেল কিনে নিয়েছিল তাদের হেঁয়ালি সময়...।
আজ থেকে দশ বছর আগের সেই জন্মদিনটাকে ভেবে ভেবে কানাডার Toronto শহরে বসে সিমিন নেটে খুঁজে পেলো, A Garden Beyond Paradise: Poems of Rumi
তারপর পড়তে লাগলো,
“Everything you see has its roots
in the Unseen world.
The forms may change,
yet the essence remains the same.”
না, সোহান ঢাকায় আছে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পাচটি বছর সে সিমিনকে নিয়ম করেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাঠিয়েছে। তারপর সিমিনের সীমাবদ্ধটার সুত্রকে মনে না নিলেও মেনে নিয়েছে।
আজ সে ইচ্ছে করেই কোন মেসেজ পাঠায়নি সিমিনকে। এদিকে সিমিন ফেইসবুকের ইন-বক্স খুঁজছে সোহানের সেই লাইন, কারন সোহানের সেই বই আর সোহান নামের হেঁয়ালি মনের মানুষটা ঢাকা নামের ধূসর শহরে পরে আছে। যেই শহরে শীতের শুরুতেই গাছের পাতারা একে একে ঝরে যায়...!?
“একে একে ঝড়ে যায়
পাতা ঝরা দিন
নীল আকাশে থেকে যায়
শুধু স্মৃতির ঋণ”
...
© খোরশেদ খোকন। ১৯/১২/২০১৫
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৫
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ
আপনার কথায় অনুপ্রেরণা পেলাম।
২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: মোটামুটি।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৬
খোরশেদ খোকন বলেছেন: হ্যা, গল্প লেখার চেষ্টা করছি।
আশা করছি আগামীতে আরও ভাল লিখতে পারবো।
ধন্যবাদ
৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৩
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৭
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ
গল্পটা আসলে খুবই ছোট। অনুভূতিটাই সব
৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৫
সুলতানা রহমান বলেছেন: ভালই লাগলো।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৮
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ
আপনার কথায় উৎসাহ পাচ্ছি। ভাল থাকবেন।
৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৮
কল্লোল পথিক বলেছেন: বেশ হয়েছ
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৮
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ
আপনি আমাকে উৎসাহ দিলেন, শুভ কামনা।
৬| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৩
সুমন কর বলেছেন: ভালো হয়েছে।
+
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৯
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ
আপনার উৎসাহে অনুপ্রাণিত বোধ করছি। শুভেচ্ছা।
৭| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১০
আমি মাধবীলতা বলেছেন: ভালো লাগলো
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২১
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন। শুভেচ্ছা
৮| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭
রায়হান মজিদ বলেছেন: ভালো লাগলো
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৮
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৬
আহমাদ সালেহ বলেছেন: বেশ ভালো লাগলো গল্পটা