![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
World is totally meaningless. Though sometime you will find here happiness. But length of happiness is highly limited. Original color of the world is black.
প্রায় দুই বছর ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে মঙ্গলবার রাজধানী কারাকাসের একটি সামরিক হাসপাতালে মারা যান ৫৮ বছর বয়সী এই সাম্যবাদী নেতা।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বাস্পরুদ্ধ কণ্ঠে জাতিকে প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর খবর জানান ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে শ্যাভেজের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর চার দফা কিউবায় অস্ত্রোপচার হয়। চতুর্থ দফা অস্ত্রোপচারের পর দেশে ফেরেন ফেব্রুয়ারির শেষদিকে।
১৪ বছর ভেনেজুয়েলার নেতৃত্ব দেয়া এই সাম্যবাদী নেতা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা নীতির একজন কড়া সমালোচক।
শ্যাভেজের মৃত্যুর ঘণ্টাখানেক পর দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের পাশে নিয়ে মাদুরো জাতির উদ্দেশে বলেন, “আমাদের জন্য এ এক গভীর বেদনার মুহূর্ত। যে জনগণকে তুমি সুরক্ষা দিয়ে আসছিলে, তাদের পক্ষ থেকে কমান্ডার তোমায় সালাম।”
প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কারাকাসের রাস্তায় নেমে আসে সমর্থকরা। তারা স্লোগান দিতে থাকেন- শ্যাভেজ আছে, থাকবে/বিপ্লব চলবে।
শ্যাভেজের চেতনাই আগামী দিনগুলোতে ভেনেজুয়েলাকে পথ দেখাবে উল্লেখ করে দেশটির কংগ্রেস প্রধান দিওসদাদো ক্যাবেলো বলেন, “কাউকে বোঝানোর চেষ্টা করো না যে, শ্যাভেজ চলে গেছেন। তিনি সব সময়ই আমাদের সঙ্গে থাকবেন।”
এরপর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে গত ডিসেম্বরে দেয়া শ্যাভেজের সর্বশেষ ভাষণটি আবারো প্রচার করা হয়। শোক বার্তা আসতে থাকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ও চলচ্চিত্র নির্মাতা অলিভার স্টোনও আছেন বিবৃতিদাতাদের মধ্যে।
তার মৃত্যুতে সাত দিন ধরে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে ভেনেজুয়েলা। শুক্রবার পর্যন্ত দেশটির মিলিটারি একাডেমিতে তার মরদেহ রাখা হবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পর দেশটির সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের প্রতি অনুগত থাকবে সেনাবাহিনী।
১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণকারী হুগো শ্যাভেজ সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন ছত্রীসেনা বা প্যারাট্রুপার হিসাবে।
১৯৯৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নেন তিনি। ক্ষমতায় আসার পর পররাষ্ট্র নীতিতে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা আর দেশে দরিদ্রবান্ধব নীতি অবলম্বন করেন।
তার শাসনামলে অবহেলিত বস্তিবাসীকে ভর্তুকিতে খাবার ও স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার ব্যবস্থা হয়। এই নীতির কারণে ধনীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা না পেলেও দরিদ্রদের প্রিয়তম মানুষ হয়ে ওঠেন শ্যাভেজ।
সর্বশেষ ২০১২ সালের অক্টোবরের নির্বাচনেও টানা তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এই বামপন্থী নেতা।
ক্যান্সারের চিকিৎসার জন সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে কিউবা যান শ্যাভেজ। সে সময়ই ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিকোলাস মাদুরোর নাম ঘোষণা করে তার হাতে দায়িত্ব দিয়ে যান।
গত ১১ ডিসেম্বর কিউবায় অস্ত্রোপচারের পর আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি শ্যাভেজকে।
বিশ্লেষকরা বলছে, শ্যাভেজের মৃত্যুতে দক্ষিণ আমেরিকায় রাজনৈতিক ভারসাম্যে যেমন পরিবর্তন আসতে পারে, তেমনি প্রভাব পড়তে পারে জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশটির অর্থনীতিতেও।
দীর্ দিনের এই নেতার মৃত্যুতে ভেনেজুয়েলা একটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
তবে ভেনেজুয়েলার জনগণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
শ্যাভেজের মৃত্যুর খবরে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ ডি ক্রিশ্চনার সব ধরনের কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। শ্যাভেজের শোকে এক মিনিট নিরবতা পালন করেছে পেরুর কংগ্রেসে।
বলিভিয়ার নেতা ইভো মোরালেস শিগগিরই কারাকাসে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। চিলি ও ইকুয়েডরের সরকারও শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
©somewhere in net ltd.