![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাত জোর করে বলছি ___ আমাকে বিশ্বাস করুন! আমি একজন অকর্মা ………
'ওকি গাড়িয়াল ভাই, হাকাও গাড়ী তুই চিলমারীর বন্দরে' উত্তরের আব্বাস উদ্দিনের গেয়ে যাওয়া এই গানটি আজো ছরিয়ে আছে বাংলা উপমহাদেশে। এইতো খুব বেশী দিন আগের কথা নয়, বৃটিশদের শাষন আর শোষনের মাঝেও চমক ছিলো রংঙে ভরা রংপুরের! রংপুরের গা জরিয়ে আছে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নিলফামারী, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও। বৃহত্তর এই ভাওয়াইয়া অঞ্চলে বৃটিশদের নীল চাষ সহ বিভিন্ন কাচামাল ও শিল্পের সাথে যোগাযোগ রাখতেই ততকালীন তৈরি হয় সড়কপথ ও রেলপথ।
ততকালীন ভারতের সাথে যোগাযোগ রাখতে কুড়িগ্রামের সোনাহাট ব্রিজ এখনো দাড়িয়ে আছে কিছু অংশবিশেষ, পাক-বাংলার যুদ্ধে কিছু অংশ হারিয়ে এখন শুধু সৃতিই হয়ে আছে। প্রত্নপ্রস্তর যুগে এ অঞ্চলে বাস করত নিগ্রো জাতি। এরপর আসে নব্যপ্রস্তর যুগ। আসামের উপত্যকা অতিক্রম করে আসে অস্ট্রিক জাতীয় জনগোষ্ঠী। তারপরে আসে দ্রাবিড় ও মঙ্গোলীয়রা। এদের মিলিত স্রোতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মানবসভ্যতার সূচনা হয়। এরাই লাঙ্গল দিয়ে চাষের প্রবর্তন করেছে। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি করেছে চালু। নদনদীতে ডিঙি বেয়েছে, খেয়েছে শুঁটকি, খেয়েছে বাইগন বা বেগুন, লাউ বা কদু, কদলী বা কলা, জাম্বুরা, কামরাঙ্গা। করেছে পশু পালন। এঁকেছে কপালে সিঁন্দুর। করেছে রেশম চাষ। করেছে তামা, ব্রোঞ্জ ও সোনার ব্যবহার। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন, ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করত 'ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি'। ১৮৫৮ সালের পর শাসনকার্যের ক্ষমতা চলে যায় ব্রিটিশ সরকারের হাতে। এই ব্রিটিশ সরকারের আমলে কুরিগঞ্জ চারটি থানায় বিভক্ত ছিল। পরে ১৮৭৫ সালে ২২ এপ্রিল তারিখে একটি নতুন মহকুমার গোড়াপত্তন হয়। এ মহকুমার নাম 'কুড়িগ্রাম'। কুড়িগ্রামঘেঁষা ব্রহ্মপুত্রের কারণে এখানে আসে বিভিন্ন আদিম জনগোষ্ঠী। এসব কারণে এখানে গড়ে উঠেছিল একটি সভ্যতাও। বিজিত আর্যদের কোন স্মৃতি এখানে নেই। তবে অন্যদের কিছু কিছু ক্ষীয়মাণ রাজচিহ্ন রয়েছে। বারো বা দ্বাদশ শতকের প্রথমপর্বে এ অঞ্চলে সেন রাজবংশের শাসনকাল আরম্ভ হয়। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চত্রা নামক গ্রামে এদের রাজধানী ছিল।এ বংশের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন রাজার নাম নীলধ্বজ সেন,চক্রধ্বজ সেন,নীলাম্বর সেন।সেনবংশের পতনের পর শুরু হয় মুঘল যুগ।
বৃটিশরা চলে গেলে প্রায় অভিভাবক থেকেও অভিভাবক হারা হয়ে পরে এই ভাওয়াইয়া জনপদ।
বেগম রোকেয়া, বাংলার মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত।
হেয়াত মামুদ, মধ্যযুগের কবি।
আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি ও ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।
এম এ ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী।
আনিসুল হক, লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক।
নাসির হোসেন,বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও
সানজিদা ইসলাম একজন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সদস্য।
বীর প্রতিক তারামন বিবি। প্রথিতযশা সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক।
এছাড়াও আছেন অনেক গুনিজন ব্যাক্তিবর্গ...।
তিস্তাঃ সিকিমের পার্বত্য অঞ্চলে উৎপত্তি হয়ে নীলফামারী বাংলাদেশে ঢুকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে গাইবান্ধার
চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নামে পূর্ব-দক্ষিণে প্রবাহিত হয়েছে।
তিস্তা নদীর ভৌগলিক কারনে নানান সময়ে বিভিন্ন দিগ পরিবর্তন করে উত্তর জনপদের ভূমিকে করেছে উর্বর ও শস্য ফলন উপযোগী।
বাংলাদেশ সরকার এই জনপদেকে উন্নয়ন ও আত্ননির্ভরশীল করতে কালে কালে অনেক পন্থা অবলম্বন করলেও সুখ মিলেনি এই অভিবাসীদের্। ন্যাশনাল সার্ভিস, ১০টাকার চাল, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কিংবা মঙ্গা নিয়ে বিভিন্ন প্রজেক্ট।
এই জনপদের মঙ্গা অভিশাপের মুল কারনেই হল অতি মাত্রায় নদী ভাঙ্গন।
ভাওয়াইয়া জনপদের বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হলে দেয়া হয় রিলিফ, থাকার জন্য দেয়া হয় ছাউনি ছাড়া খোলা আকাশটাকে।
প্রতিবছর এখানে কেউ না কেউ এসে শুনিয়ে যান মঙ্গা দূরীকরণের মন্ত্র বানী।
তবুও দূর হয়নি এই অঞ্চলের অভিশাপ।
এ অঞ্চলের মানুষ অনেকেই কৃষিতে নির্ভরশীল হলেও দামটুকু পায়নি ধান গম কিংবা পাট বিক্রি করে।
এ অঞ্চলের মানুষ থাকার জন্য খোলা মাঠ আর খাওয়ার জন্য চায় রিলিফ, এটাই ভেবে থাকেন সরকার...
তবে এসবের মুল কারনেই কি সরকার? নাকি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অভাব নাকি বৃটিশদের দেয়া অভিশাপ?
স্কুলে গরু ছাগলের হাট বসলে প্রশাসন থেকে শুরু করে পুরো বাংলার টনক নড়ে। মসজিদ মন্দির ভাঙ্গতে গেলে যুদ্ধের উপক্রম চলে। বাজার ভাঙ্গতে গেলে পুলিশ দিয়ে লাল হয়ে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মিডিয়া সংবাদ মাধ্যমে প্রচার পুরো বিশ্বকে ছরিয়ে যায়।
তবুও শুনতে পায়না কেউ তিস্তার বাসির কান্না। এই অভিবাসীরাই ভিন্নতর! বাজার ইস্কুল কিংবা মসজিদ মন্দির ভাঙ্গলে তাকানোর থাকেনা কেউ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৩৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: নদী ভাঙনের ছবিগুলো ভয়ঙ্কর! লেখায় + +