নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(”টেলিফোনের আবিস্কার্তা আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল”পদার্থবিদ)
স্রষ্টাকে ভুলে গেলেও সৃষ্টির মহিমা কিন্তু থেকেই যায। বর্তমান সময়ে ফোন ছাডা একটি মূহুর্তও চলেনা আমাদের। এই ফোন যন্ত্র যিনি আবিষ্কার করেন আমরা অনেকেই হযতো ভুলতে বসেছি তাঁর নাম। আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল-এর নাম স্মরণ করতে এখন হযতো আমাদের অনেকেরই মাথা চুলকাতে হয়। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল ১৮৪৭ সালের ৩রা মার্চ স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা আলেকজান্ডার মেলভিল বেল এবং মাতা এলিজা গ্রেইস সাইমন্ড্স বেল। ১৮৮৮ সালে বেল পরিবার আমেরিকায় অভিবাসী হয়। ২৩ বছর বয়সে তিনি বাবা-মায়ের সঙ্গে কানাডায় চলে যান।
আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোনের অন্যতম আবিষ্কারক হিসেবে তিনি সবচেয়ে বেশী পরিচিত। মূলত বেল টেলিফোন যন্ত্রের প্রথম পেটেন্ট করেছিলেন বটে কিন্তু তিনি প্রথম আবিষ্কারক নন। এই দাবি করতে পারেন অ্যান্তেনিও মিউচি। তিনি ১৮৫৭ সালে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক টেলিফোন আবিষ্কারের গবেষণায় সফলতা লাভ করেন। আর ১৮৬৫ সালে ইটালিয়ান আবিষ্কারক ইনোচেনযো মেনজাডি একটি স্পিকিং টেলিফোন আবিষ্কার করেন। হাঙ্গেরিয়ান আবিষ্কারক থিবেদার পুশকাস সুইচবোর্ড ও পার্টি লাইন আবিষ্কার করে টেলিফোনকে ব্যবহার উপযোগী করে তুলেন। তবে এরা বেল এর প্রধান প্রতিযোগী নন।
(এলিশা গ্রে)
বেল এর প্রধান প্রতিযোগী হলেন আমেরিকান উদ্ভাবক এলিশা গ্রে। ভাগ্য কখনো কখনো খুব নির্দয় হয় যেমন হয়েছিলো এলিশা গ্রের ক্ষেত্রে। সৌভাগ্য কিংবা দূঃভাগ্য, করুন অথবা মজার যাই হোক ব্যাপার হল এলিশা গ্রে এবং বেল একই দিন অর্থাৎ (১৮৭৬ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি) পেটেন্ট অফিসে যান টেলিফোন যন্ত্রের নিবন্ধন করার জন্য। তবে দুঃর্ভাগ্যজনকভাবে এলিশা গ্রে’র আইনজীবী বেল এর চেয়ে কয়েকঘন্টা পরে যাওয়ায় ১৮৭৬ সালে আলেকজাণ্ডার গ্রাহাম বেলকে টেলিফোনের প্রথম মার্কিন পেটেন্টের সম্মানে ভূষিত করা হয এবং শেষপর্যন্ত বেলই টেলিফোন আবিষ্কারের কৃর্তত্ব লাভ করেন।
আজ আমরা দিনে বহুবার উচ্চারণ করি হ্যালো শব্দটি। Hello শব্দটি প্রথম উচ্চারিত হয়ে ছিল আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল-এর মুখেই। হ্যালো তার বান্ধবীর নাম। পুরো নাম মার্গারেট হ্যালো। কথিত আছে ১৮৭৬ সালে টেলিফোন আবিষ্কারের পর তিনি তার বান্ধবী হ্যালো কে-ই প্রথম ফোনটি করেছিলেন। যদিও বিতর্ক আছে আদৌ তার কোনো বান্ধবী ছিল কী-না। কারন মার্গারেট হেলো নামে কোন মহিলার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি যাকে তিনি সত্যিকার ভালোবাসতেন। অনেকে বলেন বধির স্ত্রী ম্যাবেল হাবার্ড বেল ব্যাতীত তাঁর আর কোনো ভালোবাসার মানুষ ছিল না।
মাবেল গার্ডিনার হুবার্ড ছিলেন গ্রাহাম বেলের বাগদত্তা। মাবেল ছিলেন শ্রবণ ও বাকশক্তিরহীতা। মাবেলের পিতা ধনী আইনজ্ঞ ছিলেন। তিনিই আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল-কে গবেষণা চালিয়ে যাবার খরচ পাতি যুগিয়ে ছিলেন। তবে টেলিফোন আবিষ্কার হবু শ্বশুরের উদ্দেশ্য ছিলো না। যতদূর যানা যায় , হবু শ্বশুর চেয়েছিলেন হিযারিং এইড জাতীয ডিভাইস আবিষ্কার করতে - যাতে তাঁর কণ্যা শ্রবণশক্তি ফিরে পান। কারণ শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী মাবেলের পক্ষে টেলিফোনের কোনো শব্দই শোনার কথা না ।
(গ্রাহাম বেল, মাবেল এর পরিবার)
আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল তাঁর টেলিফোন প্যাটেন্ট করেন ১৮৭৬ সালে। পরের বছর ১৮৭৭-তে মাবেল-কে বিয়ে করেন তিনি। বেল ও মাবেলের ৪ সন্তান। এদের মাঝে ২ ছেলে শিশু অবস্থায় মারা যায়। কাকতালীয়ভাবে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল'এর মা এলিজা গ্রেইস সাইমন্ড্স বেল ও তাঁর স্ত্রী ম্যাবেল হুবার্ড উভয়েই ছিলেন বাক প্রতিবন্ধী অর্থাৎ বোবা। এ কারেনেই তিনি বোবাদের জীবনযাত্রার মান উন্নযনে অনেক গবেষণা করেছেন। তাঁকে বোবাদের পিতা তথা Father of the Dumb নামেও ডাকা হতো। টেলিফোন উদ্ভাবনের আগে থেকেই তিনি শ্রবণ ও কথন সংশ্লিষ্ট গবেষণা নিয়োজিত ছিলেন। আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবন যে টেলিফোন, সেটিকেই তিনি এক উটকো ঝামেলা মনে করতেন। এজন্যেই তিনি নিজের গবেষণা ও অধ্যযন কক্ষে কোন টেলিফোন রাখতেন না।
পরবর্তী জীবনে বেল আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেন যার মধ্যে রযেছ উড়ো নৌকা এবং বিমানচালন বিদ্যা। ১৮৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বেল। আলেকজাান্ডার গ্রাহাম বেল ১৯২২ সালের ২ আগষ্ট আগস্ট ৭৫ বছর বয়সে পার্নিসিযাস অ্যানিমিযা রোগে নোভা স্কটিযা, কানাডায় মৃত্যুবরন করেন। বেল মারা যাওযার পর আমেরিকার সকল টেলিফোনে এক মিনিটের জন্য অবিরাম রিং বাজানো হয। মার্কিন প্রশাসনের ভাষ্য মতে যে মহান ব্যক্তি মানুষে-মানুষে যোগাযোগের এ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তাকে উপযুক্ত সম্মান দেখানোর জন্যই এমনটি করা হয়েছে। আজ এই মহান আবিস্কাকরকে জন্ম দিন। জন্মদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালাবাসায়।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
ইমরুল_কায়েস বলেছেন: স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালাবাসায়