নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রবাস থেকে লিখছি. .....

রফিকুজজামান লিটন

আমি একজন প্রকৌশলী।একটা মোবাইল কোম্পানিতে কামলা দিই ।নিজের সুখ দুঃখ শেয়ার করতে চাই সবার সাথে। স্বপ্ন দেখি একটা সুন্দর বাংলাদেশের।

রফিকুজজামান লিটন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি পাসপোর্ট নবায়নের আত্মকাহিনী !

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:০০

দুবাই কনস্যুলেটে যতবার যাই, গাড়ী থেকে চেয়ে চেয়ে দেখি আমার সবুজের মাঝে লাল বৃত্ত পত্‌পত করে উড়ছে । আমার লাল সবুজেই চোখ স্থির হয়ে থাকে। ভেতরটা শ্রদ্ধায় অবনত হয়ে আসে। চোখের কোনায় এক বিন্দু ভালোবাসা চিকচিক করে উঠে। প্রবাসে এ যেন লাল-সবুজের এক টুকরো বাংলাদেশ। !!

কনস্যুলেট অফিসে প্রবেশ করতেই বামপাশে তথকেন্দ্র, সেখান থেকে আমাকে খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে দিলেন কোথায় কিভাবে ধাপে ধাপে পাসপোর্ট নবায়নের কাজগুলো করতে হবে। তাকে ধন্যবাদ দিয়ে ৫ নাম্বার কাউন্টারে যেয়ে সিরিয়াল নাম্বার নিয়ে ১৫ নং কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে আবার ৫ নং কাউন্টার থেকে সিরিয়াল নাম্বার নিয়ে ২২ নং রুমে যাই। ৫ নং কাউন্টার থেকে সিরিয়াল নাম্বার নেয়ার সময় দেশি ভাই একটা নির্মল হাসি দিয়ে বললেন এবার ২২ নং রুমে চলে যান। ২২ নং রুমের টিভি স্কিনে নিজের সিরিয়াল নাম্বার দেখে চলে যাই ৬ নং কাউন্টারে,৬ নং কাউন্টারের দেশি ভাইয়ের ব্যবহার ছিল বেশ অমায়িক এবং কাজের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। সেখানে পাসপোর্ট তথ্য যাচাই বাচাই এবং ছবি তোলার কাজ শেষ করে, দেশি ভাইকে ধন্যবাদ দিয়ে বেরিয়ে আসি। তিনি বলে দিলেন এক মাস পর যেয়ে পাসপোর্ট নিয়ে আসতে।

আমার সব কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে মাত্র ৪০ মিনিট। এমন নির্ঝঞ্ঝাট, এত দ্রুত সবকিছু হয়ে গেল দেখে আমি নিজেও অবাক। আসলে আমি নিজেও ভাবিনি এভাবে এত দ্রুত কাজ শেষ করতে পারবো ! আমি আপনাদের আন্তরিক সেবায় অভিভূত এবং বিমুগ্ধ !!

আমি কোনো প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পূর্বে গুগল রিভিউ দেখে নিই এবং সেইভাবে মানসিক প্রিপারেশন রাখি। গুগল রিভিউয়ে দুবাই কনস্যুলেট সম্পর্কে অনেকেই কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার কথা লিখেছেন। আমার সামনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাও একটু প্রমান পেলাম। আমার সামনে ১৫ নং কাউন্টারে মদ্ধ-বয়স্ক ভদ্রলোক এসেছেন তার পাসপোর্টে জন্মতারিখ ভুল ঠিক করতে, তিনি ভালো ভাবে বুঝিয়ে বলতে পারছেন না, শুধু বলছেন ফরম দেন। কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফ বেশ রাগান্বিত হয়ে বলছেন কি ফরম ফরম করছেন ? কিসের ফরম নিবেন ? ভদ্রলোক পাসপোর্ট এগিয়ে দিয়ে বলছেন আমার জন্মতারিখ ভুল আছে। এটা আগে বলবেন না, শুধু ফরম ফরম করেই যাচ্ছেন বলে তিরস্কার করেই যেতে লাগলেন। আমি তার ব্যবহার দেখে সত্যিই হতবাক হয়েছি। কুশলাদি জিজ্ঞেস করে পাঁচ মিনিট ধর্য্য ধরে তার কথা শুনে ফরম দিয়ে দিলে এই মলিন চেহারার মানুষটা যে কি পরিমান খুশি হতেন সেটা যদি একবার দেখতেন !!

১৫ নং রুমের সামনে ইনভেস্টর ভিসা সম্পর্কিত কাজে এসেছেন কয়েকজন। একজন মদ্ধ-বয়স্ক স্টাফ বাইরে বেরিয়ে এসে তাদের কাগজ চেক করে দু দিন পরে আসতে বললেন। তাদের অনেকেই অনেক প্রশ্ন করছেন কিন্তু ওই কর্মকর্তা কোনো উত্তর না দিয়ে কর্কশ ভাষায় বলছেন "যান তো এখন" !! এমন ব্যবহার সত্যি দুঃখজনক । সবাই মানবিক ব্যবহার আশা করে। হয়তো কাজের চাপে আপনি অনেক ব্যস্ত, কথা বলার সময় নাই কিন্তু কারও সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে না পারেন, খারাপ ব্যবহার করা উচিত না। এক-শ্রেনীর মানুষের সাথে কথা বলার সময় কর্মকর্তাদের মুখের ভাব ভঙ্গিমায় হাসি থাকে। শত প্রশ্নও যেন মামুলী। অন্যদিকে আরেক-শ্রেনীর মানুষের সাথে তাদের আচরন বড় কর্কস। একটু সময় নিয়ে তাদের কথা শুনে সুন্দর করে বুঝিয়ে বললে ওই মানুষ গুলো আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে হাসিমুখে বাসায় ফিরতে পারতেন !!

বর্তমান কনসাল জেনারেল এস বদিরুজ্জামান স্যার সাংস্কৃতিমনা, অত্যন্ত সজ্জন, নিরাহংকারী, বিনয়ী, মার্জিত একজন মানুষ। তার সময়ে কনস্যুলেটে সবচেয়ে বেশি পজেটিভ পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি যা গ্রাহক সেবসেবার মান বৃদ্ধি করেছে। তার অফুরন্ত উদ্যম প্রশংসার দাবি রাখে। তার কাছে ছোট্র আশা, কাউন্টারে কর্মরত দূতাবাসের স্টাফদের মানসম্মত প্রশিক্ষণ দিয়ে সেবার মান আরেক ধাপ বৃদ্ধি করবেন !

এমন দিন আসবে, যখন সবাই ভালো সেবা পাবে, দূতাবাসের স্টাফরা দেশের মানুষকে ভালোবাসবে, সেবা গ্রহীতা এবং সেবা দাতার মধ্যে সুসম্পর্ক বাড়বে, সবাই মিলে খুশি থাকবে—এই স্বপ্নটাই আমাকে নিরন্তর ভালো রাখে !!

এক টুকরো সমুদ্র-দ্বীপ ভ্রমণ :

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:১৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস গুলো সম্পর্কে তো কখনো ভাল কিছু শুনি না।

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:৪৭

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: পরিবর্তন হচ্ছে কিন্তু খুব ধীর গতিতে ! আলো আসবেই !!

২| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:০২

মাহের ইসলাম বলেছেন:
শুনেই ভালো লাগল।

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:২০

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: :)

৩| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ। রিনিউ করতে যাচ্ছি না। ভয় পাচ্ছি। গেলেই নানান ফ্যাসাদের মধ্যে পড়তে হবে।

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:২১

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: রাজীব ভাই ভয়ের কোন কারণ নাই :) । এখন মোটামুটি কোনো ঝামেলা ছাড়াই পাসপোর্ট করতে পারা যায় ।

৪| ২৫ শে মে, ২০১৮ ভোর ৬:১৯

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: দূতাবাসগুলোতে সবসময়েই কিছু সংখ্যক রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্ত (এখানেও কোটা!) অথর্ব স্টাফ থাকে | এই সকল কর্মচারী/কর্মকর্তাদের আচার আচরণ মোটেই প্রফেশনাল নয় এবং এরাই প্রবাসীদের সবচাইতে হার্ডটাইম দিয়ে থাকে |

২৬ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪৪

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: "রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্ত" জানা ছিল তো না । বেশির ভাগ কর্মচারী/কর্মকর্তাদের আচরণ ভালো, দু-একজনের জন্য পুরা পতিষ্ঠান সম্পর্কে মানুষের নেগেটিভ ধারণা তৈরী হয় !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.