![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই শহরে কিছু কিছু শব্দ কলম নয় হ্রদয় থেকে নেমে আসে, একা। এই শহরে বিনয় ঝুলে থাকে মরা গাছের ডালের মতো, একা।
রাত গভীর হতেই পৌষের শীত গাঢ় হয়ে নামলো। লেপের আদর গাঁয়ে মেখে কাফকা পড়ছিলাম, পড়তে পড়তে জমে যাচ্ছিলাম, তবুও পড়ছিলাম...।
ভাত-ঘুম ভাঙতেই দেখি, আমি একটা সাপ হয়ে গেছি। সাপ হয়ে যাওয়াতে একটুও অস্বস্তি হচ্ছিল না। কিন্তু কি জাতের সাপ হয়ে গেছি সেটা জানার কৌতূহল নিয়ে আয়নার সামনে গেলাম, নিজেকে এপাশ-ওপাশ করে দেখলাম। না; সাপ হিসেবে নিজের জাতটাই ধরতে পাড়লাম না। সর্প বিদ্যার খোঁজে বইয়ের তাকে গিয়ে হাতে পেলাম "বেহুলা-লক্ষ্মীন্দর"। নিজেকে সর্পদেবী মনসার বংশধর আবিষ্কার করে তৃপ্তি পেলাম।
গ্রামের সোজাপথে একেবেঁকে এগিয়ে গিয়ে একটা ঝোপের আড়ালে আশ্রয় নিলাম। ঝোপের পাশের বাড়ীর গ্রাম্য বধূটির ফিস ফিস কথায় জানতে পারলাম, সে বাড়ীর বড়ছেলেটি গতরাতে কাল-নাগিনী’র দংশনে মারা গেছে।
একটানা শুদ্ধ সঙ্গীত আমার কানে ভেসে আসা মাত্রই, আমি সেদিকে ছুটে গেলাম, গিয়ে দেখলাম মোহন সুরে বীণ বাজাচ্ছে বুড়ো ওঝা। আমাকে দেখে সেই ওঝা কি একটা ইশারা করলো... আর তার সেই ইশারায় আমাকে কাল-নাগিনী ভেবে সে বাড়ীর দুই জওয়ান ছেলে লাঠি নিয়ে তাড়া করলো...।
আমি আমার ফনা বিস্তৃত করলাম, হিস... হিস... করলাম...। নিজেকে এইবার আমি প্রকৃত সাপ ভেবে অহংকারী হলাম। তারপর সুলতানের আঁকা ছবির মতো পেশিবহুল দুইটা মানুষ আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো...।
আমি মনসা দেবীকে স্মরণ করে চিৎকার দিয়ে বললাম, আমাকে এই নিষ্ঠুর পৃথিবী থেকে বাচাও, ভু-পৃষ্ঠ দুইভাগ করে দাও, আমাকে মৃত্তিকার বুকে ঠাই দাও...। আমার চিৎকারে ভু-পৃষ্ঠ কেঁপে উঠলো...আমি ভু-পৃষ্ঠ কোথায় দুইভাগ হয়ে একটি সাপের গর্ত তৈরি হয়েছে সেটার খোঁজ করলাম...।
...ঘুম ভেঙে দেখলাম, বিল্ডিংটা ভূমিকম্পে কাঁপছে...কাঁপতে কাঁপতে আমি বুকের উপর থেকে কাফকার মেটামরফোসিস ফেলে পালানোর পথ খুঁজলাম...!
...
© খোরশেদ খোকন।০৬/০১/২০১৬
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩০
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগছে।
ভাল থাকবেন।
২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫০
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: গল্পে একটা চমৎকার মেসেজ আছে| ধরতে পেরেছি বলে ভাল লাগছে| হয়ত আপনি সেটা ভেবে নাও লিখতে পারেন!
ভূমিকম্পের সময় বুঝতেই পারিনি
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৯
খোরশেদ খোকন বলেছেন: রাখাল ভাই
‘ডেথ অফ দ্যা অথার’ বা ‘লেখকের মৃত্যু’ বলে যে একটা টার্ম আছে ফরাসী তাত্বিক রোল্যা বার্থ এর সেই হিসেবে আগে পাঠক পড়ুক আর ভাবুক; তারপর একদিন বলবো, গল্পের ভাবনাটা কি?
আপাতত আপনার ভাবনা জানার লোভও আছে। বললে ধন্য হবো।
ধন্যবাদ
৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৩
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
কাফকার ভূত শেষে ধরার কাঁপুনিতে ছুটলো। অনুগল্পটা কিন্তু ছোটগল্পের মতোই পরিণতি হয়ে গেছে। খোরশেদ খোকন, ভূমিকম্প কেমন টের পেয়েছিলেন ? ভূমিকম্প নিয়ে আমি গল্প-টল্প লিখতে চাই নে। আল্লাহ রক্ষা করুন।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৩
খোরশেদ খোকন বলেছেন: ধন্যবাদ
গতবছর দুই বারের ভূমিকম্পের সময় একবার লঞ্চে ছিলাম আর একবার গাড়ীতে ছিলাম; তাই বুঝতে পারি নাই।
এইবার ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম, এদিকে বাসায় একাই থাকি। আর কাফকার ভূত মনে হয় ছাড়বে না; এই লেখাটা একটা এক্সিরিয়েন্স বলতে পারেন। ভাল থাকবেন।
৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:১৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৪
খোরশেদ খোকন বলেছেন: হাসান মাহবুব ভাই
কেমন আছেন?
আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ
৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:০৪
রাফা বলেছেন: সুন্দর হয়েছে অনুগল্প।
ধন্যবাদ,খো.খোকন।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪২
খোরশেদ খোকন বলেছেন: রাফা ভাই
ভাল আছেন? আপনার মন্তব্যে উৎসাহ পেলাম। ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৪
সুমন কর বলেছেন: ঘুম ভেঙে দেখলাম, বিল্ডিংটা ভূমিকম্পে কাঁপছে...কাঁপতে কাঁপতে আমি বুকের উপর থেকে কাফকার মেটামরফোসিস ফেলে পালানোর পথ খুঁজলাম...! ---- হাহাহা ভালোই লিখেছেন।