![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভারতের নিম্নমানের কাপড়ে ছেয়ে গেছে বাংলাদেশের ঈদ বাজার। বাহারী নাম দিয়ে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এ সব পোশাক। শুধু চাকচিক্যের মোহে পড়ে তরুণ প্রজন্ম ঝুঁকে পড়ছে এসব কাপড়ের দিকে। ঈদকে সামনে রেখে ব্যাপক হারে অবৈধ পথে আসছে ভারতের নিম্নমানের পোশাক। গুণে কিংবা মানে নয় শুধু ভারতীয় তারকাদের নামে এসব পোশাকের নামকরণ করায় বিক্রি হচ্ছে ব্যাপক। এর ফলে দেশীয় পোশাক শিল্প মুখ থুবড়ে পড়ছে। যদিও সারা বিশ্বে বাংলাদেশী পোশাকের কদর আছে॥ গুণে ও মানে সমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও দেশী পোশাক বিক্রির পরিমাণ কম। চাকচিক্যের মোহে নিজ দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া হবে সবচেয়ে বেশি আত্মঘাতী। দিন তিনেক আগে সৈয়দপুরপুর থেকে খুলনা আসার সময় যা দেখলাম তাতে মনে হচ্ছে ঈদ উপলক্ষে চোরা কারবারিদের মহা উৎসব চলছে॥ সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা "রুপসা এক্সপ্রেস " ট্রেনে অবাধে আসছে লক্ষ লক্ষ টাকার ভারতীয় কাপড়। অবাক
করা ব্যাপার হলো, হিলি সিমান্তে আসলে "রুপসা এক্সপ্রেস " ট্রেনের গতি কমে যায় আর সেই সুযোগে চোরাকারবারিরা লাফিয়ে লাফিয়ে মালপত্র নিয়ে ট্রেনে উঠে, আর তাতেই বোঝা যায় ট্রেনের কর্মচারীরাও জড়িত আছে এসব কাজে।
ভারতীয় পোশাকে ট্রেনের টয়লেট গুলো ভর্তি আর পুলিশগুলোকে দেখলে মনে হয় ঘুস খাওয়ার জন্যই বোধহয় তাদের জন্ম হয়েছে॥ আর এইসব ভারতীয় পোশাক নিয়ে বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে অবাধে নেমে যাচ্ছে চোরাকারবারিরা। জমজমাট ভাবে চলছে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ভারতীয় চোরাই পণ্যের ব্যবসা। এসবের মধ্যে রয়েছে শাড়ি, কাপড়, কসমেটিকস, ফেনসিডিল, জিরা, হিরোইনসহ বিভিন্ন পণ্য। ট্রেনের অসাধু কর্মচারী এবং পুলিশ টাকা খেয়ে অবাধে ছেড়ে দিচ্ছে এইসব ভারতীয় পন্য। "রুপসা এক্সপ্রেস " ট্রেন যেনো চোরাচালানিদের মিলনমেলা। পুলিশ এবং ট্রেনের অসাধু কর্মচারী প্রকাশ্যে টাকা খাচ্ছে চোরাকারবারিদের কাছ থেকে॥ "রুপসা এক্সপ্রেস " ট্রেন নিয়ে পত্র পত্রিকায় কোনো লেখালেখি নেই সেই সুযোগে চোরাকারবারিরা আরো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে॥ আর ঈদ উপলক্ষে প্রচুর ভারতীয় শাড়ি আসছে "রুপসা এক্সপ্রেস " ট্রেন দিয়ে যার অধিকাংশই চলে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন মার্কেটে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শুরু হয়ে গেছে মুসলমানদেন ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আমেজ। নতুন পোশাক ছাড়া যেন ঈদের আনন্দ জমে না। ঈদ সামনে রেখে ডিজাইনাররা বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক তৈরী করে। ব্যবসায়ীরাও তালাশ করতে থাকে আনকমন ডিজাইনের পোশাক সংগ্রহ করতে। তাদের লক্ষ্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে বেশি মুনাফা করা। রাজধানীর মার্কেট গুলো দখল করে নিয়েছে ভারতীয় পোশাকে। ভারতের নিম্নমানের থ্রি-পিস বাহারী নাম দিয়ে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ভারতীয় নায়িকাদের নামে বিভিন্ন পোশাকের চাহিদা বেশি ক্রেতাদের কাছে। বিশেষ করে তরুণীরা এ পোশাক কিনতে ঝুঁকছে বেশি। বাংলাদেশের উন্নত মানের কাপড় বিক্রি কম হচ্ছে শুধু নামের কারণে। ঈদে ভারতীয় বিভিন্ন তারকাদের নামে পোশাক গুলোর দিকে বেশি ঝুকছে তরুণীরা। ঈদের বাজারে শাড়ী ও থ্রি-পিসের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। দেশীয় কাপড়ের থ্রি-পিসের চেয়ে ভারতীয় বিভিন্ন আইটেমের থ্রি-পিস এবার বাজার দখল করে নিয়েছে। হিন্দি ছবি ও বাংলা সিরিয়ালের নামানুসারে এসব থ্রি-পিস ক্রেতাদের অনেক পছন্দ। এসব থ্রি-পিসের দামও বেশি। ভারতীয় সংস্কৃতি ব্যাপক হারে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় একদিকে যেমন দেশী সংস্কৃতির কদর হারাতে বসেছে। তেমনি ভারতের নায়িকারা যেসব পোশাক পরছে তাদের দেখে তরুণ প্রজন্ম অনুকরণ করছে ফলে ভারতের কাপড় নিম্নমানের হলেও বেড়ে গেছে চাহিদা। এর ফলে হাজার হাজার কোটি টাকার মুনাফা চলে যাচ্ছে ভারতে। সরকার এ বিষয়গুলো বিবেচনা না করলে খুব দ্রুত বাংলাদেশের অর্থনীতি ভারতের হাতে চলে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবো আমরা।
দেশের টাকা বিদেশীদের হাতে তুলে না দিয়ে দেশপ্রেম ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে দেশী পোশাকেই ঈদ উদ্যাপন করাটাই হবে আমাদের জন্য সবচেয়ে গর্বের॥ আর "রুপসা এক্সপ্রেস " ট্রেনে চোরাচালান বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি॥
©somewhere in net ltd.