নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেফাজতের ঢাকা অবরোধের বছরপূর্তি আজঃ বিভিন্ন কারনে ঝিমিয়ে পড়ছে হেফাজত

০৫ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫৪



বিএনপি-জামায়াত মদদপুষ্ট কথিত ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের প্রথম বর্ষপূর্তি আজ। গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন রায়কে কেন্দ্র করে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হয়। পরে ওই মঞ্চে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে রাজিব নামে একজন সন্ত্রাসী আক্রমণে খুন হলে ব্লগে ইসলাম ও মহানবীকে কটূক্তি করে তার লেখার বিষয়টি প্রকাশিত হয়। একইভাবে গণজাগরণ মঞ্চের সাথে সম্পর্কিত আরো কয়েকজন ব্লগারের ইসলাম বিদ্বেষী লেখার বিষয়েও খবর প্রকাশিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে ইসলামি দল ও সংগঠনগুলো নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে।



একপর্যায়ে বেফাকের সভাপতি ও হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শফীর নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলাম ৯ মার্চ হাটহাজারীতে উলামা সম্মেলন করে ১৩ দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ শেষে রাজধানীর শাপলা চত্বরে ধর্মপ্রাণ মানুষের অংশগ্রহণে স্মরণকালের বৃহত্তম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশ থেকেই ৫ মে ঢাকা অবরোধের কর্মসূচি দেয়া হয়েছিল। আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে অবরোধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। নানা বাধা প্রতিবন্ধকতার পরও হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজত ঢাকা অবরোধ করে। অবরোধ শেষে শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার জন্য সমবেত হতে থাকে।



একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকায় সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও পুলিশের সাথে হেফাজত কর্মীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা যখন বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সামনে দিয়ে যেতে চায় তখন তাদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় হেফাজতে ইসলামের দু’জন কর্মী নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়। ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে হেফাজতের একটি বড় দল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দিকে হামলা চালায়। শুরু হয় হেফাজতের কর্মীদের সাথে ক্ষমতাসিনদের সংঘর্ষ। কিন্তু এ সংঘর্ষ বেশিক্ষণ চলতে দেয়নি প্রশাসন। সাঁজোয়া যান ও জলকামান নিয়ে পুলিশ-র‌্যাব, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে হেফাজতে ইসলামকে পিছু হটতে বাধ্য করে। অন্য দিকে রাজধানীর শাপলা চত্বরে সমাবেশ চলতে থাকে।



এক পর্যায়ে শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের নামে বিতর্কিত সংগঠন হেফাজত ও তার মদদদাতা উগ্রবাদী গোষ্ঠী নারকীয় তান্ডব চালায়। ঢাকার কিছু নেতারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সন্ধ্যায় হেফাজত শাপলা চত্বরে অবস্থানের ঘোষণা দিলে উত্তেজনা আরো ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতে সাধারণ কর্মীদের রেখে নেতারা নিজেরা সেখান থেকে সরে পড়েছিলেন। অবরোধে জামায়াত-শিবিরের নাশকতার কথা উল্লেখ্য করে আগেই কর্মসূচী থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল চট্টগ্রামের ছয়টি বড় মাদ্রাসা। সমাবেশ থেকে কিছু নেতার ‘মঞ্চ কাঁপানো-অযৌক্তিক’ বক্তব্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সরকারের পক্ষ থেকে সমাবেশকারীদের শাপলা চত্তর ত্যাগ করার নির্দেশ দিলেও তারা সভাস্থলে অনড় অবস্থানে থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে যৌথ অভিযান চালিয়ে সকালের আলো ফোটার আগেই পুরো এলাকা জনশূন্য করে ফেলে। সেই অভিযানে অসংখ্য লোক হতাহত হওয়ার দাবি করে হেফাজত। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের পক্ষ থেকে অভিযানে কেউ মারা যায়নি বলে দাবি করা হয়। পর দিন ৬ মে সকালেও নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত হন।



এরপর হেফাজতের প্রতি কঠোর নীতি অবলম্বন করতে থাকে সরকার। ৫ মের ঘটনায় রাজধানীর পল্টন ও মতিঝিল এলাকায় ১৬টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা লক্ষাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। সন্ধ্যায় হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনয়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আটককৃত হেফাজতের কর্মীদের রিমান্ডে নেয়া হয়। ৬ মে সকালে হেফাজতের আমির আল্লামা শফীকে বিমানযোগে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেয়া হয়। মূলত এরপর থেকে হেফাজত এখন পর্যন্ত মাঠের কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। হেফাজতের অন্যতম নেতা মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাসসহ কয়েকজন নেতা এখনো কারাবন্দী রয়েছেন। ৫ মে'র মধ্যরাতের অভিযানকে গণহত্যার অভিযোগ করেছে জামায়াতে ইসলাম। একই সাথে কয়েক হাজার কর্মীকে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগ করে হেফাজতে ইসলাম। পরবর্তী একটি মানবাধিকার সংগঠন নিহতের তালিকা প্রকাশ করলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে নিহতদের তালিকা প্রকাশের কথা বলা হলেও পরে তা হয়নি। অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীনরা।



৫ মে শাপলা চত্তরের তান্তবের এসব ঘটনায় অধিকাংশ শীর্ষপর্যায়ের নেতাকর্মীকে আসামি করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-চট্টগ্রামসহ সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার একবছরেও এসব মামলার কোন অগ্রগতি নেই। দাখিল করা হয়নি মামলার তদন্ত রিপোর্ট। তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িত শীর্ষনেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি এখনও। জানা গেছে, হেফাজত শীর্ষনেতাদের মধ্যে কেবল সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মুফতি সাখাওয়াতসহ মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুফতি ওয়াক্কাস ছাড়া বাকিরা জামিনে বের হয়ে যান। পুলিশের রহস্যজনক নীরবতায় তাদের নেতারা একবছর ধরে মামলার হুলিয়া নিয়েই প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে। গ্রেপ্তার এড়াতে একবছর ধরে এসব নেতারা আদালতে আত্মসমর্পণ করছেন না এবং মামলার জামিন নিচ্ছেন না।চট্টগ্রামের লালখান বাজার মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় হেফাজতের শীর্ষনেতা মুফতি ইজাহার ও তার ছেলে হারুন এজাহারকে আসামি করে মামলা করা হয়। এ মামলায় হারুন ইজাহারকে গ্রপ্তার করা হলেও মুফতি ইজাহারকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।



আজ ৫ মে ঘটনার এক বছরপূর্ণ হচ্ছে। এক বছরের মাথায় কোথায় আছেন সরকারকে ফেলে দিয়ে তালেবানী রাষ্ট্র বানানোর হুমকিদাতা সেই নেতারা? জানা গেছে এক বছর আগের সেই দেশজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী দাপুটে হেফাজত আর নেই। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা আর সরকারকে ফেলে দেয়ার আন্দোলন করতে গিয়ে এক বছরের মাথায় সেই সংগঠনই আজ ভাঙ্গনের মুখে। সাধারণ মানুষের ধর্মীয় চেতনাকে ব্যবহার অবৈধ পন্থায় রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা প্রগতিবিরোধী ১৩ দফার জনক এ সংগঠনটি নিজেই এখন বিভক্ত-বিধ্বস্ত। অর্থ লোপাট, টাকার ভাগাভাগি, আধিপত্য বিস্তার আর ১৮ দলের রাজনীতি করতে গিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃত্ব। আমির আহমদ শফীর ভূমিকায়ও অন্য নেতারা আছেন গোলক ধাঁধায়। চট্টগ্রামের কয়েক নেতা আমিরের কাছে দাবি তুলেছেন, হেফাজতের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ঢাকার নেতাদেরাই দায়ী। তাদের মতে, ঢাকার নেতাদের অতি উৎসাহ আর স্বার্থের কারণেই হেফাজতের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। কোমলমতি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বাধ্য করে সমাবেশে অংশগ্রহণ করানো, মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া, অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত, নিহত-আহতদের নামে সংগৃহিত অর্থ ভাগবাটোয়ারাসহ বিভিন্ন কারণে বিভক্ত হয়ে পড়ে হেফাজত।



গত বছরের ৫ মের ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম আজ দোয়া মাহফিল ও সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সোমবার হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে এক ইসলামী মহাসম্মেলন ও দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন ও দোয়া-মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৪

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
৫ই মে ছিল সত্যই একটা ভয়াবহ স্মরণীয় রাত। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অভাবনীয় নৈরাজ্য, যদিকে তাকাই সেদিকেই আগুন, আতংক! টিভিগুলো টকশোর কথা বন্ধ করে বলছে " এরপর কি হচ্ছে কেউ কিছু বলতে পারছেনা, রাত যত গভীর হচ্ছে আতংক তত বাড়ছে। এমন ভয়াবহ অনিশ্চয়তা আমার জীবনে দেখিনি।

শেষ রাতে একটা ব্যাবস্থা নেয়া হল। প্রমান হল বিডি পুলিশ যে কোন সময়ের তুলনায় দক্ষ।
পুলিশী ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে সার্থক সফল অপারেশন,
বিশ্ব 'মব কন্ট্রল' ইতিহাসেও এটি সফল মাইল ফলক হিসাবে থাকবে,
দু লক্ষ মারমুখি অবরোধকারিদের প্রায় বিনা রক্তপাতে, নন লেদাল ওয়েপন ইউজ করে মাত্র ১০ মিনিটে সরিয়ে দিয়ে .. সবকিছুর নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয়া! যেটা মিশর বা থাইল্যান্ড এমনকি আমেরিকাও পারেনি। হেফাজতকেও পররবর্তিতে কৌশলে নিউট্রাল করে ফেলা হয়েছিল।
Click This Link
Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.