![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নির্ঘুম জেগে থাকার নাম হতে পারে স্বপ্ন অথবা শুধুই একটি রাত..।
মাঝরাত হলেই খোন্তা কোদাল নিয়ে বেরিয়ে পড়ে তোরাব মিঁয়া, এ নিয়ে তার বৌ রাহেলা আছে মহা যন্ত্রণায় । গত কিছুদিন ধরে তোরাব মিঁয়া একটা স্বপ্ন দেখছে, তার বাড়ির কোথাও একটা স্বর্ণের ঘটী আছে । কোথায় আছে তাও সে স্বপ্নে দেখে কিন্তু যখন খোন্তা কোদাল নিয়ে বের হয় খুঁজতে তখন জায়গাটা এলোমেলো করে ফেলে, এদিকওদিক খোঁড়াখুঁড়ি করে ক্লান্ত হয়ে আবার ঘরে চলে আসে । এসে বৌ রে দেয় ঝাঁড়ি, 'তুই একটা অলক্ষ্মী, বিয়া কইরা একটা অলক্ষ্মী ঘরে আনচি', এ বলে তোরাব আলী অন্য পাশ হয়ে শুয়ে থাকে আর বিড়বিড় করে ।
রাহেলা আঁধার থাকতে থাকতে এক ঘটী জল আঁচলের মধ্যে লুকিয়ে বের হয় । সে যাচ্ছে খোঁড়া বুড়ির কাছে জল পড়া আনতে, খোঁড়া বুড়ির ঝাড়ফুঁকের কেমন কেরামতি তা আশপাশের আট দশ গ্রাম জানে । রাহেলা আধঘুম থেকে উঠিয়ে খোঁড়া বুড়িকে জল পড়া দিতে বলে, বুড়ি জিজ্ঞেস করে, কী এমন কাম ঘটছে আমারে ঘুম থেকে উঠাইয়া জল পড়া নিতে আইচচ ! রাহেলা বিস্তারিত বলে, আবুলের বাপ স্বপ্নে কী না কী চাতা দেহে, আমাগো বাড়িতন নাকী স্বর্ণের ঘটী আছে, হের লাইগা হে বিহান রাইচ্ছা খোন্তা কোদাল নিয়া বাইর হইয়া পড়ে, ছাতার কিছু ত খুঁইজ্জা পায় না আইসা আমারে ঝাঁড়ে, আই নাকি অলক্ষ্মী, আপনে এর একটা সুরাহা কইরা দেন । কথাগুলা শুইনা খোঁড়া বুড়ির চোখ চকচক করতে থাকে । সে তাড়াতাড়ি রাহেলার হাত থেকে জলের ঘটীটা নিয়ে কিছুক্ষণ বিড়বিড় করে ফু দিয়ে দেয় আর রাহেলাকে বলে, শোন এই জল তিন বেলা ভাত খাওনের লগে তোরাবরে খাইতে দিবি, দেখবি এমুন স্বপ্ন আর তার চৈদ্ধগুষ্টিও দেখবো না, যা সাবধানে জলের ঘটীটা ঢাইকা লইয়া যা আর বিয়ালে দুইটা মুরগীর ডিম দিয়া যাইচ । রাহেলা জল নিয়ে তড়িত বেগে হাঁটতে থাকে, তোরাব ঘুম থেকে উঠে গেলে বিরাট সমস্যা হয়ে যাবে ।
খোঁড়া বুড়ি রাহেলা বিদায় হওয়ার পর তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে তার পোলা বদনকে ঘুম থেকে উঠায় । বদন বিরক্ত হয়ে বলে, কিরে মা তোর কী হইছে, এতো সহাল সহাল এমন করতাসোস ক্যান ? বুড়ি বলে, আরে হোন বাপধন ! একটা বিরাট খবর আছে, তোরাবগো বাইত নাকি স্বর্ণের ঘটী আছে । ' এ কথা শুনে বদন আধঘুম ত্থেকে লাফ দিয়া উঠে, কস কী মা, হাচাই কইতাসস ! বুড়ি বলে, আরে হ, এট্টু আগে রাহেলা আইচিলো জল পড়া নিতে, তোরাব নাকী মাঝ রাইতে স্বপ্ন দেহে তার বাড়িতইন স্বর্ণের ঘটী আছে , আগের কালের মাইনসে এমন স্বপ্ন দেইখা অনেক ঘটী পাইছে । বদন বলে, তোরাব কী পাইয়া গেসে ? বুড়ি বলে, আরে নাহ এখনো খুঁইজা পায় নাই, তয় আমি জলে ফু দিয়া দিসি, তোরাব যাতে আর এমন স্বপ্ন না দেহে । বদন বলে, 'বালা কাম করছো মা, আর কেউ যাতে না জানে, আইজকা রাতেই কামে লাইগা পরমু।' বুড়ি বলে, খোন্তাটা ল, একটু ফুঁ মাইরা দেই, তাইলে তাড়াতাড়ি পাইয়া যাবি, আর হুন, এইসব ঘটীর আশেপাশে নাকী খুব খারাপ সাপ থাহে, সাবধানে কাম করিস ।
আজকেও মাঝ রাতের একটু পরে তোরাব মিঁয়া হুড়মুড় করে ঘুম থেকে উঠে লাঠি একটা নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে পড়ে । রাহেলা বুঝতে পারে না আজকে আবুলের বাপ লাঠি নিয়া বাইর হইলো ক্যান ! তোরাব মিঁয়া আজ স্বপ্ন দেখেছে স্বর্ণের ঘটীটা কে যেন চুরি করতে এসেছে !
২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৪
গল্পক বলেছেন: এখন কে বিশ্বাস করছে না করছে তা বিষয় নয় । গল্প তো যে কোন সময় নিয়েই লেখা যেতে পারে ।
অনেক ধন্যবাদ ।
২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩১
রাজু বলেছেন: ব্যাপক বিনুদন পেলুম..../
২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৬
গল্পক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ।
৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হা হা| মজাদার
২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৭
গল্পক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:১৫
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: ভাল লেগেছে গল্পটা পড়তে।
এসব বিশ্বাস করার মানুষ এখনো আছে।