নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্ল্যাকহোল ব্লগে আপনাকে স্বাগতম......

একটি নিষ্ক্রিয় ব্লগ

লিপিকার

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © **নিষ্ক্রিয়**

লিপিকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মায়া

২২ শে জুন, ২০০৮ রাত ১:৪৯

রাত ১২:৩১। মাশুকের ফোন...."এত রাতে জেগে কি করিস?"

"তুই কি করিস"

"তোরে ফোন করি"

"আর আমি তোর ফোন ধরি"

"ওকে বাবা ঠিক আছে। আমি মেসেজ পাঠালাম। রেসপন্স নাই কেন?"

"ভালো লাগেনা....মনটা ভালো নেই।"

"মেসেজটা তুই পড়ছিস?"

"না....সময় নাই।"

"সত্য কথা বলার জন্য Thanks "

"You are welcome"

"হা হা হা....তোর ডক্টরের খবর কি?"

"কার খবর?"

"জনাব রিসার্চার.....আমেরিকান গোবদু পাঁঠা...পাঁঠার সাথে চ্যাটিং কেমন চলছে?"

"গোবদু পাঁঠা? এভাবে কথা বলিস কেন? মুখের ভাষা আরো সুন্দর করা যায়"

"পাঁঠাকে তো পাঁঠাই বলব। তুই হবি পাঁঠার বউ মিসেস পাঁঠা।"

"শাট আপ! ফোন রাখ। আর কক্ষনো ফোন করবিনা।"

"পাগল নাকি যে তোরে ফোন করব! বাই"



ঘাসে পা ছড়িয়ে বসে আছে মাশুক। এত সকালবেলা তিন্নি ক্যাম্পাসে আসেনা। সে আসে ক্লাসের ঠিক ১৫ মিনিট আগে। এসেই এমন ভাবটা করে যেন মাশুককে সে চিনেনা। কিছুক্ষন পর তাকিয়ে একটা মায়াবী হাসি দেয়। এই হাসিটা মাশুকের সারাদিনের ক্লান্তির জন্য আগাম শক্তি জোগায়। পরীক্ষার পরেই তিন্নির বিয়ে হয়ে যাবে। যার সাথে হবে সে মাশুকের তুলনায় সব দিক থেকেই অনেক বড় মাপের মানুষ। মাশুকের খুব জানতে ইচ্ছে করে সে তিন্নির কাছে কোন মাপের মানুষ।

একগোছা কদম ফুল হাতে একটা বাচ্চা মেয়ে এসে বললো,"ভাইজান কদম ফুল নেন"

"নিমুনা। যা ভাগ"

"নেন ভাইজান।"

"তুই কদমফুল পাইছস কই? এই ফুল কিন্যা কি হইব? তোর ফুল কেউ কিনে?"

"কওন যাইবনা?"

"দাম কত তোর কদম ফুলের"

"পিস ৩ টাকা।"

"কি কস! যা কিনুমনা।"

মেয়েটা চলে যায়। কি মনে করে হঠাৎ পেছন থেকে মাশুক মেয়েটাকে ডাকে।

"তোর কাছে কয়টা ফুল আছে?"

"বিশটা।"

"মাত্র! দে বিশটাই দে।"

মেয়েটার চোখ হঠাট জ্বলজ্বল করে ওঠে। এমন পাগল ক্রেতা সে আগে কখনও দেখেনি।



তিন্নি আজ আসলইনা। কেন আসেনি এটা জানতে ইচ্ছা করছেনা। কদমফুলগুলো কি করবে মাশুক বুঝতে পারছেনা। তার হাতে এত কদম ফুল দেখে অলরেডি তার নাম হয়ে গেছে "কদম আলী"। তিন্নির বাসায় গিয়ে ফুলগুলো দিয়ে আসলে কেমন হয়......



তিন্নি প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে বললো..."এত উদ্ভট কাজ করিস কেন?"

"তোর জন্য বিশটা কদম ফুল আনা কি উদ্ভট কাজ?"

"বাসায় আসছিস কিজন্য?"

"ফুলগুলার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল কদমা তিন্নিকে দিলাম। এবার চা খাওয়া"

"চা খেয়েই চলে যাবি ঠিক আছে?"

"ওমা! গেস্টকে কেউ চা খাওয়ায় তাড়ায় দেয়?"

"তুই গেস্ট হওয়ার যোগ্য না।"

"তাহলে আমি কি ঘরের মানুষ হওয়ার যোগ্য?"

তিন্নি খুব আস্তে বললো......"হুমম"



অনেক রাত। তিন্নি জেগে আছে। আর কয়েকমাসের মধ্যে সে সম্পূর্ন ভিন্ন একজন তিন্নি হয়ে যাবে। আরাফের স্ত্রী তিন্নি। মাশুকের সাথে খুব কথা বলতে ইচ্ছা করছে। সে কি এত রাতে জেগে থাকবে। কোন কিছু না ভেবেই মাশুককে ফোন করল সে...

"ঘুমাচ্ছিস?"

"হুমম....ঘুমাইয়া ঘুমাইয়া কতা কই।"

"সুন্দর করে কথা বল।"

"জ্বি আচ্ছা। এত রাতে ফোন দিলি যে?"

"ঘুম আসছিলোনা। তুই কথা বল তাহলে ঘুম আসবে।"

"কি সাংঘাতিক কথা! আমি কি ঘুমের ওষুধ?"

"হ্যাঁ, একটা মজার গল্প বল।"

"আইচ্ছা জো হুকুম বেগম সাহেবা। একদেশে ছিলো এক কচ্ছপ আর এক খরগোশ....."

"হুমম....তারপর?"

"একদিন খরগোশ কচ্ছপকে বলে, চান্দু গোবিন্দ তুমি আমার সাথে রেসে পারবা! ভুং ভাং কইরা লাভ নাই। রেসে জিতলে ময়ুরী তোমার আর হারলে আমার, কতা দাও......"

মাশুক হয়তো কোনদিন জানতে পারবেনা এই মুহূর্তে তিন্নি নিশব্দে কাঁদছে। মানুষের যদি অন্য মানুষের মনের কথা শুনার ক্ষমতা থাকত তাহলে মাশুক শুনতে পেত তিন্নি বলছে..."কেন এত মায়া বাড়াস?"





মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০০৮ রাত ২:৩৮

নামহীন মানব বলেছেন: অসাধারণ। আমারও এক স্কুলের বান্ধবী ছিল। খুব কাছের। আপানার লিখাটা পড়ে তার কথা মনে পড়ে গেল। অনেকদিন দেখিনা সেই বান্ধবীকে। তবে ঠিকই যেদিন দেখা হবে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিবে আমি জানি।

২২ শে জুন, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৫

লিপিকার বলেছেন: Thanx

২| ২২ শে জুন, ২০০৮ ভোর ৪:১১

মানবী বলেছেন: সাধারন কথার অসাধারন সুন্দর গাঁথুনী! একটানে পড়েছি :)


আপনার লেখার হাত চমৎকার! এই চমৎকার লেখার একটি অংশ হুবুহু আমার একটি লেখার সাথে(এই ব্লগে প্রকাশিত নয় ) মিলে গেছে দেখে ভালো লেগেছে :-)

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ লিপিকার।



+

২২ শে জুন, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৪

লিপিকার বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ

৩| ২২ শে জুন, ২০০৮ ভোর ৬:০২

আসিফ আহমেদ বলেছেন: মায়া কেউ বাড়ায় না....
এটা লকলক করে বেড়ে ওঠে নিজের অজান্তে....
ভালো লাগলো লেখাটা।

২২ শে জুন, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৪

লিপিকার বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ২২ শে জুন, ২০০৮ দুপুর ১২:৩২

দি ওয়ান বলেছেন: ভালো লাগলো। :)

২২ শে জুন, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৫

লিপিকার বলেছেন: Thanx

৫| ২২ শে জুন, ২০০৮ রাত ১১:৫৫

ভাঙা চাঁদ বলেছেন: মনটা খারাপ হয়ে গেল.....

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সকাল ১১:২৮

লিপিকার বলেছেন: :(

৬| ৩০ শে জুন, ২০০৮ রাত ৩:২৭

নাহিন বলেছেন: মায়ার উপরে যদি কন্ট্রোল করা যেত, লাইফটা জীবন হয়া যাইত, ইসসসসসসসসসসসসসস...

(গল্পটা ভালো লাগসে খুব)

৩০ শে জুন, ২০০৮ সকাল ১০:২৬

লিপিকার বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ২:০৬

শিরোনামহীন বলেছেন: মায়া খুব খারাপ জিনিস! মনটা খারাপ হয়ে গেল। হয়তো কোন তিন্নির কোন মাশুকের কথা মনে পড়ে গেল~ কে জানে!

০১ লা জুলাই, ২০০৮ সকাল ১১:২৯

লিপিকার বলেছেন: হুমম......কে জানে!!

৮| ০৩ রা মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৮

জেরী বলেছেন: মায়া বড় বদ:(

আপনি যে ভালো লিখেন এটা কি বুঝতে পারেন??

১৩ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ৯:৪১

লিপিকার বলেছেন:

নাতো! (লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম)

অনেক ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.