নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হলোকাস্ট মানব ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়। নাৎসি জার্মানির ইহুদি নিধনযজ্ঞ শুধু একটি গণহত্যা ছিল না, বরং এটি ছিল সুপরিকল্পিতভাবে একটি জাতিকে নির্মূল করার অপচেষ্টা।
হলোকস্টের সূচনা ও বিস্তার:
১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে পোল্যান্ড আক্রমণের মাধ্যমে হিটলারের ইহুদি নিধনযজ্ঞের সূচনা হয়। পোল্যান্ডের একটি বড় অংশ জার্মানির দখলে নিয়ে সেখানে বসবাসকারী ছয় লক্ষাধিক ইহুদিকে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে স্থানান্তর করা হয়। তাদের গেটোর অধীনে বন্দী করে অমানুষিক পরিশ্রম করানো হতো, বিনিময়ে সামান্য খাবার দেওয়া হতো। ১৯৪৪ সাল নাগাদ প্রায় চার লক্ষ ইহুদি এই দাসশ্রমে বাধ্য হয়। তাদের নাম পরিচয় কেড়ে নিয়ে শরীরে সংখ্যা ট্যাটু করে দেওয়া হতো।
১৯৪১ সালে রাশিয়া আক্রমণের পর হিটলারের ইহুদি নিধনের পরিকল্পনা আরও ভয়ংকর রূপ নেয়। তথাকথিত "ইহুদি বলশেভিক ষড়যন্ত্র" নির্মূলের নামে শুরু হয় ব্যাপক গণহত্যা। ১৯৪১ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৪২ সালের শেষ পর্যন্ত প্রায় বারো লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করা হয়।
১৯৪২ সালের মাঝামাঝি সময়ে গেটো থেকে ইহুদিদের ধরে মালবাহী ট্রেনে করে ডেথ ক্যাম্পে পাঠানো শুরু হয়। গ্যাস চেম্বার, নির্যাতন, অনাহার, মেডিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট এবং ডেথ মার্চের মাধ্যমে সেখানে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হতো। নাৎসিরা এই গণহত্যাকে ‘দ্য ফাইনাল সলুশন’ বা ‘চূড়ান্ত সমাধান’ নামে অভিহিত করত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত, অর্থাৎ ১৯৪৫ সালের মে মাস পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ড চলে।
নিহতের সংখ্যা ও বিতর্ক:
হলোকাস্টে নিহত ইহুদির সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকরা হলোকাস্টের অস্তিত্বই অস্বীকার করে, আবার কেউ কেউ নিহতের সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করে। তবে মূলধারার ইতিহাসবিদদের মতে, হলোকাস্টে ৪২ থেকে ৭০ লক্ষ ইহুদি নিহত হয়েছিল। বহুল প্রচলিত ৬০ লক্ষ নিহতের হিসাবটি মূলত নাৎসিদের দেওয়া।
হলোকাস্টের তাৎপর্য:
‘হলোকাস্ট’ একটি গ্রিক শব্দ, যার অর্থ ‘গণপোড়ানো’। ইহুদিরা একে হিব্রুতে ‘শোয়াহ’ (niri) বলে, যার অর্থ ‘ধ্বংস’। হলোকাস্টের ফলে ইউরোপের ইহুদি জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এবং বিশ্বের ইহুদি জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস পায়। অসউইচ বন্দী শিবির ছিল হলোকাস্টের সবচেয়ে কুখ্যাত কেন্দ্র, যেখানে প্রায় দশ লক্ষ ইহুদিকে গ্যাস চেম্বারে হত্যা করা হয়।
হিটলারের ইহুদি বিদ্বেষের উৎস:
হিটলারের ইহুদি বিদ্বেষের উৎস নিয়ে নানা মত প্রচলিত আছে। কেউ বলেন, শৈশবের কোনো ঘটনা, কেউ বলেন যৌনরোগ, আবার কেউ বলেন কোনো ইহুদি প্রেমিকার প্রত্যাখ্যান তার এই বিদ্বেষের কারণ। তবে সম্ভবত তার উগ্র জার্মান জাতীয়তাবাদই এই বিদ্বেষের প্রধান কারণ।
২০১৫ সালে ইসরাইলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন যে হলোকাস্ট হিটলারের স্ব-প্রণোদিত ছিল না, বরং জেরুজালেমের মুসলিম গ্র্যান্ড মুফতি হাজ আমিন আল-হুসাইনি তাকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ঐতিহাসিক প্রমাণ এর বিপরীত।
একটি বহুল প্রচারিত মিথ্যা উদ্ধৃতি হিটলারের নামে প্রচলিত আছে: “আমি ইচ্ছে করলে পৃথিবীর সব ইহুদীকে হত্যা করতে পারতাম। কিন্তু কিছু ইহুদী বাঁচিয়ে রাখলাম এ জন্য যে পৃথিবীর মানুষ দেখুক, আমি কেন তাদের হত্যা করেছিলাম।” এমন কোনো কথা হিটলার কখনো বলেননি।
হলোকাস্ট মানব ইতিহাসের এক গভীর ক্ষত। ইতিহাসকে ভুলে গেলে তার পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই হলোকাস্টের মতো ঘটনা সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৯
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: হিটলারের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ না করার মাধ্যমে তার কৃতকর্মের প্রতি আমাদের ঘৃণা এবং মানবতাবোধের জয়কেই প্রকাশ করে।
২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: অপরাধ, হত্যা কোনো সংখ্যা দিয়ে পরিমাপযোগ্য জন্য। একটা মৃত্যু যেমন একটা পরিবারের জন্য কষ্টদায়ক, তেমনি কষ্টদায়ক ইজরায়েলীদের দ্বারা ফিলিস্তিনি জাতিগত নিধন, বলকান জাতিগত নিধন, বর্তমান মিয়ানমার, ইন্ডিয়ায় জাতি নিধন এবং একই ধরনের অপরাধ করেছে শেখ হাসিনা সরকার।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: এজন্যই হিটলারের মৃত্যু বার্ষীকিতে আমরা শ্রদ্ধা ভরে তাকে স্মরন করি না।