নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোকিত আধারে

আমি নিরপেক্ষ নই সত্যের পক্ষে...................

আলোকিত আধারে › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২৫

(এক)

ওস্তাদ ও তার শিষ্য দেশ ভ্রমণে বেরিয়েছেন। ভ্রমণ করতে করতে আজব এক দেশে উপস্থিত। ঐ দেশে সব জিনিসের দাম সমান। সবকিছুর দাম এক টাকা। যেমন দুধের দাম এক টাকা লিটার, ঘিও এক টাকা লিটার। মধুর দাম এক টাকা লিটার, এমনকি কেরোসিনও এক টাকা লিটার। ওস্তাদ ও শিষ্য বেশ কিছুদিন থাকল ঐ আজব দেশে। একদিন ওস্তাদ তার শিষ্যকে বলল, আমি আর এই দেশে থাকব না। শিষ্য তো অবাক। কেন? কেন?

- যে দেশে সব জিনিসের মূল্য (এমনকি জীবন) একই মাপের হয়, সে দেশে আর যাই হোক ন্যায় বিচার নেই।

শিষ্য ওস্তাদের কথাকে মূল্য না দিয়ে সস্তায় ভালো ভালো জিনিস কিনে খাওয়া শুরু করল। অল্পদিনেই তার ভঙ্গুর স্বাস্থ্য নাদুস-নুদুস অবস্থায় রূপ নিল।

(দুই)

রাজ দরবারে অভিযোগ এক বাড়ির দেয়াল ভেঙে পড়ে এক বৃদ্ধ নিহত। বৃদ্ধের আত্মীয়-স্বজনেরা উপযুক্ত বিচারপ্রার্থী, রাজার নির্দেশে বাড়িওলাকে ধরে আনা হলো। রাজা হুকুম দিলেন তোমার ফাঁসি। বাড়িওয়ালা কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, হুজুর যে মিস্ত্রি এই দেয়াল তৈরি করেছে সব দোষ তার। এবার মিস্ত্রিকে ধরে আনা হলো। রাজ দরবারে এবার রাজার হুকুম মিস্ত্রির ফাঁসি। মিস্ত্রি দোষ দিলেন তার যোগালিকে, সে দেয়াল তৈরির মসলা মেশাতে নয়-ছয় করায় দেয়াল ভেঙে পড়েছে। রাজা হুকুম দিলেন যোগালির ফাঁসি। যোগালিকে ধরে আনা হলো, যোগালি বলে দেয়াল তৈরিতে কোনো গরমিল হয়নি। তবে এক মাহুত প্রতিদিন তার হাতি নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসা করায় দেয়াল ভেঙে পড়েছে, ‘ধরে আনো মাহুত কে’। মাহুতকে রাজা বললেন, তোমার হাতি যাওয়া-আসায় দেয়াল ভেঙে পড়ে মানুষ মরেছে, তোমার ফাঁসি। মাহুত বলল, আমার হাতির কোনো দোষ নেই, ওই রাস্তায় প্রতিদিন এক মহিলা নূপুর পায়ে যাওয়া-আসা করে। নূপুরের শব্দে হাতি ভয় পেয়ে জোরে জোরে হাঁটায় দেয়াল ভেঙে পড়েছে। দোষ ওই মহিলার। ধরে আনা হলো মহিলাকে । বলা হলো ‘তোমার নূপুরের শব্দে হাতি ভয় পেয়ে রাস্তায় দৌড়াদৌড়ি করায় দেয়াল ভেঙে পড়ে মানুষ মারা যাওয়ায় তোমার ফাঁসি। মহিলা বলল, আমার কোনো দোষ নেই। সব দোষ ওই স্বর্ণকারের, যিনি এই নূপুর তৈরি করেছেন। স্বর্ণকার নূপুরে খাদ বেশি দেয়ায় নূপুর বেশি শব্দ করে। ধরা হলো স্বর্ণকারকে। বলা হলো তুমি নূপুরে বেশি খাদ দেয়ায় নূপুর বেশি শব্দ করে, ফলে নূপুরের শব্দে হাতি জোরে দৌড়ায়। হাতি জোরে দৌড়ানোয় দেয়াল ধসে পড়ে মানুষ মারা যাওয়ায় তোমার ফাঁসি। স্বর্ণকার ছিল রোগা পাতলা ধরনের লোক। ফাঁসির গোল দড়ি তার গলায় আটকে না। এবার রাজার হুকুম যার গলায় দড়ি ভালো আটকায় তার ফাঁসি।


(তিন)

শিষ্য সস্তায় ভালো খাবারের খোঁজে বাজারে বাজারে ঘুরে বেড়ায়। রাজ দরবারের লোকজন সন্দেহজনক ভাবে চলাফেরার দায়ে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। এবার রাজার হুকুম, ওই ফাঁসির রায় তার ওপর কার্যকর হোক। শিষ্যের ফাঁসির আগে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হলো। তার জীবনের শেষ ইচ্ছা ওস্তাদের সঙ্গে শেষবারের মতো সাক্ষাত্। ওস্তাদকে ডেকে আনা হলো। শিষ্য এবার ওস্তাদের পায়ে পড়ে। ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বললো আপনার কথাই সঠিক এই দেশে বিচার নেই’—আপনি আমাকে বাঁচান।

:
সত্যিই এই গল্পের মতো এই দেশে কোনো বিচার নেই॥ যে দেশে পেট্রোল বোমা মেরে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে সেই দেশে কি অদৌ শান্তি সম্ভব??
সরকার বদল হলেও এই নোংরা রাজনীতি কিন্তু বদল হবে না। আমরা নোংরা রাজনীতি থেকে মুক্তি চাই। ‘দুর্নীতি, সন্ত্রাস, গডফাদার, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হত্যা, খুন, গুম, দুঃশাসন,সংঘাতের রাজনীতি থেকে মুক্তি চাই।’ নিরাপদে স্কুল ও কলেজে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে চাই। আমি চাই না রাস্তায় বেড় হবার পরে পেট্রোল বোমায় আমার দেহটা পুড়ে ছাই হোক! ১৯৫২,৭১,৯০ সালের মৃত্যু আমাদের শোকের তবু স্মরণীয়। কিন্তু আজকের জলন্ত ছাই হওয়া মৃত্যু!! আজ নিত্যদিন সন্ত্রাসের আর শঙ্কার মৃত্যু আমি চাই না। আমি চাইনা যে আমাকে বন্দুক যুদ্ধের নামে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হোক। আমি চাই না আমার বিকৃত পোড়া দেহটা দেখে কাঁদুক আমার স্বজন। অশ্রুর প্লাবন নামুক আমার আমার বাবা মার চোখে। আমি চাই না নিরুদ্দেশের তালিকায় ভিড় জমাতে,গুম হতে। একজন সাধারণ নাগরিকদের মতো খেয়ে না খেয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুখে-দুখে থেকে আমি মরতে চাই। আমি স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৫

চাঁদগাজী বলেছেন:

" আজ নিত্যদিন সন্ত্রাসের আর শঙ্কার মৃত্যু আমি চাই না। আমি চাইনা যে আমাকে বন্দুক যুদ্ধের নামে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হোক। আমি চাই না আমার বিকৃত পোড়া দেহটা দেখে কাঁদুক আমার স্বজন। অশ্রুর প্লাবন নামুক আমার আমার বাবা মার চোখে। আমি চাই না নিরুদ্দেশের তালিকায় ভিড় জমাতে,গুম হতে। একজন সাধারণ নাগরিকদের মতো খেয়ে না খেয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুখে-দুখে থেকে আমি মরতে চাই। আমি স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। "

-গ্যারান্টি কার কাছে চাচ্ছেন?
গ্যারান্টি পুরণ যে করবে, তাকে কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে? নাকি মুখে গ্যারান্টি দিলে চলবে?


২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩০

আলোকিত আধারে বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ,চাঁদগাজী।

আমাদের শান্তিতে রাখার দায়িত্ব সরকারের_ তাই সরকারের কাছেই চাচ্ছি।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০০

সুমন কর বলেছেন: আমি স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.