![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘটনা ১---নিলা ছোটবেলা থেকেই কিছুটা বিদ্রোহী মনোভাবের। সে সব সহ্য করতে পারে কিন্তু চোখের সামনে অন্যায় হলে সহ্য করতে পারেনা। একবার গ্রামে তার এক চাচাতো ভাইয়ের বিয়েতে গিয়ে দেখলো প্রায় লাখ চারেক টাকার বিনিময়ে তার ভাই ঘরে নতুন ভাবি আনতে যাচ্ছে। চেষ্টা করল সবাইকে বুঝাতে কাজটা ঠিক না। "আরে বাপু, যারা দিচ্ছে তাদের সমস্যা নেই, তোমার এতো সমস্যা কেন?", "গ্রামে এসব হয়ই, তুমি বেড়াতে এসছো। খাও, দাও ফুর্তি কর", "ভাই, ঢাকায় থেকে তোমার মেয়ে বেশি বেশি বুঝতে শিখছে, ওরে থামাও", এবং পরিশেষে বাবা মায়ের উপদেশ "মেয়ে মানুষের সব ব্যপারে নাক গলাতে নেই। যা বুঝনা তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে চুপ থাকো!!"
ঘটনা ২--- রুনা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে হটাৎ খেয়াল করল রাস্তার এক পাশে কিছু লোক সমাগম হয়েছে আর সেখান থেকে এক বাচ্চা ছেলের কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। এগিয়ে গিয়ে দেখলো এক মধ্যবয়স্ক লোক বেধরকভাবে এক কিশোরকে পেটাচ্ছে। দেখেই বুঝা গেলো নিম্নশ্রেনির লোক। আর আশেপাশের সব লোক সেই পেটানোর দৃশ্য দেখে মজা নিচ্ছে!! সে থাকতে না পেরে সামনে গিয়ে বলল "থামুন, এভাবে মারছেন কেন? রাস্তায় তামাশা করবেননা, নয়তো পুলিশ ডাকবো !" তার কথা শুনে আশেপাশের লোকজন হাসতে লাগলো। যে লোকটি পিটাচ্ছিল সে উল্টো ধমক দিয়ে বলল "এহ! আইছে দ্যাশের প্রধানমুন্ত্রি, দ্যাশটারে খাইছে এহন আমরে শিখাইতে আইছে কেমনে কারে মারুম!! যাও যাও। মাইয়া মাইনষের এত্ত নাক গুলান ভালা না"। আশেপাশের লোকজন সেই লোকটিকে সমর্থন দিয়ে মেয়েটিকে চুপ থাকার নির্দেশ দিলো।
ঘটনা ৩--- তামান্না প্রতিদিন বাসে করে কলেজে যায়। বিভিন্ন ঘটনা/ দুর্ঘটনার শিকার তাই সে প্রতিদিনই। সেদিন সিট না পেয়ে সে দাঁড়িয়েই যাচ্ছিলো। এক বৃদ্ধ বাসে উঠলো তখন। তামান্না তা দেখে সিটে বসা তার বয়সী এক মেয়েকে বলল "আঙ্কেল বয়স্ক লোক, তাকে একটু বসতে দাওনা।" মেয়েটি এমন একটা চেহারা বানালো যেন তাকে চাঁদে যেতে বলা হয়েছে। "আমি কেন উঠব? আশে পাশে এতো পুরুষ লোক আছে তাদের বলো, আমাকে কেন বলছো?" তামান্না বলল "ওনারা তো শুনবেন না, তুমি অন্তত বুঝো" মেয়েটি অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বসে রইলো। পাশে আরেকজন লোক বসা ছিল তিনি বললেন "সবাই যার যার টা বুঝে। আপনি নিজে দাঁড়াইয়া থেকে আরেকজনরে বসার জন্য উকালতি করছেন? এইডা কি আজকাল কেও করে? আপনি বসে থাকলে আপনিও দিতেন না!" তামান্না থাকতে না পেরে বলল "ঠিক আছে ভাই, আমি না হয় কুকুর তাই বলে বাকি সবাই কেন হবে? কেও কি নিজের সামান্য স্বার্থটুকু ছাড়তে পারিনা?" আশেপাশের লোকজন ক্ষেপে গেলো "মেয়েছেলেদের এইজন্য বাসে উঠাতে হয়না", নিজেরা তো সিট নিয়ে ঝামেলা করেই এখন অন্যের সিট নিয়েও ঝামেলা করছে", "মাইয়া মানুষের এতো কথা বলাই আসলে ঠিক না, এরা কথা বললেই ঝামেলা তৈরি হয়" অবশেষে বাসের হেল্পার বলল " আফা আপনি চুপ কইরা দাঁড়াইয়া থাকেন্তো। শুধু শুধু ঝামেলা পাকাইয়েন না"
নাহ উপরিল্লেখিত কোন ঘটনাই গল্প নয়। প্রতিটিই সত্যি। কাওকে ছোট করার নিমিত্তে কিছু বলছিনা। শুধু বলতে চাই অন্যায় কে অন্যায় বলার সৎ সাহস থাকা বাঞ্চনীয়। সে নারীই হোক কিংবা পুরুষ হোক! অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে সবাইকেই। যদি সেই পথে প্রথম পদক্ষেপ একজন নারী নেয় তাহলে তাকে হেয় বা অপদস্ত না করে বরং তার সহায়তা করুন। এতে করে আপনার বা আমার ক্ষতি তো হবেইনা বরং সমাজের কিছু নিয়মিত ঘটে যাওয়া অন্যায়গুলো বন্ধ হবে। কিছু ন্যায় বা নীতি শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের জীবনেও প্রতিফলিত হবে। "এসব নীতি বাক্য না ফলিয়ে ঘরের কাজ করেন ঠিক মত"
হুম তা ঠিক। তবে তাই বলে আমরা সবাই চুপ করে আর কতকাল থাকবো? its high time!!! আপনি একজন পুরুষ হোন বা নারী হোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন, ততক্ষন তুলতে থাকুন যতক্ষণ না অন্যায়টি ন্যায়ে পরিণত হচ্ছে। তা না হলে যতই আমরা নীতিবাক্য পড়ি বা লিখি না কেন সবই বৃথা, সবই বিফল। আমাদের এতো এতো সার্টিফিকেট কি শুধুই টাকা অর্জনের জন্য?? শিক্ষার মূল্য কি তাহলে এতোটুকুই? আরেকটি কথা -যদি কখনো কোন নারীকে দেখেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে, দয়া করে তার পাশে দাঁড়ান। অনুরোধ করছি শুধু মাত্র মেয়ে বলে তাকে বলে বসবেননা "আপনি চুপ থাকুন!!!"
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪০
যাহরা আফরিন বলেছেন: ধাক্কা টা দরকার। অবশ্যই দরকার। মনে রাখতে হবে যারা পরিবর্তন আনেন তাদের পথটা কখনোই মসৃণ থাকেনা। আপনার বা আপনার মত সবাইকে সহ্য করতে হয় সামাজিক লাঞ্ছনা। কিন্তু তাই বলে থেমে যাওয়া যাবেনা। আওয়াজ তুলতেই হবে। নিঃশেষে প্রান করিবে যে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।
২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৫
দীঘল গঁাােয়র েছেল বলেছেন: আপনি একজন পুরুষ হোন বা নারী হোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন, ততক্ষন তুলতে থাকুন যতক্ষণ না অন্যায়টি ন্যায়ে পরিণত হচ্ছে। সহমত।
৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৬
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
প্রতিবাদ হোক। আওয়াজ উঠুক জোরেশোরে। আওয়াজ উঠুক সামাজিকভাবে চাপিয়ে রাখা অবস্থানের বিপক্ষেও।
৪| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫২
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: সে নারীই হোক কিংবা পুরুষ হোক! অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে সবাইকেই।
এবং নারীদের নিজে থেকেই প্রতিবাদী আওয়াজ তুলতে হবে আগে। দেখবেন কেউ না কেউ পাশে দাঁড়াবেই।
ভালো থাকবেন।।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৪
যাহরা আফরিন বলেছেন: জি সেই চেষ্টাই করছি। একদিন না একদিন বিবেক নামক জিনিসটা সবাই ব্যবহার করতে শিখবে। আর তাই শতবার অপমানিত হওয়া সত্তেও প্রতিবাদ জানাতে পিছ পা হইনা। ধন্যবাদ।
৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৯
কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভালো বলেছেন ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৪
সোহানী বলেছেন: হাঁ আপনার এ গল্পগুলো আমাকে নিয়েই..... তারপরও বলবো আমি থেমে থাকিনি...থেমে থাকিনা। এবং সবসময়ই বলতে পারেন আমি জয়ী হয়ে এসেছি আর তা ও না পারলে একটা ধাক্কা অন্তত দিতে পেরেছি ............