নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কল্পদেহী সুমন

খন্দকার মো: আকতার উজ জামান সুমন

কথা বেশি একটা বলিনা চুপচাপ থাকতে পছন্দ করি। সব সময় কল্পনা করি। কল্পনায় আমি সবসময় নিজের সাথে কথা বলি। আর সব সময় অন্যমনস্ক থাকি। আমার আশেপাশে কে কি করছে না করছে তার দিকে আমার তেমন খেয়াল থাকে না। অনেক সময় কাউকে খুজতে যেয়ে নিজেই হারিয়ে যাই। আর একটা কথা হলো আমার পথ মনে থাকে না তাই আমি একা হাটতে গেলে প্রায়শই পথ ভুল করি। পথে হাটাহাটি করার সময় কত জনের সাথে ধাক্কা খেয়েছি এ পর্যন্ত, তার হিসাব নেই। আমার সমস্ত জীবনটাকে কল্পনা মনে হয় কারণ সব কিছুই যাই ঘটে আমার সাথে তাই আমার কাছে কল্পনা মনে হয়। যদি কোন অঘটন ঘটে তাহলে ভাবি কল্পনা ভেঙ্গে গেলাই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার এই অসম্ভব রকম কল্পনাসক্ত দিনকে দিন বেড়েই চলছে।

খন্দকার মো: আকতার উজ জামান সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আই লাভ ইউ

২৩ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৪৬

ভালোবাসাটা প্রায়ই অসহায় হয়ে যায়। কোন কুল কিনারা খুঁজে পায়না। কখনও পিছলে যায় আর থামেনা। এরকম অসংখ্য ভালোবাসা আছে যা একবার জীবন থেকে পিছলে পড়া শুরু করে তো করেই আর শেষ হয়না, আজীবনই পিছলে যেতে থাকে। কিছু কিছু ভালোবাসা পিছলে চলে যায় অনেক দূরে, জীবন থেকে শত শত ক্রোশ দূরে কারণ সেই ভালোবাসাটা তার অসহায়ত্বের সীমানা পেড়িয়ে আরও দূরে চলে যায় যেখান থেকে ফেরার কোন পথ নেই। আসলে ভালোবাসার বিষয়টি খুবই অদ্ভুত। কোন মানুষের ভালোবাসা স্থির থাকে, তাকে আকড়ে রাখে আর কোন মানুষের ভালোবাসা ছিটকে যায় তার জীবন থেকে বহুদূরে।

-আচ্ছা?

-কি?

-কিছু না

-বলোতো

-কিছু না বললাম তো

-কি কর?

-কিছু না, বলোতো কি বলতে চাইছিলা

-এমনি, কিছুনা বলছি তো

-তুমি না শুধু রহস্যের সৃষ্টি কর

-কই রহস্য, বললাম তো কিছু না

সাগর তনিমাকে প্রায়ই এরকম রহস্যের মধ্যে রাখে। একটা কথা বলতে যেয়ে এর আগে একশটা উল্টাপাল্টা কথা বলবেই। আজও ঠিক একই কাজ করছে সাগর।

সাগর তনিমার সামনে যেয়ে বসলো। তনিমার ডান হাতটি ধরল। এই প্রথম সাগর কোন একটা মেয়ের হাত ধরলো।

-কি হইছে তোমার?

-কথাটা বলবো

-বলো

-তুমি জান আমার কোন গার্লফ্রেন্ড নেই

-হুম

-কেউ আমাকে আই লাভ ইউ বলেনা আর আমিও বলিনা

-হুম

-তাহলে

-কি?

-আমি ফ্রেন্ডলি তোমাকে একবার আই লাভ ইউ বলি। আচ্ছা বন্ধুদের মাঝেও তো ভালোবাসা থাকে তাইনা।

-তো

-বলি

তনিমা হাতটা ছাড়িয়ে নিল।

-এটা কেমন বন্ধুত্ব?

-ভালো

-সত্যি সত্যি বলবো না তো

-তবুও

-বলিনা

-বলো

-আই লাভ ইউ

তনিমা হাসি দিয়ে সাগরের দিকে তাকিয়ে ছিল কতক্ষণ।

-তুমি বলবেনা

-এহহহহ....সখ কত?

-বলোনা

-তুমি এমন কেন?

-কেমন?

-খুব নাছোড়বান্দা

-ঐ বলোনা,সত্যি সত্যি নাতো

-বলবোনা যাও

সাগর এবার আবার তনিমার হাত ধরলো। চুপ হয়ে কিছুক্ষণ তনিমার দিকে তাকিয়ে ছিল।

-বলোনা

সাগরের বলোনা কথাটা শুনতে তনিমার অনেক ভালো লাগলো। সাগরের বলোনা কথাটা অনেক মায়াবী লাগে তনিমার কাছে।

-তুমি আসলেই খুব বোকা আর পাগল

-তাই নাকি

-হুম

-বলবে না

-আই লাভ ইউ ফ্রেন্ড

-হুম

-কি হলো এখন?

-কি আর হবে!

-বলে কি লাভ হলো

-কিছুনা

-তাহলে

-আমাদের রিলেশন শুরু হলো আর কি!

-এই তুমি কি বলছো

-তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড

-তুমি না

-হুম আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড

-দেখ দুষ্টামির একটা সীমা আছে

-থাকুক, আমাদের রিলেশনে কোন সীমা নেই

-এই কি শুরু করলে

-আচ্ছা আমরা বিয়ে করবো কবে?

-ও আল্লাহ আমাকে উদ্ধার করো

-আল্লাহর দয়া ছাড়া তো হবেই না

-কি হবেনা?

-বেবি

তনিমা রেগে গেল। হাতের পার্স দিয়ে সাগরের মাথায় একটা আঘাত করলো।

-অনেক হইছে

-এইতো শুরু

-আমি গেলাম

তনিমা চলে যাচ্ছে আর সাগর তনিমার হাত ধরে টেনে আবার বসালো।

-আই লাভ ইউ

-আবার

-বন্ধু না তুমি আমার

-হুম, এতক্ষণ এমন করলে কেন?

-এমনি

-তুমি না একটা

-কি?

-কিছু না,তোমার মাথা

-আচ্ছা যদি সত্যিই ভালোবাসি তখন

-তুমি তো আমাকে ভালোবাস না

-বাসলে কোনদিন?

-তুমি না

-কি?

-তোমাকে বলছিনা একদিন আমি একজনকে ভালোবাসি

-হুম

সাগর উঠে দাড়াল। কিছুক্ষণ চুপ করে দাড়াল। তনিমার দিকে একদৃষ্টে তাকাল। তনিমা ঠিক বুঝতেছে না সাগরকে।

-যাই

-কোন কাজ আছে?

-না, অনেকক্ষণ তো হলো

-ও

সাগর চলে যাচ্ছে। তনিমা সাগর হেটে চলে যাচ্ছে তাই বসে দেখছে। তনিমা সাগরের হঠাৎ এরকম চলে যাওয়া দেখে অনেক অবাক হয়ে গেল।

কয়েকদিন ধরে সাগরের কোন খবর নাই। তাই তনিমা সাগরকে ফোন করলো।

-কি ব্যপার সাগর?

-কি?

-হঠাৎ কই হারালে?

-আমি হারালে তো তোমার কোন ক্ষতি নেই

-তুমি এমন ভাবে কথা বলছো কেন?

-কেমন ভাবে?

-কেমন জানি অচেনা মানুষের মতো

-আমি অচেনা হলে কি হবে?

-তুমি এরকম করছো কেন?

-কই কিছু করছি নাকি আমি!

-তোমার কি মন খারাপ?

-হতেও পারে

-কেন?

-এমনি

-বলোতো কি হইছে?

-কিছুনা

-আজ বিকেলে আস কথা বলবো

-না আসলে

-মাইর দিব তোমাকে

-চেষ্টা করব

-এসো কিন্তু

বিকেলে তনিমা বসে বসে অপেক্ষা করছে। হঠাৎ সাগর আসল। পাশেই বসে পড়ল সাগর।

-আচ্ছা আমার সাথে এখন থেকে কম কথা বললে কি হয়?

-আজব তো, এসেই এই কথার মানে কি

-আমি কারও সাথে বেশিদিন কথা বললে তার প্রেমে পড়ে যাই আর তোমার প্রেমে পড়লে তো কষ্ট পাব।

-কথা বললেই প্রেমে পড়েনা

-আমার সমস্যা হয়

-কি যে বলোনা আবোলতাবোল এসব

-আমি সিরিয়াসলি বলছি কিন্তু

-আচ্ছা বুঝছি

তনিমা কি করবে বুঝতে পারছে না। তনিমা চায়না সাগর থেকে দূরে চলে যেতে। সাগরের মাঝে এক অদ্ভুত ধরনের ভালো লাগা খুঁজে পায় তনিমা। সাগরের সাথে কথা বলতেও তার অনেক ভালো লাগে। অপরদিকে সাগর নিজেকে কষ্ট পাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে তনিমার থেকে দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

-তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে

-কেন?

-এমনি অকারণেই ভালো লাগে

-তারপর

-তোমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে

-ও

-কি?

-যদি কথা না বলি?

-খারাপ লাগবে অনেক

-লাগুক

-কি বলছো?

-ভাবছি কিছুদিন তোমার সাথে কথা বলবোনা।

-কেন?

-যদি খুব মন খারাপ হয় তখন ফোন দিয়ে কথা বলো

-কি হলো এমন?

-কিছুনা

তনিমা সাগরের আকস্মিক এই ধরনের কথায় অনেক আঘাত পেল। কিন্তু সাগরের যে আর কিছু করার ছিল না। তনিমাকে ভালোবেসে ফেললে যে তনিমা ঝামেলাতে পড়বে আর নিজেও যে কষ্ট পাবে। আর তাই সাগরের এ ধরনের সিদ্ধান্ত।

হয়তো কখনও মিথ্যা কথাগুলো অভিনয় করে বলার পর আবার সত্যের আগমনে মিথ্যাটাকে বড় ভুল বলে মনে হয়। আসলে যে সত্য বলার সাহস কখনও কাউকে হারানোর ভয়ে বলা হয়ে উঠে না। আর তাই সত্যটা মিথ্যার আবরনে বলা হয় নির্ভয়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.