![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের মোট ৫১.০ মিলিয়ন শ্রম শক্তির (১৫ এর উপর বয়স) প্রায় ৭ মিলিয়ন জনশক্তি বিদেশে কর্মরত আছে যারা বছরে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করে থাকে। এই শ্রম শক্তির প্রায় ৮ মিলিয়ন তৈরি পোশাক রফতানি কারখানায় কর্মরত, যাদের প্রায় ৮০ শতাংশ নারী। বাংলাদেশে ১৯৯১-৯২ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৮.৮ শতাংশ, ২০০৫ সালে এটা ছিল ৪০.০ শতাংশ আর ২০১০ সালে এটা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে সাধারণ দারিদ্র্য ২৮.৬ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্য ১৯.৫ শতাংশ। যাদের প্রতিদিন আয় ২ মার্কিন ডলারের নিচে তাদের দরিদ্র আর যাদের প্রতিদিন গড় আয় ১ মার্কিন ডলারের নিচে তাদের চরম দরিদ্র বিবেচনা করা হয়। শ্রম শক্তির ৫.১ শতাংশ বেকার যার মধ্যে নারী ৭.৫ শতাংশ এবং পুরুষ ৪.৩ শতাংশ (বিবিএস, ২০০৮)। শ্রমশক্তির প্রবৃদ্ধির হার ২.৭ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি বছর শ্রম বাজারে প্রবেশ করছে ১.৩৭ মিলিয়ন মানুষ। শ্রম শক্তির ২৮.৭ শতাংশ জনশক্তি আবার পূর্ণকালীন কর্মে নিয়োজিত নয় (Under Employed) অর্থাৎ হয় তারা যোগ্যতার চেয়ে নিম্ন কাজে নিয়োজিত অথবা বছরের পূর্ণ সময় তাদের কাজ থাকে না। যারা কর্মরত আছে তাদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ বা (বুদ্ধি বৃত্তি নির্ভর বা White Collar Job) পেশায় নিয়োজিত, আর বাকিরা দৈহিক শ্রম নির্ভর পেশায় (Blue Collar Job) নিয়োজিত আছে। তাই সহজেই বোঝা যায় আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ কতটা দরিদ্র। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জনগণের অর্থে চলেই সরকার, সরকারে অর্থে জনগণ চলে না আর যদি তাই হয় তবে জনগণের চাওয়া ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত জন প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠানো হয় দেশ, দেশের মাটি ও দেশের অসহায় মানুষের জীবন মানের উন্নয়নের জন্য কথা বলতে, প্রয়াত অথবা সাবেক কোন নেতা নেত্রীকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অশ্লীল বাজে সমালোচনা করার জন্য নয়। রাষ্ট্রের ৩০০ এমপি-কে জনগণ সংসদে পাঠায় দেশ ও জনগণ উপযোগী আইন তৈরি করার জন্য। তারা যদি সেখানে বসে গম ভাগ করা, রাস্তা মেরামতের বখরা নেওয়া আর অশ্লীল বাজে সমালোচনা এই জাতীয় কাজ করে তাহলে জনগণের কাছে দেওয়া তাদের কমিটমেন্ট তারা রাখছে না। তারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে না। তাদের নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কারণ তারা নীতিগত ভাবে জনগণের দেখ ভাল করার শপথ নিয়েছে। বিগত নবম সংসদে সদস্যরা নির্ধারিত সময়ের পরে সংসদের উপস্থিত না হওয়ায় কোরাম সংকট হয়েছে ১৯টি অধিবেশনে ২২২ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট। যা প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৩২ মিনিট। সংসদ পরিচালনা করতে প্রতি মিনিটে গড়ে ৭৮ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কারণে এই ২২২ ঘন্টায় মোট অপচয় হয় ১০৪ কোটি টাকা। সংসদ সদস্য হিসেবে একজন এমপি মাসিক ভিত্তিতে সম্মানী বাবদ ২৭ হাজার, আপ্যায়ন ৩০ হাজার, এলাকা ভাতা সাত হাজার ৫০০, গাড়ি বাবদ ৪০ হাজার টাকা সহ নানান ভাতা মিলে প্রায় এক লাখ টাকার বেশি সুবিধা ভোগ করেন। এ হিসাবে তারা এক কার্য দিবসের জন্য তিন হাজার ৫৫৮ টাকা ভোগ করেন। কিন্তু নবম সংসদে সরকার দলীয় ৬০ শতাংশ সংসদ সদস্য সংসদে দুই তৃতীয়াংশ কার্য দিবস উপস্থিত না থেকেই সম্পূর্ণ ভাতা গ্রহণ করেছেন। তাহলে জনগণের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা থাকলো কোথায়?
আবার, দশম সংসদ অধিবেশনে ১৭ ঘণ্টা ৭ মিনিটের কোরাম সঙ্কট হয়েছে। যার অর্থমূল্য দাঁড়ায় ৮ কোটি ১ লাখ টাকা। টিআইবির প্রতিবেদনে পর্যববেক্ষণ তুলে ধরে বলা হয় অষ্টম ও নবম সংসদ অধিবেশনে যথাক্রমে গড় কোরাম সঙ্কট ছিল যথাক্রমে ৩৭ ও ৩২ মিনিট। অষ্টম থেকে দশম সংসদের প্রথম অধিবেশনের গড় কোরাম সঙ্কট তুলনামূলক ভাবে কিছুটা হ্রাস পেলেও এ ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। টি আই বির প্রতিবেদনে সংসদ চালানোর খরচের হিসাব দিয়ে বলা হয়, সংসদ অধিবেশন পরিচালনা করতে প্রতি মিনিটে ব্যয় হয় ৭৮ হাজার টাকা। এত বিশাল পরিমাণ টাকা ব্যয় করে সংসদের মূল কাজ আইন প্রণয়নের জন্য ব্যয় হয় মাত্র ১.৮ শতাংশ সময়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় ব্যয় হয় ৫২.৩ শতাংশ সময়। এ সময়টুকুর বেশির ভাগই জাতীয় সম্যস্যা গুলোকে রাজনীতিকরণ করে দলীয় প্রশংসা ও নবম সংসদের বিরোধীদের সমালোচনা করা হয়। তাছাড়া এই কয়েক বছরে 'সংসদের' বাজেট বেড়েছে কয়েকগুণ। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে সংসদের বাজেট ছিল ১৯২ কোটি টাকা। পরবর্তীতে এ বাজেট সংশোধন হয়ে ১৯৪ কোটি টাকা করা হয়। আর ২০১১-১২ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল মাত্র ১২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৩ বছরে সংসদের ব্যয় প্রায় শতভাগ বেড়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের অনুন্নয়ন খাতে ১৯৬ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে সংসদের ১৯২ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের মধ্যে অনুন্নয়ন খাতে ১৫৮ কোটি এবং উন্নয়ন খাতে ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। যা আগের অর্থ বছরের বাজেটের চেয়ে ১২ কোটি ৭১ লাখ টাকা অর্থাৎ প্রায় ৭ শতাংশ বেশি। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে জাতীয় সংসদের বাজেট ছিল ১৪৫ কোটি টাকা। যা ছিল এর আগের বছরের বাজেটের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে অনুন্নয়ন খাতে ১৩৫ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ৪৪ কোটি টাকা। ২০১১-১২ অর্থ বছরে এখানে বরাদ্দ ছিল মাত্র ১২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অনুন্নয়ন খাতে ১শ' কোটি এবং উন্নয়ন খাতে ২০ কোটি। সংসদের মোট বরাদ্দের প্রায় চারগুণের বেশি ব্যয় হয় অনুন্নয়ন খাতে। আগেই বলেছি যে সংসদ পরিচালনায় প্রতি মিনিটে ব্যয় হয় ৭৮ হাজার টাকা॥ হ্যা এক মিনিটে ৭৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়, তবে প্রতি মিনিটে এতো টাকা ব্যয় সেই এসি রুমের উপর মহলে বসে থাকা মানুষ গুলোর জন্য কোন মাথা ব্যথার কারণ নয়, আর তারা এ বিষয়ে কখনো ভাবেননা এটা আমাদের করোরই অজানা নয়। তবে শিরোনামে যেটা বলে এসেছি ১মিনিটেই ধ্বংস হয়ে যায় ১৫ টি পরিবারের রুজি রোজগারের অর্থ। এখানে যদি খেয়াল করা যায় প্রতি মিনিটে সংসদের ব্যয় ৭৮ হাজার টাকা অর্থ্যাৎ এই টাকা দিয়ে দেশের অসহায় পল্লীর কমপক্ষে ১৫ টি পরিবার একটি মাস খুব ভালো ভাবেই তাদের আহার ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু আমাদের মহান সমালোচক নেতারা সেই ১৫ টি পরিবারের আহারকে ১ মিনিটের সমালোচনাতেই গলা টিপে সুন্দর ভাবে হত্যা করছেন। প্রতি মিনিটে ৭৮ হাজার টাকা করে ধরে ১ ঘন্টার ব্যয় হয় ৪৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। তাহলে ৬ ঘন্টায় ব্যয় হয় ১৬ কোটি ৮৪ লক্ষ আশি হাজার টাকা। যে অর্থ দিয়ে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের পুরো একটি মাস খুব সচ্ছল ভাবেই চলে যাবে আহার নিদ্রা। অথচ সেই মহান দেশদরদী নেতাদের একবারো এই বিশাল পরিমান অর্থ ব্যয়ের দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। তাহলে আমরা লক্ষ করলাম এক দিনে অধিবেশনেই প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের এক মাসের অন্ন ধ্বংস করা হচ্ছে অশ্লীল, বাজে এবং অপ্রাসাঙ্গিক সমালোচনার মাধ্যেমে। সংসদে বিভিন্ন দলগুলোর মধ্যে নানা বিষয়ে কলহ থাকলেও বিভিন্ন সময়ে নিজেদের বেতন-ভাতা, শুল্কমুক্ত গাড়ি, সরকারি অর্থে বিদেশ সফর, আয়কর না দেওয়া ইত্যাদি প্রশ্নে নাটকীয় ভাবে সবাই মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ। সংসদ বর্জন, সরকারি ও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে পরস্পরকে উদ্দেশ করে কটূক্তি,প্রয়াত নেতা-নেত্রীদের নিয়ে অহেতুক ও অনাবশ্যক সমালোচনা, কটূক্তি ইত্যাদি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। সাধারণ জনগণের রক্ত পানি করা টাকায় ভালোই চলছে সংসদ,ভালোই আছেন মন্ত্রী এমপিরা, শুধু ভালো নেই আমরা।
২| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৩৭
আলোকিত আধারে বলেছেন: সচেতনহ্যাপী - ধন্যবাদ ।
৩| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৪৬
এস, এম, শফি কামাল বলেছেন: লেখাটি অনেক তথ্যবহুল, যা মানুষের জানার দরকার বা জানানোর দরকার। তবে ভাই আপনাকে নিয়ে হয়তো হাসবে তারা, যাদের নিয়ে লিখলেন। বলবে . .বোকা ছেলে, কিছ্ছুই বোঝে না..। আর আমার মনে হয় আপনি বিদেশ থাকেন।
৪| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৩২
আলোকিত আধারে বলেছেন: এস, এম, শফি কামাল ভাই মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৪৮
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: সাধারণ জনগণের রক্ত পানি করা টাকায় ভালোই চলছে সংসদ,ভালোই আছেন মন্ত্রী এমপিরা, শুধু ভালো নেই আমরা--একমত। এটাই আমাদের নিয়তি। নাকের বদলে নরুন পেয়েই আমরা খুশী,তাই না??