![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'বাবরি মসজিদ' ভারতের উত্তর প্রদেশের, ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরের রামকোট হিলের উপর অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। বাবরি মসজিদটি নির্মিত হয় ১৫২৭ সালে মোগল বাদশাহ বাবরের শাসনামলে। সেই থেকে মুসলমানরা মসজিদটিতে নামাজ আদায়
করত। কিন্তু হিন্দুরা এলাকাটিকে তাদের
দেবতা রামের জন্মস্থান এবং রামমন্দির
ভেঙে বাবরি মসজিদ নির্মিত হয়েছে বলে অভিযোগ করতে থাকে। ১৮৫৮ ইংরেজদের যোগসাজশে বাবরি মসজিদের
সম্মুখে একটি চবুতরা নির্মাণ করা হয়। ১৮৭০ সালে পি কার্নেগি 'Historical Sketch of Tehsil Fayzabad' গ্রন্থে কোনো প্রমাণ ছাড়াই বলেন
চবুতরাটি ‘রাম জন্মভূমি মন্দির’-এর
ধ্বংসাবশেষ এবং মন্দিরটি ধ্বংস করেই ১৫২৮ সালে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। বিবাদের সূত্রপাত এভাবেই।
সিপাহী বিদ্রোহের দুই বছর পর পর্দা দিয়ে আলাদা করা হয় হিন্দু ও মুসলমানদের প্রার্থনাস্থল। এরপর ১৮৮৫ সালে রামচতুরায় পূজাপাঠ ও মন্দির গড়তে চেয়ে আদালতে মামলা করেন মোহান্ত রঘুবর দাস। আদালত সে আবেদনে সাড়া দেয়নি। পরের বছর পুনরায় চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। এরপর দীর্ঘ দিন
কেটে গেলেও মসজিদ আর মন্দিরের
বিরোধটি বড় আকার ধারণ করেনি। ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় আসল ঘটনা। কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাতের
অন্ধকারে তালা ভেঙে মসজিদের ভেতর রামের মূর্তি স্থাপন করে এবং আদালতে স্থানটি তাদের উপাসনার জন্যে খুলে দেওয়ার দাবি করে। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ফৈজাবাদের
কালেক্টরকে জায়গাটায় তালা ঝুলিয়ে দিতে বলেন। ফলে হিন্দু-মুসলমান উভয়েরই উপাসনার পথ রুদ্ধ
হয়ে যায়। দীর্ঘদিন তালা ঝুলে থাকায় সবাই এক প্রকার ভুলেই গিয়েছিল বাবরি মসজিদের কথা। ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে মাত্র দুটি আসন পাওয়া বিজেপি ১৯৮৯-তে আসন পেল ৯০টি। ১৯৮৯ সালে লালকৃষ্ণ আদভানির নেতৃত্বে বিতর্কিত
স্থানে রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
হলে উত্তেজনা বেড়ে যায়। সেসময়
বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির পুনঃস্থাপনের আন্দোলন জোরদার করেন আদভানি। উত্তর প্রদেশে কল্যাণ সিং ক্ষমতায় এলে বাবরি মসজিদ ভাঙার পথ সুগম হয়ে যায়।
"[১৯৯২ সালে একটি রাজনৈতিক সমাবেশের উদ্যোক্তরা, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশ শুরু করে যা ১৫০,০০০ জন সম্মিলিত একটি দাঙ্গার রুপ নেয় এবং মসজিদটি সম্পুর্ণরুপে ভূমিসাৎ করা হয়। ফলস্বরুপ ওই একই
সালে ভারতের প্রধান শহরগুলোতে সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গা সংঘটিত হয় যা মুম্বাই ও দিল্লি শহরে ২০০০ মানুষের প্রাণ
কেড়ে নেয়। - তথ্যসূত্র: Tearing down the Babri Masjid – Eye Witness BBC's Mark Tully BBC–5 December 2002]"
"মসজিদ ধ্বংসের পর উত্তর ভারতে রক্তাক্ত দাঙ্গা শুরু হয় যা মুম্বাইতে ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে ৫,০০০ এরও বেশি লোক মারা যায় ( তথ্যসূত্র: ভারতীয় কাগজ, খবর ১৩ ই ডিসেম্বর ২০১২)।"
১৯৯২ সালে কট্টর হিন্দুবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ভারতীয় হিন্দু পরিষদের নেতৃত্বে প্রায় দেড় লাখ উগ্র হিন্দুরা যখন ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদে নির্দয় হাতুড়ি পেটা করছে,পুলিশ তখন
নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। এই ঘটনায় ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু
হয়ে গেলে সরকার মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিতর্কিত জমিটি অধিগ্রহণ করে নেয়। মহাভারতে রামের জন্মস্থান হিসেবে অযোধ্যার কথা বলা হয়েছে। আমার জন্ম রাজশাহীতে তার অর্থ কিন্তু এই নয় যে রাজশাহী বিভাগের সবগুলো জেলা এবং থানায় আমার জন্ম। বরং রাজশাহী বিভাগের কোনো এক জেলার কোনো এক থানায় আমার জন্ম। তেমনই রাম মন্দির এটি কেবল বিশ্বাসের ওপর
প্রতিষ্ঠিত, তথ্যের ওপর নয়। হিন্দুদের দাবি,১৫২৭ সালে বাবর আফগান
থেকে এসে চিত্তগড়ের রাজপুত রানা সংগ্রাম সিংকে পরাজিত করেন এবং অযোধ্যার পবিত্র ভূমিতে মন্দির ভেঙে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। কিন্তু এই দাবির পক্ষে জোরালো কোনো যুক্তি নেই। তাছাড়া সম্রাট বাবর যে অন্য ধর্মের লোকজনের উপর অত্যাচার করতো বা বাবর তার সময়কালে কোনো মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করেছেন এমন কোনো তথ্য ইতিহাসে নেই॥ মুঘল সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর অমুসলিমদের প্রতি যে,
কতখানি সহনশীল মনোভাব পোষণ করতেন,তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়
তার রচিত একটি গোপনীয় ইস্টিপত্র
বা নির্দেশ নামায়, যেটি তিনি তাঁর পুত্র
হুমায়ুন-এর জন্য রেখে গিয়েছিলেন। এর মূল কপি ভুপাল রাজ্য সরকারের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে। এই দলিলটির বঙ্গানুবাদ নিম্নরূপ-
"তোমার মনকে ধর্মীয় সংস্কার দ্বারা প্রভাবিত হতে দেবে না এবং সকল শ্রেণির মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও ধর্মীয়
আচারাদির প্রতি লক্ষ্য রেখে সকলের
প্রতি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিচার
করবে॥ তুমি কখনো কোনো সম্প্রদায়ের
উপাসনালয় ধ্বংস করবে না এবং সব সময় ন্যায় বিচারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, যাতে রাজার সাথে প্রজাদের সু-সম্পর্ক বজায় থাকে এবং এই ভূ-খন্ডে শান্তি ও সন্তুষ্টি বিরাজ করে। ( তথ্যসূত্র: ভারতবর্ষের ইতিহাস- ড. কিরণচন্দ্র রায়
চৌধুরী)॥"
তাই সহজেই বোঝা যায় সম্রাট বাবার কোনো ভাবেই মন্দির ভেঙে মসজিদ করেননি।
আবার হিন্দুদের এই বাবরি মসজিদ কে রাম মন্দির দাবির পিছনে মসজিদটির নাম
একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে।
"বাবরি মসজিদ হিসেবে অধিক
পরিচিতি পেলেও মসজিদটির আসল নাম মসজিদ-ই-জন্মস্থান। (তথ্যসূত্র: Flint, Colin (2005). The geography of war and peace . Oxford University Press.]"
যেহেতু মসজিদটির নামের সঙ্গেই জন্মস্থানের কথাটি রয়েছে সেহেতু হিন্দুরা এটিকে রামের ঐতিহাসিক জন্মকেই নির্দেশ করে আন্দোলন শুরু করে। স্থাপত্যটির নাম যে মসজিদ-ই-জন্মস্থান
ছিল, তাতেও কিন্তু প্রমাণ হয়
না যে সত্যি সত্যি রাম বলে কেউ ছিলেন, ওখানেই জন্মেছিলেন এবং তাঁর জন্মভূমির মন্দির ভেঙেই মসজিদ হয়েছে। বরং রামায়ন কবে কিভাবে লেখা হয়েছে এটা নিয়েই নানা রকম মতভেদ আছে॥
"বৌদ্ধ দশরথ জাতক অনুসরন
করে হিন্দু রামায়ন রচিত হয়েছে (আনন্দ
বাজার পত্রিকা, সম্পাদকীয়, আগষ্ট ২২,
১৯৯৩ )॥"
‘রামজন্মভূমি মন্দির’ নামে অযোধ্যায় কোনো মন্দির ছিল না। বাল্মীকির রামায়ণসহ হিন্দুদের কোনো ধর্মশাস্ত্রেই
‘রামজন্মভূমি মন্দির’ নামে কোনো স্থাপনার উল্লেখ নেই।
" ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ১৯৭৫ সালে ‘রামায়ণ বর্ণিত স্থানগুলোর
প্রত্নতাত্ত্বিক নির্ণয়’ নামক এক প্রজেক্টের কাজ শুরু করে। বিশেষজ্ঞরা বাল্মীকির
রামায়ণে উল্লিখিত পাঁচটি শহরে অনুসন্ধান চালান।বাবরি মসজিদের পেছনেই ১১ মিটার গভীর গরিখা খনন করা হয়। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অনুসন্ধানের ফলাফলের সারাংশ প্রকাশ করেন। নিবন্ধ দু’টির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, উল্লিখিত
স্থানটি রামের জন্মস্থান নয়। [ তথ্যসূত্র: সাংবাদিক নীলাগুন মুখোপাধ্যায় (সানডে মেইল, ২০ নভেম্বর ১৯৮৮)।
দিল্লি জওয়াহরলাল স্টেট
ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব
বিভাগের ২৮ জন বিশিষ্ট অধ্যাপক এক
যৌথ বিবৃতিতে বলেছিলেন, রাম
মন্দিরের কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ
নেই, বাবরি মসজিদ হচ্ছে ঐতিহাসিক
সত্য।
ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অনুসন্ধানে এই মসজিদে বা তার আশপাশেও মন্দির
তো দূরে থাক অন্য কোনো প্রাচীন স্থাপত্যের
চিহ্ন বা নিদর্শনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের আদালত ধ্বংস- করে-দেয়া বাবরি মসজিদের জমির মাত্র এক তৃতীয়াংশ স্থানের ওপর একটি মসজিদ নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে এবং বিতর্কিত ওই রায়ে বাদবাকি স্থান একটি মন্দির নির্মাণের জন্য খালি রাখতে বলা হয়েছে। ভারতের ২২ কোটি মুসলমান দেশটির সুপ্রিম কোর্টের এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বাবরি মসজিদের পুরো জমি কেবল মসজিদ
নির্মাণের জন্য ফিরিয়ে দেয়ার
দাবি জানিয়ে আপিল করেছেন
যাতে সেখানে কেবল এক আল্লাহরই ইবাদত করা যায়। (তথ্যসূত্র: ৬ ই ডিসেম্বর ২০১৩,রেডিও তেহরান)।"
অবশ্যই ইতিহাসের পেছনেও ইতিহাস থাকে। কিন্তু ১৯৯২ সালে যখন যুক্তি-প্রমাণ ছাড়াই শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর
ভিত্তি করে মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয় তখন ভারতে একটি গণতান্ত্রিক সরকার ছিল,আন্তর্জাতিক আইনও ছিল।
দেখা যায়, আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল, ভারতীয় জনতা পার্টির সমন্বয়ে গঠিত সংঘ পরিবারের
পাশাপাশি সে সময়ের ভারত সরকারের অনেক উচ্চপদস্থ সদস্য এবং হিন্দু
জাতীয়তাবাদী নেতারা বাবরি মসজিদ
ধ্বংসের ঘটনায় জড়িত ছিলেন। বিজেপি নেতা এল কে আদভানি, বিনয় কাটিয়া, মুরালি মনোহর যোশী, বিজয়
রাজ সিন্ধিয়াসহ ৬৮ জন বাবরি মসজিদের ধ্বংসযজ্ঞে প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টে উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করা হয়। এই রিপোর্টে বলা হয়,বাজপেয়ি সরকারের শতভাগ সমর্থন নিয়েই বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছে। রিপোর্টের অংশ বিশেষ মিডিয়ায় প্রকাশ পেলেও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টটি এখনো প্রকাশ করেনি ভারত সরকার।
" ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ
ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেই ভারতের একটি অনুসন্ধানী সংবাদ সংস্থা কোবরা স্টিং অপারেশনে তাই বলেছে॥ ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব, এমনকী ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিমহা রাও-ও জানতেন যে সেদিন বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা হবে।
অনুসন্ধানী সংবাদ সংস্থা কোবরা পোস্ট জানিয়েছে যে বাবরি মসজিদ
ভেঙ্গে ফেলার জন্য রীতিমতো আত্মঘাতী দল তৈরি করা হয়েছিল, দেশীয় অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল আর সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে ডায়নামাইট
দিয়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছিলেন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির নেতারা। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে যেসব
হিন্দুত্ববাদী নেতা-নেত্রী বা স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে, তাঁদের কথাবার্তা গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করে কোবরাপোস্ট দাবি করেছে অনেকদিন
ধরে পরিকল্পনা ছিল মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার। কারা ওই পরিকল্পনার কথা জানতেন, কীভাবে গুজরাটে প্রশিক্ষণ শিবির হয়েছিল সবই ধরা পড়েছে গোপন ক্যামেরায়।দেশের তৎকালীন
প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও
বিজেপি নেতা কল্যাণ সিং – সবাই জানতেন যে সেদিন বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হবে। ( তথ্যসূত্র: অমিতাভ ভট্টশালী,বিবিসি বাংলা, কলকাতা
৪ এপ্রিল ২০১৪)॥"
" করসেবকগণ ১৯৯২ সালে যখন বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে ফেলছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও তার সরকারি বাসভবনে পূজা- অর্চনায় ব্যস্ত ছিলেন। মসজিদের ওপর হামলার খবর পাওয়ার পরই তিনি পূজা শুরু করেছিলেন
(যাতে কাজটি সহজে সম্পন্ন হয়)।
কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে মসজিদ ধ্বংস হওয়ার প্রতীক্ষায় ছিলেন। মসজিদের তৃতীয় গম্বুজটি পতনের পরই
তিনি পূজা ছেড়ে উঠেছিলেন। (তথ্যসূত্র: প্রখ্যাত সাংবাদিক কুলদীপ নায়ারের বই, Beyond the Lines)॥"
" তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভারতে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস নিয়ে আগে থেকেই সবই জানতেন দেশটির ক্ষমতাসীন দলের কংগ্রেস নেতা অজিত পাঁজা।( অনলাইন বাংলা .নেট, ৫ ই এপ্রিল ২০১৪)।"
খুব সহজেই বোঝা যায় বাবরি মসজিদ ভারতের হিন্দুরা পরিকল্পনা করে ভেঙে ছিলো। ভারতের এইসব জঘন্য হিন্দুদের মুখে আমার থুতু ফেলতেও ঘৃণা হয়!
২| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭
আলোকিত আধারে বলেছেন: একমত.......
৩| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭
রাহাত লতিফ তৌসিফ বলেছেন: বাংলাদেশেও অনেক হিন্দু লোক ব্লগে ফেসবুকে ক্রমাগত মহানবী (সা) কে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে যাচ্ছে। এরা মুসলিম ছদ্মনাম নেয় আর নাস্তিকের অভিনয় করে। সব হিন্দু ভাই খারাপ নয়, কিছু সংখ্যক লোকই এই অপকর্মে জড়িত।
জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার। কেননা সাম্প্রদায়িকতার সুচনা বা উৎপত্তি এখান থেকেই হয়।
৪| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫
মুদ্দাকির বলেছেন: মুসলমানদের উচিৎ না অন্য কোন ধর্মের কারো কোন ক্ষতি করা, এগুলো মুসলমানের কাজ না!!!!!!
৫| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:০২
আমি তুমি আমরা বলেছেন: জানলাম।
৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৮
বুবলা বলেছেন: অযোধ্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের। বিতর্কিত জমির মালিকানা পেল রাম জন্মভূমি ন্যাস। কিন্তু, আপাতত বিতর্কিত ওই জমির তত্ত্বাবধানে থাকবে একটি ট্রাস্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ রায়দানের সময় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) রিপোর্টের উপর। যারা প্রমাণ দেখিয়েছিল অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে দেবদেবীর অস্তিত্ব ছিল।
১৯৭৬-৭৭ সালে এএসআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল বিবি লালের সঙ্গে প্রথমবার এই জমির খননে অংশ নিয়েছিলেন এএসআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর কেকে মহম্মদ। সেই দলে একমাত্র মুসলিম সদস্য ছিলেন মহম্মদই। তিনিই জানান, এই জমিতে মন্দির ছিল, তা প্রমাণিত। এরপর ২০০৩ সালে এলাহাবাদ হাই কোর্টের লখনউ বেঞ্চের নির্দেশে দ্বিতীয়বার খননকার্য হয়। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরবর্তীকালে সেই সময় রাডার (গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রাডার) ব্যবহার করে চলে গবেষণা। সেখান থেকে আবিষ্কৃত সব জিনিসের ভিডিও করে রাখা হয়। প্রথম খননের মতো এবারও এই জমিতে মন্দিরের অস্তিত্ব প্রমাণ হয়ে যায়।
এই সংক্রান্ত মোট সাতটি প্রমাণ তুলে ধরেছেন কেকে মহম্মদ। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই সাতটি প্রমাণ।
১. স্তম্ভ, ভীত এবং কলসি:
আমরা ভিতরে ঢুকে দেখি মসজিদের ১২টি স্তম্ভ রয়েছে। সেগুলি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকেই তৈরি করা হয়েছিল। দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতকের মন্দিরগুলির ভীতে পূর্ণ কলস বা কলসি দেখা যেত। এগুলি আসলে ‘ঘড়া’র স্থাপত্য। যেখান থেকে গাছপালা বেরিয়ে থাকত। হিন্দু মতে সেটি ছিল সম্বৃদ্ধির প্রতীক। এটি অষ্ট মঙ্গল চিহ্ন হিসেবেও পরিচিত ছিল। বাবরি মসজিদের ভিতরও এই ধরনের বস্তু দেখা গিয়েছিল। দেবদেবীর খুঁজে না পাওয়া গেলেও অষ্ট মঙ্গল চিহ্ন ছিল। অর্থাৎ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকেই যে স্তম্ভ তৈরি, তা প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়।
২. টেরাকোটা ভাস্কর্য:
একাধিক টেরাকোটা ভাস্কর্য সেখানে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। যদি এটি শুধুই মসজিদ হত, সেক্ষেত্রে কখনওই মানুষ বা জন্তুর বর্ণনা সেখানে থাকত না। কারণ ইসলাম মতে তা ‘হারাম’। অর্থাৎ সেখানে মন্দির ছিল। কিন্তু বিবি লাল এই বিষয়গুলিকে তুলে ধরেননি। কারণ আমাদের খননের লক্ষ্য ছিল সেই এলাকার সংস্কৃতিক ক্রম বোঝা।
৩. আরও স্তম্ভের সন্ধান:
দ্বিতীয় খননে পঞ্চাশটিরও বেশি স্তম্ভের ভীত পাওয়া গিয়েছিল। মোট ১৭টি সারিতে এই স্তম্ভ পাওয়া গিয়েছিল। এই কাঠামোই প্রমাণ করে দ্বাদশ শতকে বাবরি মসজিদের নিচে মন্দির ছিল।
৪. মন্দির প্রণালী:
মন্দির প্রণালীও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। দেবদেবীর স্নানের জন্য যে জল ব্যবহৃত হয় তা এই প্রণালীর মধ্যে দিয়েই বয়ে যায়। কুমিরের মুখের মতো এই প্রণালী মকর প্রণালী হিসেবেও পরিচিত। কুমির হল গঙ্গার প্রতীক। গর্ভ গৃহে প্রবেশের আগে একপ্রান্তে এক মহিলা কুমিরের উপর দাঁড়িয়ে থাকে এবং অন্যদিকে আরেক মহিলাকে কচ্ছপের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। অর্থাৎ গঙ্গা-যমুনা বা সরস্বতীতে স্নান করে তবেই ঈশ্বরের গৃহে আপনি প্রবেশ করেন। হিন্দু মতে এই স্নানেই পাপ ধুয়ে যায়। এই মকর প্রণালীও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
৫. মন্দির কলস ও শিখারা:
মন্দিরের উপর কলসের ঠিক নিচে যে স্থাপত্য থাকে, তা অমলকা নামে পরিচিত। উত্তর ভারতের মন্দিরে এর নিচে গ্রীবা ও শিখারার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই স্থান থেকেও তেমনই শিখারা খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।
৬. আরও টেরাকোটার জিনিস:
২৬৩টি টেরাকোটা দেবদেবীর পাশাপাশি পুরুষ ও মহিলার শরীরের কাঠামোও পাওয়া গিয়েছে। এটি শুধু মসজিদ হলে এসমস্ত বস্তু পাওয়া সম্ভব হত না।
৭. বিষ্ণু হরি শীলা ফলক:
এসব ছাড়াও বিষ্ণু হরি শীলা ফলক লিপিও জমির দুই জায়গা থেকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। মসজিদ ধ্বংসের পর খননকাজে তা উঠে আসে। এখান থেকে পাওয়া তথ্যদিতে প্রমাণিত এখানে ভগবান বিষ্ণুর মন্দির ছিল। যিনি বালিকে বধ করেছিলেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:০১
ভুয়া প্রেমিক বলেছেন: এইসব ওদের পূরাতন অভ্যাস। আমাদের উচিত একত্র থাকা এবং ওদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সচেতন থাকা