![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনের অজান্তে কিংবা জেনেশুনে এক এক করে চুল তুলতে তুলতে বিরাট একটা অংশ খালি করে ফেলা একটি মানসিক রোগ। ‘ট্রাইকোটিলোমেনিয়া’ এমন একটি মানসিক রোগ, যেখানে রোগী নিজেই নিজের চুল টেনে তুলে ফেলে।
ট্রাইকোটিলোমেনিয়া (চুল তোলা রোগ)
এটি এমন একটি মানসিক রোগ, যেখানে রোগী বা আক্রান্ত মানুষটি নিজেই তার চুল টেনে তুলে ফেলে। তুলতে তুলতে একটা বিশাল জায়গা খালি করে ফেলে। বিষয়টি এমন না যে হঠাৎ একদিন বসে একসঙ্গে অনেক চুল তুলে ফেলা। এ কাজটি সে অনেক দিন ধরে করে এবং করতেই থাকে। ইচ্ছা করেও সে অভ্যাস বা কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে না।
প্রথম প্রথম হয়তো বিষয়টিকে রোগী কোনো সমস্যা মনে করে না। কিন্তু একপর্যায়ে দেখা যায় সে নিজেই এই আচরণ থেকে আর বিরত থাকতে পারছে না। চেষ্টা করলে মনের ভেতরে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়। চুল তোলার পর সাময়িক একটু স্বস্তি ফিরলেও বেশির ভাগ সময়ই সেটা কষ্ট ও অস্বস্তির কারণ হিসেবেই থেকে যায়। বর্তমানে এই রোগটিকে অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডারের একটি অংশ হিসেবে ধরা হয়।
অনেকে বলে, চুল তোলার বিষয়ে আক্রান্ত মানুষটি কোনো ব্যথা পায় না। তাদের ব্যথার অনুভূতি কমে যায়। কেউ কেউ এই চুল তোলার ভেতর দিয়ে অন্য টেনশন বা অ্যাংজাইটিকে প্রশমিত করে, এমন কথাও আছে।
কাদের হয়, কখন হয় : নারী-পুরুষ দুজনেরই এ রোগ হতে পারে। তবে তুলনামূলকভাবে মেয়েদেরই বেশি হয়। সাধারণত দেখা যায়, ১২-১৩ বছর বয়সে এ রোগের শুরু হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগেও দেখা দিতে পারে (২-৬ বছর), তবে সেসবের বেশির ভাগই কিছুদিনের ভেতর সেরে যেতে দেখা যায়।
এ রোগের প্রকোপ একই পরিবারের বিভিন্ন মানুষের ভেতরে দেখা যায়। তাই এটিকে বংশগত বলে ভাবা হয়।
কোন কোন জায়গার চুল তুলতে দেখা যায় : মাথার চুল ৭৫ শতাংশ, চোখের পাপড়ি ৫৩ শতাংশ, চোখের ভ্রূ ৪২ শতাংশ, যৌনাঙ্গের ১৭ শতাংশ, দাড়ি ১০ শতাংশ, গোঁফ ৭ শতাংশ, বাহু ১০ শতাংশ, পা ৭ শতাংশ, বুকের চুল ৩ শতাংশ এবং পেটের চুল ২ শতাংশ। কম-বেশি হলেও চিত্রটি প্রায় এ রকমই হয়ে থাকে।
বিশেষ গ্রুপ : এদের ভেতরে একটি গ্রুপ আছে, যারা তুলে ফেলা চুল খেয়ে ফেলে, যা অত্যন্ত ভয়ংকর। পেটের ভেতরে আটকে গিয়ে, গোল্লা পাকিয়ে ইনটেস্টাইনাল অবস্ট্রাকশন করতে পারে। পেটের ভেতরের টিউব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অনেকে চুল তোলার পর কামড়ানোর অভ্যাস আছে, তাতেও ক্ষতি। দাঁতের সব ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
চিকিৎসা
সাইকো-এডুকেশন : চিকিৎসার বড় অন্তরায় হলো আক্রান্ত মানুষটি যেহেতু অন্য সব কিছুতেই স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যেতে পারে কোনো অসুবিধা ছাড়াই, তাই তার এ ব্যাপারটি ভেতরে ভেতরে চরম অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিছুতেই তারা চিকিৎসার মুখোমুখি হতে চায় না। এমনকি চিকিৎসকের সামনে প্রকাশও করতে চায় না। অনেকে ভাবে, এসবের আবার চিকিৎসা কিসের! তাই পরিবারের লোকজন বা রোগীর মধ্যে এ বিষয়ে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো প্রয়োজন।
ওষুধ ও সাইকোথেরাপি : অনেকটা ওসিডি-এর মতোই হয়ে থাকে এ রোগের চিকিৎসা। সেরোটোনিন রিপআপটেক ইনহিবিটর ও কগনেটিভ বিহেভিয়র থেরাপি। হ্যাবিট রিভার্সাল থেরাপিও এ রোগের চিকিৎসার জন্য উপকারী।
সুত্র : http://goo.gl/j5CH1q
©somewhere in net ltd.