![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া আর নিউজ পোর্টালের এই নিউজ দেখতে দেখতে আমি প্রায় ক্লান্ত।
ভাই আমেরিকা কি করছে এইটা নিয়ে মাথা ব্যাথা বাড়ানোর কি দরকার ভাই, নিজের গায়ে ময়লা লেগে আছে সেটা আগে দেখেন তারপরে অন্যের ময়লা নিয়ে কথা বলেন।
আমেরিকা কি করল, এইটা দিয়ে আপনার কিংবা আমার কি আসে যায়।
যায়হোক এবার আসল কথায় আসি,
সত্যি করে বলেন তো এই ছবিটা দেখলে আপনি কি ভাববেন,
অবশ্যই ভাববেন আরে এরা তো গে, ওয়াক থু, আস্তাগফিরুল্লাহ!
ভাবাটাই সাভাবিক আমিও সেটাই ভেবেছি, কিন্তু একটু উল্টা ভাবে চিন্তা করে দেখেন, আই মিন কোন মেয়ে যদি এইরকম ভাবে পিক সোশ্যাল মিডিয়া তে আপলোড দেই তাতে কোন সমস্যা নাই।
ফেসবুক এ অনেক সময় দেখি একটা মেয়ে অন্য একটা মেয়ের সাথে, ইন এ রিলেসনশিপ দিয়ে রাখে, এদের কে কি বলবেন?
চলেন এবার সমকামীতা নিয়ে কিছু তথ্য জেনে আসি
সমকামীতা এক ধরনের অসুস্থতা? চিকিৎসা প্রয়োজন?
পাশ্চাত্যে সমকামীতা নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে, সেখানে সমকামীতাকে অসুস্থতা বলে চিহ্নিত করার কোন কারণ পাওয়া যায় নি। সমকামীতার অভ্যাস ত্যাগের জন্য বেশ কিছু থেরাপী দেয়া হয়, তবে তা শুধুমাত্র তাদের জন্যই প্রযোজ্য যারা যারা বিরূপ পরিবেশে সমকামীতে পরিণত হয়েছেন। যারা জন্মগত ভাবেই সমকামী, তাদের জন্য কোন চিকিৎসা প্রযোজ্য নয়। কারণ এটা কোন রোগ নয়, কোন বিকৃতি নয়, কোন মানসিক সমস্যা নয়। একজন সমকামী ততটাই একজন স্বাভাবিক মানুষ, যতটা একজন স্ট্রেইট।
সমকামীদের বিয়ের অধিকার দিলে, সামাজিক এবং মানবিক অধিকার দিলে গণহারে সবাই সমকামী হয়ে যাবে?
যদি এই কথাটি যুক্তি হিসেবে উপস্থাপিত হয়, তাহলে ধরে নিতে হয় শুধুমাত্র ধর্ম প্রথা বা সামাজিক কারণেই সব মানুষ সমকামী হয়ে উঠছে না। যারা এই যুক্তিটি তুলে ধরেন, তারা সম্ভবত সমকামী হতে চান, কিন্তু ধর্ম প্রথা বা সামাজিক বিধিনিষেধের কারণে পারছেন না। এই যুক্তিটির ভেতরে লুকিয়ে আছে সমকামী হবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
না, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর অনেক জায়গাতেই সমকামীদের সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তাদের বিয়ে করার অধিকার দেয়া হয়েছে, পরিবার গঠন এবং সকলের সাথে মিলে মিশে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তাদের দেখাদেখি সকলে সেখানে সমকামীতে পরিণত হয় নি। কারণ সকলের সমকামীতে পরীনত হওয়া সম্ভবই না। কিছু মানুষ স্বাভাবিকভাবেই যেমন স্ট্রেইট হবে, আবার কিছু মানুষ সমকামী হবে।
মানব সমাজে এবং প্রাণীকূলে সব সময়ই একটি অংশ সমকামী হবে, এটা বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেই প্রমানিত। কিন্তু সব মানুষের সমকামী হওয়া সম্ভব নয়, তাই মানব সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবার সম্ভাবনাও নেই। তারা সমাজের ছোট একটি অংশ, তাদের দেখা দেখি স্ট্রেইটদের সমকামী হওয়া একেবারেই সম্ভব না, যদি না ভেতরে সমকামীতার বীজ থেকে থাকে। আর প্রকৃতি সব সময়ই ভারসাম্য রক্ষা করে চলে, মানবকুলের সমকামী হয়ে যাবার কোন সম্ভাবনাও তাই নেই।
সমকামীতা মানসিক বিকৃতি?
সমকামীতা কোন মানসিক বিকৃতি নয়। একজন পরিপূর্ণ স্ট্রেইট কখনই সমকামী হতে পারবে না, যদি না তার ভেতরে সমকামীতার বীজ থেকে থাকে। মানুষের যৌন রুচিকে সাধারণত কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়, দেখা যায় অনেক মানুষের মধ্যেই সমকামীতার কিছু সাধারণ প্রবণতা থাকে। যাদের ভেতরে এই সাধারণ প্রবণতাগুলো থাকে, তারা বিরূপ পরিবেশে নারী সঙ্গের বাইরে থাকলে(মাদ্রাসা, জেলখানা ইত্যাদি)সমকামী হয়ে উঠতে পারে। তবে একজন পরিপূর্ণ স্ট্রেইট মানুষের সমকামী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা একেবারেই নেই।
সমকামীতা পাশ্চাত্য সভ্যতার আবিষ্কার?
একেবারেই ভুল কথা। মধ্যপ্রাচ্যে সমকামীতার ইতিহাস বেশ পুরনো, প্রাচীন মিশরেও সমকামীতার চিহ্ন পাওয়া যায়। ভারতে সমকামীতার প্রচুর উদাহরণ রয়েছে। বাৎসায়নের কামাসূত্রে সমকামীতার প্রচুর উদাহরণ রয়েছে। এমনকি কোরআন বা বাইবেলেও সমকামীতার কথা বলা আছে। তাই দেখা যাচ্ছে সমকামীতা পাশ্চাত্য সভ্যতার আবিষ্কার নয়, বরঞ্চ ভারত বা মিশর বা মধ্যপ্রাচ্যে সমকামীতার ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন। কোরআনে(হযরত লুতের গল্প) সমকামীতার কথা বলা হলেও মধ্যযুগের গ্রন্থ বলে সেখানে সমকামীতা সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে।
যেমন বলা হয়েছে,তোমরা কি এমন অপকর্ম করবে, যা তোমাদের আগে কোন নিচ প্রাণীও করে নি? (কুরআন ৭:৮১)
সকল প্রাণীদের মাঝে কেবল তোমরাই কি পুরুষদের প্রতি আসক্ত হবে, আল্লাহ যাদেরকে তোমাদের সংগমসঙ্গী বানিয়েছেন তাদেরকে বাদ দিয়ে? না! তোমরা এক সীমা-লঙ্ঘনকারী মানুষ। (কুরআন ২৬:১৬৫-১৬৬)
অথচ আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যায়, মানুষ ছাড়াও বেশির প্রাণীর মধ্যেই সমকামীতা উদাহরণ দেখা যায়। ইসলাম সমকামীদের পাথর ছুড়ে হত্যা করতে নির্দেশ দেয়।যদি অবিবাহিত পুরুষগণ “পায়ু কাম”-এ লিপ্ত হয়, তাকে পাথর-ছুড়ে হত্যা করতে হবে। (হাদিস আবু দাউদ ৪৪৪৮)
সমকামীদের অধিকার বিষয়ে কথা বলাটা কি সমকামী হয়ে যেতে বলা?
একটি সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে সমকামীতা নিয়ে কিছু সাধারণ কথা বললেই ধরে নেয়া হয় যাকে বলা হচ্ছে তাকে সমকামী হবার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। মোটেও ব্যাপারটা তা নয়। একজন স্ট্রেইট, তার যৌনরুচি এবং যৌনজীবন নিয়ে তিনি সুস্থ জীবন যাপন করবেন। কিন্তু একজন সমকামীকে স্ট্রেইট হয়ে যেতে বলাটা ততটাই আপত্তিকর যতটা একজন স্ট্রেইটকে সমকামী হয়ে যেতে বলাটা। যৌনরুচি যার যার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। যে যেরকম ভাবে নিজের যৌনতা উপভোগ করতে চাচ্ছে তাকে সেভাবেই উপভোগ করতে দিতে হবে। রাষ্ট্র সমাজ প্রথা ধর্ম মানুষের যৌনতার সময় তা দেখছে এবং মানুষকে নানা রকম নিয়ম শেখাচ্ছে, কীভাবে কোন পথে যৌনতা জায়েজ আর কোন পথে নাজায়েজ, এটা মোতেও সভ্য আচরণ নয়। যৌনরুচির পার্থক্যের কারণে একজন মানুষ সম্পর্কে ঘৃণা পোষণ করা, তাকে হত্যা করা কোনভাবেই মানবিক সভ্য সমাজের চিহ্ন নয়। মানুষ মানূষকে ঘৃণা করার জন্য অসংখ্য কারণ রয়েছে, যৌনরুচির কারণে আমরা কেন একজন আর একজনের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবো?
পুনশ্চঃ লেখাটি এবং ছবিগুলা ইন্টারনেট এর অনেক সাইট এবং ব্লগার অভিজিত রায়ের সমকামী বইয়ের কিছু তথ্য নিয়ে লেখা। হয়তো সবকিছু ভালভাবে গুছিয়ে লেখা সম্ভব হয়নি , ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখার অনুরোধ রইল।
©somewhere in net ltd.