![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবিতায় বাঁচি
বিকৃত আত্মার পৃষ্ট-পোষক (ধারাবাহিক উপন্যাস)
২০ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:২৫
শ্বাশুড়ি আমেনা বেগমের ও ছোট পুত্রবধুকে যথার্ত মনে ধরেছিল। হালকা শরীর, মাঝারী গড়ন, সংসারের কাজের প্রতি দুরন্তপনা,ঘন ঘন কথা বলা এই সব বৈশিষ্টকে কেন্দ্র করে সে শ্বাশুড়ির খুউব কাছের হয়ে গেল। সংসারের শিকে আমেনার হাতে বোনা, অসহায়ত্বের পথ পাড়ি দিয়ে অল্প সময়েই এ সংসার আজ পরিপূর্ণ।নিজের হাতে পরম যত্নে আগলে রেখেছেন সংসারের সমস্থ দায়ভার।দ্বীর্ঘদিন সংসার জীবনের অন্ধকার অলি গলি পেরিয়ে উন্মুক্ত খোলা ময়দানের যে আলোক সজ্জার দেখা পেলেন সেখানে তার ছোট পুত্রবধুর সোভা যথার্তই মানানসই। মণ্চের কারুকার্য ক্ষচিত আসনটিতে পক্ক নেতৃত্ব তার স্ব মহিমায় রয়েছে।সংসার কে আপন করার ভাষা এই ছোট্র দেহের সমস্থ অঙ্গ পতঙ্গে যেভাবে স্পষ্ট প্রকাশ পাচ্ছে, তা আমেনা বেগম সাড়ম্ভরে উপভোগ করতে লাগলেন।অপর দিকে তার বড় পুত্রবধু শাস্তন বানুর প্রতি যারপরনায় অখুশি আমেনা। শাস্তনবানু এ সংসারে প্রায় ৫ বৎসর, সংসারের কাজ কর্ম ঠিকঠাক গুছিয়ে করতে পারেনা। সে অলস প্রকৃতির ও নয়, দিন রাত ঘরের গৃহস্থলী কাজ করে থাকে।বিরাগী স্বমীর আনুকুল্য তার ভাগ্যে জুটেনি। উ-সৃঙ্খল স্বামীকে বস করে নিজের করার ক্ষমতাও তার ছিলনা। অতি সরল পল্লিবালা, যে তার সরলতাকে পুঁজি করে জাফর মিয়ার সংসারে নির্বাসিত হয়েছে। স্বামীকে আপন করার স্ব-মহিমা নেই বলে সংসারের সমস্থ ক্ষেত্রেই তার নারী ভূষণ পদদলিত হয়েছে। অথচ সেই পুুরুষ নামের হিংস্র শকুন,নোংরা আবর্জনায় যার পরিতৃপ্তি, সমাজ সংসার তার কাছে একবার ও এ প্রশ্নের উত্তর চাইনি”যে স্বাধীকার তোমার আছে তাই বলে আগুনের লেলিহান জ্বালী তাতে অন্যের স্বকীয়তা ভষ্ম করার যে অপমান, সে যে তোমাকেও কম অপমানিত করল না”এর উত্তর যে সমাজ জানে না তা নয়, কেবল দূর্বল পুরুষের চিত্তে আগুন জ্বালিয়েই যে সমাজ আনন্দ পায়,আর সে আগুনে পু্ড়ে মরতে হয়,এ দেশের শাস্তন বানুর মত অসংখ্য নারীর। অতপর সময়ের আবর্তে আনোয়ারয়া আজ পরিপক্ক। বালিকা থেকে বধু, বধু থেকে গৃহিণী। স্বামীকে ভক্তির আদলে পূঁজা করে নয়, প্রকৃত প্রেমেেই সে মোবারকের সমস্থ হৃদয় কানাই কানাই পূর্ণ করে দিয়েছে। স্ত্রীর পরিপূর্ণ ভালবাসায় মোবারকের হৃদয় দিবালোকের মতই উজ্জ্বল ছিল। গৃহস্থলীর কাজ কর্ম তদারকি, সমাজের বিভিন্ন প্রয়োজনে ছুটেচলা, বিচার, সালিশ , মিমাংসা চায়ের দোকানে গ্রামের মুরুব্বীদের মাঝে রাজনৈতিক আলোচনা পর্যালোচনা, সমাজের প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে তার আধিপত্য বিচরণ।শিক্ষিত যুবক ছেলেরাও এমন তর্ক নবিশ বৈঠকে মোবারকের লাগাম টেনে ধরতে পারে না ।বাস্তব তথ্য উপাস্থাপন করে যোগ্য জবাব দিতেই তার শিক্ষা তত্বের ভিত ভেদ করে সে নিজের চেয়েও বড় হয়ে রয়।কোথা থেকে সে এমন শক্তি পেয়ে নিজেকে বড় করে তোলে এটা তার নিজের ও জানা নেই।হয়ত অতি মানবিক গুনাবলী তার ভেতর সক্রিয় রয়েছে।তবে সে গ্রামের হাট বাজারে নিয়মিত খবরের কাগজ পড়ে ও রেডিওতে খবর শোনে আর তা পর্যালোচনার শক্তি তার নিজেরই। তার উত্থানের অনলে পুড়ে তখনকার সমাজ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে লাগল।জমিদার পুত্র জমিদার পরবর্তী সমাজ প্রত্যাবর্তনের পর চেয়ারম্যান ছিল। প্রভাব প্রতিপত্তিতে দশগ্রামে তার সাথে কারো তুলনা নেই।সেই গফুর চেয়্যারম্যান ও তার আমলারা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হল মোবারক মিয়ার বিরুদ্ধে।সমাজ থেকে মোবারকের উত্থান পর্বের উজ্জল মূর্তিকে তারা গলায় ফাঁস দিয়ে মারার পরিকলাপনা করল।তারা তখনকার একটি দৈনিকে খবর ছাপল, মোবারকের বাড়িতে ছাগলের পেটে মানুষের বাচ্চা জন্ম নিয়েছে।চেয়্যারম্যানের পেটে বিদ্যা বুদ্ধি ছিলনা তা নয়, তখনকার সমাজে বিদ্যার দিক ও বিত্তের দিকে তার অবস্থান সমাজের অন্যন্য সাধারণের থেকে আকাশ পাতাল তফাৎ। তথাপি মনের দিক থেকে তার এই ঈর্ষান্বিত হীন মনস্কতার উর্দ্ধে উঠে সে নিজেকে বড় করে দেখতে পারে নি।মোবারক ও দমবার পাত্র নয়, সে উল্টো মামলা করে দিল।পুলিশি বিতর্কে না জড়িয়ে পরবর্তীতে তারা নিজেরাই এই ঈর্ষান্বিত অপতৎপরতার সমাধানে নির্ধিতায় সম্মতি জানিয়ে ছিল।এ ক্ষেত্রেও মোবারকের “স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত শব্দটি স্ব মহিমায় উজ্জল হয়ে থাকল”
©somewhere in net ltd.