নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্নেহ-ভালবাসা প্রকাশার্থে চুম্বন মানব সভ্যতার একটি জনপ্রিয় প্রথাঃ তবে সাবধান !! চুমুর মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে মুখ, ঠোঁট

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫০



চুমুর প্রচলন কবে, কোথায় ও কীভাবে শুরু হয়েছিল, তা নিয়ে বিভিন্ন গল্প চালু থাকলেও পৃথিবীর সব দেশেই চুমু আদান-প্রদানের রেওয়াজ বিদ্যমান। হয়তো ধরন, গ্রহণ ভিন্নতর। স্নেহ-ভালবাসা প্রকাশার্থে চুম্বন একটি সাধারণ প্রথা। পিতা-মাতা, ভাই-বোন,বন্ধু-বান্ধবী, প্রেমিক-প্রেমিকা, ছাত্র-শিক্ষক,ধনী-গরিব, রাজা বাদশা, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, চাষা-কামার-কুমার, জেলে-তাতি ছোট-বড় সবার মাঝেই আছে চুমুর জনপ্রিয়তা। সাধারণভাবে প্রেম, কাম, স্নেহ, অনুরাগ, শ্রদ্ধা, সৌজন্য অথবা শুভেচ্ছা প্রকাশার্থে অন্য কারো চিবুক, অধরোষ্ঠ, করতল, কপাল বা অন্য কোন অঙ্গে ঠোঁট অর্থাৎ অধরোষ্ঠ স্পর্শ করা। সৌভাগ্য কামনায, সম্মান প্রদর্শনার্থে বা কিছু প্রাপ্তির আনন্দ প্রকাশার্থে ঐ বস্তুতে অধরোষ্ঠ স্পর্শ করানোও চুম্বন।



চুম্বন হল দুই ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে কাউকে আদর করা বা স্নেহ প্রকাশ করা।যৌনসঙ্গমকালে চুম্বন একটি গুরুত্বপূর্ণ শৃঙ্গার। বাৎস্যাযনের কামসূত্রে বিভিন্ন প্রকার চুম্বনের বর্ণনা পাওযা যায। মানুষ ছাড়া পশুপাখি, জীব-জানোয়ারের মধ্যেও চুমুর বিনিময় আছে। চুমুর অভিব্যক্তিগুলো মূলত ভালোবাসা, অভ্যর্থনা, আনন্দ, উচ্ছ্বাস প্রকাশ। বিশ্বের অনেক দেশেই চুমুর মাধ্যমেই প্রাথমিক কুশল বিনিময় করা হয়। তবে আধুনিক কাল অবধি তাহিতি এবং আফ্রিকা মহাদেশের কোনো কোনো আদিবাসী সমাজে চুম্বন প্রথা অজ্ঞাতই রয়ে গেছে।



সংস্কৃত "চুম্বন" থেকে বাংলায "চুমা", "চুমু", "চুমো" প্রভৃতি শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। মানব সভ্যতার বিভিন্ন পর্যায়ে নানা অনুষ্ঠান ও উৎসবে চুম্বন প্রথা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি অভিবাদনের সাধারণ একটি রীতি। পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলিতেও চুম্বন বর্ণিত হয়েছে। হোমারের রচনা থেকে জানা যায যে প্রাচীন গ্রিসে শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পন্থা হিসেবে ওষ্ঠ, হস্ত ও পদ চুম্বনের প্রথা প্রচলিত ছিল। প্রাচীন রোমে, ইসাক ডি’ইসরায়েলির বর্ণনা থেকে জানা যায, কেউ কেউ একনায়কের হস্ত চুম্বনের অনুমতি প্রাপ্ত হলে "নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতেন"। আধুনিক যুগেও চুম্বন প্রায়শই ধর্মোপাসনার অঙ্গ হিসেবে পরিগণিত হয। হজ্জ পালন কালে মুসলমানরা ক্বাবার প্রাচীরে স্থাপিত হযরে আসওয়াদ নামক পাথরটিতে চুম্বন করে থাকে।



মার্কিন লেখক ড্যানি বিডার ম্যান তার ‘দ্য বুক অব কিসেস’ গ্রন্থে চুমু সম্পর্কে মজার তথ্য দিয়েছেন। তার সংগৃহীত তথ্যে মার্কিন মেয়েরা বিয়ের আগে গড়পড়তা ৭৯ জন পুরুষকে চুমু খেয়ে থাকে। উপনিবেশ যুগে নাকি কোনো পুরুষ কোনো মহিলার দাস্তানা খুলতে সাহায্য করলে সে পুরুষ একটি চুমু পাওনা হয়ে যেত। অভিনেত্রী গ্রেটা গার্বো (১৯৩২ সালে) যে হলদে ফুলকে চুমু খেয়েছিলেন, বৈজ্ঞানিক উপায়ে রাখা ১৯৮০ সালে এসে সেই ফুল বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫৭৫ ডলারে। প্রাচীন রোমে একটি আইন ছিল-যদি কোনো কুমারী মেয়ে প্রমাণ করতে পারত তাকে চুমু খাওয়া হয়েছে, তবে সঙ্গে সঙ্গে তাকে বিয়ে করার পূর্ণ অধিকার দেয়া হতো।



প্রাচীন স্কটল্যান্ড থেকে খ্রিস্টানদের বিয়ের মন্ত্র পাঠের পর কনেকে চুম্বন করার রীতি এসেছে। সেই সময় বিয়ের আসরে উপস্থিত সব পুরুষকেই কনে চুমু খেত। ম্যাসাচুসেটসের এক রাষ্ট্রীয় আইনে বলা হয়েছে, কোনো পুরুষ বা মহিলা কেউ কাউকে দশটি চুম্বন করা বিয়ের প্রস্তাবের সমতুল্য। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের অঙ্গরাজ্যের ডিয়ারফিল্ড রেলস্টেশনে দুটি বিশেষ এলাকা চিহ্নিত করে দেয়া হয়েছে। একটি হচ্ছে ‘কিসিং জোন’ আর অপরটি হযেছে ‘নো কিসিং জোন’। যুক্তরাষ্ট্রের অপর এক অঙ্গরাজ্যে আইওয়াতে কঠোরভাবে আইন করে দেয়া হয়েছে যে, কেউই একনাগারে পাঁচ মিনিটের বেশি চুমু খেতে পারবে না। ফরাসিদের মধ্যে একটি কুসংস্কার প্রচলিত আছে, যদি তাস খেলার শুরুতে কোনো খেলোয়াড় তাসে চুমু খায়, তবে খেলায় তার জয় হবেই।



প্রায় দেড়শ’ বছর আগে তিন বছর সুমুদ্রযাত্রার পর ফিরে এসে স্ত্রীকে প্রকাশ্যে চুম্বন করার অপরাধে বোস্টনের এক সমুদ্র জাহাজের ক্যাপ্টেনকে অশোভন আচরণের দায়ে দু’ঘণ্টা বসে থাকার দণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছিল। পপসংগীতের কিংবদন্তির নায়ক এলভিস প্রিসলি নাকি প্রায় প্রতিদিনই তার গাড়ির রং বদলাতেন। কারণ তার মেয়ে ভক্তরা বিভিন্ন রঙের লিপস্টিক লাগিয়ে চুমুতে চুমুতে পুরো গাড়ি রাঙিয়ে দিত। তাছাড়া ফ্রান্সের এক প্রভাবশালী তরুণ বণিক ফিলিশ দ্য শ্যাভিন চুরি করে চুমু খেয়েছিল ইসাবেলা দ্য ভোমারা নামের এক ধার্মিক সুন্দরীর ঠোঁটে।



রেগে ইসাবেলা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন। রাজা বিচার করে ওই চুমু চোরের বিরুদ্ধে দণ্ড দিলেন। তার প্রকাণ্ড প্রাসাদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো। এমন শাস্তি বিধানে ইসাবেলার রাগ প্রশমিত হলেও মন নরম হয়ে গেল। তিনি বণিককে ক্ষমা করে দিলেন এবং ক্ষমা করার প্রমাণ হিসেবে তিনি ফিলিপকে আরেকটি চুমু প্রদান করলেন। ইসাবেলার এ ক্ষমা সম্পর্কে রাজা জ্ঞাত হলেন এবং আবার আদেশ দিলেন ফিলিপের প্রাসাদটি নতুন করে গড়ে তোলার। ১২৯৭ সালে ফের গড়া হলো ফিলিপের প্রাসাদ। আজও চুমুর জন্য খ্যাত সে প্রাসাদ দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে ফ্রান্সের ভূমিতে।



যগত সংসারে প্রতিটি কাজের যেমন রয়েছে ভালো দিক তেমনি রয়েছে কিছু ক্ষতির কারণ। চুমু যতই নান্দনিক ভালোবাসা, অভ্যর্থনা, আনন্দ, উচ্ছ্বাস প্রকাশের ভাষা হোক না কেন; চুমুতেও রয়েছে কিছু ক্ষতিকারক উপাদান। চুমুর আদান-প্রদানের ক্ষতিকর দিকের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস যা লালাতে বিদ্যমান, তা চুমুর মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি শ্বাসনালীতে সংক্রমণ ঘটতে পারে, যেমন ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা সহজেই চুমুর মাধ্যমে বিস্তার লাভ করতে পারে। কোল্ড সোরের ক্ষেত্রে হারপিস ভাইরাস চুমুর মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে মুখ, ঠোঁট বা অন্য কোনো অঙ্গ। তাই সর্তক থাকতে হবে যে, ঠোঁটের কোল্ড সোর যখন কার্যকর অবস্থায় থাকে, তখন চুমু ও ওয়াল সেক্স থেকে বিরত থাকতে হবে। পেরিওডেন্টাল রোগ চুমুর মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। এ কারণে আমেরিকান একাডেমি অব পেরিওডেন্টালজির অভিমত, পরিবারের একজনের পেরিওডেন্টাল রোগ থাকলে সবার পরীক্ষা করা উচিত।



চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, চুমুর মাধ্যমে একজন মানুষের শরীর থেকে ২৭৮ ব্যাচ বা দল ব্যাকটেরিয়া অন্যের মানবশরীরে প্রবেশ করে। তবে আশার কথা, এসব রোগ-জীবাণুর ৯৫ শতাংশই ক্ষতিকারক নয়। তবে চুমুর আদান-প্রদানকারীর দু’জনেরই মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকতে হবে এবং হতে হবে স্বাস্থ্যবান ও সুস্থ মুখের চুমু। লালাতে এমন কিছু উপাদান বিদ্যমান থাকে, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকের বিরুদ্ধে কাজ করে, যদি মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। শতকরা ৮০ ভাগ ব্যাকটেরিয়া, যা মুখের লালাতে বিদ্যমান, সাধারণত সবার মাঝেই দেখা যায়। বাকি শতকরা ২০ ভাগ ব্যাকটেরিয়া সবার মাঝে দেখা যায় না।



চুমু কার্যকর হওয়ার মুহূর্তে আদান-প্রদান রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ক্রিয়াশীল করার মাধ্যমে অ্যান্টিবডি তৈরি করে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যা ক্রস ইমিউনোথেরাপি নামে পরিচিত। ক্রস ইমমিউনোথেরাপি সংক্রমণের বিপক্ষে কাজ করে। গভীর চুমু বা ওরাল সেক্সের হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাসের সঙ্গে ওরাল ক্যান্সারের যোগসূত্র রয়েছে। তাই চুমু হতে হবে সুস্থ মুখের। তা না হলে চুমু জীবনে ভয়াবহ বিপদ নিয়ে আসতে পারে।

সূত্রঃ InteliHealth

Is Kissing Dangerous?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২৮

মুক্তকণ্ঠ বলেছেন: তখন চুমু ও ওয়াল সেক্স থেকে বিরত থাকতে হবে!!
ওয়াল সেক্স??????

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:২০

কোবিদ বলেছেন: ওয়াল সেক্স !!‍
জিনিসটা কি? |-)

২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০৩

লজিক মানুষ বলেছেন: মুক্তকণ্ঠ বলেছেন: তখন চুমু ও ওয়াল সেক্স থেকে বিরত থাকতে হবে!!
ওয়াল সেক্স??????

বড় কিছু পেতে হলে ছোট কিছু বাদ দিতে হয়।:-P

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:২১

কোবিদ বলেছেন: বড় জিনিসটা কী ? :-0 :-0

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.