নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লাইফবার্গ

লাইফবার্গ

মহামনীষীদের শিখিয়ে দেয়া শিক্ষায় শিক্ষিত এক অবুঝ...

লাইফবার্গ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষক

২৮ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:২০


খুব বেশিদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়েছি বলা যাবে না। ৭ বছর কি খুব বেশি সময়? যদিও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব একটা প্রভাব জীবনে এখনও ফেলতে পারিনি, কিন্তু মাঝে মাঝেই মনে হয় ফেলে আসা সেই সব দিনের কথা। কত স্মৃতি, কত বেদনায় ভরপুর ছিল সেইসব দিন।

সেদিন পেশাগত কাজে গেলাম এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, ঢুকতেই গেট এর মামা বাধা দিল, "মামা, আই ডি কার্ড!" বললাম যে, আমি তো ছাত্র নই, এদিকে কিন্তু মনে মনে পুলকিত, এখনও বয়স আছে তাহলে! :p

বাধা পেরিয়ে গেলাম লিফট এর দিকে। লিফটে খুব ভিড় নেই কিন্তু দরজা বন্ধ হলো শেষ মেশ ওঠা অতিরিক্ত আরোহী নেমে যাবার পর। নব্য আর পুরোনো ছাত্রদের টুকিটাকি কথা কানে আসছিল আর মনে হচ্ছিল সেইসব দিনের কথা। যাবো ৯ তলায়। কিন্তু বিধি বাম। ২ তলার কলে থেমে গেল লিফট। খুলতেই দেখলাম একজন পঞ্চাশোর্ধ শিক্ষক দাঁড়িয়ে। আমি শেষ দিকে দাড়ানো, চিন্তা করছি সালাম দেবো কিনা। এদিকে যেহেতু লিফটে অতিরিক্ত ওজনের সংকেত বেজেছিল তাই সামনের থেকে একজনকে নেমে যেতে হবে। আমি চিন্তা করছি সবাইকে ঠেলে আমার নামাটা কি যুক্তিযুক্ত হবে কিনা। শত হলেও আমিতো বাইরের মানুষ, বাকিদের সবার তো ক্লাস আছে। কিন্তু হঠাৎ মনে হলো, কি ব্যাপার, কেউ নামছে না কেন? উনি যাবেন কিভাবে, কাউকে তো নামতে হবে। কিন্তু লিফট তো আর মানুষ না। যেহেতু দরজায় কোনো নড়ন চড়ন নেই তাই সে বন্ধ হতে উদ্যত হতেই অসহায় শিক্ষক চেপে ধরলেন দরজা। তাকে তো যেতেই হবে, অনেক ছাত্র অপেক্ষা করে আছে তার প্রতিক্ষায়, এতগুলো সিঁড়ি বেয়ে তো আর এই বয়সে ওঠা সম্ভব নয়। আমি ঘটনার আকস্মিকতায় এতটাই হতবাক যে ভুলেই গেলাম আমি নেমে গেলেই পারতাম। নিতান্তই অনিচ্ছায় একজন ছাত্রের দয়া হলো। সে বিড় বিড় করতে করতে নেমে গেল। তারপর উঠলেন সেই শিক্ষক। যিনি হাতে ধরে তার জীবনের অর্জিত সব শিক্ষা দান করেন ছাত্রদের, সেই ছাত্রদের এত অনীহা একজন শিক্ষককে লিফটের এতটুকু স্থান ছেড়ে দিতে!

আমি অবাক, হতবাক, উনি নেমে যাওয়া ছাত্রটিকে ধন্যবাদ দিলেন, বললেন, তুমি অনেক কষ্ট করলে! আমার হাটুতে ব্যাথা!

জীবনে অসংখ্যবার এমন হয়েছে যে, এমন পরিস্থিতিতে দুই তিন জন একসাথে নেমে গিয়েছি একজন শিক্ষককে উঠতে দিয়ে। কার আগে কে নামবো সেই প্রতিযোগীতা হতো।

আমার প্রশ্নটা হলো, তাহলে এখনকার শিক্ষকরা কি সত্যিই বন্ধুর মত? যাকে ছাত্রদের এতটুকুন সম্মান দেখানোর কিছু নেই? নাকি আমি খুব বেশি সেকেলে হয়ে গিয়েছি?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১১

দজিয়েব বলেছেন: ভাই, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা আমি বলতে পারিনে। আমি পড়েছি শীর্ষ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। আপনি বিশ্বাস করুন বা নাই করুন শতকরা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী সেখানে শিক্ষকদের গালি দেয় আড়ালে আবডালে। এবং এর জন্য শিক্ষার্থীদের আমি দোষ দি না, কারণ মানুষ গালি তখনই দেয় যখন সে সম্পূর্ণ অসহায় যায়, তার কিছুই করার থাকেনা। আমার অভিজ্ঞতা বলে তেলবাজি আর রাজনৈতিক সংস্কৃতির ফেরে পড়ে অত্যন্ত অযোগ্য ও বাজে মানুষগুলো নিয়োগ পেয়ে যায়। আর তারপর শুরু হয় তাদের স্বেচ্ছাচারীতা। আপনার ঘটনাটির ক্ষেত্রে মানবিক কারণ বিবেচনায় শিক্ষকটিকে জায়গা ছেড়ে দেয়াটাই যথার্থ ছিলো। যে ছাত্রটি সেটি করেছে তাকে আমিও ধন্যবাদ জানাই।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩৬

লাইফবার্গ বলেছেন: আপনার কথাটি অনেক গভীরে নাড়া দিয়ে গেল। অবশ্যই সেই সব শিক্ষকদের আমি শিক্ষকের মর্যাদা দিতে রাজি নই। একজন শিক্ষক অসদুপায়ের শিকলে জড়িয়ে পড়লে তিনি আর শিক্ষক থাকেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.