নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শূন্য

অকল্পনীয় গতিতে কল্পনায় বিচরন

লুবান

শূণ্য

লুবান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভোররাতের শেষ ট্রেন

০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:০৯

তারপর এক দৌড়ে লাফ দিয়ে ট্রেনের ছাদে। পুলিশের ভয়ে ট্রেনের এক বগী থেকে আরেক বগীতে ছুটে পালানোর চেষ্টা স্বপনের। অনেকক্ষন অযথা লাফালাফি শেষে ট্রেনের দুই বগীর মাঝখানে ঝুলে রইলো স্বপন। ভয়ঙ্কর ভাসমান অবস্থাকে আরেকটু ভয়ঙ্কর করার জন্যেই মনে হয় তার ছেড়া পকেট থেকে শেষ দুই টাকা পড়ে গেলো। বিপদ যখন আসে সবদিক থেকে আসে প্রমান করার জন্যেই মনে হয় ট্রেনের শেষ হুইসেল বেজে উঠলো। বের হলে পুলিশের ভয় আর পায়ের নিচে দুই টাকা। দুই বগীর মাঝখানে ঝুলে থাকাই শেষ সিদ্ধান্ত নিলো পাঁচ বছর বয়সের স্বপন।



ট্রেনের ছাদ।ট্রেন কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে জানা নেই স্বপনের। ব্রিজের উপর দিয়ে চলার সময় চলন্ত ট্রেনে দৌড়ানো স্বপনের প্রিয় কাজ। ব্রিজের অপেক্ষায় শুয়ে থাকতে থাকতে স্বপন ঠান্ডা বাতাসের উপর বিরক্ত। ঘুম ভাঙলো কমলাপুর রেল স্টেশনে। আজকাল আর পুলিশের ভয় নেই পনের বছর বয়সের স্বপনের। দুই চার টাকায় ভালোই লেনদেন হয় পুলিশের সাথে। এক কাপ চা আর একটা বনরুটি দিয়ে পেট ভরলো সে। পরের ট্রেনের জন্যে অপেক্ষা। কুলির কাজ করে আজকাল ভালোই টাকা পাওয়া যায়।



পচিশ বছর বয়সের স্বপনের আজকাল ট্রেনের শব্দে লাফ দিয়ে ট্রেনে উঠতে ইচ্ছে করেনা। তেজগাও রেল স্টেশনে বসে ঝিমানোই তার প্রিয় কাজ। ট্রেনের শব্দ শুনলেই সে বুঝতে পারে কোথা থেকে কোথায় যায় ট্রেন। বিনে পয়সায় বাংলাদেশ ভ্রমন ভালোই লাগে তার। টাকা পয়সায়ালা বড়লোকের বাচ্চাদের দেখে বিনোদন পাওয়াই তার আজকাল অন্যতম প্রিয় কাজ।



বিয়ের পাট চুকিয়ে বেশ আনন্দেই ছিলো কিছুদিন স্বপন। একটা স্বপন জন্ম দিয়ে আর গাজা সিগারেটে ভালোই দিন কাটে স্বপনের। তেজগাও রেললাইনে ঝিমানো স্বপনের পায়ের উপর উঠে দুই টাকার জন্যে খুঁনসুটি স্বপনের বাচ্চার। বিরস মুখে দুই টাকার একটা ময়লা নোট রতনের হাতে ধরিয়ে দিলো সে। দুই টাকার আনন্দে রতন এক লাফে ট্রেনের ছাদে। ট্রেনের ছাদে লাফালাফি করা আজকাল তার প্রিয় কাজ।



গাজা আর হিরোইনের নেশায় বেশ ভালোই ঝিমাচ্ছিলো স্বপন। অতিঘোরের এক পর্যায়ে ট্রেনের শব্দে মোটেও চমকালো না স্বপন। প্রচন্ড ঘোরে ট্রেন কোন পাশ থেকে আসছে বুঝতেনা না বুঝতেই স্বপনের গায়ের উপর থেকে চলে গেলো ভোররাতের ট্রেন। শেষ মুহুর্তে জীবনের জন্যে মায়া লাগা উচিত নাকি ভোররাতের শেষ ট্রেনের উপর মায়া লাগা উচিত চিন্তা করার জন্য যথেষ্ট সময় পেলো না স্বপন।



পুলিশের ভয়ে ট্রেনের দুই বগীর মাঝখানে দাঁড়ানো রতন।পায়ের নিচে পড়ে যাওয়া দুই টাকার নোট তুলতে তুলতেই চলতে শুরু করলো ভোররাতের শেষ ট্রেন।









মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪০

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
বৃত্তচক্রে অসহায় জীবনের পরিভ্রমণ ৷

সুন্দর লিখেছেন ৷ লিখতে থাকুন ৷


শুভ ব্লগিং ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.