![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির মাধ্যমে আমি নতুন ভাবনা, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সৃজনশীল প্রকাশ খুঁজে পাই। আমার লেখার লক্ষ্য পাঠকদের ভাবতে উদ্বুদ্ধ করা এবং একটি অর্থবহ আলোচনা তৈরি করা।
স্কুলজীবনের একপাক্ষিক ভালোবাসা, স্মৃতি আর অপূর্ণতার কাহিনি নিয়ে লেখা “রুবি রায়” গল্পটি ছেলেবেলার মায়াময় প্রেমের একটি আবেগঘন ছবি আঁকে। ভালোবাসা কি শুধু পাওয়া, নাকি না-পাওয়ার মধ্যেও তার সৌন্দর্য আছে? পড়ুন হৃদয়ছোঁয়া এক গল্প—“ভালোবাসা কারে কয়” সিরিজের প্রথম পর্ব।
স্কুলের পুরনো লাল ইটের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল আরিষ।
হাওয়ার ছোঁয়ায় ধুলোর ঘূর্ণি উঠছিল মাটিতে।
দূর থেকে ভেসে আসছিল বাচ্চাদের চিৎকার, সাইকেলের ঘণ্টি, আর ভাঙা স্কুলঘণ্টার কর্কশ শব্দ।
কিন্তু আরিষের কানে বাজছিল শুধু একটাই আওয়াজ—
হৃদয়ের নিঃশব্দ ধুকপুকানি।
ক্যামেরার লেন্সের ওপারে সে খুঁজছিল একটা অতীত দৃশ্য—
একটা লাল ফ্রকের নরম ভাঁজ, কালো ফ্রেমের চশমার ঝিলিক,
আর এক চিলতে মৃদু হাসি।
রুবি রায়।
তার ছেলেবেলার প্রথম, অলিখিত ভালোবাসা।
স্কুলের দিনগুলো যেন ছিল রঙিন এক খেলা।
চক দিয়ে আঁকা চারকোণা মাঠ, হুলস্থুল ছুটোছুটি, ক্লাসরুমের জানালায় রোদের ছায়াছবি।
আর তার সবটুকু আলো যেন কেন্দ্রীভূত ছিল রুবির চারপাশে।
রুবি ছিল ক্লাস টেনের নক্ষত্র।
নাচের আসরে তার লাল ফ্রক ঘুরে উঠত যেন শিউলি ফুলের সুবাস।
তার হাসির শব্দ ভেসে আসত টিনের ছাউনি ছুঁয়ে—
মধুর, অথচ দূরের।
আরিষ দূর থেকে তাকিয়ে থাকত, মন্ত্রমুগ্ধের মতো।
একদিন সাহস করে স্কুলের গেটের কোণায় দাঁড়িয়েছিল,
শুধু রুবির এক ঝলক দেখতে।
সেইদিন,
রুবি তাকিয়েছিল।
হয়তো ভুল করে, হয়তো উদ্দেশ্য করেই—
একটুখানি হেসেছিলও।
আরিষের কিশোর মন সে মুহূর্তে রঙিন হয়ে উঠেছিল।
লাল ইটের মতো উষ্ণ, আগুনের মতো তীব্র।
মনে হয়েছিল, পৃথিবীর সব আলো এখন তার বুকের ভেতর জ্বলছে।
কিন্তু ভালোবাসা তো সবসময় প্রতিদানে ফোটে না।
এক বিকেলে, স্কুলের শেষ ঘণ্টা বাজার পর,
আরিষ দেখেছিল রুবিকে —
এক কলেজপড়ুয়া ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে।
ছেলেটি একটি ছোট্ট লাল রঙের গিফটবক্স তুলে দিল রুবির হাতে।
রুবি হেসে নিল।
সেই হাসিতে কোনো রহস্য ছিল না—
ছিল সহজ স্বীকৃতি।
আরিষ নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে ছিল।
তার পায়ের নিচের ধুলো যেন এক মুহূর্তে নড়ে উঠেছিল,
লাল ইটের গায়ে রোদের ছায়া যেন ফিকে হয়ে গিয়েছিল।
তার ভেতরকার লাল আবেগ ক্রমশ রক্তিম থেকে গাঢ় বাদামি হয়ে এল—
ক্ষয়ে যেতে থাকা স্মৃতির রঙের মতো।
সেই রাতে, হয়তোবা, রুবিও আপন মনে তার ডায়েরির পাতায় লিখেছিল—
"আজ এক কিউট ছোট্ট ছেলেকে দেখলাম। মনে হলো, ওর চোখে অসম্ভব মায়া।
কী নাম কে জানে!"
ডায়েরির সেই লাইন কেউ কখনো দেখেনি।
আরিষও না।
কিন্তু হয়তো কোথাও, কোনো এক সমান্তরাল স্মৃতিতে, রুবি তাকে চিনেছিল।
হয়তো মুহূর্তের জন্য হলেও।
আজ বহু বছর পর,
পুরনো স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে,
আরিষ ক্যামেরা তাক করল—
লাল ইটের ধুলোধূসর গায়ে বিকেলের শেষ রোদ এসে পড়েছিল।
সেই রোদে লাল রঙের উজ্জ্বলতা আর ক্ষয় দুটোই মিলেমিশে ছিল।
আরিষের ঠোঁটে একটা মৃদু হাসি ফুটল।
ভেতরে কোথাও একটা উষ্ণ শূন্যতা।
একটা ভালোবাসা, যেটা কখনোই পাওয়া হয়নি,
কিন্তু হারিয়েও যায়নি।
রুবি রায়—
একটা নাম, একটা রঙ, একটা দূরের বৃষ্টিভেজা গান।
ভালোবাসা কখনো মরে না।
শুধু স্মৃতির পাতায় তার রঙ বদলায়।
(শেষ)
০৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ১০:২৭
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আমারও জানার খুব ইচ্ছা।
২| ০৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ১০:৫৩
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: ভালো হয়েছে ।
০৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ১১:০১
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু।
৩| ০৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ১১:২৮
ফেনিক্স বলেছেন:
কৈশোরে হৃদয়ে ভালোবাসার জন্ম হয়।
০৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ১১:৪১
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: বয়ঃসন্ধি কালের সময়টা মানুষের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়।
৪| ০৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ১১:৩৩
আধুনিক চিন্তাবিদ বলেছেন: আমার কবিতার প্রতি আগ্রহ নেই বললেই চলে। তার উপরে গদ্য স্টাইলের কবিতা তো মেনে নিতেই পারি না।
০৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ১১:৪৩
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: তারপরও যে আপনি সময় করে পড়েছেন তার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
৫| ০৬ ই জুন, ২০২৫ রাত ১২:১০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: রুবি রায় একটা গান আছে।
০৬ ই জুন, ২০২৫ রাত ১২:১৮
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: হ্যাঁ। আর ডি বর্মন এর খুব বিখ্যাত একটি গান।
৬| ০৬ ই জুন, ২০২৫ সকাল ১০:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: এক কথায় সুন্দর।
০৬ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১:১৯
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রাজীব ভাই।
৭| ০৬ ই জুন, ২০২৫ রাত ১০:৩৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু,
এ যেন --
মনে পড়ে রুবি রায়, কবিতায় তোমাকে একদিন কতো করে ডেকেছি........
০৬ ই জুন, ২০২৫ রাত ১০:৪৭
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। গল্পের মূল থিমটি ধরতে পেরেছেন।
৮| ১৫ ই জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৪৫
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: Please visit my You Tube channel Click This Link
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ১০:২৩
শায়মা বলেছেন: রুবি রায় এখন কেমন আছে কে জানে ?