![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Enlighten what’s dark in me/ Strengthen what’s weak in me/ Mend what’s broken in me/ Bind what’s bruised in me/ Heal what’s sick in me/ Revive whatever peace and love has died in me.
ভূমিকার প্রথম পর্ব
নামকরণ আমাদের সমাজে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। বাচ্চা জন্মের পর নাম রাখা নিয়ে মোটামুটি ঠাণ্ডা লড়াই লেগে যায়। দাদাবাড়ি বনাম নানাবাড়ি। বেশ একটা সাজসাজ রব। আমিতো একজনকে জানি যার নাম তার দাদা আর নানার নামের সমষ্টি! ল্যাক অফ ক্রিয়েটিভিটি, ট্রু; বাট মিডল গ্রাউন্ড খুঁজে নেয়ার এর থেকে ভালো উপায় আমার অন্তত জানা নেই। কে বলসে সবাইকে খুশী করা যায় না? বাচ্চা নাহয় নামের ভারে ন্যুব্জ, তাতে কি? মুরব্বীদের সন্তুষ্টি নিয়ে কথা!!
আল্লাহ্র নামকরণ তাহলেতো সাঙ্ঘাতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। উনার নাম তাহলে কে রাখল? আমরা কি পারি নিজের খুশিমতো সুন্দর সুন্দর নাম দিতে? যেমন ধরেন, আমি কি বলতে পারি আল্লাহ্ আকাশের আর্কিটেক্ট অথবা পৃথিবীর ইঞ্জিনিয়ার?
এক কথায় উত্তর: না। আপনি বা আমি আল্লাহ্কে নতুন নতুন নাম দেয়া তো দূরের কথা, আল্লাহ্ সম্বন্ধে জ্ঞান বহির্ভূত কোনো কথাই বলতে পারব না। আল্লাহ্ নিজে কুরআনে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন:
يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُوا مِمَّا فِي الْأَرْضِ حَلَالًا طَيِّبًا وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ- إِنَّمَا يَأْمُرُكُم بِالسُّوءِ وَالْفَحْشَاءِ وَأَن تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
… তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। অবশ্যই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সে তোমাদের অন্যায় ও অশ্লীল কাজ করতে থাকার আদেশ দেয় আর প্ররোচিত করে আল্লাহ্ সম্বন্ধে এমন কিছু বলতে যার সম্বন্ধে তোমরা কিছুই জানো না। (সূরা বাকারাহ: ১৬৮-১৬৯)
তাহলে আল্লাহ্র যে এত এত নাম, সেগুলো আসলো কোত্থেকে?
আল্লাহ্র নামের উৎস:
আল্লাহ্র নামগুলো সরাসরি কুরআন ও হাদীস থেকে নেয়া। কুরআন বা সুন্নাহ-তে নেই এমন কোনো নাম ধরে আল্লাহ্কে ডাকা যাবে না। এমন কোনো গুণ আল্লাহ্কে আরোপ করা যাবে না যার পক্ষে কুরআন বা হাদীসে কোনো প্রমাণ নেই। সেকারণেই আমরা বলতে পারব না যে, তিনি আকাশের আর্কিটেক্ট অথবা পৃথিবীর ইঞ্জিনিয়ার। বরং আমরা বলবো: তিনি আল খালিক, আল বারি’, আল মুসাওয়ির। এ নামগুলো কুরআনে এসেছে। এগুলো অনেক বেশি সুন্দর আর অনেক ব্যাপক অর্থবোধক।
আল্লাহ্র ৯৯ নাম-এর বৃত্তান্ত:
সব মুসলিমই জানে যে, আল্লাহর নাম ৯৯টি। কিন্তু আসলেই কি তাই? ইবনে হাজার আল-আস্কালানী (রহ.) এই ধারণাকে বলেছেন অত্যন্ত ভুল ধারণা। তাহলে ৯৯ নামের ব্যাপারটা আসলে কী?
সঠিক কথা হলো, আল্লাহর নাম অসংখ্য। তাঁর সব নাম জানা মানুষের নাগালের বাইরে। ৯৯ নাম হলো সেই অসংখ্য নামগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নামগুলোর কালেকশন। এগুলো হলো best of the bests। এগুলো হলো extra special। এই নামগুলো হচ্ছে সবথেকে সুন্দর, সবথেকে মহিমান্বিত।
বুখারী, মুসলিম ও অন্য প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ হাদীস সংকলনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নিচের হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে:
إِنَّ لِلَّهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمَا مِائَةً إِلاَّ وَاحِدًا مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ
আল্লাহ্র ৯৯টি নাম আছে; ১০০ থেকে ১টি কম। যে এগুলো হৃদয়ঙ্গম করতে পাবে সে জান্নাতে যাবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এখানে বলেননি যে, আল্লাহ্র শুধুমাত্র ৯৯টি নামই আছে। বরং তিনি special ৯৯টি নামের কথা বলেছেন। এগুলোর মাহাত্ম এত বেশী যে, এগুলো হৃদয়ে গেঁথে নিতে পারলে জান্নাতে চলে যাওয়া যাবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই হৃদয়ঙ্গম করার মানে কী? শুধু মুখস্ত করলেই কি জান্নাতে চলে যাওয়া যাবে? না, ঘটনা এতো সরল সোজা না। আমাদের স্কলাররা হাদীসের ‘আহসাহা’ (أَحْصَاهَا) শব্দের তিনটি অর্থ করেছেন:
১। জানা, বোঝা, মুখস্ত করা।
২। দু’আতে ব্যবহার করা, অর্থাৎ এই নামগুলো ধরে আল্লাহ্কে ডাকা: হাত তুলে আমাদেরকে বলতে হবে হে গাফফার, হে তাওয়াব, হে মালিক, হে রাযযাক। যা চাইতেসি তার সাথে সম্পর্কিত নাম ব্যবহার করতে হবে। যদি আমরা ক্ষমা চাই, আমাদের বলতে হবে: ইয়া গাফফার, ইয়া রাহমান, ইয়া তাওয়াব, ইয়া আফুউ ইত্যাদি। যখন আমরা সন্তান চেয়ে দু’আ করব তখন বলব: ইয়া ওয়াহহাব। সুস্থতার দু’আর সময় বলব: ইয়া শা-ফী (‘শা’ লম্বা হবে)। অথবা যখন রিযিক চেয়ে দু’আ করব তখন বলব: ইয়া রাযযাক, ইয়া কারীম। জীবনের এমন কোনো চাওয়া নেই যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাম আল্লাহ্র নেই যেটা দিয়ে তাঁকে ডাকা যায়।
৩। এই নামগুলোকে আত্মস্থ করা, অর্থাৎ এগুলোকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করা: আমাদের চালচলনে আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর প্রতিফলন থাকতে হবে। একটা কথা প্রায়ই ব্যবহৃত হয়: আল্লাহ্র রঙয়ে জীবন রাঙাতে হবে। এর মানে কী? এর মানে হচ্ছে, আমি যখন জানব আল্লাহ হলেন আস-সামী’ (সর্বশ্রোতা), তখন মুখে কী উচ্চারণ করছি তা হিসাব করে করব, যা তা বলব না। আমি যখন জানব আল্লাহ হচ্ছেন আল-বাসীর (সর্বদ্রষ্টা) তখন চোখ ব্যবহার করে কোনো পাপ করব না, দৃষ্টি সংযত রাখব।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্র ৯৯ নাম আছে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু কখনোই ৯৯টি নাম কোনগুলো তা বলেননি। তাহলে মুসলিম বিশ্বের ঘরে ঘরে যে ৯৯ নামের তালিকা আছে তা কোত্থেকে আসলো? এই চার্ট আসলে ভুলও না, আবার সঠিকও না! কারণ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো কোনো চার্ট বা তালিকা রেখে যাননি। কোন ৯৯টি নাম, তা জানার তো আর কোনো উপায় নেই। তাহলে এই তালিকা এল কোথা থেকে?
কুরআন ও সুন্নাহতে আল্লাহ্র অজস্র নাম পাওয়া যায়। কোনো কোনো স্কলার ১৫০ পর্যন্ত নামের তালিকা করেছেন। আবার একজন স্কলার, আশ-শারবীনি আল্লাহ্র ৫০০টি নাম খুঁজে বের করেছেন কুরআন- সুন্নাহ থেকে। মানে দাঁড়াচ্ছে, এত নাম থেকে কোন নামগুলো যে ৯৯-এর মধ্যে আর কোনগুলো বাইরে, তা নিয়ে সঠিক জ্ঞান কারোরই নেই। যা সব স্কলাররা করেছেন তা হলো স্বাধীন চিন্তা-গবেষণা বা ইজতিহাদ। তারা চেষ্টা করেছেন কুরআন ও সুন্নাহ-তে পাওয়া নামগুলো থেকে সর্বোত্তমগুলো খুঁজে বের করে ৯৯-এর তালিকা করতে। ঘরে ঘরে যে তালিকা আছে তা এমনই একটা উদ্যোগ। একদম প্রথম দিকের একটি উদ্যোগ এটি। কিন্তু, আদতে তো এটি একজন মানুষের প্রচেষ্টার ফল ছাড়া আর কিছু না। পরবর্তী যুগের স্কলাররা এই তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন: কোনো কোনো নামকে মনে করেছেন এই তালিকায় স্থান পাওয়ার অযোগ্য। আবার এমনও নাম আছে, তারা মনে করেন, যেগুলো মূল তালিকায় আসেইনি।
তবে, কিছু নামের ব্যাপারে কোনো মতভেদ নেই। অ্যাকচুয়ালি, কুরআনে যে নামগুলো সরাসরি নামবাচক বিশেষ্য বা proper noun হিসেবে এসেছে, সেগুলো যে ৯৯ নামের মধ্যে পড়ে, এ ব্যাপারে কোনো মতান্তর নেই। যেমন: আর-রাহমান, আর-রাহীম, আল-খালিক, আল-মালিক, আল-কুদ্দুস, আস-সালাম ইত্যাদি।
কিন্তু, এমন অনেক নাম আছে যেগুলো ক্রিয়াবাচক শব্দ থেকে নির্গত হয়েছে। যেমন ধরুন, আল্লাহর নাম আল বা-কী (‘বা’ লম্বা হবে)। এই নাম কুরআনে বিশেষ্য হিসেবে আসেনি। এটা এসেছে ক্রিয়া থেকে:
وَيَبْقَىٰ وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
বাকি থাকবে শুধু তোমার প্রতিপালকের গৌরবময়, মহানুভব সত্তা। (সূরা আর রাহমান: ২৭)
ক্রিয়াবাচক শব্দ ‘ইয়াবকা’ (يَبْقَىٰ) থেকে কোনো কোনো স্কলার আল্লাহ্র নাম আল বা-কী বের করে এনেছেন। প্রশ্ন: এই নাম কি ৯৯-এর মধ্যে, নাকি বাইরে? কেউ বলেছেন ৯৯-এর মধ্যে, কেউ বলেছেন না, বাইরে।
কিছু স্কলার বলেন যে, আল্লাহ্র নামের এই তালিকা সুনির্দিষ্ট না থাকার কারণ আছে। তারা বলেন, এর কারণ হচ্ছে মুসলমানদের মধ্যে আল্লাহ্র নাম জানার একটা আগ্রহ জন্ম দেয়া। প্রত্যেক মুসলিমের উচিৎ খোলা মনে জাগ্রত চোখে কুরআন পড়া আর আল্লাহ্র নামের খোঁজ করা। এই আগ্রহটা থাকতে হবে। আর এই একান্ত ব্যক্তিগত অনুভব থেকে যখন কুরআন পড়া হবে, শুধু তাঁর নাম জানা হবে তা না, আরও অনেক হীরা জহরত উদ্ঘাটন হবে। এই যে কুরআনের পাতায় পাতায় আপনি আল্লাহ্র নামের খোঁজ করবেন, এটি আপনার জন্য একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হবে। এটা আসলে আল্লাহ্র প্রতি আপনার ভালোবাসারই পরিচয় দেয়। আবার এর মাধ্যমে তাঁর জন্য আপনার যে ভালোবাসা, তার উত্তরোত্তর বৃদ্ধিও হয়। হয়তো একারণেই আল্লাহ্র নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৯৯ নামের তালিকা ফাইনাল করে যাননি, বরং খোলা রেখেছেন।
আল্লাহ্র নামের বিশিষ্টতা ও বৈশিষ্ট্য:
আল্লাহ্র নামগুলোর কিছু বিশেষ বিশেষত্ব আছে। আবার এগুলো কিছু দিক দিয়ে অন্য যেকোনো নাম থেকে স্বতন্ত্র।
প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো আল্লাহ্র নাম শুধু কুরআন- হাদীস থেকেই নিতে হবে, নিজের খুশিমতো নাম দেয়া যাবে না। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা উপরে করা হয়েছে।
দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হলো আল্লাহ্র নামের অর্থ বুঝতে পারলেও এর বাস্তবতা আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। যেমন, যখন বলা হয় আল্লাহ হলেন আস সামী’ বা সর্বশ্রোতা, এর মানে আমরা বুঝি যে, তিনি সবকিছু শোনেন। কিন্তু, আমরা জানি না বা জানবও না যে, তিনি শোনেন কেমন করে। এ ব্যাপারে আমদের চিন্তারও প্রয়োজন নেই। আল্লাহ্র নাম বা গুণ নিয়ে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, আমরা জানতে চাই না ‘কেমন করে?’, (بلا كيف)। আমরা চিন্তা করি না ‘ক্যাম্নে’!
এক লোক ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহর কাছে আল্লাহ্র আরশের উপর অধিষ্ঠিত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করল। এই ব্যাপারটা কুরআনে উল্লেখ আছে:
الرَّحْمَٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَىٰ
তিনি অতি দয়াময়, আরশে সমাসীন হয়েছেন। (সূরা ত্ব হা: ৫)
লোকটির প্রশ্ন ছিল ইমাম মালিকের কাছে, আমাকে বলে দিন তিনি কীভাবে আরশে সমাসীন হলেন। ইমাম মালিক অত্যন্ত রেগে গেলেন। কিছুক্ষন নীরব থাকলেন। এর পরে যে উত্তর তিনি দিলেন তা হলো:
الاستوى معلوم و الكيف مجهول و الايمان به واجب
সবাই জানে ইস্তিওয়ার মানে। কীভাবে তিনি ইস্তিওয়া করেছেন তা নিয়ে আমরা চিন্তা করি না। কিন্তু, এতে বিশ্বাস করা আবশ্যক (কারণ আল্লাহ নিজেই এই শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন)।
অর্থাৎ, আল্লাহ্র নামের সাপেক্ষে আমরা অর্থ বুঝি, কিন্তু জানি না কেমন করে। এটা চিন্তা করাও ঠিক না এবং visualize করার চেষ্টাও অসঙ্গত।
তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হলো আল্লাহ্র নামগুলো শাশ্বত, চিরন্তন। এদের কোনো আরম্ভ নেই, শেষও নেই।
চতুর্থ বৈশিষ্ট্য হলো আল্লাহ্ যেসব নামবাচক বিশেষ্য দিয়ে নিজেকে বর্ণনা করেছেন সেগুলো দিয়ে অন্য কোনো সৃষ্ট জীবকে নামকরণ করা বা ডাকা যাবে না। নামবাচক বিশেষ্য হলো সেগুলো যেগুলো আলিফ এবং লাম অর্থাৎ আল (ال) দিয়ে শুরু শুরু হয়। যেমন আর-রা’উফ (الرؤوف) বা আর-রাহীম (الرحيم)। মানুষকে শুধু রা’উফ বা শুধু রাহীম ডাকা যাবে, কিন্তু আর-রা’উফ এবং আর-রাহীম ডাকা যাবে না।
পঞ্চম বৈশিষ্ট্য হলো আল্লাহ্র প্রত্যেকটি নামেরই সুনির্দিষ্ট অর্থ আছে। আমরা এগুলো আল্লাহ্র জন্য affirm করি। যখন আল্লাহ্ বলেন যে, তিনি মালিক (الملك), আমরা মালিকের অর্থ জেনে তা আল্লাহ্র জন্য affirm করি। পক্ষান্তরে, আমাদের মানুষের নাম কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করতেও পারে, নাও পারে। আবার নামের অর্থের সাথে ব্যক্তির কার্যকলাপ সাংঘর্ষিক হতে পারে। যেমন ধরুন, কারোর নাম সালিহ বা ধর্মনিষ্ঠ। তার কাজকর্ম একজন সত্যিকার সালিহের মতো হবে এমন নাও হতে পারে। কিন্তু, আল্লাহ্র ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি নামের অর্থ আছে এবং প্রতিটি অর্থই তাঁর উপর প্রয়োগ হয়।
আল্লাহ্র নামের যুগল:
কুরআনে আল্লাহ্র বেশীরভাগ নামই জোড়ায় জোড়ায় এসেছে। যেমন: আল-গাফুরুর রাহীম, আর-রা’উফুর রাহীম, আল-মালিকুল কুদ্দুস, আস-সামীউল আলীম। এই জোড়াগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের স্কলাররা এইসব জোড়া নাম নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন। তাদের মতে দুটি নাম একত্রে আসার গুঢ় মাহাত্ম আছে। যেমন, আল্লাহ্ বলেন তিনি আল-হাইয়ুল কাইয়ুম। আল-হাই মানে হলো চিরঞ্জীব। আর আল-কাইয়ুম মানে হলো তিনি অন্যকে জীবন দেন। মানে হচ্ছে, এই নাম দুটি একে অন্যের পরিপূরক। আল্লাহ্র এসব জোড়া নামের ব্যাপারটাকে আমরা যথাযথ গুরুত্ব দেই না। আমরা এগুলো পড়ি, কিন্তু এদের নিয়ে চিন্তা করি না। কেন এই নাম দুটোই একসাথে এল? আমাদের ধারণা এগুলো এমনি এমনিই আসে অথবা অন্তমিলের জন্য আসে। কিন্তু আল্লাহ্ তো এমনি এমনি কিছু করেন না, অথবা শুধু ছন্দ মিলানোর জন্য বা উদ্দেশ্যহীনভাবেও কিছু বলেন না। প্রত্যেকবার যখন আল্লাহ্ দুটি নামকে একত্রে উল্লেখ করেন, তখন তৃতীয় একটি অর্থের সৃষ্টি হয়। প্রথম নামের অর্থ, দ্বিতীয় নামের অর্থ, আর দুটি নাম একত্রে উল্লেখের মাধ্যমে সৃষ্ট তৃতীয় অর্থ। এই সংক্রান্ত আলোচনা যুগল নাম যখন আলোচনা করব তখনকার জন্য তুলে রাখছি।
পরের পর্বে আমরা আল্লাহ্র সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাপেক্ষা বেশী প্রচলিত নাম আল্লাহ্ (الله) নিয়ে আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ্।
মূল লেকচারটি দেখুন এখানেঃ
এই সিরিজের সব ব্লগঃ
সময় যতই অস্থির হোক, আমরা যেন ভুলে না যাই আল্লাহ হলেন ‘আস-সালাম’
©somewhere in net ltd.