নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোকিত আধারে

আমি নিরপেক্ষ নই সত্যের পক্ষে...................

আলোকিত আধারে › বিস্তারিত পোস্টঃ

মসজিদ নির্মাণে সরকারী নীতিমালা আবশ্যক

০১ লা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০

"নবীর শিক্ষা করো না ভিক্ষা মেহনত করো।" কবি গোলাম মোস্তফার এই লাইনটি নিশ্চয় মানুষকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে নিরুসাহিত করে। কেননা কবি গোলাম মোস্তফা ভাল করেই বুঝেছিলেন যে, ইসলামে ভিক্ষাবৃত্তির কোন স্থান নেই। এছাড়া ইসলাম কাউকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে উৎসাহিত করে না। মানুষের একটি দুর্বল দিক হচ্ছে ধর্ম। যা অনেক মানুষ তার জীবনের চেয়ে বেশি ভালবাসে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই ধর্মকে এক ধরনের মানুষ ভিক্ষাবৃত্তিমূলক ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছে। অনেকদিন থেকেই দেখে আসছি মসজিদ তৈরির কথা বলে মহাসড়কে বাসে ট্রেনে উঠে অনেকে চাঁদা তুলেন। এই চাঁদা অনেকটা ভিক্ষার মতো। মসজিদের একতলা কমপ্লিট হয়েছে ছাদ হয়নি কিংবা এই রকম নানা কারণ দেখিয়ে চাঁদা তোলা অব্যাহত আছে। মসজিদের এক তলাও কমপ্লিট হয়নি অথচ তারা দশ বছর ধরে চাঁদা তুলে আসছে। এমনও না যে জমি কিনে মসজিদ বানানো হচ্ছে, সেই জমিতে আগে থেকেই মসজিদ ছিলো, আধা পাকা ছিলো এই আর কি। প্রথম প্রথম তারা রশিদ নিয়ে চাঁদা তুলতেন, এরপর একটা করে হ্যান্ডবিল বিলি করতেন, এখন তারা একেবারে মানুষের হাতে ধরে টাকা দাবী করছে। একটা মসজিদের জন্য প্রতিদিন চার'শ টাকা করে পায়, তাহলে মাস শেষে বারো হাজার টাকা পাচ্ছে। আরো কিছু মিলিয়ে বছরে প্রায় দের লাখ টাকা! আর দশ বছরে ১৫ লাখ টাকা। টুপি মাথায় দিয়ে টাকা ইনকামের সহজ রাস্তা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্মের প্রতি গুরুত্বারোপ করে এরশাদ করেন। "হালাল জীবিকা উর্পাজন করা সর্বাপেক্ষা বড় কর্তব্য। [ ১৯৮০, সংস্ক. ২ পৃ.-১২ আবু বকর আহমাদ ইবনু হুসাইন আল-বায়হাকী]"



রাজনৈতিক দলগুলোর মতো এরাও ধর্মকে ব্যবসার পুঁজি হিশেবে ব্যবহার করছে। ধর্মানুভূতি রক্ষক প্রশাসনের উচিত তাদের কর্মকান্ড মনিটর করে ব্যবস্থা নেওয়া। স্থানীয় মুসল্লিদের নামাজের অসুবিধার কথা বলে সুরে সুরে ভিক্ষা করে॥ "দানকারীর পিতা-মাতা আল্লা সুখে রাইখো কবরে, নুরের টুপি মাথায় দিয়া উঠাইও রোজ হাশরে।" এমন কোন হাদিসের তথ্য কি এ পর্যন্ত কেউ শুনেছেন যে, দান করলে তার পিতা- মাতাকে নূরের টুপি মাথায় দিয়ে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে? নূরের টুপি কেবল সে সকল পিতা-মাতার জন্যই প্রযোজ্য, যার সন্তান হাফেজে কুর’আন, এবং সে নিজেও একজন ইমানদার। কোন লোকের নিজের যদি ইমান না থাকে, তাহলে তার সন্তানের হাফেজ হওয়া তার কোন কাজেই আসবে না। সন্তানের আমলে যদি পিতার বেহেশ্‌ত হতো, তাহলে ইব্রাহীম (আঃ) তার পিতার জন্য দোয়া করে তাকে বেহেশতে নিয়ে যেতে পারতেন। ফালতু কথা বলে ধর্মের দোহাই দিয়ে চাঁদা উঠানো প্রতারণারই নামান্তর মাত্র। আসলে যারা চাঁদা উঠানোর কাজে নিয়োজিত থাকে, তাদের অনেকে থাকে পেশাদার, আবার কেউ কেউ থাকে ধর্মের লেবাছে নিতান্তই অজ্ঞ ব্যক্তি। তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য হল চাঁদা উঠানো। সেখানে কি বলা হল, তার অর্থই বা কি হতে পারে, এদিকে খেয়াল না দিয়ে বরং বিভিন্ন করুণ সুরে মানুষকে আকর্ষণ করে টাকা কামানোই হল মুখ্য উদ্দেশ্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "ভিক্ষাবৃত্তি হচ্ছে ক্ষতস্বরূপ;এর দ্বারা মানুষ তার মুখমণ্ডলকে ক্ষতবিক্ষত করে”। (সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত;সুনান আবু দাঊদ হাদিস ১৬৩৫)। বৈদিক যুগে বা তারও পরবর্তী সময়ে সমগ্র ব্রাহ্মণগণ “ভিক্ষাং দেহি” বলে গৃহস্থের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বাজখাঁই কণ্ঠে চিৎকার পাড়ত। এরপর পান থেকে চুন খসলেই অভিশাপ-অভিসম্পাত। ভিখারি ব্রাহ্মণদের জীবনই শুরু হয় ভিক্ষাগিরি করে। তারপর সারাজীবন যাতে ধর্মের নামে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন নির্বাহ করা যায় তারই একটা ফন্দি-ফিকির। দান আর ভিক্ষা এক কথা নয় এটা বুঝে নেওয়া দরকার। মন্দিরে সাহায্য করুন, ভগবান আপনার মঙ্গল করবেন। সব ভিখারিই ধার্মিক হয় ! তাই ধর্মের নামে ভিক্ষা করে। কেউ আল্লাহর বান্দা, কেউ ভগবানের দাস। হিন্দুধর্মে,বৌদ্ধ ধর্মে ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ না-হলেও ইসলাম ধর্মে কিন্তু নিষিদ্ধ। উইরাপোল সুখফল নামের বৌদ্ধ ভিক্ষুর থাইল্যান্ডের উবোন রাচাথানি প্রদেশের খুব গরিব ঘরে জন্ম। কিন্তু খুব কম বয়সে বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সুখফল বদলে ফেলেন জীবন। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে তাঁর অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি। উইরাপোল সুখফল কমপক্ষে ৩ কোটি ২০ লক্ষ ডলারের মালিক! ৪১টি ব্যাংক হিসাব আছে তার নামে। ২০০৯ থেকে ২০১১- এই দু বছরে ২২টি মার্সিডিজ বেঞ্জ কিনেছেন উইরাপোল। ধর্ম প্রচার এবং মন্দির প্রতিষ্ঠার কথা বলে অর্থ সংগ্রহ করে হয়েছেন কোটি কোটি টাকা মালিক। আর এই ভাবেই যুগে যুগে সব ধর্মেই ধর্ম ব্যাবসায়িরা ব্যাবসা করে যাচ্ছে।



"মসজিদ নির্মাণে সরকারী নীতিমালা আবশ্যক,যেই নীতিমালায় মসজিদের নামে চাঁদাবাজি করা যাবে না। কারণ মুসলিম দেশে ভিক্ষা করে হারাম হালাল মিশ্রিত অর্থ দিয়ে মসজিদ নির্মাণ করা অন্যায়, পাপ।"

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:০৪

নিজাম বলেছেন: সহমত। ভিক্ষাবৃত্তি করে, সরকারী জায়গা দখল করে, অন্য কোন সরকারী কোম্পানী বা অন্যের জায়গা দখল করে বা মালিকের বিনা অনুমতিতে মসজিদ নির্মাণ কাজ বন্ধ হোক। শাস্তি উল্লেখ করে আইন করা হোক। ইতোমধ্যে নির্মিত এজাতীয় মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়া হোক। নতুবা এমন কাজ করতে অনেকেই উৎসাহিত হবে।

২| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:০৩

আলোকিত আধারে বলেছেন: "মসজিদ নির্মাণে সরকারী নীতিমালা আবশ্যক,যেই নীতিমালায় মসজিদের নামে চাঁদাবাজি করা যাবে না। কারণ মুসলিম দেশে ভিক্ষা করে হারাম হালাল মিশ্রিত অর্থ দিয়ে মসজিদ নির্মাণ করা অন্যায়, পাপ।"

৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪০

ইমরান আশফাক বলেছেন: খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট, সহমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.