![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
টান টান উত্তেজনা চলে এসেছে। শ্রদ্ধা জানাতে আমার দেহটা কোথায় নেওয়া হবে-এটা নিয়েই উত্তেজনা।আমার কাছে বেশী সময় নেই,শেষটা দেখে যেতে পারবো কিনা জানি না।
তেমন কোনো প্রস্তুতি ছিলনা বের হয়ে আসার। প্রস্তুতি বলতে শারীরিক অসুস্থতার কথা বলতে চাচ্ছি। প্রচন্ড ব্যস্ততার জন্য শরীরের দিকে খেয়ালই রাখতে পারিনি। দিনে পেশাগত কাজের ব্যস্ততা আর তার পরের সময়টা যে কিভাবে কাটে বোঝাতে পারবনা।
টেলিভিশন, সেমিনার ঘড়ির সময়টা ভাগ করে নেয়।
সে দিনটাও সারাটা সময় কেটেছে ব্যস্ততার মধ্যে। রাত্রি দুইটার দিকে খারাপ লাগাটা শুরু হলো। তারপরও কাজগুলো শেষ করছিলাম। তিনটার দিকে আর পারছিলাম না শুয়ে পড়লাম। এর কিছুক্ষণ পরই পরিবারের সদস্যরা ব্যস্ত হয়ে গেল আমাকে নিয়ে। খুব দ্রুতই হাসপাতালে পৌছে গেলাম। জরুরী বিভাগের ডাক্তার,নার্স ঔষধ-যন্ত্র আমার শরীরে প্রয়োগের ঠিক আগ মুহুর্তে আমাকে শরীর থেকে বের করে দেওয়া হলো।
আমি পাশে দাড়িয়ে দেখছি-ওরা তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছে। এক সময় ক্ষান্ত দিলো। একজন ডাক্তার বের হয়ে গেলেন।প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ও এসে আমার উপর ঝাপিয়ে পরলো। বহুদিন পরে এই স্পর্শ আমার কোনো ইন্দ্রিযকেই নাড়া দিতে পারলোনা। দুজনেই ছিলাম প্রতিষ্ঠিত, ব্যস্ত। ফলে দুরত্ব খানিকটা ছিলই। আমি বিহীন দেহটা সেই দূরত্বটা কমাতে চাইলো।
টেলিভিশনের কল্যানে খুব দ্রুতই আমার খবরটা ছড়িয়ে পড়ল। আপন, স্বজন, সহকর্মীতে নির্জন বাসাটা ভরে গেল। এর মধ্যেই প্রস্তাব এলো শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ রাখতে হবে, তবে কোথায়।
জীবিত থাকতে আমি অনেক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছি। এখন দেখছি আমার মৃতদেহও উত্তেজনা তৈরী করছে। একটা পত্রিকার শিরোনাম এসেছে - নিরাপত্তার জন্য মৃতদেহ নির্দিষ্ট স্থানে শ্রদ্ধা জানানো হবেনা।
মৃতদেহ, নিরাপত্তা, শ্রদ্ধা শব্দগুলো এখন আমার কাছে অর্থহীন। উত্তেজনার শেষটা কেমন হবে জানিনা কারণ আমি আর থাকতে পারছিনা। আমাকে চলে যেতে হচ্ছে অন্য জগতে। সেখানে বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে যা যা করেছি তার জবাব দিতে হবে।
©somewhere in net ltd.