নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন

লক্ষণ ভান্ডারী

কবিতা

লক্ষণ ভান্ডারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসা শুধু ভালবাসা প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব

০৭ ই মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৩

ভালবাসা শুধু ভালবাসা (প্রথম পর্ব)



ভালবাসার মৃত্যু
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ভালবাসার গল্প শুরু হয়েছিল আজ থেকে বহু বছর আগে 269 খ্রীষ্টাব্দে। রোমের চিকিত্সক তখন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। ভ্যালেন্টাইনের চিকিত্সায় দৃষ্টি ফিরে পেল নগর জেলারের একমাত্র কন্যা। দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার পর সে দেখতে পেল পৃথিবী কত সুন্দর, সবুজ গাছে পাখিদের কলরব, কুসুম কাননে অলির গুঞ্জন, সবচেয়ে আশ্চর্য হল মানুষের মন। এই মন যাকে দেওয়া যায় তা কিছুতেই ফিরে নেওয়া যায় না। যার অপর নাম ভালবাসা। ভালবাসায় দুজনের মধ্যে মন দেওয়া-নেওয়া হয়। সেই থেকে জন্ম নিয়েছিল তাদের ভালোবাসার অমরগাঁথা। ভালোবাসার অপরাধে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে ফাঁসিতে ঝুলতে হয় ফেব্রুয়ারির এই ১৪ তারিখে। তারপর এই ভালোবাসার স্বীকৃতি পেতে দুই শতাব্দী নীরবে-নিভৃতে পালন করতে হয়েছে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে।


ভালবাসা শুধু ভালবাসা (দ্বিতীয় পর্ব)



শ্মশানে হলো ফুলশয্যা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

নুপুরের চোখদুটো জলে ভেসে যায়, পলাশের বুক ভেঙে যায়।
জীবন এত ছোট কেন? তবে কি ভালবাসা অভিনয়?
নুপুর বলে, অতীতকে আমি ভুলে গেছি পলাশ।

- “কিন্তু আমি তো আজও তোমাকে ভুলতে পারি নি নুপুর। তোমাকে নিয়ে আমার ঘর বাঁধার স্বপ্ন”

- “না পলাশ, ছিঃ পলাশ, আর তা হয় না আমি একজনের বিবাহিতা স্ত্রী।”

পলাশ জানে না কেমন করে সে মনের অজান্তে নুপুরকে ভালবেসে ফেলেছিল। নুপুরের বাবা মা তাদের এই ভালবাসাকে মেনে নিতে পারে নি। বাবা জোর করে তার পছন্দমত পাত্র খুঁজে তার সাথেই নুপুরের বিয়ের ব্যবস্থা পাকা করলেন।

সেদিন বেজে উঠেছিল বিয়ের সানাই। সানাই-এর সুরে আনন্দের স্রোতে ভেসেছিল সবাই, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই। কিন্তু সবার অজান্তে কেঁদেছিল দুটি মন আর দুটি প্রাণ। দুজনের দুটি অভিন্ন হৃদয় সেদিন কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। পলাশের চোখ দুটো দারুণ জলে ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল।
হায়রে অবুঝ বাবা মায়ের মন। এই দুনিয়া বাবা-মায়ের একটুখানি ভুলের জন্য কত ছেলেমেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কে তার খবর রাখে? নুপুর আর পলাশের জীবনেও তার ব্যতিক্রম হয় নি।

তারপর সমাজের রীতি অনুসারে খুব ধুমধামেই বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ের পর কেটে গেছে সুদীর্ঘ পাঁচটি বছর। পলাশ ও নুপুর কেউ কারো খবর রাখে নি।
শ্বশুরবাড়ির সবাইকে পেয়ে নুপুর ভুলে গিয়েছিল অতীতকে। কিন্তু বিধি হলো বাম। ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে হঠাত্ একদিন ওর স্বামী মারা গেল। নুপুরের হৃদয়টা সেদিন কেঁদে উঠেছিল। নুপুর তখন ছিল অন্তঃসত্ত্বা। আজ বিধবার সাজে দারুণ লাগছে নুপুরকে। সেদিনের বেনারসী শাড়ি তার গায়ে নেই। সমাজের প্রথা অনুযায়ী সাদা পোশাকে বিধবার বেশে তাকেও যেতে হলো শ্মশানঘাটে।

শ্মশানের চিতা জ্বলছে। চিতার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সবকিছুই। ভালবাসার অকালমৃত্যু ঘটে। হারিয়ে যাওয়া স্বামীর জন্যে প্রাণটা হু হু করে উঠে নুপুরের। সমাজপতিদের বিধান অনুযায়ী তাকে স্বামীর সাথে সহমরণে মরতে হবে। এটাই ছিল তত্কালীন সমাজের প্রথা।
ঢাকঢোল পিটিয়ে আনন্দে সবাই ধরে রাখে নুপুরকে। কেউ বাধা দিতে এগিয়ে আসে নি। কেউ প্রতিবাদ করেনি। শুধু প্রতিবাদ করেছিল এক নির্ভীক তরুণ, পলাশ। ভিড় ঠেলে পলাশ এগিয়ে আসে। প্রতিবাদীকণ্ঠে বলে ওঠে, “এটা সমাজের বিধান নয়, একজনের সাথে অপরকে বলি দেওয়া। প্রিয়জনের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার অপকৌশল।”

পলাশের তীব্র প্রতিবাদে সবাই একে একে চলে যায়। জনমানবশূণ্য শ্মশানঘাট। নির্জন রাতে আকাশে তারা ফুটেছে। অদূরে শ্মশানঘাটে ফুলের গাছ। রাশি রাশি কুসুম ফুটে আছে। সেই গাছের তলায় বসে আছে দুইজনে । রাশি রাশি ফুল ঝরে পরে অঝোর ধারায়। হাতে হাত আর চোখে চোখ রেখে ভালবাসার নৌকায় কল্পনার জগতে পাড়ি দেয় দুটি মন, দুটি প্রাণ। নুপুর পলাশকে বলে, আমাদের ভাবী সন্তানের নাম রাখবো কিংশুক। পলাশ গভীর আবেগে নুপুরকে জড়িয়ে ধরে।
(চলবে)
আগামী দিনে ভালবাসা শুধু ভালবাসা - তৃতীয় পর্ব প্রকাশিত হবে।
মন্তব্যের প্রত্যাশায় মন্তব্য করবেন না। ভালো লাগলে তবেই
মন্তব্য করবেন। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১৯ রাত ১০:৫১

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভালোবাসা হচ্ছে কোন একজন মানুষের প্রতি স্নেহের এক শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ।

২| ০৮ ই মে, ২০১৯ দুপুর ২:৪৫

নীল আকাশ বলেছেন: পারফেক্ট বাংলা সিনেমা। আমি প্রডিউসার হলে এটা নিয়ে সিনেমা বানিয়ে ফেলতাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.