![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটুকু অনুধাবন করার ক্ষমতা আল্লাহ দিয়েছেন... ইসলামের ৫টি স্তম্ভ আপনার উপর ফরজ হবার পূর্বে আপনার উপর জ্ঞান অর্জন ফরজ এবং এই জ্ঞান অবশ্যই আপনার ধর্মীয় জ্ঞান অর্থাৎ পবিত্র কোরান-হাদীসের জ্ঞান।
এরপর আপনি দুনিয়াবি যে জ্ঞানই অর্জন করুন, সেটা আপনাকে ধর্মবিমূখ বা স্রষ্টাবিমূখ করবেনা...
চলুন, ওহীর সূচনা থেকে খেয়াল করা যাক। হযরত জিবরাঈল (আ.) অক্ষরজ্ঞানহীন*** নবী মুহাম্মাদ (সা.) কে কিছু একটা দেখিয়ে বললেন, اقْرَأْ (ইক্বরা) "পড়ুন"
রাসুল (সা.) জবাবে বললেন, مَا أَنَا بِقَارِئٍ (মা- আনা বি ক্বা-রী) "আমি পড়তে জানিনা"
ফেরেশতা জিবরাঈল (আ.) তখন রাসুল (সা.) কে বুকের সাথে শক্ত করে চেপে ধরলেন, ছেড়ে দিয়ে আবার বললেন, اقْرَأْ (ইক্বরা) "পড়ুন"
রাসুল (সা.) জবাবে আবার বললেন, مَا أَنَا بِقَارِئٍ (মা- আনা বি ক্বা-রী) "আমি পড়তে জানিনা"
এভাবে তৃতীয়বার জিবরাঈল (আ.) রাসুল (সা.) কে বুকে চেপে ধরে ছেড়ে দিয়ে বললেন, اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ (ইক্বরা' বিসমি রব্বিকাল্লাযী- খলাক্ব)
"যে প্রভূ আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, তাঁর নামে পড়ুন) (সুরা আ"লাক্ব- আয়াত ১)
আচ্ছা, কেন সেই মহান প্রভূর নামে পড়তে হবে? আর শুরুতে পড়ার কথাই কেন বলা হচ্ছে? কেন ওহীর শুরুতে ঈমান আনার কথা বলা হয়নি, অথবা নামাজ-রোজা কিংবা অন্য বিষয়?
যাই হোক আমরা আগের ঘটনায় চলে যাই... এরপর জিবরাঈল (আ.) আরো চারটি আয়াত রাসুল (সা.) কে পড়ে শুনালেন, সেগুলো রাসুল (সা.) এর অন্তরে গেঁথে গেলো অর্থাৎ মুখস্ত হয়ে গেলো।
আসুন জেনে নেই, ১৪০০+ বছর আগে হেরা পর্বতের গুহায় জিবরাঈল (আ.) রাসুল (সা.) কে পালনকর্তার নামে আসলে কি পড়তে বলেছিলেন?
দ্বিতীয় আর তৃতীয় আয়াতে আয়াতে জিবরাঈল (আ...) আবার পড়তে বললেন, خَلَقَ الْإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ (খলাক্বল ইংসা-না মিন আ''লাক্ব)
"যিনি মানুষকে জমাট রক্ত থেকে সৃষ্টি করেছেন" اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ (ইক্বরা' অরব্বুকাল আকরম)
"সেই মহিমান্বিত প্রভূর নামে পড়ুন" (সুরা আ"লাক্ব- আয়াত ২,৩)
আচ্ছা, পড়তে বলার সাথে, মানুষের জমাট রক্ত*** থেকে সৃষ্টি হওয়ার কথা বলার উদ্দ্যেশ্য কি ছিলো? কেনো বেহেশত থেকে দুনিয়াতে আসার কথা বলা হয়নি এখানে? মানুষ যে মাটি থেকে সৃষ্টি একথাও কেন বলা হয়নি তখন?
চতুর্থ ও পঞ্চম আয়াত খেয়াল করুন এবার, الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ (আল্লাযী- আ"ল্লামা বিল ক্বলাম)
"যিনি কলমের ব্যবহার শিখিয়েছেন"
অতঃপর, عَلَّمَ الْإِنسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ (আ"ল্লামাল ইংসা-না মা-লাম য়্যা"লাম)
"মানুষ যেটা কখনোই জানতো না, সে সম্পর্কে জ্ঞান দিয়েছেন" (সুরা আ"লাক্ব- আয়াত ৪,৫)
এই আয়াত দুটোতে আল্লাহ স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, অজানা বিষয় বা জ্ঞান চর্চা করা আমাদের মুসলিমদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু আফসোস, আমরা মুসলিমরা গাছের পাতায়, মাছের পেটে আল্লাহর নাম খুঁজে সুবহানাল্লাহ বলি, আর অপেক্ষায় থাকি অমুসলিমরা কবে বিজ্ঞানের নতুন জিনিস আবিষ্কার করবে, আর আমরা সেটা ব্যবহার জায়েজ কি নাজায়েজ সেটা প্রমাণে ব্যস্ত থাকবো।
আপনি কোন রবের উপর ঈমান আনছেন সেটাই যদি না জানেন, আপনার রব আপনার কাছে কি প্রত্যাশা করেন, সেটাই যদি না জানেন... তাহলে আপনার সারাজীবনের রুকু-সেজদা্র কোন মূল্য নেই। শুধু শুধু এক মাস পানাহার থেকে বিরত থাকারও দরকার নেই।
সঠিক জ্ঞানের অভাবে আপনি যাকাতও আদায় করছেন না ঠিকমতো, হয়তো জমানো সম্পদ দিয়ে জীবনে বেশ কয়েকবার ওমরাহ-হজ্জ্ব করে এসে নামের আগে "আলহাজ্জ্ব" যোগ করছেন।
এসব লোকদেখানো ইবাদাত আপনার মাথার এক বিঘত উপরেও উঠবেনা... চলুন, পবিত্র কোরান কে তাক থেকে নামিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। আলেমরা কোরান- হাদীস থেকে কি বলছে, নিজের চোখে দেখার চেষ্টা করি।
রাসূল (সা.) বলেন, طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ (ত্বলাবুল ঈ"লমী ফারি-দ্বতুন আ"লা- কুল্লি মুসলিম)
"প্রত্যেক মুসলিমের উপর জ্ঞানার্জন ফরজ" (ইবনে মাজাহ, ২২৪)
কারণ, আল্লাহর কাছে জ্ঞানী আর মূর্খের পার্থক্য স্পষ্ট। তিনি বলেন,ِ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ (কূল হাল য়্যাসতাউয়িল্লাযী-না য়্যা"লামূ-না অল্লাযী-না লা- য়্যা"লামূ-ন, ইন্নামা- য়্যাযযাক্কারু উ'লূল আলবা-ব)
"বলুন তো! যে জানে আর যে জানেনা, উভয়ে কি সমান হতে পারে? শুধুমাত্র বিবেকবানেরাই উপদেশ গ্রহণ করতে পারে" (সুরা ঝুমার- আয়াত ৯)
***রাসূল (সা.) ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন। অর্থাৎ, তিনি কোনো কিছু দেখে পড়তে পারতেন না। এমনকি তিনি লিখতেও পারতেন না।
যদিও সেকালে আরবের সবচেয়ে শুদ্ধ আরবীতে কথা বলা শিখেছেন দুধমাতা হালিমার কাছে।
নবিজীর অক্ষরজ্ঞানহীনতা একটি মু"জিঝা, মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا كُنْتَ تَتْلُو مِنْ قَبْلِهِ مِنْ كِتَابٍ وَلَا تَخُطُّهُ بِيَمِينِكَ (অমা- কুংতা তাতলূ- মিং ক্ববলিহী- মিং কিতা-বিউ অলা- তাখুত্তুহু- বিয়ামী-নিক...) "আপনি এর আগে কোনো কিতাব পড়েননি, এবং নিজের হাতে কিছু লেখেননি..." (সুরা- আংকাবূ-ত- আয়াত ৪৮)
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِيَّ الأُمِّيَّ (আল্লাযী-না য়্যাত্তাবিঊ-নার রসূ-লান্নাবিয়্যাল উম্মিয়্যিল্লাযী-...) "আর যারা অক্ষরজ্ঞানহীন রাসূলের আনুগত্য করবে..." (সুরা আ"রাফ- আয়াত ১৫৭)
***জমাট রক্ত বলতে যে গর্ভে সন্তানের ভ্রুণাবস্থা, সেটা বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে কিছুদিন আগে। ১৪০০+ বছর আগে আল্লাহর রাসূল (সা.) এটার কি ব্যাখ্যা করেছিলেন তা কোনো তাফসীরকারক উল্লেখ করেননি। যদিও বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষ গর্ভের সন্তানের পূর্ণ অবস্থার সাথে কোরানের বর্ণনার শতভাগ মিল পেয়েছে।
যেমন, فَاِنَّا خَلَقۡنٰكُمۡ مِّنۡ تُرَابٍ ثُمَّ مِنۡ نُّطۡفَةٍ ثُمَّ مِنۡ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِنۡ مُّضۡغَةٍ مُّخَلَّقَةٍ وَّغَيۡرِ مُخَلَّقَةٍ
"...আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি মাটি থেকে, তারপর শুক্র থেকে, তারপর রক্তপিণ্ড থেকে, তারপর গোশতের টুকরো থেকে যা আকৃতি বিশিষ্টও হয় এবং আকৃতিহীনও..." (সুরা হা"জ্জ্ব- আয়াত ৫)
©somewhere in net ltd.