নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক এবং গল্পকার জহির রায়হানের অন্তর্ধান দিবস আজ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিখোঁজ ভাইকে খুঁজতে গিয়ে নিজেই চিরকালের জন্যে নিখোঁজ হয়ে গেলেন তিনি। সু-সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের অন্তর্ধান দিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
জহির রায়হান ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট বর্তমান ফেনী জেলার অন্তর্গত মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পারিবারিক নাম আবু আবদার মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ। তবে ছেলেবেলায় তাঁকে ডাকা হতো জাফর বলে। বাবা-মা: বাবা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ। মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুন। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর তিনি তার পরিবারের সাথে কলকাতা হতে বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) স্থানান্তরিত হন।
নিজ পরিবারেই জহির রায়হানের পড়াশুনার হাতেখড়ি হয়। শৈশব-কৈশোর ও স্কুল জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে কলকাতায়। ১৯৪০ সালে তিনি কলকাতা মডেল স্কুলে ভর্তি হন। তাঁর বাবা তখন কলকাতা আলীয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। মডেল স্কুলে তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর তাঁকে মিত্র ইনস্টিটিউশনে (মেইন) ভর্তি করা হয়। এখানে সপ্তম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে তিনি আলীয়া মাদ্রাসার অ্যাংলো-পার্শিয়ান বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর বাবার সঙ্গে মজুপুর গ্রামে চলে আসেন। ওই সময় তিনি গ্রামের আমিরাবাদ স্কুলে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। গ্রামের আমিরাবাদ হাই স্কুল থেকে ১৯৫০ সালে তিনি প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। ঢাকা কলেজে পড়াশুনার সময় তিনি ভাষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৩ সালে জহির রায়হান ঢাকা কলেজ থেকে আই.এসসি. পাস করেন। ওই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন। এক বছর পর তিনি অর্থনীতি ছেড়ে বাংলা বিভাগে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীতে অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর এম.এ. ক্লাসে ভর্তি হন।
তাঁর সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি 'খাপছাড়া' পত্রিকায়। তিনি তাঁর বড় বোনের স্বামী এমএ কবীর ও ড. আলিম চৌধুরী সম্পাদিত 'যাত্রিক' পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৫৬ সালে 'প্রবাহ' নামক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। 'এক্সপ্রেস' পত্রিকার কার্যকরী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া জহির রায়হান 'সমকাল', 'চিত্রালী', 'সচিত্র সন্ধানী', 'সিনেমা', 'যুগের দাবী' প্রভৃতি পত্রিকার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি 'চিত্রালী'-তে 'প্রবেশ নিষেধ' শিরোনামে কিছুদিন একটি ধারাবাহিক ফিচার লিখেছিলেন।
ছাত্রজীবন শেষ হবার আগেই '৫৬ সালের শেষদিকে প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক এ জে কারদারের সঙ্গে পরিচিত হন। সে সময়ে কারদার 'জাগো হুয়া সাবেরা' ছবি করার জন্য ঢাকায় আসেন। কারদার জহির রায়হানকে এই ছবির সহকারী পরিচালক নিযুক্ত করেন। এখান থেকেই শুরু হয় জহির রায়হানের চলচ্চিত্র জীবন। 'জাগো হুয়া সাবেরা'র পর তিনি পরিচালক সালাউদ্দিনের 'যে নদী মরুপথে' এবং পরিচালক এহতেশামের 'এদেশ তোমার আমার' ছবিতে সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকায় স্থাপিত হয় ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এফডিসি)। এবার তিনি নিজেই ছবি তৈরিতে হাত দিলেন, সহকারী নয়- পরিচালক হিসেবে। ১৯৬১ সালে তার প্রথম পরিচালিত ছবি 'কখনো আসেনি' মুক্তি লাভ করে। এরপর তিনি পরিচালনা করলেন 'সোনার কাজল' (১৯৬২), 'কাঁচের দেয়াল' (১৯৬৩), 'সঙ্গম' (উর্দু : ১৯৬৪), 'বাহানা' (১৯৬৫), 'বেহুলা' (১৯৬৬), 'আনোয়ারা' (১৯৬৭) এবং 'জীবন থেকে নেয়া' (১৯৭০)।
চিত্র পরিচালনার পাশাপাশি জহির রায়হান অনেকগুলো ছবি প্রযোজনা করেন। সেগুলো হলো, 'জুলেখা' (১৯৬৭), 'দুই ভাই' (১৯৬৮), 'সংসার' (১৯৬৮), 'সুয়োরাণী-দুয়োরাণী' (১৯৬৮), 'কুচবরণ কন্যা' (১৯৬৮), 'মনের মত বউ' (১৯৬৯), 'শেষ পর্যন্ত' (১৯৬৯) এবং 'প্রতিশোধ' (১৯৭২)।
এর আগে ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানে অংশ নেন জহির রায়হান। তাঁর 'আর কতদিন' উপন্যাসের ইংরেজি ভাষান্তরিত ছবি 'লেট দেয়ার বি লাইট' সমাপ্ত হবার আগেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি কলকাতায় চলে যান এবং সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে প্রচারাভিযান ও তথ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করেন। এ সময় তিনি পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অত্যাচারকে কেন্দ্র করে তৈরী করেন প্রামাণ্যচিত্র 'স্টপ জেনোসাইড' ও 'বার্থ অব আ নেশন'। তাঁর তত্ত্বাবধানে বাবুল চৌধুরীর 'ইনোসেন্ট মিলিয়ন' এবং আলমগীর কবীরের 'লিবারেশন ফাইটারস' নামক প্রামাণ্যচিত্র দু'টি নির্মিত হয়। কলকাতায় তার নির্মিত চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেওয়ার বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী হয় এবং চলচ্চিত্রটি দেখে সত্যজিত রায়, মৃণাল সেন, তপন সিনহা এবং ঋত্বিক ঘটক প্রমুখ ভূয়সী প্রশংসা করেন। সে সময়ে তিনি চরম অর্থনৈতিক দৈন্যের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও তার চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হতে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ তিনি মুক্তিযোদ্ধা তহবিলে দান করে দেন।
দেশ স্বাধীন হবার পর জহির রায়হান তাঁর নিখোঁজ ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে শুরু করেন, যিনি স্বাধীনতার ঠিক আগমুহূর্তে পাকিস্তানী আর্মির এদেশীয় দোসর আল বদর বাহিনী কর্তৃক অপহৃত হয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ৩০ ডিসেম্বর জহির রায়হান ভাইয়ের সন্ধানে মীরপুরে যান এবং সেখান থেকে আর ফিরে আসেননি। মীরপুর ছিল ঢাকা থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত বিহারী অধ্যুষিত এলাকা এবং এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে যে সেদিন বিহারীরা ও ছদ্মবেশী পাকিস্তানী সৈন্যরা বাংলাদেশীদের ওপর গুলি চালালে তিনি নিহত হন। নিখোঁজ ভাইকে খুঁজতে গিয়ে তিনি নিজেই চিরকালের জন্যে নিখোঁজ হয়ে গেলেন। সু-সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের অন্তর্ধান দিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সূত্রঃ India-forums.com
জহির রায়হানের জীবনী
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৫
কোবিদ বলেছেন: আপনার মহানুভবতার জন্য
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১২
সালাম বাবু বলেছেন: আমরা জানতে চাই জহির রায়হান কেন একা নিখোজ হলেন। তার কাছে স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক দলিল ছিল । যা ইতিহাসের দলিল হতে পারত।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৮
কোবিদ বলেছেন: কী হেয়েছে, কী হতে পারতো তা না ভেবে কী হেয়েছে সেই দিকে গুরুত্ব দিলে আমরা আরও দ্রুত এগিয়ে যেতে পারবো আগামীর দিকে। সুতরাং হতাশা নয় চাই যুদ্ধাপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাধা দান করীদের ষড়যন্ত্র রুখতে হবে যে কোন মূল্যে। তা হলেই আমাদের ঋণের বোঝা কমে যাবে।
৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬
কাউসার রুশো বলেছেন: বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে একজন জহির রায়হানের অভাব অপূরণীয়
শ্রদ্ধাঞ্জলি
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৯
কোবিদ বলেছেন: ধন্যবাদ কাউসার রুশো,
একজন জহির রায়হানের এখন
বড় প্রয়োজন এখন
৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:১৬
রাফা বলেছেন: এই শুণ্যস্থান গুলো কখনই পুরন হয় নাই।আর একজনও জহির রায়হান পেলামনা।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
কোবিদ বলেছেন: কিছু কিছু শ্যুণ্যস্থান কখনোই পূরণ হবার নয়, পুরণ হয় না।
তাই বলে আমাদের থেমে থাকলে চলবে না, এগিয়ে যেতে হবে
সামনের দিকে, নতুনের দিকে। শোক কে পরিণত করতে হবে শক্তিতে।
৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২৬
বিডি আমিনুর বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩
কোবিদ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ
৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৮
টুকরো কাগজ বলেছেন: আমি যখন জহির রায়হানের কোন উপন্যাস পড়ি, সেই উপন্যাসের নামের দিকে দশ মিনিট তাকিয়ে থাকি।কারন নামগুলো এত রোমান্টিক।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪২
কোবিদ বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব,
জহির রায়ান তার উপন্যাস কাগজে নয়
আমাদের হৃদয়ে লিখে গেছেন, তাই এমন
মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক
৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৩
মাহী ফ্লোরা বলেছেন: খুব ভাল পোষ্ট! ভাল লাগা রইলো।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪১
কোবিদ বলেছেন: মাহী আপু
অনেকদিন পরে আপনার মন্তব্য পেয়ে
ভালো লাগলো। কেমন আছেন আপনি,
কথা হয়না বহুদিন। ভালো থাকবেন
৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৮
ফবিতৌসি বলেছেন: শ্রধাঞ্জলি
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭
কোবিদ বলেছেন: আপনার জন্য ধন্যবাদ
৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯
সাহিদা আশরাফি বলেছেন: কাউসার রুশো বলেছেন: বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে একজন জহির রায়হানের অভাব অপূরণীয়
শ্রদ্ধাঞ্জলি
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:০২
কোবিদ বলেছেন: সত্যিই তাই।
তাঁর অভাব পূরণ হবার নয়।
তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
১০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৩
মাক্স বলেছেন: কাউসার রুশো বলেছেন: বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে একজন জহির রায়হানের অভাব অপূরণীয়
শ্রদ্ধাঞ্জলি
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:০৩
কোবিদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
তবে আপনিও কিছু বলতে পারতেন।
সবাই রুশোকে দিয়ে চালিয়ে দিলেন !!
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১০
মিতক্ষরা বলেছেন: পছন্দের বাটনে চাপ দিলাম।