নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বার্থপর আত্মা বলছে পূজিবাদ বা গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা হচ্ছে রাস্ট্রের জন্য মনোনিত জীবন ব্যবস্থা এবং জনগণকে সে ব্যবস্থা মেনে চলতে হবে।
#কার্লমাক্স কিংবা #চেগুয়েভার বিবেকের দড়জা মেপে দেখিয়েছিলেন, পুঁজি কেন্দ্রীভূত হয়।পুঁজি বড় বড় পুঁজিপতিদের হাতে জমা হতে থাকে আর যারা পুঁজি সৃষ্টি করে তারা দিন দিন নিঃস্ব হয়ে অভাব অনটনে জীবন যাপন করে।
এখন মূল কথা হল- ১৪০০ সালের পর থেকে একে একে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে বিশেষ করে ইটালি,ফ্রান্স,জার্মান ইসপেন, সুইডেন ইংল্যান্ডে জন্ম নিতে থাকেন অসংখ্য বুদ্ধিজিবী তথা #কবি #সাহিত্যিক #দার্শণিক,#বিজ্ঞানি, #শিল্পি এবং #স্তপতি।তাঁদের মধ্যে আবার বেশ কয়জন হয়ে উঠেন #কালজয়ি।সেই যুগ বা সময়টাকে #ইতিহাস রেনেসাাঁর যুগ বা নবজাগরণের যুগ বলে।
যেমনঃ-#জার্মানীদার্শনিকহেগেল, #ফয়ারবাককান্তা, #গোতে, #শিলা, #কার্লমাক্স, #এঙ্গেলস, #ফরাসিদার্শনিকরুসো, #কোঁত, #রনি, সহ অনেকে।
পরবর্তীতে ১৪ জুন ১৯২৮ আর্জেটিনার রোসারিও-তে অার্নেস্টো #চেগুয়েভারা সেরেনা জন্মগ্রহন করেও অর্জন করেন সহসা খ্যাতি।
কিন্ত আমরা মুসলীম ধর্মের অনেকেই ভূলে গেছি ৫৭০ খৃঃ জন্মগ্রহণ করা সেই মহা-মানব হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর কথা যিনি তৎকালীন জাহেলী সমাজে বিলিয়ে দিয়েছিলেন সত্যের আলো!
দিয়েছিলেন বাঁচার অধিকার ।
প্রত্যেক ব্যক্তিরই তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিয়েছে ইসলাম।
একটি ইসলামী সমাজে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবার বাঁচার অধিকার নিশ্চিত করেছে ইসলাম, মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন, 'তোমরা মানুষ হত্যা করো না, যাকে আল্লাহ তায়ালা সম্মানিত করেছেন।' অমুসলিমদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ইসলামে নির্দেশ দিয়ে রাসুল (সা.) বলেছেন, 'মনে রেখো, যে ব্যক্তি কোনো মুয়াহিদ (চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম) নাগরিকের প্রতি অত্যাচার করে, তাকে কষ্ট দেয়, তার সম্মান হানি করে অথবা তার কোনো সম্পদ জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধপক্ষ অবলম্বন করব।'- (কিতাবুল খারাজ, পৃ. ৮২)
ধনসম্পদ অর্জন ও তার নিরাপত্তার অধিকার ইসলাম মানুষকে দিয়েছে। ইসলাম সম্পদ লাভ ও তা ভোগের জন্য নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছে। ইসলামের অনুশাসন মতে, কেউ অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ অপহরণ বা জবরদখল করতে পারবে না। রাসুল (সা.)-এর এক হাদিসে বলা হয়েছে, 'মুসলমানদের সব জিনিস অপর মুসলমানের জন্য হারাম।' মহাগ্রন্থ আল কোরআনেও বলা হয়েছে, 'দুনিয়ার এমন কোনো প্রাণী নেই, যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর নয়।'
আল কোরআনে আরো বলা হয়েছে, 'আমরা তোমাদের জীবিকার দায়িত্ব নিচ্ছি এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততিরও।'
ইসলামে শ্রমের মর্যাদা অসীম। ইসলামে শ্রমিকের অধিকারকে খুবই পবিত্র মনে করা হয়। শ্রমের মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে আল্লাহ আল কোরআনে ঘোষণা করেছেন, 'তোমরা নামাজের পর রিজিকের সন্ধানে জমিনে ছড়িয়ে পড়ো।' মানবতার মহান নেতা রাসুল (সা.) শ্রমিকের অধিকার সম্পর্কে বলেছেন, 'তোমরা শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরি পরিশোধ করো।'
দুনিয়ায় দুঃখী-নিরন্ন ও সম্পদহারা মানুষরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। অধিকার রক্ষায় ইসলাম সবচেয়ে বেশি তাগিদ দিয়েছে গরিব, অভাবী ও নিরন্ন মানুষের জন্য। এ জন্য ইসলাম অভাবী মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করাকে বিরাট সাওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছে। এ জন্য জাকাত ব্যবস্থাকে ইসলাম বাধ্যতামূলক করেছে। আল কোরআনে বলা হয়েছে, 'ধনীদের সম্পদে রয়েছে বঞ্চিতের অধিকার।' অর্থাৎ বঞ্চিত মানুষের জন্য মুসলমানদের যে করণীয়, তা তার প্রতি করুণা নয়; বরং তা তার অধিকার। আল্লাহ তায়ালা এ অধিকার প্রতিষ্ঠাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন এবং তাতে মানুষের জন্য রেখেছেন কল্যাণ ও সফলতার বারতা।
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেছেন- 'যে ব্যক্তি অভাবী আত্মীয়স্বজন, এতিম, মিসকীন, পথিক ও প্রার্থীকে ধন-সম্পদ দান করে, অন্য লোকদের তাদের ঋণ, দাসত্ব কিংবা কয়েদ হতে মুক্তি লাভের ব্যাপারে সাহায্য করে এবং নামাজ কায়েম করে ও জাকাত আদায় করে একমাত্র তারাই পুণ্য লাভ করতে পারে।'- (সুরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৭৭) ।
ইসলামের ঘোষণা মতে, বংশ-বর্ণ, ভাষা ও অঞ্চল কোনো দিক দিয়েই মানুষের মধ্যে তারতম্য করা যাবে না। খলিফা হজরত ওমর ফারুক (রা.) তাই বলেছেন, 'মানুষের মধ্যে অভিজাত বা নীচ জাত যাই হোক না কেন, আল্লাহর দ্বীনে সব মানুষই সর্বতোভাবে সমান।' আল্লাহর নবী রাসুল (সা.) সাম্যের গুরুত্ব দিতে গিয়ে বলেছেন, 'তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন। কাজেই আল্লাহ যার ভাইকে তার অধীনস্থ করে দিয়েছেন, তার উচিত তাকে তা-ই খাওয়ানো, যা সে নিজে খায় এবং তাকে তা-ই পরানো উচিত, যা সে নিজে পরে। আর তাকে এমনভাবে কর্মভার দেবে না, যা তার সাধ্যাতীত।'-(বুখারি ও মুসলিম শরিফ)। নবী করিম (সা.) আরো বলেছেন, 'কোনো লোকই মুমিন হতে পারবে না, যে পর্যন্ত সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে।'-(বুখারি ও মুসলিম, সূত্র : মিশকাত, পৃ. ৪২২)
অমুসলিম বা অন্য ধর্মাবলম্বী কিংবা যারা কোনো ধর্মেরই অন্তর্ভূক্ত নয় তাদের বাঁচার অধিকার আছে কি নেই, বা তা ঠিক করার দায়দায়িত্ব কি মুসলমানদের হাতে?
এই পৃথিবী ও বিশ্বব্রম্মাাণ্ডের মালিক কি মুসলমান সম্প্রদায়, তাদের ধর্ম কি তাই বলে? এই বিশ্বে যেমন বহু বর্ণের-ধর্মের-ভাষার- সংস্কৃতির মানুষের বসবাস, তা বহু দেশে-ভূখণ্ডে বিভক্ত হয়ে থাকলেও রয়েছে মানবিক-ব্যবসায়িক-রাষ্ট্রিক- রাজনৈতিক আন্তঃসম্পর্ক।
অবশ্যই পারস্পরিক স্বার্থ,অস্তিত্ব ও পরিপুরক-পরিপুষ্টির প্রয়োজনে। একই ভাবে একটি দেশেও নানা বর্ণ-ধর্ম-ভাষা-সংস্কৃতির মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান যে-কোনো বিধি-বিধানেই স্বীকৃত, তা মানুষের তৈরি হোক বা ঐশী আইন-কানুন হলেও।
শান্তিকামী ও ইসলামী চেতনায় বিশ্বমানের বিদ্বান চিন্তাশীল রাজনৈতিক নেতৃত্ব থাকলে মুসলমানদের মধ্যেই কিংবা বহু সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা-হনাহানি-যুদ্ধ বিরামহীন এরকম বর্বর যুগের মানুষের মত গোষ্ঠীকেন্দ্রিক লড়াই চলতো না,তার জন্য নারী-শিশু-নিরিহ মানুষের নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হতো না। আর এ সুযোগে বাইরের দেশগুলো তাদের মতলব হাসিলের পথও পেতো না।
একটি হাদিস: ‘ সতর্ক থাকুন,যদি কেউ সংখ্যালঘু অমুসলিমদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করে, তাদের অধিকার হরণ করে,তাদের সামর্থ্য ও সক্ষমতার অতীত কিছু দাবি করে বা গ্রহন করে কারো কাছ থেকে জোরপূর্বক, আমি(মুহাম্মদ দঃ) সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে শেষ বিচারের দিন অবশ্যই অভিযোগ করবো।’(আবু দাউদ)।
মানব জীবনের সব ক্ষেত্রেই মানুষের যাবতীয় অধিকার নিশ্চিত করেছে ইসলাম। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে ইসলামের সঠিক বিধান বা নীতিমালা নেই। আর এ নীতি হচ্ছে সুষম ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইসলামের এই যে মানবাধিকারের ধারণা, তা ত্রুটিমুক্ত এবং সংশোধন ও সংযোজনের প্রভাব থেকে মুক্ত। ইসলামের মানবাধিকারের বিষয়গুলো চিরন্তন, যুক্তিগ্রাহ্য, পরিপূর্ণ এবং বাস্তবতাসঞ্জাত। আজকের দুনিয়ার সর্বত্র মানবাধিকারের যে চরম লঙ্ঘন চলছে এবং এর ফলে যে দুঃখ-দর্দশা বিরাজ করছে, তার অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরে আসার জন্য মহানবী (সা.) প্রবর্তিত চিরন্তন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।
©somewhere in net ltd.