![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এ পোষ্টের জন্য, আসলে মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরে জন্মেছি আমি। বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, দাদাও পরোক্ষ ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন (আশে পাশের হিন্দুদের নিজের আত্বিয় বলে পরিচয় দিয়ে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন)। আমিও চেষ্টা করি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গল্প পড়তে। গত বার এক প্রোযোজক বন্ধুর চাপাচাপিতে বিটিভির জন্য ১ ঘন্টার মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক লিখেছিলাম, যা প্রচারিত হয়েছিলো। ঐ নাটক লিখতে জীবিত এক মুক্তিযোদ্ধা সাহায্য করেছিলো। ওনার বর্ননা এতো সাবলিল ছিলো মনে হচ্ছিলো আমার চোখের সামনের ঘটনা। স্রোতীর যুদ্ধ নামক নাটকটি বেশ আলোচিত ছিলো। সেই বন্ধু এবারও আমাকে চাপাচাপি শুরু করেছে তাকে দু'টি নাটক লিখে দেয়ার জন্য। আমি আসলে পেশাদার নাট্যকার না বিজ্ঞাপন জগতের মানুষ। বন্ধুকে স্ক্রিপ্ট দেয়ার আগে আপনাদের কাছে পরামর্শ নেয়ার জন্য শেয়ার করলাম।
পরী বানু কাহিনী
মূল গল্প - সত্যেন সেন
নাট্যরুপঃ হাফিজ রিপন
সংক্ষিপ্ত কাহিনী
হারুন মাষ্টার একজন মুক্তিযোদ্ধা তার স্ত্রী পরী বানুও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছে। স্বামীকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন ও সহযোগীতায় পরোক্ষ ভুমিকা পালন করে আসছে। গ্রামটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের তুলনায় অস্ত্রের সরবরাহ কম ছিলো তাই বলে যুদ্ধ থেমে থাকেনি, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষনে উদ্দিপ্ত হয়ে যার যা ছিলো তা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিলো । নিজের শারীরিক সৌন্দর্য্যকে বিলিয়ে দিয়ে পাক সেনাদের বশ করে পরীবানুরা। মূলত পরীবানুর মুক্তিযুদ্ধে আত্বত্যাগ নিয়েই এই নাটক এগিয়েছে।
১ম দৃশ্য ঃ নৌকা থেকে ঘাটে নামছে কংকালসার চেহারা, এলোমেলো চুল নিয়ে হারুন মাষ্টার। ছায়াঘেরা গ্রামের পথ পেরুনো দৃশ্য। থম থমে গ্রামের রাস্তা।
২য় দৃশ্য ঃ রফিক মাষ্টারের বাড়ির সামনে থামবে হারুন।
হারুন ঃ স্যার ও স্যার বাসায় আছেন (ক্ষিন কন্ঠে)
রফিক মাষ্টার ঃ কেডা কেডারে
হারুন ঃ আমি হারুন, স্যার আপনার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক
রফিক মাষ্টার ঃ হারুন মাষ্টার, আওর তুমি হঠাৎ কোথায় উধাও হইয়া গেলা?
হারুন ঃ স্যার নিজ গ্রামের স্কুলে মাষ্টারী করনের লেইগা গেছিলাম (মাথা নিচু করে)
রফিক মাষ্টার ঃ কিন্তু সবই বুঝলাম তয় তোমার চেহারার এ অবস্থা কেনো, ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করনা বুঝি?
হারুন ঃ দেশের যে অবস্থা তাতে খাওন মুখে যায় স্যার
রফিক মাষ্টার ঃ হ ঠিকই কইছো আমাগো অবস্থা এমনই, শুনছি শহর থেকে পাকবাহীনি অহন নাকি গ্রামে আইবো।
হারুন ঃ এর জন্যইতো আপনার কাছে আসা
রফিক মাষ্টার ঃ আচ্ছা ঠিক আছে, আসছো ভালো হয়েছে আগে খেয়ে নাও পরে আলোচনায় বসছি।
*দূর থেকে মাষ্টারের বউ মুখ ভেচকি দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। রফিক মাষ্টার হারুনকে ঘরে বসতে বলে বউয়ের পেছনে পেছনে যাবে
রফিক মাষ্টার অসহায় ভংগিতে বউয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে
রফিকের স্ত্রী ঃ আচ্ছা তোমার মাথায় কি ঘিলু নাই? ঘরে খাওনের জন্য দুই জনের ভাত আছে আর তুমি?
রফিক মাষ্টার ঃ বউকে থামিয়ে, আমার ভাগেরটা না হয়
স্ত্রী ঃ হুমম আমার ভাগেরটা না হয়, থাক থাক তোমার এত বেশি বিবেচেনা না দেখালেও চলবে। তুমি যাও আমি বাইরের ঘরে খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।
হারুন আর রফিক খাবার খাচ্ছে, হারুন গপাগপ খাবার খাচ্ছে। রফিক আর তার বউ আর চোখে দেখছে।
৩য় দৃশ্য ঃ রফিক আর হারুন বারান্দায় কথা বলছে
রফিক মাষ্টার ঃ এখন বলো হারুন আমি তোমার কি উপকার করতে পারি
হারুনঃ স্যার আমাগো গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং হচ্ছে, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে অস্ত্র সরবরাহ কম। ওদের ভারী অস্ত্রের বিপরীতে আমাদের এতো সল্প অস্ত্র দিয়ে মোকাবেলা কি করে সম্ভব
রফিক মাষ্টার ঃ তা ঠিক কিন্তু আমি তোমার জন্য কি করতে পারি।
হারুন ঃ স্যার আপনিই পারবেন আপনার সাথেতো বড় বড় নেতাগো সরাররি কানেকশন আছে তাদের বইলা কিছু অস্ত্র আইনা দেওয়া যায় না।
রফিক মাষ্টার ঃ হাসতে হাসতে, আমাগো এলাকারও একই অবস্থা মুক্তিযোদ্ধাদের তুলনায় অস্ত্র কম ইসস আল্লাহই জানে কি হইবো। (প্রসঙ্গ পাল্টানোর জন্য, বউয়ের কথা জিজ্ঞাসা করবে)
আচ্ছা হারুন এখন বলো তোমার বউয়ের কি খবর। শুনেছি তোমার বউ অনেক সুন্দরী, তোমার সাথে সাকি বনিবনা হচ্ছে না। তুমিতো ঘুরে ঘুরে বেড়াও তার দিন কিভাবে চলছে...
(কল্পনায় হারুন)
বাসর রাত , হারুন, পরী
হারুন ঃ তুমি সত্যিই পরীর লাহান
পরী ঃ পরী না ছাই, আচ্ছা মাষ্টার সাহেব বিয়ে করার সময় গ্রামে কি আর মাইয়গো চোখে পড়ে নাই।
হারুন ঃ কেন তোমার কি বিয়ায় মত ছিলো না?
পরী ঃ ভাবছিলাম পড়ালেখা কইরা চাকুরী করুম
হারুন ঃ হুমম চাকুরী করবো, জজ ব্যারিষ্টার হইবো ( বাসর ঘর থেকে হারুনের রাগত প্রস্থান)
রফিক মাষ্টার ঃ তো বউয়ের সাথে এখনো কি ঝগড়া ঝাটি করো ?
হারুন ঃ জ্বী না স্যার, এমন লক্ষী বউ আমি পাইছি। আমার পূর্ব পুরুষরা কেউ হয়তো পূর্ন করেছিলো তাই হয়তো আমার পরীরে পাইছি। একবার হইলো কি (কল্পনায় হারুন)
৪র্থ দৃশ্য ঃ স্কুল থেকে হারুন মাষ্টারের আসার দৃশ্য, হারুন, পরীবানু
হারুন ঃ পরী, পরী, পরী ঘরে আছো, কৈ গেলা পরী
পরী ঃ রান্না ঘরে আছি, আসতাছি
হারুন ঃ কি রান্না করছো? ক্ষুধা লাগছে খাইতে দাও
পরী ঃ হাত মুখ ধুয়ে আসো, আমি খাবার দিচ্ছি
#পরী আর রফিক খাচ্ছে
পরী ঃ আইচ্ছা শুনলাম পাকবাহিনী নাকি শহর জ্বালাইয়া গ্রামেও আইতাছে
রফিক ঃ মাইয়া মাইনষের এত খবর রাইখা কাম কি?
পরী ঃ কেন মাইয়া মানুষ কি মানুষ না?
রফিক ঃ হ, মানুষ তয় তাগো রান্না ঘর আর বাচ্চা কাচ্চা সামলানো কাম
পরী ঃ কান্নার স্বরে, কেন মাইয়া মানুষ কি অন্য কাম করতে পারে না? তোমরা পুরুষরাই..
রফিক ঃ আচ্ছা আমার সুন্দরী বউডা এতো চেইতা গেলো কেন?
পরী ঃবুঝ না পাক বাহিনী তো শুধু ছেলে মানুষ মারে না, মাইয়া মানুষ এমনকি অবুঝ শিশুদেরও ছাড়ে না। এই নরপশুদের বিরুদ্ধে আমাগো সবার সোচ্চার হইতে হবে।
রফিক ঃ বউ..
পরী ঃ হ তুমি মাষ্টার তোমার ডাকে এলাকার হগ্গলে মুক্তি বাহিনীতে যোগ দিবে, কেনো ৭ই মার্চের বঙ্গ বন্ধুর ভাষন শোনো নাই (বঙ্গ বন্ধুর ভাষন আসবে)
রফিক ঃ হ বউ ঠিকই কইছো, আজকে তোমার কথা শুইনা মনে হইলো আমি সত্যিই ভাগ্যবান, তোমার মতো বুদ্ধিমতী মেয়ে আমার বউ।
পরী ঃ আমি মাষ্টারের বউ আমার ডাকে নিশ্চই মেয়েরাও যুদ্ধে অংশ গ্রহন করবে।
রফিক ঃ পরী, বউ আমার আজকে সত্যিই তোমারে সুন্দর লাগতাছে (পরীর লাজকু ভংগি)
চলবে...
১২ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১:২২
লাল চাঁন বলেছেন: আমারও তাই মনে হয়, দু' একজন প্রোযোজক বন্ধুর চাপাচাপিতে লিখতে বাধ্য হই
২| ১২ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১:২২
শায়মা বলেছেন: আবিদা সুলতানার গাওয়া একটা গান শুনেছিলাম
ঐ যে দেখা যায় রে হিজলতলীর গাঁ রে
ঐ খানে এক মেয়ে ছিলো পরীবানু নাম
ছোট্ট মাটির ঘরে থাকতো আলো করে
দুষ্টুমীতে করতো সেতো উথাল পাথাল গ্রাম .....
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১:১৭
হাম্বা বলেছেন: নাটক লেখা অনেক কঠিন কাজ মনে হয়