নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিবন যুদ্ধের পরাজিত বীর

রাজ সরকার

রাজ সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিষন্নতা একটি মানসিক রোগ

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২২

বাংলাদেশে ৫-৯% লোক কোনো না কোনোভাবে বিষন্নতা নামক রোগে ভুগছেন। এই বিরাট অংশ রোগী এই ডাক্তার, সেই ডাক্তার, এই পরীক্ষা, ঐ পরীক্ষা করে শেষে কোনো রোগ ধরতে না পেরে ধীরে ধীরে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়।
কি কি লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার পাশের লোকটি বিষন্নতায় ভুগছেন :-
১। শারীরিক লক্ষণ : মাথা জ্বালাপোড়া করা, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে জ্বলে। কখনো কখনো পুরো শরীর জ্বালাপোড়া করে।
২। মাথা দিয়ে নাক দিয়ে কান দিয়ে গরম ভাব উঠে, কেউ কেউ বলে ভাত সিদ্ধ করলে যে রকম ভাপ উঠে ঠিক সেই রকম কান দিয়ে নাক দিয়ে বের হয় এবং বারবার তেলপানি দেয়া লাগে মাথা ঠাণ্ডা করার জন্য।
৩। কেউ কেউ মাথার চুল মাঝখানে ফেলে দিয়ে বিভিন্ন গাছের পাতা পিষে মাথায় দিয়ে রাখে মাথা ঠাণ্ডা রাখার জন্য।
৪। বেশির ভাগ রোগীর ঘুমের সমস্যা হয়, কারো কারো একদম ঘুম হয় না আজানের অনেক আগেই ঘুম ভেঙে যায় এবং সকাল বেলাটা তুলনামূলকভাবে বেশি খারাপ লাগে।
৫। যদি কোনো বয়স্ক মহিলা দুঃখের কথা বলতে গেলেই প্রায়ই কেঁদে ফেলে তখন কিন্তু বিষন্নতায় প্রথম সন্দেহ হতে পারে।
৬। মুখের কথা শুনে আপনি কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন যেমন- এই সমস্ত রোগীরা খুব কম কথা বলে এবং খুব আস্তে আস্তে কথা বলে। একটা প্রশ্ন করলে অনেক সময় পর উত্তর দেয়, মাঝে মাঝে কোনো কথাই বলতে চায় না। কেউ জিজ্ঞেস না করলে কথা বলতে চায় না। তারপর ধীরে ধীরে এমন এবটা অবস্থায় চলে যায় যে একদম কথা বলে না যাকে আমরা মিউট বলি।
৭। মন খারাপ থাকা, এটাই আসল লক্ষণ : এই মন খারাপের প্রকাশ বিভিন্ন মানুষের বিভিন্নভাবে হতে পারে, বেশির ভাগ রোগী নিজের মনের দুঃখ ভাব সরাসরি বলতে চায় না তারা সাধারণত বেশির ভাগ সময় বিরক্ত ভাব থাকে, অন্যের কথা সহ্য করতে পারে না, কথা বললে রেগে যায়, বেশির ভাগ সময় মনমরা ভাব থাকে, কারো সঙ্গে মিশতে চায় না, কাছে ছোট ছোট বাচ্চারা চেঁচামেচি করলে বিরক্ত হয়, টেলিভিশন দেখতে চায় না অথচ আগে নিয়মিত টেলিভিশন দেখতো এবং সবার সঙ্গে মিশতো এখন কিছুই ভালো লাগেনা ছোটখাটো ব্যাপার নিয়েই কেঁদে ফেলে এবং অতীতের দুঃখের ঘটনাগুলো বারবার বলতে চায়। এই সবগুলোই কিন্তু মন খারাপের লক্ষণ।
৮। বাচ্চা ডেলিভারির পর বিষন্নতায় নামক রোগটির ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই সময় বেশির ভাগ মা এর অভিযোগ থাকে শরীর বেশি দুর্বল লাগে, মন বিরক্ত থাকে, ঘুম হয় না আত্মীয়-স্বজনরা বলে ও যেন ইদানীং বেশি খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে এবং ভয় ও দুশ্চিন্তা লাগে। অনেক গ্রামাঞ্চলে এই সমস্যাগুলো সূতিকা বলে কবিরাজরা চিকিৎসা করে। অথচ এই নারীরা কিন্তু বিষন্নতায় নামক রোগে ভুগছে।
৯। এই সমস্ত রোগীর আনন্দ ফুর্তি, সাজগোজ, হাসিঠাট্টা, গল্প করা ধীরে ধীরে সকল আনন্দদায়ক ও স্বাভাবিক কাজ কর্মে লোপ পেতে থাকে।
১০। খাওয়ার প্রতি অনিহা থাকে যে খেয়ে কি লাভ হবে, বেঁচে থেকে কি লাভ হবে?
১১। কেউ কেউ বসার সময় গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে জড়বস্তুর মতো করে বসে থাকে।
১২। এমনো দেখা গেছে বলে যে, ডাক্তার আমার নাড়িভুঁড়ি পচে গেছে। আমি হয়তো বড় ধরনের পাপ করেছি আল্লাহ আমাকে পাপের শাস্তি দিচ্ছে।
১৩। অনেক বিষন্ন রোগীদের দেখা যায় কথা বলার মাঝখানে দীর্ঘশ্বাস ফেলে এটাও একটা লক্ষণ।
১৪। শরীরের ওজন কমতে থাকে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়তেও পারে।
১৫। কেউ কেউ হাজির হন মাথা ব্যথা ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা নিয়ে।
বিষন্নতার কারণ :
১। জন্মগতভাবে আমাদের দেশে নারীরা বেশ নিষ্পেশিত থাকে। এটা তারা ছোটবেলা থেকেই ঘরে এবং পারিপার্শ্বিক জগৎ থেকে দেখতে দেখতে তার মধ্যে হীনমন্নতা তৈরি হয়।
২। হরমোনজনিত কারণ।
৩। সাধারণ কারণের মধ্যে হতে পারে কোনো বিয়োগান্ত ধটনা যেমন- প্রিয়জনের মৃত্য, স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যাওয়া, স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে করা, বড় ধরনের কোনো মানসিক আঘাত পাওয়া ইত্যাদি।
৪। দীর্ঘদিন কোনো শারীরিক রোগে ভুগলে যেমন- ডায়াবেটিস, প্রেসার, হাঁপানি, ক্যানসার, আর্থাইট্রিস ও স্ট্রোকের মতো অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ।
৫। বায়োলোজিক্যাল কারণের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন নিউরোট্রান্সমিটারের পরিবর্তন যেমন- সেরোটনিন, নরএপিনেফ্রিন ও ডোপামিন।
কেন চিকিৎসা দরকার : কারণ
১। ১০-১৭% রোগী আত্মহত্যা করতে পারে।
২। ৫০% রোগী কোনো না কোনোভাবে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
৩। বিষন্নতা দূর করার জন্য অনেক রোগী নেশায় আসক্ত হতে পারে।
৪। এরা কর্মক্ষেত্রে আগ্রহ, উৎসাহ ও উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলে।
৫। এদের সেক্সুয়াল জীবনে অশান্তি বিরাজ করে।
৬। এইসব রোগীরা পরিবারের, সমাজের ও জাতির বোঝা হয়ে যেতে পারে যদি সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করা হয়।
চিকিৎসা :
১। সামাজিক কুসংস্কার যেমন- আলগাদোষ, জিনভূতের ব্যাপার পানিপড়া তেলপড়া ইত্যাদি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩। সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা করা ও নিয়মিত ফলোআপে আসা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৮

বিজন রয় বলেছেন: ভাল শেয়ারিং।
++

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৫

রাজ সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.