![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!
বাংলাদেশের সামুদ্রিক শিল্প এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত এই দেশটি দীর্ঘদিন ধরে তার নৌ-বাণিজ্য এবং মৎস্য খাতের ওপর নির্ভরশীল। অথচ, এই খাতের সম্ভাবনাগুলো এখনো পুরোপুরি কাজে লাগানো হয়নি। বিশেষ করে, আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য মার্চেন্ট নেভি একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হলেও প্রয়োজনীয় নীতিগত দিকনির্দেশনা ও দক্ষতা উন্নয়নের অভাবে তারা আন্তর্জাতিক মানের ক্যারিয়ার গঠনে পিছিয়ে পড়ছে।
একটি শক্তিশালী নৌশিল্পের জন্য দক্ষ জনশক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি (বিএমএ) এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান আমাদের নৌ-শ্রমিকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করলেও এখনো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। দক্ষ প্রশিক্ষক ও প্রশাসনের অভাব, আধুনিক পাঠ্যক্রমের অভাব, এবং বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণের ঘাটতি—এসব কারণে আমাদের ক্যাডেটরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় টিকতে হিমশিম খাচ্ছে।
এদিকে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে বেশ কয়েকটি নতুন সামুদ্রিক একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে, শুধু সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে সামুদ্রিক শিক্ষা ও চাকরির মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। বরং, প্রয়োজন একটি সুসংগঠিত ও লক্ষ্যভিত্তিক পরিকল্পনা। নতুন একাডেমিগুলোকে সম্পূর্ণ ক্যাডেট ট্রেনিংয়ের বদলে বিশেষায়িত ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে, যেখানে ডেক ও ইঞ্জিন সহায়কদের ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। এতে করে তারা আন্তর্জাতিক ও দেশীয় নৌপরিবহন খাতে সরাসরি অবদান রাখতে পারবে।
বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের জন্য মার্চেন্ট নেভি একটি আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার হতে পারে, কারণ এই খাত শুধুমাত্র উচ্চ বেতনের সুযোগ প্রদান করে না, বরং দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম মাধ্যমও। বর্তমানে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দক্ষ বাংলাদেশি নাবিকদের চাহিদা থাকলেও আমরা সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। আমাদের নাবিকদের আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা করার জন্য আরও আধুনিক প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে, যা শুধুমাত্র উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই সম্ভব।
শুধু প্রশিক্ষণই নয়, নৌপরিবহন শিল্পের সুশাসন ও দুর্নীতি রোধ করাও অত্যন্ত জরুরি। আমাদের বন্দর ও টার্মিনাল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা না গেলে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দুর্বল হবে। উন্নত নৌনীতি, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে।
একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি, এখনই সময় একটি সুপরিকল্পিত নৌ-কৌশল প্রণয়নের। বাংলাদেশ যদি তার ভৌগলিক ও সামুদ্রিক সুবিধাগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারে, তবে মার্চেন্ট নেভিতে আমাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। এটি শুধু ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের উন্নতি ঘটাবে না, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের সামনে বিশাল সমুদ্রপথ উন্মুক্ত, আমাদের শুধু সঠিক দিকনির্দেশনা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
১২ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৪২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার সাথে একমত।