নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোকিত আধারে

আমি নিরপেক্ষ নই সত্যের পক্ষে...................

আলোকিত আধারে › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাসের অন্তরালে এ এক অন্য ইতিহাস ( পর্ব - ১ )

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৩০

১১৯৭ থেকে ১৫২৫ সাল পর্যন্ত তুর্ক আফগান মুসলমানরা সমগ্র উপমহাদেশে তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।

উত্তর ভারতের হিন্দু রাজা মহারাজারা সংঘবদ্ধ হতে থাকে মুসলিম শক্তিকে পরাজিত করার জন্য। জহির উদ্দীন মুহাম্মদ বাবর ১৫২৬ সালের ২১শে এপ্রিল পানি পথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদীকে পরাজিত করে দিল্লী দখল করেন। দিল্লী দখলের এক বছরের মাথায় রাজপুত নামালব ও মধ্য ভারতের ১২০ জন রাজা মহারাজা সংঘবদ্ধ ভাবে মুসলিম শক্তি উৎখাতের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করেন। হিন্দু রাজাদের ৯০ হাজার অশ্বারোহী এবং অসংখ্য পদাতিক বাহিনীর মোকাবেলায় বাবরের মাত্র ১০ হাজার সৈন্য মরণপণ লড়াই করে আগ্রার অদূরে খানুয়ার যুদ্ধে (১৫২৭) সংঘবদ্ধ হিন্দু শক্তিকে পরাজিত করে॥ পরাজিত হওয়ার পর শক্তি দিয়ে মুসলমানদের মোকাবেলার আকাঙক্ষা ব্রাহ্মণ্যবাদীদের মন থেকে উধাও হয়ে যায়। অতঃপর তারা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে শুরু করে। তাদের পরীক্ষিত কৌশল তিন প্রজন্ম প্রকল্প বাস্তবায়নে অধিক মনোযোগী হয়। এ প্রকল্প আর কিছু নয় তিন প্রজন্মের মধ্যে মুসলমানদেরকে বিপথগামী করে রাস্তায় বসানো। তিন প্রজন্ম প্রকল্প সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে তুলে ধরা হল। তিন প্রজন্ম প্রকল্প - [প্রথম প্রজন্মে একজন ১০০% মুসলমান পুরুষের সাথে একজন ১০০% হিন্দু নারীর বিয়ে দিতে হবে। তাদের মিলনে যে শংকর সন্তান জন্মাবে সে হবে সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনে ৫০% মুসলমান এবং ৫০% হিন্দু। দ্বিতীয় প্রজন্মে সেই ৫০% মুসলমান পুরুষের ১০০% হিন্দু নারীর বিয়ে হলে যে শংকর সন্তান জন্মাবে সে হবে ১৭% মুসলমান ও ৮৩% হিন্দু। এবং তৃতীয় প্রজন্মে সেই ১৭% মুসলমানের সাথে কোন ১০০% হিন্দু নারীর বিয়ে দিলে পরবর্তী প্রজন্মের সন্তানটি সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনে হবে ৯৩% হিন্দু এবং ৭% মুসলমান। অর্থাৎ তিন প্রজন্ম শেষ হতে না হতেই মুসলমানিত্ব শেষ হয়ে যাবে। মুসলমানগণ হবে শুধু নামে মুসলমান।
পাঠকদের বলছি, আপনারা এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে ফারুক মাহমুদের লেখা বই 'ইতিহাসের অন্তরালে' পড়ুন।]

তাই সহজেই বোঝা যায় উপমহাদেশের মুসলিমদের মুসলমানিত্ব ধ্বংসের প্রচেষ্টা অনেক আগে থেকেই শুরু॥ এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়েছে অনেক আগে থেকেই॥ আর বাংলাদেশ একটি দেশ, যেখানে বিজ্ঞাপন মডেলরাও বুদ্ধিজীবী এবং জাতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মত প্রকাশ করে। এরাই আর্ট ফিল্মের নামে সরকারি অনুদান নিয়ে ইসলাম এবং মুসলমান বিরোধী সিনেমা বানায়। এসব সিনেমা বিদেশ থেকে পুরস্কারও পায়। দেশের তথাকথিত সুশীল ইসলাম বিরোধী কথা বলে নিজেদের বিরাট জ্ঞানী হিসাবে পরিচয় দেয়। তবে এই সবের মুল কারণ শংকর জাতের মুসলমানে এই উপমহাদেশ ভর্তি॥ আর এই শংকর জাতের মুসলমান তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে মুঘল আমল থেকে॥ যাইহোক, পাঠক আবার ইতিহাসে ফিরে যাই॥
মুঘল সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর অমুসলিমদের প্রতি যে,কতখানি সহনশীল মনোভাব পোষণ করতেন,তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় তার রচিত একটি গোপনীয় ইস্টিপত্র বা নির্দেশ নামায়, যেটি তিনি তাঁর পুত্র হুমায়ুন-এর জন্য রেখে গিয়েছিলেন। এর মূল কপি ভুপাল রাজ্য সরকারের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে। এই দলিলটির বঙ্গানুবাদ নিম্নরূপ-"তোমার মনকে ধর্মীয় সংস্কার দ্বারা প্রভাবিত হতে দেবে না এবং সকল শ্রেণির মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও ধর্মীয়আচারাদির প্রতি লক্ষ্য রেখে সকলেরপ্রতি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিচারকরবে॥ তুমি কখনো কোনো সম্প্রদায়েরউপাসনালয় ধ্বংস করবে না এবং সব সময় ন্যায় বিচারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, যাতে রাজার সাথে প্রজাদের সু-সম্পর্ক বজায় থাকে এবং এই ভূ-খন্ডে শান্তি ও সন্তুষ্টি বিরাজ করে। ( তথ্যসূত্র: ভারতবর্ষের ইতিহাস- ড. কিরণচন্দ্র রায়চৌধুরী)॥"

বাবরের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন সম্রাট হুমায়ুন। হুমায়ূন ছিলেন মার্জিত আচরণের অধিকারী। দয়ালু হিসেবেও তার সুনাম ছিল। তার চরিত্রের একমাত্র ত্রুটি ছিল তিনি ছিলেন আফিমে আসক্ত। সম্রাট হুমায়ূনের সময় হিন্দু রাজারা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি।

অবশেষে হুমায়ুনের মৃত্যু ব্রাহ্মণ্যবাদী কুচক্রীদের জন্য বড় রকমের সুযোগ এনে দেয়। সম্রাট আকবর মাত্র ১৩ বছর বয়সে ক্ষমতায় আসেন। "তবে, প্রথম জীবনে আকবর রীতিমত পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াতে নামাজ পড়তো। প্রতি বছর হজ্জের মৌসুমে আকবর একজনকে আমীরে হজ্জ নিযুক্ত করতো এবং বলতো যে কেউই তার সাথে গমন করবে সমুদয় খরচ আকবরই বহন করবে। ( মুন্তাখাবুত তাওয়ারিখ দ্বিতীয় খন্ড ১৮১ পৃষ্ঠা)"

পাঠকগন, এবার খেয়াল করবেন - এই রকম একজন ধর্মপ্রাণ শাসক আকবরের অধপতন ঘটলো কিভাবে?

আকবর অনেক গুলো হিন্দু মেয়েদের বিবাহ করে॥ রাজা মহারাজাদের অনেকেই আকবরের হাতে ভগ্নী ও কন্যা সম্প্রদান করে মুঘল পরিবারে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং এভাবেই শুরু হয় কুটকৌশল। "জয়পুরের রাজা বিহারী মল (মান সিংহের পিতামহ) তার কন্যা জয়পুরী বেগমকে বিয়ে দেন তরুণ সম্রাট আকবরের সাথে। এই আত্মীয়তার সুবাদে পিতা পুত্র এবং পৌত্র যোগ দান করেন আকবরের সেনাপতি পদে। বিকানীর ও জয়সলমীরের রাজারাও আকবরকে কন্যা দান করেন। (An Advanced history :Re Mayodan, P- 441 )"

হিন্দু দর্শন ও জীবনাচার আকবরের মন মগজকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। আকবর তার পত্নীদের জন্য আলাদা আলাদা ঠাকুরঘর/পুজার ঘরের ব্যবস্থা করে দেন । আকবরের হিন্দু প্রীতিতে খুশী হয়ে হিন্দু প্রজারা তাকে ‘দিল্লীশ্বর’ উপাধীতে ভুষিত করেন । তার কয়েকদিন পর আবার তাকে ‘জগদীশ্বর’ উপাধীতে ভুষিত করেন ।

পাঠকগণ খেয়াল করে দেখুন, মুসলমানদের ধ্বংস করতে কেমন চক্রান্ত। পরবর্তীতে সম্রাট আকবর হয়ে উঠে মুসলমানদের শত্রু। আকবর হিন্দুদের সাথে অবাধ মেলামেশা করে হিন্দু ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পরে। "এসময় পুরুষোত্তম ব্রাক্ষনের প্রভাবে আকবর জন্মান্তরবাদে বিশ্বাসী হয়। এবং পূনর্জনম ছাড়া শান্তি সম্ভব নয় বলে মনে করে। আকবর এ সময় গরু কে শক্তির উৎস মনে করতো। সে গরু কুরবানী নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং গরুর গোশত খাওয়ার উপরও বিধি নিষেধ আরোপ করে। কেননা হিন্দুরা গরু পুজা করতো এবং গোমুত্র পবিত্র মনে করতো।" ( মুন্তাখাবুত তাওয়ারিখ দ্বিতীয় খন্ড ৩২৬ পৃষ্ঠা)


"এদিকে রাজা ভবনদাসের মেয়ের সাথে আকবর তার ছেলে সেলিমের বিয়ে সম্পূর্ণ হিন্দু রীতিতে সম্পন্ন করে। হিন্দু সমাজের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আকবর, মুসলিম দের চাচাতো, মামাতো, ফুপাতো, খালাতো বোন বিবাহ নিষেধ করে আইন করে। হিন্দুরা যেহেতু পর্দা করে না তাই সে নির্দেশ দেয় ভবিষ্যতে কোন মুসলমান মহিলা পর্দা করে বাইরে যেতে পারবে না। আকবর কুরআন হাদীস শিক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এসময় অধিকাংশ হক্কানী আলেম দেশ ত্যাগ করেন এবং আলেমের সংখ্যা কমে যাওয়ায় মসজিদ মাদ্রাসা ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। এ সময় হিন্দুরাও মুসলমানদের মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির বানাতে শুধু করে। ( মকতুবাত শরীফ ১ম খন্ড ৯২ নং মকতুব)"

"ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ সালাত । আকবর সালাত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সেখানে কেউ প্রকাশ্য নামাজ পড়ার সাহস পেতো না। হিন্দুরা এ সুযোগে মসজিদ খানকাকে আস্তাবলে রুপান্তর করে। রোজার মাসে দরবারে প্রকাশ্যে পানাহার করতে বাধ্য করে। (মুন্তাখাবুত তাওয়ারিখ দ্বিতীয় খন্ড ৩১৫ পৃষ্ঠা)"

১৫৮২-১৬০৫ সালের মধ্যে আকবর ইসলাম ধর্মকে সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করে দ্বীনে এলাহী নামক ধর্ম প্রচার শুরু করে। ( Akbar the great mughal p.348)

এই সবই শংকর জাতের মুসলমান তৈরির প্রক্রিয়া। দিল্লি, কলকাতায় অনেকেই বলেন, মুসলমানদের টুপি থাকলেই চলে পাছার কাপড় আছে কি না, দেখে না। এর মানে মুসলমানেরা বেকুব। আসলে মুসলমানেরা বেকুব না তাদের বেকুব বানানোর চক্রান্ত চলছে কয়েকশত বছর থেকে .......


( ধারাবাহিক ভাবে চলবে .....)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

রাখালছেলে বলেছেন: লিখতে থাকুন । আমার অল্পবিদ্যা তাই বেশী কিছু বলতে পারছি না । জানতে পাই । আপনি যে বইটির কথা বলেছেন "ভারতবর্ষের ইতিহাস- ড. কিরণচন্দ্র রায়চৌধুরী " তার কোন পিডিএফ ভার্সন বা হার্ডকপি পেতে পারি কি ? দিলে অনেক উপকৃকত হতাম ।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮

রাখালছেলে বলেছেন: আর আকবরনামা কিছু বলুন । জানার আগ্রহ প্রবল ।

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

আলোকিত আধারে বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ, রাখালছেলে

"ভারতবর্ষের ইতিহাস- ড. কিরণচন্দ্র রায় চৌধুরী " বইয়ের পিডিএফ ভার্সন নেই, বই আছে আমার কাছে ॥

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.