![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দৃশ্যপট ১ঃ ছোটবেলায় পড়তাম-শুনতাম, সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ, বাংলাদেশের চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ,এদেশের মত এতো সবুজ আর কোথাও নেই। পরে দেখলাম বাংলাদেশের মোট আয়তনের শতকরা মাত্র ১৬ ভাগ গাছপালা, যেখানে একটি দেশের জন্য কমপক্ষে ২৫ ভাগ হওয়া উচিত। আর বাংলাদেশের চাইতে বেশি সবুজ আর গাছপালা সমৃদ্ধ দেশের উদাহরণ প্রচুর।
দৃশ্যপট ২ঃ বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশ, এদেশের মত সুন্দর দেশ কোথাও নেই। এ জাতীয় গান-কবিতার অভাব নেই। এ ধরণের কথা শুনে বড় হয়ে আমরা দেখি বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার টপ ৩ এ আমাদের রাজধানী ঢাকা। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলতে আমরা বেশ পটু। এতোই সুন্দর যে পর্যটনে আমরা অনেক পিছিয়ে। অন্যান্য জায়গার কথা ও পরিবেশ দূষণের কথা নাই বললাম।
দৃশ্যপট ৩ঃ বাংলাদেশের মানুষ খুবই সহজ-সরল,হাসি-খুশি।সবচেয়ে বেশি সুখী হল বাংলাদেশীরা। অথচ আমরাই হই দুর্নীতিতে হ্যাট্রিক চ্যাম্পিয়ন, প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক অস্থিরতায় আমাদের জীবন অতিষ্ঠ।
আমরা বাংলাদেশীরা ছোটবেলা থেকে বড় হই কিছু ভুল ধারণা নিয়ে। আমরা শিক্ষিত হই, কিন্তু সুশিক্ষিত হই না। আমাদের চিন্তা-ভাবনা বাস্তবতা বিবর্জিত। নিজেদের উন্নতি নিয়ে আমরা ভাবিনা। যারা ভাবি, তারা অল্প সময়েই অধিক উন্নতি করতে চাই এবং তা করতে গিয়ে দুর্নীতিকে বেছে নেই। অথচ দেশের উন্নতি হলে যে দেশের মানুষদেরও উন্নতি হবে, তা কেও বুঝি না।
আমাদের দেশপ্রেম কিছু দেশাত্মবোধক গান-কবিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, আমদের জাতীয় চেতনা শুধু ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২৬শে মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরে কাজ করে। বছরের বাকি ৩৬২ দিন চেতনা ঘুমায়।
আমাদের ধর্মীয় চেতনা শুধু সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ আছে কিনা, বাংলাদেশ ধর্ম-নিরপেক্ষ না রাষ্ট্র-ধর্ম ইসলাম তার মধ্যে সীমাবদ্ধ। দেশপ্রেম আমাদের ভাবায় না; দুর্নীতি, অসততা, বিশৃঙ্খলা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের ধর্মীয় চেতনা কাজ করেনা।
আমরা অন্যের খারাপ দিক গ্রহণ করতে পারি, কিন্তু ভালোটা গ্রহণ করতে পারিনা। আমরা বিদেশী সংস্কৃতি অনুসরণ করি, ভারতীয় সংস্কৃতিতে আমরা বিমোহিত, অনেকে আবার সব কিছুতেই তাদের বিরোধিতা করি; কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র শিখতে পারিনা, দেশপ্রেম এর শিক্ষা নিতে পারিনা।
আমি একটা কথা বিশ্বাস করি- কারও মাঝে যদি দেশপ্রেম না থাকে, তাহলে সে কখনোই ভাল রাজনীতিবিদ হতে পারেনা। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট রাজনীতিবিদদের স্পর্শ করেনা। অবশ্য কোটি টাকার শুল্কবিহীন গাড়িতে চড়লে, বিশাল প্রাসাদের মত বিলাসবহুল বাড়িতে থাকলে, শত শত কোটি টাকার মালিক হলে, নিজেদের ছেলে মেয়েরা এই গরীব দেশে না থাকলে জনসাধারণের দুর্দশা সম্পর্কে না জানাই স্বাভাবিক। সবাই এখানে ভাবে শুধু ক্ষমতা নিয়ে। রাজনীতি এখানে সেবা নয়, ব্যাবসা। তাই তো নির্বাচনে হারার পরদিন থেকে বিরোধী দল সরকারি দলের সাথে মিলে দেশের উন্নয়নে কাজ না করে পুনরায় ক্ষমতা লাভের সংগ্রাম শুরু করে।
বর্তমানে দেশ যেভাবে চলছে তাতে একটা স্বাধীন ও পরাধীন দেশের পার্থক্য বুঝা কঠিন। আমরা কি এই স্বাধীনতা চেয়েছিলাম? আমরা এমনই এক জাতি যারা তাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটা নিয়ে একমত হতে পারেনা। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও আমাদের অর্জন কি?
মাঝে মাঝে খারাপ লাগে, কেন এমন দেশে জন্মালাম? সুশীলতা দূরে রাখুন, দোষ এই দেশের নয়, দেশের মানুষদের। গালি দিলে তাই দেশকে নয়,দেশের মানুষকে দিন। পুনর্জন্মে বিশ্বাসী না হলেও, জীবনানন্দ দাসের কবিতা পরিবর্তিত করে বলতে হয়, “আর আসিব না ফিরে, এই পাপীদের ভিড়ে”।
সবার মূলনীতি একটাই, যেভাবে পারো আখের গুছাও। আমরা শুধু নামেই বাংলাদেশী, কাজে নই। একজন বাংলাদেশী একাই একশো হতে পারে, কিন্তু একশো বাংলাদেশী কখনোই এক হতে পারেনা। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, “রেখেছো বাঙালি করে, মানুষ করোনি”। আমাদের চেয়ে দরিদ্র অবস্থায় থেকেও মালয়েশিয়া,সিঙ্গাপুর উন্নত হতে পারে। আর আমরা এখনো অন্যের উপর নির্ভর করে চলি, ভবিষ্যতেও চলবো। দেশের অবস্থা হয়তো এর থেকেও খারাপ হবে, একদিন হয়তো পাকিস্তান-আফগানিস্তানের পর্যায়ে চলে যাবো। কিন্তু এই চক্র অব্যাহত থাকবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৪
মাসূদ রানা বলেছেন: বাংগালীরা জাতিগতভাবেই এরকম .......... তারা ভালো হওয়া কিংবা নিঃস্বার্থ উপকার, কাজকে বোকামী মনে করে । আর বাংগালীরা বোকা হতেও নারাজ .......... আর তাই নিজেরাই নিজেদের সাথে প্রতারনা করে চালাকির পরিচয় প্রদানের চেষ্টা করে নিজেদের কাছেই ............ তাদের প্রতিযোগীতা,প্রতিহংসা তাই বিদেশীদের সাথে নয়, স্বজাতির সাথেই.............

ভলো লাগলো্ লেখাটা