নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানিনাকো কোন আইন, আমি উপড়ি ফেলিব অধীন বিশ্ব, অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে

কবি জাকির হাসান (পাবনা)

কবিতায় বাঁচি

কবি জাকির হাসান (পাবনা) › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিকৃত আত্মার পৃষ্ট-পোষক (ধারাবাহিক উপন্যাস)

২৩ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৫২

জাফর মিয়া এখন অনেকটাই ভাববিহীন। স্ত্রীর কর্মকান্ডে তার নজরদারী নেই। সংসারের সাথে সম্পৃক্ত থেকে সংসারের দৈনন্দিন চাহিদা মেটায়। স্ত্রীকে তার মধ্যে খুঁজে দেখে কিনা সেই বলতে পারবে।তবে আগের মত শাস্তণবাণুকে আর পেটায় না।মাঝে মাঝে তর্ক বিতর্ক পর্যন্তই শেষ।অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছে নিজেকে।নটি পাড়া, মদ খাওয়া, এইসব আর করেনা।তবে মাঝে মাঝে জুয়ার আড্ডায় তাকে পাওয়া যায়।আর অবিভক্ত সংসারের মোবারক মিয়া,এই বিভক্ত সংসারে কি করবে ভেবে পায়না।ভাই ভাবীর চৈতন্য থাক বা না থাক তাদের অসম্মান করা তার চলেনা।কিন্তু যে গাধাটার উপর এমন তান্ডব নিত্য বয়ে চলেছে, সে কি চাইলে পারতনা মোবারক মিয়ার কাছ থেকে একটা গতি করে নিতে কিংবা মোবারক পারতনা ভাতিজার এমন করুন দিনে ভাতিজাকে উদ্ধার করে দিতে।পারতঃ তবে কেন সে নিশ্চুপ?কোথায় তার স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার মন্ত্র।এখানেও পেতাত্মা মোবারকের মধ্যে বাঁসা বেধে মোবারকের জাগ্রত রুপকে অদৃশ্য করে দিচ্ছে।বিষম ঈর্ষার মতানক্য সৃষ্টি করে মোবারককে পথ ভ্রষ্ট করে দিচ্ছে।সেই বিকৃত আত্মা মোবারকের ও পিছু নিয়েছে।আনোয়ারা যেদিন থেকে সংসারের সারমর্ম উপলব্ধি করতে পারল,সেদিন থেকে সে শ্বাশুড়ির কৃতজ্ঞভাজন ভাব ধরে ছলচাতুরী করে শ্বাশুড়ির খুউব কাছের হতে লাগল।তার বড় ”জা” শাস্তন বাণু কে শ্বশুড়ি আমেনা অ পছন্দ করে তা আনোয়ারার ভাল ভাবেই জানা।জায়ের প্রতি তার সহমর্মিতা ছিলনা।বরং শাস্তণবাণুর প্রতি আমেনার যে ক্ষুদ্ধ ভাব, তার সাথে উস্কানী যোগ করে শ্বাশুড়ি পক্ষে তার অবস্থান শক্ত করে নিয়েছে অনোয়ারা।ফলশ্রুতিতে কতৃত্ব দখল নিয়ে হাত পাকিয়েছে।আর এই কর্মের ফাঁকে ফাঁকে শাস্তণবাণুর সাথে যেটুকু সখ্যতা দেখিয়েছে তা লোক চক্ষুকে ধুলি দেওয়ার নিমিত্তেই তার এমন চালাকি।আমেনা বেগম মরার পর দু ভাইয়ের সংসার আলাদা হতে সময় লাগেনি, তা কেবল আনোয়ারার এ কতৃত্বকেই প্রাধান্য করে।শাস্তণবাণুর কোন সময়ই সংসারে কতৃত্বের লোভ ছিলনা।কিন্তু দ্বীর্ঘদিন বড়”জাকে বিরোধ করে শ্বাশুড়ির ছত্রছাঁয়ায় থেকে স্বার্থ হাসিলের যে স্বভাব, সেই স্বভাবকেই জিইয়ে রাখতে দু সংসার আলাদা হতে বেশি সময় লাগেনি।আজ যখন তাদের সংসারের এই করুন পরিনতি, তখন আনোয়ারাই সেখানে বাধ সেঁধেছে।মোবারককে অভিমান দেখিয়ে বলেছে, ওরা আলাদা হওয়ার সময় আমাদের ঠকিয়েছে। পূর্ব পাশে পানের জমির সাথে যে জমিটা, সেখানে বড় ভাই বেশি করে নিয়েছে।বড় ভাইয়ের ছেলেমেয়ে গুলো আমাদের এখানেই প্রাই খায়, থাকে, ছেলে মেয়ের কোন খোঁজ খবর আছে? এখন আমরা আলাদা হয়ে গেছি, ওদের নিয়ে না ভাবলেও চলবে।সংশয়ের সংসপ্তকে মোবারকের ভাবাবেগ থেমে যায়।অনোয়ারার জোড়ালো উপস্থাপনায় স্বমহিমা আছে।মোবারক ভাবতে লাগল, ছেলে মেয়ে বড় হচ্ছে, সংসারের চাহিদা বাড়ছে, এ কথা যেমন সত্য, ভাইয়ের ছেলে মেয়ে অন্য কেউ নয় এটাও সত্য।পিতেৃত্বের প্রতি মোবারকের দায়বদ্ধতা চুপি চুপি কথা কয়।ভাগ বাটোয়ারায় অ-নিয়ম? সে তো জোর দখল কিংবা তর্কের বসে নয়, সে মোবারকের আপন হৃদয়ের আত্মত্যাগ। বড় ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা।যা আনোয়ারার সমস্থ দৃষ্টির বাইরে।মোবারক ভাবতে লাগল সংসারে যে নৈরাজ্য এর সমাধানই বা কি?ঘরের আগুনে ঘর পোড়ে, আত্মা বিকৃতির খেলায় বাতাসে মরা লাশের গন্ধ ওড়ে।মোবারকের কথা নাই কথা বলার ভাষা নাই।মনের মধ্যে কেবল অসস্তি, আজ এত দিন পর সংসার টা যেন তার কাছে শ্বশানের মরা ঘাটের মত মনে হচ্ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.